আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বড় হয়ে গেলাম...... ১ম কিস্তি



১৫ই এপ্রিল, ২০০৬ । ভার্সিটি তে ক্লাস শুরুর দিন । নিজেকে বেশ বড় বড় মনে হতে লাগলো । লাগবে নাই বা কেন, ভার্সিটির স্টুডেন্ট আমি এখন । আল্লাহর অশেষ রহমতে পাবলিক ভার্সিটিতে chance পেয়েছি ।

ভাবতেই পেটটা ভরে যায় । ঘুনাক্ষরেও টের পাইনি, এই department এ আগামী দিনগুলোতে আমার এ ছোট্ট তরীর জন্য কতগুলো সুনামি , নার্গিস , আইলা , লাইলা প্রভৃতি অপেক্ষা করছে । (এগুলা কোন মেয়ের নাম না) ১ম দিন যাদের সাথে কথা হয়েছিলো, এদের মধ্যে নিয়াজের সাথেই ঘনিষ্টতা গড়ে উঠেছিলো । আর এখন পর্যন্ত সেই সুসম্পর্ক রয়েছে । ইনশাল্লাহ থাকবেও ।

আমার সাথে এখন পর্যন্ত যাদেরই friendship হয়েছে এদের মধ্যে ওই সবচেয়ে consistent . (Consistent word টার অর্থ পুরোপুরি বুঝতে পারি stat এ ভর্তি হবার পর । কথাটা বললাম কারন এক পাগলায় আমার কাছে stat এ ভর্তি হবার উপকারিতা জানতে চেয়েছিল)। আমি বরাবরই কিছুটা বাইন মাছ টাইপের , অর্থাৎ বেশ পিছলা । তখন ragging এর প্রচলন ছিল । কিন্তু আমার এ স্বভাবের কারনে আমি এক বারও rag খাইনি ।

একে একে বন্ধু সংখ্যা বাড়তে থাকে । but quantity never assures quality. আর আমার সবচেয়ে ভাল friend এর দেখা পাই ১৭ই জুলাই । সেদিনই প্রথম ক্লাস করতে আসে । বুঝতে পারিনি ১ বছরের মধ্যেই ও আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষদের একজন হয়ে যাবে । এক পর্যায় ১০ জনের এক বিশাল circle হয় ।

এই ১০ জনের মধ্যে intimacy বাড়ার কারন হলো , আমরা সবাই ঢাকা থেকে যাতায়াত করতাম , hall এ থাকতাম না । এই intimacy যে সাময়িক তা বুঝতে পারিনি । ক্লাস করতে এসে দেখি ভয়াবহ অবস্থা । স্যারদের হিব্রু ভাষায় লেকচার দেয়া দেখে বুঝলাম…খবর আছে । tutorial গুলোতে mark দেখেই লজ্জা লাগে ।

এর মাঝে স্বান্তনা ছিল friend রা । যাদের সাথে “ just had a blast “ . ফাঁক পেলেই আড্ডা , ক্লাস এ বসে সবাই সবাইকে missed call দেয়া , সন্ধ্যা বেলায় চা ও সিগারেটময় জম্পেশ আড্ডা, hall এ থাকলে সারা রাত জুড়ে পুরো campus ঘুরে বেড়ানো, শহীদ মিনারে বসে গান গাওয়া, মাঝে মাঝে ফ্রেন্ডদের বাসায় আকশ্মিক আক্রমণ । সব মিলিয়ে এত মজা আর কখনও করিনি । তখন আল্লাহর কাছে শোকর করতাম এই ফ্রেন্ড দের জন্য । মজা লাগা আর ভাল লাগার মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য ।

একদিকে অন্য সব ফ্রেন্ডদের সাথে থাকলে যেমন অনেক মজা করতাম, তেমনি এদেরই একজনের সাথে থাকতে অসম্ভব ভাল লাগত । ভাল লাগাটা এতটাই প্রকট ছিল যে অন্যদের সাথে বসে মজা করার সময়ও সেই বিশেষ ভালো লাগাটাকে miss করতাম । তখন এটাকে বিশেষ পাত্তা দেইনি । কিন্তু পরবর্তীতে এই ভালোলাগাটাই আমার জন্য আক্ষরিক অর্থেই সবকিছু হয়ে দাঁড়ায় । এত আড্ডা শয়তানি, বাঁদরামির ফলাফল যা হবার তাই হল ।

1st year final রেজাল্ট হল ভয়াবহ খারাপ । ফ্রেন্ডদের মধ্যে আমার GPA সবচেয়ে খারাপ । হিংসা হয়নি একটুও । বুঝলাম , আমি বাদে সবাই জাতে মাতাল তালে ঠিক । পড়ালেখার ব্যাপারে ফ্রেন্ডদের উপর অনেক depend করতাম ।

কোনকিছু বুঝতে সমস্যা হলে ওদের কাছে চলে যেতাম । ওরা খুবই আন্তরিকতার সাথে help করত । অবশ্য help যে আমি একেবারেই করতাম না তা না । ক্লাস এ সবসময় lecture তুলতাম । ওদের কারও লেকচার দরকার হলে আমি নিজে গিয়ে ওদের বাড়িতে দিয়ে আসতাম ।

এদের একজনের বিপদের সময় একবার কম সাহায্য করিনি । একজন ছ্যাকা খেয়ে দেবদাস হলে যথাসম্ভব ওকে mental support দিয়েছি । তারপরও আমার কপালে যে বিশ্বাসঘাতকতা লেখা আছে তা জানতাম না । এসব অবশ্য আরও পরের কথা । সব মিলিয়ে ১ম বছরটা অনেক ভালভাবেই কেটে যায় ।

বুঝিনি যে আমার কপালে পরের বছরটায় একই সাথে SURPRISE ও SHOCK দুটোই লেখা আছে ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।