আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফেসবুক মাতম !



ফেসবুক বন্ধ করা নিয়ে আমাদের মিডিয়া,তরুন সমাজ আর সামু ব্লগে যে মাতম শুরু হয়েছে তা বিস্ময়কর। সরকারকে,সরকারী কর্মচারীদের হেন অশালীন ভাষা নেই যে ভাষায় আক্রমন করা হয়নি। এই উন্মাদনা দেখে বোঝা যায়, আমাদের সহজলভ্য কম্পিউটার আর নেট সুবিধা কি কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। ফেসবুক হচ্ছে পাশ্চাত্যের একাকী জীবনের সঙ্গী। তাদের ব্যক্তিজীবন একাকীত্বে ভরা।

স্বামী, স্ত্রী, সন্তান অনেক ক্ষেত্রেই অনেক দূরে আলাদা বাস করেন। একত্রে থাকলেও ভিন্ন সময়ে অফিস/ডিউটির কারণে সবার সাথে সবার প্রতিদিন দেখা হয না। বাবা-মা তো বহু আগে থেকেই আলাদা। ফাদার্স ডে, মাদার্স ডে এলেই বাবা-মার খোঁজ পড়ে। এই ভয়াবহ অবস্থায় তাদের সঙ্গী হয় যন্ত্র।

বই, টিভি, রেডিও,কম্পিউটার, ইন্টারনেট তাদের সঙ্গী। প্রাণীদের মধ্যে কুকুর বিড়াল তাদের সঙ্গী হয়। সেই ভয়াবহ সমাজে ফেসবুক দরকারী। আমাদের সমাজে মানবিক ও পারিবারিক সম্পর্কগুলো অনেক সক্রিয়। প্রতিদিন আমাদের পরষ্পরের সাথে দেখা হয়।

সাম্প্রতিক কালে বড় কিছু শহরে কোন কোন পরিবারে পাশ্চাত্য চীবন শুরু হয়েছে। তবে এরা যে খুব বেশী ফেসবুক নির্ভর তা মনে হয় না। কারণ আমাদের এখানে হাতেনাতে বন্ধু পাওয়া সহজ। যন্ত্রের দূরত্বের ভিতর দিয়ে খুব বেশি পাবার দরকার হয় না। তবু ফেসবুক নিয়ে এত মাতম কেন ? কারণ হয়ত আধুনিক পাশ্চাত্যজীবনের প্রতি এক ধরণের মোহ।

এই মোহ কী তবে নেশায় রূপ নিচ্ছে ? নেশা ছাড়া এতো উন্মাদনা থাকার কথা নয়। এ উন্মাদনা আরেকটা বিষয় সামনে এনেছে। সেটা হলো পাশ্চাত্যের প্রকৃত জীবন সম্পর্কে ধারনার অভাব। কারণ পোস্ট বা লেখা দেখে বা মিডিয়ায় কমেন্ট দেখে মনে হয় আমাদের ধারনা বাংলাদেশ ছাড়া পৃথিবীর আর কোথাও কোন কিছু নিষিদ্ধ হয় না। অথচ অল্প কিছুদিন আগে চীন গুগলের সাথে সব সম্পর্ক চুকিয়ে দিয়েছে।

অনেক দেশেই আমাদের মত সব ধরণের স্যাটেলাইট টিভি চালু নেই। আমাদের একটি চ্যানেলও ভারতে দেখা যায় না। আমাদের দেশের কোন বইও ভারতে বিক্রির জন্য পাঠানো যায় না। আমেরিকা, ইংল্যান্ড, কানাডা বা অস্ট্রেলিয়া অর্থাত পাশ্চাত্য বা তার মত উন্নত দেশ গুলোতে আমাদের মত এক বিলে দুনিয়ার সব চ্যানেল দেখা যায় না। প্রতি চ্যানেলের জন্য আলাদা বিল দিতে হয়।

তারপরও আমি চাই ফেসবুক খুলে দেয়া হোক। যেটা আপত্তিকর সেটা বন্ধ করা যায়। বাকীটা নয়। আমি চাইনা আমার দেশ অন্য দেশের খারাপ জিনিস নকল করুক। সব জিনিসের যেমন ভাল মন্দ আছে।

ফেসবুকের ভালোর সাথে কিছু মন্দ দিকও আছে। মন্দ দিক ব্যবহারকারীরা নিজ বিবেকমত এড়িয়ে চলবেন। না চললে সে ব্যক্তি নিজ দায়িত্বে নিজের ক্ষতি করবেন। সমাজ তা নিয়ে মাথা না ঘামালেও চলবে। আমি চাই না আমার দেশ পাশ্চাত্যের দেশগুলোর মত ভন্ডামী করুক।

সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.