আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লে. কর্ণেল মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম এর পরকীয়ার বলি ডাঃ আপসা । কাঁদতে আসিনি , ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি।

যারা ঈমান এনেছে আল্লাহ তাদের অভিভাবক ,তাদেরকে তিনি বের করে আনেন অন্ধকার থেকে আলোর দিকে । ২৫৭ , সুরা বাক্বারা । গতকাল ২২ মে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডাঃ মোসাম্মৎ শেজাদী আপসার ছোট ভাই ডাঃ জাভেদ হোসেন নিম্নোক্ত লিখিত বক্তব্য পেশ করেন। “প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ, আসসালামু আলাইকুম। আমার বড় বোন ডাঃ মোসাম্মৎ শেজাদি আপসা (৩৪)কে গত ২৪ মার্চ, ২০০০ সালে মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, পিতা- মৃত দেওয়ান আলী, সাং- হুগরিয়া পাড়া, (মসজিদের পার্শ্বের বাড়ী), থানা ও জেলা- নরসিংদী এর সহিত ইসলামী শরা শরীয়ত মোতাবেক পারিবারিক ভাবে বিবাহ দেয়া হয়।

বিবাহের পর মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামের ঔরষে এবং আমার বড় বোন ডাঃ মোসাম্মৎ শেজাদি আপসার গর্ভে একজন পুত্র সন্তান জন্মগ্রহন করে। তাহার নাম আহনাফ ইনতিসার সামিন(১০)। ইতিমধ্যে মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জনৈকা আয়েশা (মলি) নামীয় এক মহিলার সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। চাকুরির সুবাদে মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম শান্তি মিশনে লাইবেরিয়া চলে যায়। তিনি শান্তি মিশনে থাকা অবস্থায় তাহার পরকীয়া প্রেমিকা আয়েশা (মলি) কর্তৃক প্রেরিত চিঠি মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামের তৎকালীন চাকুরী স্থল হালিশহর আর্টিলারি সেন্টারের বাসায় ঠিকানায় আসে।

উক্ত চিঠির বিষয়বস্তু প্রেম সংক্রান্ত হওয়ার কারণে আমার বোন চিঠির বিষয়টি অফিসের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা এবং আমাদের অবহিত করলে সেনা কর্মকর্তাগণের নির্দেশে আসামীকে লাইবেরিয়া থেকে দেশে ফেরত আনা হয়। বিষয়টি তিনি মৌখিকভাবে স্বীকার করলে কর্তৃপক্ষ তাকে সতর্ক করে পুনরায় লাইবেরিয়া যাবার অনুমতি প্রদান করে। পরবর্তীতে মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম দেশে ফিরে এসে ইতিপূর্বে তার বিরুদ্ধে আনীত পরকীয়ার অভিযোগ করার জন্য প্রতিশোধ হিসেবে আমার বোনের উপর শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করতে থাকে এবং আমার বোনকে হত্যার হুমকি দেয়। এক পর্যায়ে নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় আমার বোন আমাদের অবহিত করলে আমি এবং আমার মা অত্যাচারের বিষয়টি তার ভাই মফিজুদ্দীন ও মাতাকে অবহিত করলে তারা এই বিষয়ে কর্নপাত করে নাই বরং তারাও আমার বোনকে মানসিকভাবে নির্যাতন করতে থাকে। আমার বোন অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বাধ্য হয়ে গত ৩০/০৪/১৩ ইং তারিখে মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামের বর্তমান ঠিকানা হইতে পুত্র সন্তানসহ পিত্রালয়ে চলে আসে।

