আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এবার সস্তায় মিলবে সৌরবিদ্যুৎ ।



পৃথিবীতে ১ ঘণ্টায় যত সৌরশক্তি সূর্যালোক বহন করে আনে তার সিকি শতাংশও আমরা ব্যবহার করতে পারি না। দেখা গেছে, পৃথিবীর মানুষ এক বছরে যতটুকু সৌরশক্তি ব্যবহার করে তা এক ঘণ্টার জমা হওয়া সৌরশক্তির চেয়েও কম। প্রচলিত সোলার ব্যাটারিগুলোতে ব্যবহৃত হয় সিলিকন নামের এক ধরনের সেমিকন্ডাক্টর জাতীয় পদার্থ। সিলিকন অন্য যেকোনো জ্বালানির চাইতে ৫ থেকে ৬ গুণ বেশি ব্যয়বহুল বলে সোলার ব্যাটারি আজো মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। তাই গবেষণা চলছে এমন এক সৌরবিদ্যুৎ কোষ উদ্ভাবনের যা হবে দক্ষ কিন্তু দামে সস্তা।

কানাডার মন্ট্রিয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন শাস্ত্রের অধ্যাপক বেনোইট মারসান সৌরবিদ্যুৎ কোষের এই পুরানো সমস্যার সমাধানের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি ও তার গবেষকদল জানিয়েছেন সস্তা কিন্তু কার্যকর ও উন্নত সৌরবিদ্যুৎ কোষ এখন মানুষের হাতের নাগালে। তাদের এই গবেষণা ‘জার্নাল অফ দ্য আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটি (জেএসিএস)’ এবং ‘নেচার কেমিস্ট্রি’ নামের দু’টি সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। সুইস গবেষক মাইকেল গ্রেটজেল ৯০ দশকের শুরুর দিকে সৌরবিদ্যুৎ কোষ তৈরির কাজে হাত দেন। উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষণ পদ্ধতিকে অনুসরণ করে তিনি হাজির করেন অভিনব এক ব্যাটারির মডেল।

সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় আলোর উপস্থিতিতে উদ্ভিদ ক্লোরোফিলকে ব্যবহার করে পানি ও কার্বন ডাই অক্সাইডের সাহায্যে তৈরি করে শর্করা। সূর্যের আলোক ক্লোরোফিল কণার সাহায্যে উদ্ভিদ যেভাবে শক্তিতে রূপান্তর করে গ্রেটজেলও সেভাবেই সূর্যালোক থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা ভাবলেন। এজন্য তিনি ব্যবহার করলেন সাদা একটি রঞ্জক পদার্থ এবং টাইটেনিয়াম ডাইঅক্সাইড যা সূর্যলোক শোষণ করবে ক্লোরোফিলের মতই। সাধারণ বিদ্যুৎ কোষ বা ব্যাটারির মত গ্রেটজেলের ব্যাটারিতে অ্যানোড ও ক্যাথোড প্রান্ত রয়েছে। অ্যানোড প্রান্তে ব্যবহার করা হয়েছে টাইটেনিয়াম ডাইঅক্সাইড এবং ক্যাথোড প্রান্তে ব্যবহার করা হয়েছে প্লাটিনাম।

ভাবা হয়েছিল এটা হবে খুবই কার্যকর ও উন্নত একটি সোলার ব্যাটারি। কিন্তু কিছু সমস্যার কারণে এটি এখনো আলোর মুখ দেখেনি। এর মধ্যে অন্যতম সমস্যা হল এতে প্লাটিনামের মত দুর্লভ ও দামী ধাতু ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে যা সস্তা ব্যাটারি তৈরির অন্তরায়। অধ্যাপক মারসান গত কয়েক বছর ধরেই গ্রেটজেলের সৌরবিদ্যুৎ কোষের সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করছিলেন। গ্রেটজেলের ব্যাটারির আরো যে সমস্যা ছিল তা হল এর কিছু উপাদান ছিল ক্ষয়িষ্ণু এবং সূর্যের আলো থেকে প্রাপ্ত বিদ্যুৎকে শক্তিশালী বিদ্যুতে পরিণত করতে অক্ষম ছিল এটি।

বর্তমানে মারসান এবং তার সহকর্মীরা পরীক্ষাগারে জেল জাতীয় এমন এক পদার্থ আবিষ্কার করেছেন যা ক্ষয় হবে না এবং সৌরবিদ্যুতের ভোল্টেজ দ্রুত বৃদ্ধি করবে। তাছাড়া প্লাটিনামের মত দামি ধাতুর বদলে তারা ব্যবহার করেছেন কোবাল্ট সালফেট। এতে তারা সফলও হয়েছেন বলে দাবি করেছেন। মারসানের কথা ঠিক হলে সস্তা এই ব্যাটারিতে বন্দি হবে সূর্যের আলো। পরিণত হবে দূষণহীন মূল্যবান বিদ্যুতে।

সায়েন্স ডেইলি অবলম্বনে, ন্যাশনালনিউজ ডটকম ডটবিডি।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.