আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঘুরলাম...ঘারলাম...!!!

মাঝে মাঝে মনে হয় বেরিয়ে পড়ি 'একতারা'টা হাতে নিয়ে......"দরবেশ বানায়া দাও মাওলা.........দরবেশ বানায়া দাও। । । "

কোথাও থেকে ঘুরে এসে সেটার উপর ভ্রমন কাহিনী জাতীয় লেখা বড়ই জটিল টাইপ মনে হয়। ।

। কেন যেন মনে হয় যেখানে গেলাম সেখানকার একটা তথ্য সমৃদ্ব ঐতিহাসিক ক্যাচকাচানি থাকা দরকার...তথ্যবহুল বিবরন দেয়া লাগবে কি কি দেখলাম এবং ভুল ইনফো দিলে আবার রাম ধরা খাওয়ার সম্ভাবনা!!! এনিওয়ে; বাদদেই এই ক্যাচালি.....যাষ্ট বলি, চারদিন আগে বউ-বাচ্চা নিয়া লন্ডন থেকে স্কটল্যান্ড এর পেরায় শেষ মাথা এবারডিন পর্যন্ত ক্রেজি একখান ড্রাইভ কর্লাম। মোট ২০০০ কিলোমিটার এরও বেশী ড্রাইভ করছি একাএকা....কোন ব্যাকআপ ড্রাইভার ছাড়াই...সবাই কইছিল ব্যাকআপ ছাড়া না যাইতে; কিন্তু মাথায় ...... (!!) উঠছে আ ব্যাকআপ কাউরে পাই না!!! সো কি আর করা, একলা রওনা দিলাম। আপাতত এদ্দুর...পরে আবারো ক্যাচাবো আবারো শুরু করি, রওনা তো দিলাম পীর-মুর্শিদের নাম লইয়া। চইদ্দ ঘন্টা লাগাইলাম লন্ডন থিক্কা এবারডিন পৌছাইতে; অবশ্য চাইরবার ব্রেক নিছি।

যাই হোক, যেইটা ভাল লাগছে সেইটা হইল এবারডিন এর হোটেলটা, পুরাতন একটা ক্যাসেল কে হোটেলে কনভার্ট করছে। পাহাড়ের মাঝামাঝি মূল ক্যাসল আর আশপাশ জুড়ে বিশাল জায়গা-জংলা (অবশ্যই কাইন্ড অফ ছবির মত সাজানো) নিয়া হোটেল এরিয়া (ভাল কথা ডিসকাউন্ট পাওনের কারনে এইটায় উঠতে পারছি, নাইলে চিন্তাও কর্তে পার্তামনা)। ভাল লাগছে মেয়েটা যখন সকালবেলা হোটেলের আশপাশের জায়গায় খরগোশের পিছনে দৌড়াদৌড়ি করছে। বড়ই আনন্দময় একটা দৃশ্য (বাবা হয়ে টের পাই সন্তানের আনন্দ দেখলে কতটা ভাল লাগে....মা-বাবা তোমরা যে কত দুরে....দেখ তোমাদের সন্তান তার সন্তানের আনন্দ দেখে আনন্দ পাচ্ছে....বুক জুড়ানো আনন্দ....তবে কষ্ট, বড় কষ্ট...তোমরা তোমাদের সন্তানের আনন্দ দেখতে পাচ্ছ না। ।

। । )। কোত্থেকে কি!! ভাল লেগেছে স্কটিশ হাই-ল্যান্ড দেখে, তাদের চমৎকার এবং বিভৎস কিছু ইতিহাস জেনে (এব্যাপারে কপচাইতে চাই না, চাইলেই নেট ঘেটে জেনে নিতে পারেন যে কেউই)। খুব ভাল লেগেছে লেক নেস (Loch Less) দেখে।

ইংরেজীতে Lake বললেও স্কটল্যান্ড এ Lake কে বলে Loch, উচ্চারনটা একটু জটিলভাবে গলার অনেক ভিতর থেকে 'গড়গড়া সহ' করতে হয়...আগে জানা ছিল না। তবে ওদের একটা Lake আছে যেটাকে ওরা ইংরেজী উচ্চারনেই Lake বলে। এক স্কটিশ বিট্রেয়ারকে স্মরন করেই এভাবে বলে (সেই মীর জাফর যোদ্ধাটার !!!! নাম মনে করতে পারছি না এই মুহুর্তে)। যাইহোক, যারা লক নেস (Loch Less) এবং এর বিখ্যাত মনস্টার (!!! প্রচন্ড রকম বিতর্কিত) সম্পর্কে আরো জানতে চান; একটু কষ্ট করে গুগল করুন, পেয়ে যাবেন। নিচে Loch Less এর সেই মনস্টার (যার নাম হচ্ছে Nessie) এর সেই বিতর্কিত ছবিটা দিলাম : এই মনস্টার থাকুক আর নাই থাকুক লেকের মূল পর্যটন স্পটে এটা এবং এটার বিভিন্ন মার্চেন্ডাইজ নিয়ে তারা যে পরিমান ব্যবসা করছে তা অবাক করার মতো!!! সঠিক বিপনন জানা থাকলে কত অখাদ্য-কুখাদ্যও যে মানুষ অবলীলায় খায় তার একখান খাস নমুনা ।

তবে লেকটার ব্যাপকতা এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য....ওম্ আসলেই মন ভাল করিয়ে দেয়। লেকের পাড়েই দিনের পর দিন বসে অনায়াসে কাটিয়ে দেয়া যাবে, যদি বিখ্যাত বৃটিশ (স্কটিশ হবে!!!) ওয়েদার আপনার ফেভারে থাকে। আজ এদ্দুরই...পরে আবার গ্যাজাবো সে যাই হোক আবারো শুরু করি; এবারডিন ছিলাম দুই রাত। এরপর রওনা দিলাম গ্লাসগোর উদ্দেশ্য। যাবার পথে 'ব্লেয়ার-ডারমন্ড' সাফারী পার্কে সারাদিন কাটিয়ে যাওয়ার প্লান।

