আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বংগীয় আস্তিকদের উদ্দেশ্যে...তোমরা ঠিক হয়ে যাও (১০০% কপি-পেষ্ট-ফান পোষ্ট)

ওয়াঁ...ওয়াঁয়াঁ...ওয়াঁয়াঁয়াঁ...!!!

অন্যান্য গরীব মুসলিম দেশের মত আমাদের দেশেও ধর্ম না বুঝে আস্তিকদের সংখ্যা সাধারনত অনেক বেশি। সংখ্যাটি ধারনাতীত। উন্নত বিশ্বে যেখানে জ্ঞান বিজ্ঞান, শিক্ষা আরেকটু বেশি সেখানে আস্তিকদের সংখ্যাও কম। তবে বাংলা ব্লগীয় জগতে আস্তিকদের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। তারা প্রায়ই নাস্তিকদের সাথে তর্কা তর্কিতে লাগেন এবং নাস্তিকদের তুলোধুনা করার চেষ্টা করেন।

অনেক সময়ে তাদের গালাগালি করেন, তাদের স্বল্পজ্ঞানকে পুজি করে খোচা দেন বা অবজ্ঞা করেন। যেটি সব সময়ে ঠিক নয়। নাস্তিকদের পক্ষ না নিয়েই আমি তাদের দিক থেকে আস্তিকদের উদ্দেশ্যে কিছু আচরন বিধি পালনের আহবান জানাচ্ছি। সকল আস্তিকদের উচিত এসব আচরনবিধি মেনে চলা। অন্যথায় তাদের সাম্প্রদায়িক আখ্যা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে— আচরনবিধি সমুহ---- মূল লেখা এইখানে পাবেন।

১। নাস্তিকরাও মানুষ। তাদের সাথে মানুষের মত আচরন করুন। এখন যতই মতপার্থক্য থাক, মৃত্যুর পরেতো সবাই বেহেশত বা দোযখে যাবে। সবার গন্তব্যই একই হবে।

২। মত প্রকাশের অধিকার সবার আছে। নাস্তিকদের মতের সাথে আপনার মত না’ও মিলতে পারে। তাই বলে তারা মত প্রকাশ করবেন না তা তো হয় না। মাঝে মাঝে তারা তাদের মতবাদের কথা বলবেন।

আপনারা সেকারনে উত্তেজিত না হয়ে বরং যুক্তি দিয়ে আলোচনা করুন। তারা স্রষ্টা, আল্লা বা ভগবানের প্রসংশা না করে কিছু লিখলে ক্ষেপে যাবেন না। মনে রাখবেন, গনতন্ত্রে সবাই মত প্রকাশের স্বাধীনতা ভোগ করে। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে তাই। কাজেই ধর্মীয় মতবাদ কে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন না।

এমনকি সে মতবাদ আপনার পক্ষে না গেলেও। ৩। ধর্মীয় মতবাদ লালন না করার জন্য কারো কল্লার দাম ঘোষণা করবেন না। কেউ ধর্মের বিপক্ষে বললে অথবা নাস্তিক্যবাদের পক্ষে বললে তাকে মুরতাদ টাইপের কোন বিষেশণ দিয়ে হুমকী দিবেন না। মনে রাখবেন এটা বর্বর সমাজ আর মতবাদে হয়।

আপনারাও বর্বর হবেন না। ৪। আপনার আস্তিক্য মতবাদের সাথে না মিললে কাউকে মালাউন, নাসারা, নুনুকাটা, যবন এসব বলে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করবেন না। সেটি চরম সাম্প্রদায়িক হবে। আস্তিকতার মত একটি মতবাদের অনুসারী হয়েও যদি এসব তাচ্ছিল্যজনক শব্দ ব্যবহার করেন তাহলে মানুষ আর কার কাছে যাবে।

৫। নাস্তিকদের যত্নের সাথে ট্রিটমেন্ট করার দরকার নাই। অল্পতেই আঘাতপ্রাপ্ত হয় না। সেটা তাদের গুন। যেমন ধরুন, আপনি যখন একটি নাস্তিককে বললেন “উপরওয়ালা” আছে, সে এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য নাও করতে পারে।

কিন্তু যখন আস্তিককে বললেন “উপরওয়ালা” বলে কিছু নাই, সে অবিশ্বাস নিয়ে আপনার দিকে তাকাবে এবং অনেক অযৌক্তিক/মতান্তর আছে এমন প্রশ্ন/ব্যাখ্যা দিয়ে বোঝাবার চেষ্টা করবে, “উপরওয়ালা” আছে। তাই ঠিক সেরকমভাবে নাস্তিকদের ডিল করার দরকার নাই। তাদের অনুভূতি অত পাতলা নয়। সেটি তাদেরকে অযৌক্তিকভাবে উত্তেজিত করে না। “উপরওয়ালা” নাই বলে তখন যদি তারা যুক্তি দেখায় সেই গুনতো তাদের, তাই না? ৬।

কথায় কথায় মৃত্যুর পরে কবরের আযাব- দোযখের ভয় দেখাবেন না। কারন ভয় আর লোভ (দোযখ- বেহেশত) দিয়ে কোন মতবাদ প্রচার করা কোনভাবেই উচিত নয়। শুধুমাত্র চিন্তাহীন মতবাদই এভাবে চলতে পারে। আপনারা সেটা করবেন না। ৭।

