আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সিসিসি নির্বাচন থেকে কি কিছু শিক্ষা

ব্লগার পাঠক হিসেবেই বেশী আনন্দে আছি।

গত ১৭ জুন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হলো। এতে আওয়ামী লীগের ৩ বার নির্বাচিত মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন বিরোধী দলের নতুন প্রার্থী মঞ্জুরুল আলমের কাছে প্রায় ১ লাখ ভোটের ব্যবধানে হেরে গেছেন। পরাজিত হয়ে মহিউদ্দিন সাহেব কিছু কথাবার্তা বলেছেন যা মোটেও বাঞ্ছনীয় নয়। তবে এ প্রসঙ্গে আলোচনার পূর্বে আমি ২০০৫ সালের নির্বাচনের কথা উল্লেখ করতে চাই।

সেবার মহিউদ্দিন চৌধুরী সাহেবকে হারাবার জন্য ৪ দলীয় জোট সরকার গোটা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নিজেদের দলীয় অঙ্গ সংগঠনের লোকজনকে চিটাগাংয়ে নিয়ে এসেছিল। প্রবল একটা উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল। আর তৎকালীন নির্বাচন কমিশনার সম্পর্কেও নানা প্রশ্ন ছিল। এতো কিছুর পরও তিনি প্রায় ১ লাখ ভোটে জয়লাভ করেছিলেন। এর দ্বারা বুঝতে হবে যে জনতার অনুভূতি এবং শক্তিকে পরাহত করা সহজ নয়।

জনাব মহিউদ্দিন এবার বলবার চেষ্টা করেছেন যে, চক্রান্ত করে তাকে পরাজিত করা হয়েছে। এটা মোটেই ঠিক নয়। দল হিসেবে আওয়ামী লীগ মাত্র ১০টি কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হয়েছে এর বিপরীতে বিরোধী দল পেয়েছে ২৪টি। অতএব তৃণমূল পর্যায়েও জনগণের রায় সরকারি দলের বিপক্ষে ছিল। যদিও একটি কর্পোরেশন নির্বাচন গোটা জাতীয় সমর্থনের পূর্ণ প্রতিফলন হয় না।

তবে আংশিকভাবে তো মেনে নিতে হবে। আমাদের দেশে কোনো সরকারই নির্বাচিত হওয়ার পর পরবর্তী নির্বাচন পর্যন্ত অন্তবর্তীকালীন সময় নিজেদের কী অবস্থান তা মূল্যায়ন করে না। কয়েকদিন আগে জাপানের প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলেন। যদিও তার দল সংসদে যথেষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠ। আরো উল্লেখ করার বিষয় হলো যে, বর্তমান দল ডেমোক্রেটিক পার্টি অব জাপান (ডিপিজে) একটি দলকে শোচনীয়ভাবে পরাজিত করে ক্ষমতায় এলো যারা প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন ছিল।

কিন্তু কিছু প্রতিশ্র“তি পালনে গাফিলতি বা হেরফের হওয়ার জন্য বর্তমানে পদত্যাগকারী প্রধানমন্ত্রী হায়াতমার জনপ্রিয়তা কমে যায়। এর দাদা জাপানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এবং বাবা ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এহেন রাজনৈতিক ঐতিহ্য থাকার পরেও তিনি পদত্যাগ করলেন। দলকে নতুন নেতৃত্বের অধীনে সক্রিয় করার জন্য। আমি পুরোপুরি জাপানি নিয়মের অনুকরণের কথা বলছি না।

আর একথা মানতেই হবে যে গত ২০০৮-এর নির্বাচনে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের সাফল্য পাওয়ার পেছনে শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত ইমেজ প্রচণ্ডভাবে কাজ করেছে। বিশেষ করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া যেন ব্যাহত না হয় তার জন্য সমস্ত শিষ্টতা লঙ্ঘন করে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধানের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন, তখন তিনি তাকেও মেনে নিয়েছিলেন। এরপর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাকে দেশে ফিরে আসতে বাধা দিলে তিনি তা উপেক্ষা করেন। তাকে গ্রেপ্তারের সময় যে নাটক করা হয়েছিল এবং তার প্রতি যে আচরণ করা হয়েছিল এটিও অত্যন্ত দুঃখজনক এবং নিন্দনীয়। এতো কিছুর পরেও তিনি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের স্বার্থে এ সব দুঃখ-কষ্ট-যন্ত্রণা আমলে নেননি।

