আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যৌতুক নিরসনঃ ছেলে-মেয়েদের আত্ম মর্যাদাবোধ সৃষ্টি।

স্বপ্নচারী।

যৌতুক একটি ঘৃণ্য সামাজিক ব্যাধি। আমাদের সমাজে কখন থেকে যৌতুক প্রথাটি প্রচলিত হল তা যথাযথভাবে বলা মুশকিল। তবে ধারণা করা হয় হিন্দু সমাজে পণপ্রথা হিসেবে এটি সর্বপ্রথম চালু হয়। পরবর্তীকালে অন্যান্য ধর্মীয় সম্প্রদায় যৌতুক প্রথার দ্বারা প্রভাবিত হয়।

প্রাচীনকালে মান মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য কনে পক্ষ বর পক্ষকে সন্তুষ্টিচিত্তে নানা প্রকার উপহার সামগ্রী প্রদান করত। এভাবেই যৌতুক প্রথার প্রচলন। যৌতুক নিরসনে ছেলে-মেয়েদের আত্ম-মর্যাদাবোধ বৃদ্ধির উদ্যোগ বিশেষ গুরুত্ববহ। কারণ বাংলাদেশে এখনও এমন অনেক পরিবার আছে যেখানে পরিবার প্রধানের ইচ্ছায় ছেলে-মেয়েদের বিয়ে নির্ধারিত হয়ে থাকে। যেখানে ছেলে-মেয়েদের ব্যক্তিগত মতকে উপেক্ষা করা হয়।

অনেক সময় পরিবার প্রধান বা অভিভাবকগণ যৌতুক গ্রহণে পূর্বেই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। এ ব্যাপারে শিক্ষিত ছেলে-মেয়েদেরকে কখনো কখনো নির্বাক থাকতেও দেখা যায়। মেয়েদের প্রতি অবজ্ঞাসুলভ মনোভাব বিশেষ করে গ্রামে মেয়েরা পুরুষদের দ্বারা ভীষনভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। সেখানে পুরুষদের মনোভাব এমন যে, মেয়েরা কেবলমাত্র গৃহস্থালী কাজে মনোনিবেশ করবে। উচ্চ শিক্ষা কিংবা গৃহস্থালী কাজের বাইরে অন্য কোন কাজে তাদের মনোনিবেশ করার প্রয়োজন নেই।

মেয়েদের প্রতি এরূপ মনোভাব তাদের আত্ম-মর্যাদাবোধ বৃদ্ধিতে অন্যতম অন্তরায়। যৌতুক প্রসঙ্গে সবচেয়ে ভয়ানক মনোবৃত্তীয় ব্যাপারটি হল মেয়ে ও মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে বিবাহ বিচ্ছেদের ঝুঁকি গ্রহণ করতে না চাওয়া। সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হবার কাল্পনিক শঙ্কা তাদেরকে এমনভাবে আচ্ছন্ন করে রাখে যে, তারা বিবাহ বিচ্ছেদের চেয়ে নির্যাতন সহ্য করাকেই শ্রেয় মনে করে। যৌতুক প্রথা দরিদ্র পরিবারে এক বড় অভিশাপ। দারিদ্রতা মানুষকে কখনো কখনো সামাজিক মূল্যবোধ এর প্রতি বিতশ্রদ্ধ করে তোলে।

এ থেকে আত্মমর্যাদাবোধ জাগ্রত হয়না। আত্ম-মর্যাদাবোধ বৃদ্ধি বা জাগ্রত করার প্রক্রিয়া একটি সামাজিক শিক্ষণ প্রক্রিয়া, যা শুরু হয় পরিবার থেকে। সুস্থ্য পারিবারিক পরিবেশ এবং সঠিক পারিবারিক অনুশাসন ছেলে-মেয়েদের আত্ম-মর্যাদাবোধ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালণ করে। পারিবারিক নিরাপত্তা আর সৌহার্দ্যপূর্ণ আবহাওয়ায় লালিত ছেলে-মেয়েরা পরবর্তী জীবনে সুশৃঙ্খল হয়ে থাকে। একটি পরিশুদ্ধ সমাজ ব্যবস্থা বিনির্মাণে ছেলে-মেয়ে উভয়ের ভূমিকা সমান্তরাল হওয়া বাঞ্চনীয়।

এখানে উভয়কেই স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সমর্থ হতে হবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.