আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যোদ্ধাপরাধীদের বিচার ও একজন বীরশ্রেষ্ঠের স্ত্রী প্রসংগে আমার লেখা থেকে

গ্রাম-প্রকৃতি-সবুজ-সারল্য যেখানে মিলেমিশে একাকার, সেখানে ফিরে যেতে মন চায় বার বার।

বাংলাদেশে বহু প্রতীক্ষীত যোদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রসংগটি এখন প্রক্রিয়াধীন। বলতে পারি সময়ের ব্যাপার মাত্র। বীরশ্রেষ্ট মতিউর রহমান এর স্ত্রী মিলি রহমান ২০০৬ সালের ২৫ ডিসেম্বর ভৈরব রেলওয়ে হাইস্কুলের ৫০ বৎসর পুর্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এদেশের স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকারদের প্রসংগে যে কথাটি বলেছিলেন আমি মনে করি জাতির এমন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সেটা অনেকের জানা খুবই জরুরী। মিলি রহমানকে যখন বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান সরকার তখন মিলি রহমান একটিবারের জন্য তার স্বামীর কবরটি দেখতে চেয়েছিলেন।

কর্তৃপক্ষ তাকে অনুমতি দিলেও একটি শর্ত জুড়ে দেয়-কবরের কাছে যাওয়া যাবেনা, দূর থেকে দেখতে হবে। মিলি রহমান তাই মেনে নেন। কিন্তু যে ব্যাপারটা তাকে ব্যথিত করেছিল এবং আমাদের গোটা জাতির জন্য যে বিষয়টা অত্যন্ত পীড়াদায়ক তা হলো মতিউরের কবরের পাশে টানিয়ে রাখা একটি সাইনবোর্ড। তা হলো- ও গাদ্দার, ওর কবরে থু থু দিয়ে যাও। পাশেই আর একটি কবর পাকিস্তানী ক্যাপ্টেন রশিদ মিনহাজের যে একই দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছিল।

ঐ সাইনবোর্ডে লেখা ছিল--ও দেশপ্রেমিক, ওকে স্যালুট দিয়ে যাও। ঘটনাটা এ পর্যন্ত খুবই স্বাভাবিক। কারণ, স্থানটা পশ্চিম পাকিস্তানের। এমনকি সময়টাও তখন পর্যন্ত ছিল তাদের অনুকূলে। কিন্তু এখানেই শেষ নয়।

বীরশ্রেষ্ট মতিউর রহমান এর মেয়ে ও মেয়ের জামাই ১৯৮৯ সালে তাদের বাবার কবর দেখতে পাকিস্তান গিয়েছিল। আশ্চর্যের এবং আমাদের জন্য কষ্টের ব্যাপার হলো ওরাও ৭১ সালের সেই সাইনবোর্ডটা তাদের বাবার কবরের পাশে দেখে এসেছে। মিলি রহমানের প্রশ্নটা ছিল এখানেই। পাকিস্তানীরা যদি ওদের দৃষ্টিতে একজন গাদ্দারকে এতদিন ধরে গাদ্দার হিসেবেই চিহ্নিত করে আসতে পারে তাহলে আমরা কেন পারিনা যোদ্ধাপরাধী রাজাকারদের ঘৃণা করতে? আমরা এমন কি ফেরেশতা হয়ে গেলাম যে যোদ্ধাপরাধীদের একাত্তরের কীর্তিকলাপ ভুলে গিয়ে ক্ষমতার অংশীদারিত্বে টেনে এনেছিলাম? আমরা অতীতে যাই করে থাকি না কেন এখন সময় এসেছে সেই ভুল শুধরে নেবার। তাই আসুন সবাই যোদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যকর করতে সরকারকে সহযোগীতা করি।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।