আওয়ামী লীগ সরকারের সাফল্যের বিশেষ দিক হলো বাংলার কৃষকের সার্বিক কল্যাণের জন্য কাজ করা। এখানে বলা যেতে পারে যে, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল কৃষক শ্রমিকসহ মেহনতি মানুষের অর্থনেতিক মুক্তি। আর সেই জন্যই একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠিত করার জন্য যখন নতুনভাবে দলের নামকরণের কথা উঠলো তখন বঙ্গবন্ধু দলের নাম দিলেন বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ। কৃষি ছাড়াও অন্যান্যভাবে গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য বর্তমান সরকার খুবই তৎপর। শিক্ষা ক্ষেত্রেও যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

বিশেষভাবে উল্লেখ করা যেতে পারে বৈদেশিক নীতির বেলায় এখানে প্রধানমন্ত্রীর সাফল্য শতকরা ১০০ ভাগ। তিনি যখন এবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথম ভারতে যান এবং কিছু প্রটোকল সহি করে আসেন তখন বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তার সেই পুরাতন স্টাইলে বললেন যে ভারতের কাছে তিনি আত্মসমর্পণ করে এসেছেন। অবশ্য এ ধরনের দায়িত্বহীন বক্তব্য তিনি বহুদিন থেকেই দিয়ে আসছেন। যেমন ’৯৬-এর নির্বাচনী প্রচারণার সময় বলেছিলেন যে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে মসজিদে আজানের পরিবর্তে উলুধ্বনি শোনা যাবে। তারপর ’৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হলে তিনি বললেন যে, ফেনী পর্যন্ত ভারতের দখলে চলে যাবে।

কিন্তু কোনোটাই হয়নি। প্রধানমন্ত্রী কিছুদিন আগে চীন সফর করে এলেন, এর পর পরই মাত্র সেদিন চীনের ভাইস-প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সফর করে গেলেন। তিনি জানালেন যে, তারা বাংলাদেশে সার্বিক উন্নয়নে সাহায্য করতে আগ্রহী। গভীর সামদ্রিক বন্দর নির্মাণ করে দিতেও আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তারা। এছাড়াও বার্মার ভেতর দিয়ে চীন পর্যন্ত ট্রেন এবং সড়ক যোগাযোগ সম্ভাবনাও ক্ষতিয়ে দেখা হবে।

ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি চীন তার নিজের স্বার্থে নিতে চাচ্ছে এ রকম একটা কথা প্রবলভাবে আলোচিত হয়েছিল। অতএব সেটি নিয়েও আলোচনা হয়। বাংলাদেশ চীন এবং ভারত দুটি বৃহৎ অর্থনীতির মাঝখানে অবস্থিত। এদের সঙ্গে কনজুমার আইটেম নিয়ে প্রতিযোগিতা করা খুব কঠিন। চীন তো বাংলাদেশের খেলনা শিল্পকে একেবারেই অচল করে দিয়েছে।

কেননা অনেক সস্তায় সরবরাহ করতে পারে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের একটা বড় সুযোগ পরিষেবা খাতকে কাজে লাগানো আর সে কারণেই প্রধানমন্ত্রী একদিকে যেমন ভারত, নেপাল এবং ভুটানকে সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করতে দিতে আগ্রহী তেমনিভাবে চীনকেও। আর সেই কারণে চীনও বাংলাদেশের প্রতি যথেষ্ট আগ্রহী হয়েছে। হতে পারে দুই শক্তি তাদের প্রভাব বলয় বিস্তারের জন্য এসব করছে। কিন্তু আমাদের দায়িত্ব হলো আমাদের পরিষেবা খাত যথাÑ ট্রেন, সড়ক যোগাযোগ এবং বন্দর ব্যবহারের সুযোগ দিয়ে প্রভূত রাজস্ব আয় করতে পারি সেটির প্রতি লক্ষ রাখা আর তার জন্য উভয়ের প্রতি সমান গুরুত্ব দেয়া।

প্রধানমন্ত্রী সেটাই করেছেন। এক্ষণে বিএনপির প্রতি কয়েকটি বিষয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমার মনে হয় প্রধানমন্ত্রী ভারতের কাছে নতÑ এ ধরনের অর্বাচীন বক্তব্য আর তাদের দেয়া উচিত নয়। নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত নিরপেক্ষভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কয়েকদিন আগে চিটাগাং সিটি কর্পোরেশন এনার্জি সেভিংস বাল্ব সরবরাহের ব্যবস্থা নিয়েছিল।

নির্বাচন কমিশন তা হতে দেয়নি কারণ এতে একটা নির্বাচনী প্রভাব পড়তে পারে। এ ধরনের অজস্র সিদ্ধান্ত ভারতের নির্বাচন কমিশন নিয়ে থাকে। তবে বাংলাদেশে এটি বিরল ঘটনা। এখানে আরো একটা কথা বলা যেতে পারে। একজন মহিলা নির্বাচন কর্মকর্তা এবার যে দৃঢ়তা দেখালেন তা অতীতে কোনো পুরুষও দেখাতে পারেনি।

