জামায়াত, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির বেশ কয়েকজন নেতাকে যুদ্ধাপরাধীর অভিযোগে চিহ্নিত করে শীর্ষ ১৯ যুদ্ধাপরাধীর তালিকা প্রদান করেছে ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইলস-এর আহ্বায়ক ড. এম কে হাসান। আজ পুরাতন হাইকোর্টে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তৃতীয়বারের মতো উপস্থিত হয়ে এ তালিকা তদন্ত সংস্থায় জমা দেন তিনি। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে ড. এম কে হাসান আন্তর্জাতিক
অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তা আব্দুর রহিমের কাছে শীর্ষ ১৯ যুদ্ধাপরাধীর তালিকাসহ সারা বাংলাদেশের মধ্যে ময়মনসিংহ জেলার ১৫৬ জনের যুদ্ধাপরাধীর তালিকা, ঢাকার মিরপুরের ২৫টি বধ্যভূমি ও মুক্তিযুদ্ধের সময় মিরপুরে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের তালিকা, বরিশাল জেলার ৬৪ জন যুদ্ধাপরাধীর তালিকা, ৭৯ জন অবাঙালি যারা তৎকালীন কসাইয়ের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিল তাদের তালিকা ও মানচিত্র দিয়েছেন বলে জানান।
তদন্ত সংস্থায় তথ্য উপাত্ত প্রদান শেষে শীর্ষ ১৯ যুদ্ধাপরাধীর তালিকায় দলীয় ব্যক্তিদের নাম প্রসঙ্গে তিনি সাংবাদিকদের জানান, শীর্ষ ১৯ যুদ্ধাপরাধীর তালিকায় আওয়ামী লীগ দলীয় কোনো নেতার নাম নেই। তবে বিএনপি, জামায়াত, জাতীয় পার্টির দলীয় নেতা ছাড়াও দলের বাইরে বিভিন্ন ব্যক্তির নাম রয়েছে।
তিনি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টিতে কোনো রাজাকার নেই এ সংক্রান্ত বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, তিনি নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বলতে পারেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় জাতীয় পার্টির নেতা সৈয়দ কায়সার ও তার ভাইয়ের কী ভূমিকা ছিল তা স্থানীয় ব্যক্তিরাই বলতে পারেন।
তদন্ত সংস্থার প্রাথমিক তদন্ত সম্পর্কে তিনি বলেন, পুরো বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে মিরপুরে। প্রাথমিক তদন্তের জন্য ঢাকার বাইরে না গিয়ে ঢাকার মধ্যে তদন্ত কাজ শুরু করা উচিত।
তদন্ত কাজের গতি সম্পর্কে তিনি সাংবাদিকদের জানান, আবদুল মতিনের পদত্যাগের পর জনগণের মনে দ্বিধা-সংশয় ছিল।
তবে সংশয়-দ্বিধা কাটিয়ে তদন্ত সংস্থা এগিয়ে চলেছে। তদন্ত সংস্থাকে বেগবান করতে সরকারের আরো সহযোগিতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা অবিলম্বে প্রদান করার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। তদন্ত সংস্থায় লোকবল বাড়াতে হবে।
ট্রাইব্যুনালে বিতর্কিত ব্যক্তির নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিতর্কিত ব্যক্তিদের নিয়োগের বিষয়ে সরকারকে অবশ্যই সাবধান হতে হবে।
এখানে যুদ্ধাপরাধীরা বিচার বানচালের জন্য নিয়োগ পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। এছাড়া সরকারের অনেক কর্মকর্তা এ পদগুলোতে আগ্রহী। তাই এ বিষয়গুলোর প্রতি তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখতে হবে সরকারকে।
এ সরকারের আমলে যুদ্ধাপরাধীর বিচার নিষ্পত্তি হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকারের আগামী তিন বছরের মধ্যে মুখ্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিষ্পত্তি হতেই হবে। তারপর ধীরে ধীরে অপর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হবে বলে তিনি আশা করেন।
অন্যদিকে, তদন্ত কর্মকর্তা আবদুর রহিম সাংবাদিকদের জানান, শীর্ষ ১৯ জনই নয় আরো বেশি যুদ্ধাপরাধীর বিচার করা যাবে।
তদন্ত কাজে অবকাঠামোগত সুবিধা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আইন মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে আলোচনা চলছে। খুব শিগগিরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।