আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জীব ও জীবনের রহস্য - (অমরত্বের হাত ছানি)

আমি তোমাকেই বলে দেব, কি যে একা দীর্ঘ রাত আমি হেটে গেছি বিরান পথে! আমি তোমাকেই বলে দেব, সেই ভুলে ভরা গল্প; কড়া নেড়ে গেছি ভুল দরজায়!

মৃত্যুকে যদি আমরা জিন গত বৈশিষ্ট্য হয়, তবে এর প্রতিকার সম্ভব আর এর ফলে মানুষ পেতে পারে অমরত্বের স্বাদ। যেহেতু জীবের প্রতিটি জৈবিক কার্যকলাপ জীন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, সেহেতু মৃত্যুর জন্যও কোন না কোন জীন দায়ি। লীথ্যাল জীন বা মারণ জীন ইতিমধ্যে বিভিন্ন জীবে সনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। লীথ্যাল জীন বিশেষ কোন জীন নয়, খুব সাধারন একটি জীন; যা মৃত্যুকে ত্বরাণিত করে ঘটায় অসাধারণ একটি ঘটনা। লীথ্যাল জীন যদি কোন জীবে ডমিনেন্ট হয় তবে ঐ জীবটি ভ্রুন অবস্থাতেই মারা যাবে।

তাই লীথ্যাল জীন শুধুমাত্র রিশেসিভ (অধিকাংশ হেটারোজাইগোটিক) অবস্থাতেই পরবর্তী প্রজন্মে সঞ্চারিত হয়। লীথ্যাল জীন প্রায়ই কিছু না কিছু ফেনোটাইপিক (যা সহযে সনাক্ত করা যায়, বাহ্যিক) বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণ করে। যেমন Drosophila এর চোখের বিশেষ রং এর জন্য দায়ি জীন রিশেসিভ লীথ্যাল হিসাবে কাজ করে, এছাড়াও ইদুরের গায়ের রং হলুদ হবার জন্য দায়ি জীন লীথ্যাল। কিছু কিছু ক্ষেত্রে লীথ্যাল জীন অঙ্গ-প্রত্যাঙ্গের বিকৃতি ঘটায়। যেমন, Drosophila এর একটি লীথ্যাল জীন, তার পাখা ছোট করে দেয়; আবার মুরগীর লীথ্যাল জীনের জন্য, পা ছোট ও বাকানো হয়।

গরুর পাঁচটি পা সৃষ্টি হয়। মানুষের ক্ষেত্রে আঙ্গুলে দুটি গীটের সৃষ্টি হয়, এই রোগকে বলে Brachyphalangy. কখনো কখনো অসম্পূর্ণ ডমিন্যান্স লীথ্যাল জীনের উপস্থিতি হেটারোজাইগাস অবস্থায় প্রকাশিত হয়। এসমস্ত লীথ্যাল জীনকে খুব সহজেই বর্জণ করা যায় বার বার fertilization ঘটিয়ে। আবার কিছু কিছু জীন আছে যারা লীথ্যাল হিসাবে কাজ করে; জীবের পূর্নঙ্গ অবস্থায়। এসমস্ত জীনের প্রভাবে জীব ভ্রুণ অবস্থায় মারা যায় না; কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায়, এমন জীন বহনকারি জীব তার জনন সম্পন্ন করতে পারে।

এধরনের জীনের ক্ষেত্রে যদি ৫০% এর বেশী সংখ্যক জীব মারা যায় তবে তাকে সেমি লীথ্যাল আর কম মারা গেলে তাকে সাব-ভাইটাল জীন বলে। এখন কথা হচ্ছে লীথ্যাল জীন বর্জন করলেই কিন্তু কোন জীব অমর হয় না। লীথ্যাল জীন বর্জন করলে জন্মগত বিকলঙ্গতা রোধ করা যায়; এবং এটা নিশ্চিত হওয়া যায় যে শিশুটি দৈহিক বিকলঙ্গতার জন্য মারা যাবে না। যা বর্তমানে চেকেৎসা হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কিন্তু অমরত্ব লাভ করতে হলে কি করতে হবে? প্রথম কথা হল স্বাভাবিক মৃত্যু রোধ করতে হবে।