১৯৯৪ সালে মাগুরা উপ-নির্বাচনের সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন একজন মাননীয় সুপ্রিম কোর্টের বিচারক। নির্বাচন কারচুপি ঠেকাতে পারবেন না বলে তিনি মাগুরা সার্কিট হাউস থেকে এক রকম পালিয়ে এসেছিলেন। তার অন্যতম প্রধান কারণ তৎকালীন সরকারের চাপ। কিন্তু এবারে প্রমাণিত হয়েছে যে, শেখ হাসিনা সরকার নির্বাচন কমিশনের ওপর কোনো প্রভাবই বিস্তার করার মানসিকতা দেখাচ্ছে না। আর এই সঙ্গে এই কথা বলতে হয় যে বিএনপি নেত্রী যেভাবে বলেন যে সরকারকে আর সময় দেয়া হবে না।

এটিও উনার রাজনৈতিক ভাষা নয়। উনার কথা শুনে মনে হয় যে, এই রাজ্যটি বিএনপির তথা তার দলীয় প্রধানের। শেখ হাসিনাকে প্রশাসন চালানোর জন্য লিজ দেয়া হয়েছে। সময় দেয়া না দেয়ার মালিক জনগণ। একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য একটা দল নির্বাচিত হয়।

ইংল্যান্ডে একটি ঐতিহ্য চলে আসছে যে অনেক সময় মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই অবস্থা বুঝে প্রধানমন্ত্রী রানীকে সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন দেয়ার আহ্বান জানান। এবারে সেখানে তারা সব দল মিলে এ সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে যে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য যে সরকার গঠিত হবে তা যদি হাউসে আস্থা না হারায় তাহলে ট্যানিওরটি শেষ করতে দেয়া হবে। আগে নির্বাচনে যাবে না। আমাদের বিশেষ করে বৃহৎ দুদলের এ সমস্ত গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির আগ্রহ দেখাতে এবং তা পালন করা উচিত। এখন অবশ্য সেই সময়কার প্রধান নির্বাচন কমিশনার টেলিভিশনে টকশো ও সেমিনারে অনেক ভালো ভালো কথা বলেন।

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে ভোলাতে যে উপ-নির্বাচন হয়েছে তা অত্যন্ত সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে। ভোলাতে বিএনপির পরাজয়ের একই সঙ্গে চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পরাজয়ের পূর্বাভাস পাওয়া গিয়েছিল। ২০০১ সালে নির্বাচন-উত্তর সহিংস ঘটনা বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের ওপর যে নির্যাতন তারই ফল হলো বিএনপি প্রার্থী পরাজয়। একইভাবে বলা চলে মহিউদ্দিন সাহেবের একগুঁয়েমি স্বেচ্ছাচারী আচরণ এবং নারীদের প্রতি দুর্ব্যবহার এসবই তার বিপর্যয় ঘটানোর অন্যতম কারণ। যা হোক নির্বাচন কমিশনকে নিয়ে বিএনপি যে রাজনৈতিক ইস্যু তৈরি করতে চেয়েছিল সেই চেষ্টা আর না করাই ভালো।

জনগণ সচেতন, তাদের কী করতে হবে তারা জানেন দুটি নির্বাচন সেই ইঙ্গিতই দিলো। এখন উচিত হবে প্রত্যেক দলের নিজেদের মূল্যায়ন করা। এ প্রসঙ্গে আগামী ২৭ জুন বিএনপি কর্তৃক আহূত হরতালের কথা বলতে চাই। সেদিন প্রবীণ সাংবাদিক এবিএম মূসা টেলিভিশন টকশোতে বলেছেন যে, এ দেশে হরতাল সফল করে দেয় সরকার। কেননা তথাকথিত বাধা দেয়া কিংবা প্রতিক্রিয়া বেশি মাত্রায় ব্যক্ত করায় হরতালটি আরো সার্থক হয়ে ওঠে।

হরতাল এখনো রাজনৈতিক সংস্কৃতির একটি অংশ। কোনো দলই একে পরিহার করেনি। এরশাদের আমল থেকে বহু হরতাল হয়েছে। একটা ফরমেটে চলে এসেছে। যেমন বিপণি বিতান খুলবে না।