পরবর্তীতে মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম ও তার ভাই মফিজউদ্দীনের অনুরোধে এবং কোন প্রকার নির্যাতন না করার আশ্বাস দেয়ার প্রেক্ষিতে আমার বোন গত ০৭/০৫/১৩ ইং তারিখে তার স্বামীর ক্যান্টনম্যানস্থ বাসায় ফিরে যায়। কিন্তু এই সময়ে তার স্বামী পূর্বের চেয়ে অধিক মাত্রায় শারীরিক ও মানসিকভাবে আমার বোনকে নির্যাতন করতে থাকে। এই সময়ে তার স্বামী মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম পরকীয়ার আসক্তিতে পারিবারিক মূল্যবোধ বিসর্জন দিয়ে আমার বোনকে নানা ভাবে অপমান, অসম্মান করতে থাকে। আমার ভাগ্নের মুখের দিকে তাকিয়ে সন্তানের সুখের কথা ভেবে আমার বোন সবকিছু সহ্য করে আসছিল। মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামের ভাই মফিজউদ্দীন এবং শফিকুলের বন্ধু আব্দুল বাসেত এবং অপর বন্ধু ইমদাদুল হক তালুকদার সোহেল বিভিন্ন সময় আমার ভগ্নিপতিকে আমার বোনকে মারধোর এমনকি হত্যার জন্য প্ররোচনা দিত এবং বলত সেনা বাহিনীর অফিসার দ’চারটা খুন করলে কিছুই হয় না।

বিগত ১৩/০৫/১৩ তারিখে সকাল আনুমানিক ৭টার সময় মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম আমার বোনকে লোহার রড দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে পেটাতে থাকে। তখন এই বিভৎস্য চিৎকার ও কান্নার শব্দ পেয়ে প্রতিবেশি শামীমা আহম্মদ (স্বামী-মেজর মনোজ) শফিকুল ইসলামের হাত থেকে আমার বোনকে রক্ষা করার চেষ্টা করেন। বিগত ১৩/০৫/১৩ ইং তারিখে মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম আমার আম্মাকে ফোন দিয়ে খুব খারাপ ব্যবহার করে এবং দ্রুত কুমিল্লায় আসতে বলে। আমি আমার বোনের কাছে ফোন দিলে বোন কাদতে কাঁদতে শারীরিক নির্যাতনের কথা বলে। আমার মা এবং আমি ঢাকা থেকে কুমিল্লা ক্যান্টনম্যানস্থ নিলিমা ৭৪-এর বাসায় আনুমানিক দুপুর ১.৩০ ঘটিকার সময় পৌছালে আমার বোনের মৃত্যুদেহ বেড রুমের ফ্লোরে চাদর দিয়ে ঢাকা অবস্থায় দেখতে পাই।

আমার বোনের লাশ বেডরুমের ফ্লোরে থাকা অবস্থায় পুলিশ আনুমানিক ৩ ঘটিকার সময় আসে ও সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে এবং আমার বোনের ঠোটে, দাতের মাড়ী দিয়ে রক্ত পড়া, শরীরের বিভিন্ন স্থানে কালোদাগসহ জখম দেখা যায়। মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম ও অন্যান্য কুমতলবী ভাই ও বন্ধুদের প্ররোচনায় আমার বোনকে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে। আমার বোনের মরদেহ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্ত করার পর কুমিল্লা থেকে ঢাকায় এনে শাহজাহানপুর থানায় অবস্থিত শাহজাহানপুর কবরস্থানে কবর দেয়া হয়। প্রিয় সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা, হত্যাকান্ডের পর বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ- ডক্টরস সোসাইটি অব বাংলাদেশ, চিকিৎসক সমাচারসহ বিভিন্ন পেইজে হত্যাকান্ডের বিষয়ে বিভিন্ন লেখা প্রকাশিত হয়।

দেশের মানুষকে হত্যাকান্ড সমন্ধে জানানোর জন্য আজকের এই সংবাদ সম্মেলন। জাতি আপনাদের মাধ্যমে এ হত্যাকান্ডের বিষয়টি অবহিত হবে। আমরা ডাঃ মোসাম্মৎ শেজাদী আপসার পরিবারের সদস্যরা এই হত্যাকান্ডের বিচার চাই। একজন চিকিৎসক সর্বোপরি নারী নির্মম নির্যাতনের স্বীকার হয়ে আজ আমাদের কাছ থেকে স্যার বিদায় নিয়েছেন। আমরা আপনাদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর কাছে বিনীত অনুরোধ জানাই যাতে তিনি এই হত্যাকান্ডের সুষ্ঠ বিচারের ব্যবস্থা করেন।

প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ, আপনাদের সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে আমি আমার বক্তব্য শেষ করছি” ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।