পাড়ায় পাড়ায় আপনারা ধর্মীয় সভা করতে পারেন। তাই বলে নাস্তিকদের করতে দিবেন না তা তো ঠিক না। তারা যদি পাড়ায় পাড়ায় মসজিদ বানাতে না চায় এবং শীতকালে প্রতিদিন আস্তিকদের ওয়াজ মাহফিল করে শব্দ দুষনের প্রতিবাদ করে তবে ধৈর্যের সংগে সেগুলো শুনবেন। গনতন্ত্রের খাতিরে এটুকুও সহ্য করতে না পারলে আমরা কিভাবে উন্নত সভ্যতা গঠন করব। কোন নাস্তিক পেলেই ধর ধর, কমিউনিস্ট এসব বলে তেড়ে যাবেন না।

নিজেরা এত বাধাহীনভাবে আস্তিকতার সভা করতে পারেন আর তাদের বাকস্বাধীনতা দিবেন না সেটা তাহলে স্বেচ্ছাচারিতার উদাহরন হয়ে থাকবে। ৮। কেউ যদি আস্তিকতা ছেড়ে নাস্তিকতায় ফিরে যেতে চায় তাহলে তাকে সহজে যেতে দিন। মতবাদ পরিবর্তনের কারনে তাকে সামাজিকভাবে বয়কট বা তার উপর ও তার পরিবারের উপর হামলা করবেন না। তাকে মৃত্যুদন্ড দিবেন না।

নিজের মতবাদ ছেড়ে গেলেই মৃত্যুদন্ড – এটি একটি স্বেচ্চাচারি নিয়ম। মনে রাখবেন আধুনিক সমাজে যে কারোরই যেকোন মতবাদ গ্রহন, বর্জন ও প্রচারের অধিকার থাকে। আপনারা মধ্যযুগীয় কায়দায় এসব বিষয় নিয়ে ডিল করবেন না। ৯। মেয়েদের জোর করে বোরখা পরে থাকতে বলবেন না।

কারন বোরখা পরা বা না পরার অধিকার সবারই আছে। কেউ যদি পরতে না চায় সেটা তার ইচ্ছা। জোর করে কাউকে বোরকা পরে থাকতে বলা শুধু নারী স্বাধীনতাই হরন করে তা না, সেটা অন্যের স্বাধীন ইচ্ছাকেও অসম্মান করে। ১০। নিজের ধর্মই শ্রেষ্ঠ আর অন্য সব ধর্ম/মতবাদ ভুয়া এসব বলবেন না।

মনে রাখবেন শুধুমাত্র চিন্তাহীন ব্যক্তিরাই এসব বলতে পারে। তখন তাকে মৌলবাদ বলা হয়। কাজেই নিজের ধর্ম শ্রেষ্ঠ – এরকম ভুল বিষয় প্রচার থেকে বিরত থাকুন। ১১। নাস্তিকরা যদি আপনাদের সম্পর্কে কোন কঠিন সমালোচনা করে বা কড়াভাবে ব্লগে বা ফেইসবুকে বা ইউটিউবে কিছু না লিখে বা না পোষ্ট করে তাহলে সে ব্লগ গুলোকে উস্কানী বা খারাপ কিছু লিখতে উৎসাহী করবেন না।

সেটি হবে চরম কুপমুন্ডকতা। ১২। নাস্তিকদের উপর অযথা হয়রানী বা বাড়তি ট্যাক্স এসব আরোপ করবেন না। এগুলো চরম বিদ্বেষ ভাবাপন্ন কাজ। আইন সবার জন্য সমান।

কারো উপরে মতবাদিক কারনে বাড়তি ট্যাক্স আরোপ একটি বর্বর আইন। নাস্তিকদের বিরুদ্ধে কথা বলা যাবেনা- এধরনের ইনডেমনিটি তথা ব্লাসফেমি আইন অত্যন্ত একপেশে এবং অমানবিক। ১৩। আর সর্বশেষে বলি, প্রতি দু দিন পর পর ধর্ম (মাংসে, ফুলে, আকাশে, গাছে ফটোশপ দিয়ে বানানো সৃষ্টিকর্তার নাম, কী কারনে নিজের ধর্মই শ্রেষ্ঠ, কিভাবে কূটবুদ্ধিসম্পন্ন যুদ্ধবাজ ব্যাবসায়ী ব্যাক্তি/ব্যাক্তিবর্গ পূর্বপুরুষের ধর্মীয়বিশ্বাসকে ছুড়ে ফেলে নতুন মতবাদ উপস্থাপন এবং প্রসার করেছে ইত্যাদি) নিয়ে পোষ্ট দিবেন না। পোষ্টের অর্ধেকই যদি আপনারা ধর্ম দিয়ে ভরিয়ে রাখেন তাহলে কিভাবে হবে।

তাহলেতো মানুষ আপনাদের মৌলবাদী/জংগী টাইপ কিছু একটা বলবে। আর বার বার একই বিষয় নিয়ে, একই ধরনের প্রসংশামুলক বা ব্যাখ্যামুলক প্যান প্যানানি পোষ্ট দেয়া থেকে বিরত থাকুন। সেটা যেমন একঘেয়ে লাগবে তেমনি সেটা সবার জন্য বিরক্তির কারনও হবে। - আজ এ পর্যন্তই। এর সাথে আরো কোন আচরন বিধি যদি আপনাদের মনে পড়ে তাহলে জানাতে ভুলবেন না।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।