বেসরকারি বাস-ট্রাক রাস্তায় নামবে না, সরকারি অফিস আদালত খোলা থাকবে, সঙ্গত কারণে লোকজন তেমন একটা আসবে না। বিএনপি বর্তমানে অত্যন্ত হতাশাগ্রস্ত জাতীয় নির্বাচনে অত্যন্ত শোচনীয় পরাজিত বরণ করতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর কয়েকজন খুনির ফাঁসি হয়েছে। যে দলের সাহায্য ছাড়া বিএনপি একবারও সরকার গঠন করতে পারতো না সেই দলের উচ্চ পর্যায়ের কয়েকজন নেতা যুদ্ধাপরাধের জন্য বিচারের সম্মুখীন হতে চলেছে। অতএব বিএনপি কিছুটা লোক দেখানো, কিছুটা দলকে চাঙ্গা করার জন্য অপ্রয়োজনীয় রাজনৈতিক পদক্ষেপ নেবে।

তারই একটা হলো ২৭ জুনের হরতাল। এটি নিয়ে সরকারি মহলের কোনো কথা বলারই প্রয়োজন ছিল না। দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যতো বাড়বে ততোই হরতালের বিষয়টি দুর্বল হয়ে যাবে। আমরা জানি যে নেপালে মাওবাদী কমিউনিস্ট পার্টি অত্যন্ত শক্তিশালী। কিছুদিন আগে দেশের অর্থনীতিকে সম্পূর্ণ অচল করার জন্য অনির্দিষ্টকালের অসহযোগের তথা হরতালের ডাক দিয়েছিল।

কিন্তু এক পর্যায়ে ব্যবসায়ী এবং জনগণের চাপে তা প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়েছে। অতএব এটুকু ধৈর্য ধরে দেখা উচিত যে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিরোধিতার মাত্রা বিএনপি কোন পর্যায় পর্যন্ত নিয়ে যায়। বিএনপির উস্কানির মুখে যেন আওয়ামী লীগ উত্তেজিত না হয় বা অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার আশ্রয় না নেয় সেটাই সবার কাছে কাম্য। আমরা বর্তমান সরকারের সাফল্যের কথা বলেছি কিন্তু কিছু ভুলত্র“টি তো আছেই নইলে জনপ্রিয়তার ব্যারোমিটার একটু নিচের দিকে কেন। প্রথমত. বলতে হয় যে, কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের কাজকর্ম বেশ হতাশাব্যঞ্জক।

প্রধানমন্ত্রী নিজে উদ্যোগ না নেয়া পর্যন্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের চাকা ঘোরেনি। একটি বছর এ মন্ত্রণালয়টি নষ্ট করেছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় আইলা দুর্গতদের কষ্টের সামান্য লাঘবও করেনি। ছাত্রলীগ এবং যুবলীগের অন্তর্দ্বন্দ্ব টেন্ডারবাজি এসব ঘটনায় জনগণ বেশ ক্ষুব্ধ এবং অসন্তুষ্ট। জানি না সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা থেকে উচ্চ পর্যায়ে এসব জানানো হচ্ছে কি না।

সব চেয়ে মজার ব্যাপার হলো ছাত্রলীগ এই যে বর্তমান শৌর্যবীর্য প্রদর্শন করছে সেটা কেরোসিনের কুপির মতো নিভে যাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসার সঙ্গে সঙ্গে। পরবর্তী সরকারের অপেক্ষায়ও থাকবে না। প্রতিটি কৃষ্ণ মেঘের শেষে রূপালী রেখা থাকে। চিটাগাং সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের কারণে মেঘের আড়ালে তেমনি সুবর্ণ রেখা রয়েছে। আমার বিশ্বাস যে সেটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং তার দল অনুধাবন করেছেন।

যে কারণে তিনি নব-নির্বাচিত মেয়রকে শুধু অভিনন্দন নয় সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছেন। প্রেসিডিয়াম সদস্য ওবায়দুল কাদের সাহেবও সুন্দর কথা বলেছেন, যেমন জনগণের রায়কে তারা মাথা পেতে নিয়েছেন। বিএনপি এই সাফল্যকে নিয়ে একটু বেশি লাফালাফি করবে সেই নৃত্য দেখে আওয়ামী লীগের উত্তেজিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। তবে একটা কথা বলা প্রয়োজন তা হলো এখনো মনে করা হচ্ছে যে, সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পদায়ন এবং পদোন্নতি, সুষ্ঠু, ন্যায় এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে করা হচ্ছে না। অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে এমন লোক রয়েছেন যারা কিছুটা অন্তর্ঘাতমূলক কাজ করে চলেছেন।

দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নীতিনির্ধারকদের এটা অনুভব করতে হবে। একটা প্রবাদবাক্য দিয়ে শেষ করতে চাচ্ছি। কার তা মনে নেই। কথটা এরকম খোদা আমাকে আমার বন্ধুদের হাত থেকে রক্ষা করেছেন, এখন আমি প্রকৃত শত্র“দের বিরুদ্ধে যথাযথভাবে লড়তে পারবো।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।