সাধারণত বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের ইমিিউনো সিস্টেমে জং ধরতে লাগে, যা রোধ করতে হবে। ইমিউনো সিস্টেম ঠিক রাখতে হলে নিয়মিত ডায়েট, শারিরীক পরিচর্যা করতে হবে, সেই সাথে কেমিক্যাল যুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে। (কঠিন ব্যাপার) এতো গেল প্রাথমিক কথা, এরপর যা দরকার, তা দেবে বায়োটেকনোলোজি। মানুষের গ্রোথ হরমন চিরকাল নি:সরণ হয় না। শিশু অবস্থায় এর নি:সরণ বেশি থাকে বয়স বাড়ার সাথে সাথে তা আবার কমতে থাকে।

১৮-২৩ বছর বয়সের পর মানুষের উচ্চতা স্বাধারণত আর বৃদ্ধি পায় না, এর কারন গোথ হরমনের নি:সরণ কমে যাওয়া। বৃদ্ধ বষসে এর নি:সরণ পুরোপুরি থেমে যায়, ত্ই এসময় কোন কোষ মারা গেলে তা পূরণ হয় না। তাইতো বৃদ্ধ বয়সে শরীরের চামড়া কুঁচকে যায়, কারন তখন শরীরের চামড়ার নিচের পেশী কোষগুলো মরে যায়। শিশু বয়সে গ্রোথ হরমন নি:সরণ কম হলে বামন দশা আর বয়স্ক অবস্থায় নি:সরণ বেশি হলে গরিলা দশা হয়। সুতরাং যুবক বয়সে যে পরিমান গ্রোথ হরমন নি:সরন হয় তা দেহের জন্য কনস্ট্যান্ট করতে হবে।

গ্রোথ হরমনের প্রভাব কমতে থাকে সেকেন্ডারী সেক্সুয়াল ক্যারেক্টারের প্রভাবে বলে ধারনা করা হয়; বিজ্ঞানীরা যার সঠিক কারন নির্ণয়ের চেস্টা করে যাচ্ছেন। গ্রোথ হরমনের নি:সরন স্বাভাবিক রাখলে দেহ স্বাভাবিক থাকবে। তারপর আরো বিষয় আছে; বয়স্ক অবস্থায় যখন ইমিউনো সিস্টেম ভেঙ্গে পড়ে এবং গ্রোথ হরমনের নি:সরন কমে যায় তখন সাথে সাথে আরো অনেক ধরনের হরমনের নি:সরন কমতে থাকে। আর মৃত্যু এগিয়ে আসতে থাকে ধিরে ধিরে। তাই অমরত্বের জন্য দরকার প্রতিটি হরমন সমন্ধে বিষদ জ্ঞান; কোন জীন কোন হরমন নি:সরণ করে এবং কোন জীন তাতে বাধা দেয়, তা নির্ণয় করতে হবে সঠিকভাবে।

এরপর দরকার প্রতিটি হরমনের মাঝে কি ধরনের ইন্টার-অ্যাকসান হবে তা সঠিক ভাবে নির্ণয় করা। যেমন গ্লুকাগন হরমন রক্তে গ্লুকোজের পরিমান বাড়ায়, আর ইনসুলিন রক্তে গ্লুকোজের পরিমান কমায়। এদের নি:সরন স্বাভাবিক না থাকলে যে রোগটি হয় তার নাম ডায়াবেটিস! এরপর জানা দরকার প্রতিটি জীন সমন্ধ্য এবং তাদের বেজ সিকোয়েন্স সমন্ধে। দেখতে হবে কোন জীন লীথ্যাল জীনকে এক্টিভেট করে, বা সে সমস্ত হরমন নি:সরন করে যা জীবের জীবনী শক্তি কমিয়ে দেয়; এবং জীবটিকে নিয়ে যায় মৃত্যুর পথে। মৃত্যুতে আসলেই যদি হরমন দায়ি থাকে হবে ডায়াবেটিসের মত মৃত্যুকেও বেধে ফেলতে পারবে বায়োটেকনোলোজি।

আর ডায়াগনোসিস শেষে যদি দেখা যায় এর জন্য দায়ি কোন জীন, তবে তার জন্য আছে জীন থেরাপি। যেখানে বিভিন্ন পদ্ধতিতে একটি জীন অপর একটি সুস্থ জীন দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়। তাহলে কি বায়োটেকনোলোজি মানুষকে অমরত্বের স্বাদ দিতে পারবে? (কিছুটা ফিকসান হয়ে গেল ) আগের লিখাগুলো ১। জীবনের সূত্রপাত ২। জীবনের বৈশিষ্ট্য ৩।

মৃত্যুর কালো হাত আসছে >>> জীন থেরাপি

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।