খোলামেলা বন্য পশু-প্রাণীর সাথেই ধীরে ধীরে গাড়ি চালিয়ে যাওয়া। এছাড়াও রয়েছে আরো নানান এক্টাভিটির ব্যবস্থা। একদিন যথেষ্ট বলে মনে হয়নি। আবারো আসতে হবে সময় নিয়ে। জীবনে সবচেয়ে সুন্দর বান্দর টা এখানেই দেখলাম।

কি অদ্ভুত সুন্দর ছোট্ট একটা বান্দর....নিজ মনে খেলছে, খাচ্ছে। । । গ্লাসগো এসে হোটেলে উঠলাম। এখানে থাকার পরিকল্পনা দু'দিন।

খুবই পুরাতন টাইপ শহর, একসময় জাহাজ শিল্পের জন্য বিখ্যাত ছিল। এখন আগের সেই রামও নাই....দশা। । তবে টুরিষ্টবাসে করে সারাদিনের একটা লম্বা ট্যুর দিলাম। স্কটিশ হাইল্যান্ড সহ অনেক যায়গায়ই নিল ব্যাটা।

তবে আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম আরো অনেক সুন্দর বলেই মনে হয় আমার। শুধু সুন্দর যোগাযোগ ব্যাবস্থা আর ভ্রমনে যাওয়া মানুষ গুলোর জন্য কিছু সুযোগ-সুবিধা থাকলেই আর পায় কে!!!!! কিন্তু কি আর করা??? তবুও এখনো যে বন্য সৌন্দর্য আমাদের পার্বত্য এলাকায় আছে.....থাকনা এভাবেই। গত দুই রাত ভাত খাই নাই। আজকে রাতে ভাত না খাইলে হবে না। বাংগালী পেট, দুইটা রাইত ভাত পরে নাই...কেমুন কেমুন জানি লাগে।

। । খুজে পেতে ইন্ডিয়ান রেষ্টুরেন্ট একটা বাইর করলাম। খাবারের দাম দেখে ক্ষুধা পালানোর অবস্থা!!! কিন্তু ভাত যে খেতেই হবে...এবং খাইলাম। পেটে হাত বুলাতে বুলাতে তৃপ্তির ঢেকুর তুলি আর ভাবি....পয়সা বেশী গেলেও খাইয়া আরাম পাইলাম....আর ভাতই তো খাইলাম।

। । । যাক, সারাদিনের এই ট্যুর টা নেয়ার কারনে আমার অন্তত একটা দিন রেস্ট হল গাড়ি চালানো থেকে। পরদিন দেরী করে ঘুম থেকে উঠে মোটামুটি গলা পর্যন্ত নাস্তা করার চেষ্টা করলাম।

প্রথমত ইনক্লুডেড ছিল, দ্বিতীয়ত যতখুশি তত খাও। সো মোটামুটি দুপুরেরটা না খেলেও চলে মতো মত করে ফুল করে নিলাম। কথাছিল সোজা লন্ডনের দিকেই রওনা দিব এবং শুরুও করছি ময়-মুরুব্বীর নাম নিয়া। এর মইধ্যে আবার রা উঠল একটু ঘুইরা গেলেই তো লেক ডিস্ট্রিকটা দেখা যায়!!!! একে তো নাচুনে বুড়ি...তার উপর ঢোলের বাড়ি। ।

। । গাড়ি ঘুরে গেল লেক ডিস্ট্রিক এর দিকে। লেক ডিস্ট্রিক হচ্ছে ইংলান্ড এবং স্কটল্যান্ড এর মাঝামাঝি চমৎকার একটি জায়গা। লেক-পাহাড়-সাগর আর বন-জংগল নিয়ে অদ্ভুত সুন্দর একটা জায়গা।

৪/৫ ঘন্টার মতো কাটালাম এখানে। সুন্দর-শান্ত প্রকৃতির সাথে মাখামাখি করা একটা ব্যাপার আছে সবখানে। .....সময় শেষ এবার বাড়ি ফেরার পালা। দেহ-মেনে প্রকৃতি ধারন করে এবার বাড়ি ফিরে চলছি। চমৎকার ওয়েদার, চারপাশের প্রকৃতিও সুন্দর....গাড়ি চলছে..এক পর্যায়ে দেখি বউ, শালী, শালী জামাই সবাই ঘুম।

। । । আমাকে তো জেগে থাকতেই হবে...আর আমাকে সংগ দিচ্ছে আমার আড়াই বছরের মেয়ে। ।

। ব্যাকভীউ মিররে তাকালেই একটা মিষ্টি হাসি আর জানান দেওয়া - "বাবা ইউ গুড বয়" (মেয়ে মাঝে মাঝেই আমাকে বলে...ঘরের কাজ-কর্ম করার সময়!!!) আমি সাথে আছি। । । ।

***আইলশ্যা আমি লেখাটা কয়েক বারের চেষ্টায় শ্যাষ করলাম*** **** কিছু ছবি দিলাম আজকে - ১. পাহাড় - ২. সাগর আর আমার মেয়ে - ৩. এই হোটেলেই ছিলাম। বাইরে অনেক খরগোশ, সকালে উঠেই মেয়ে খরগোশের পিছনে - ৪. এবার সাগর - ৫. আরো সাগর - ৬. আবারো সাগর - ৭. এবার সরিষা ক্ষেত -

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।