আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অনূশোচনা! কিংবা ক্লাসে উঠার বিক্ষিপ্ত হামাগুড়ি

ihzaka@yahoo.com হুপফূল মানসিক স্বচ্ছতায় বিশ্বাসী.. কিছুটা বাদর কিছুটা নিরিহ কিসিমের! তবে, অনেক বড় স্বপ্ন দেখে এদেশটাকে নিয়ে, যেখানে একদল শিক্ষিত তরুন ঘূণে ধরা রাজনীতিকে সত্যিকারের পরিবর্তণের পথে চালিত করতে নোংরা, হিংস্র সামপ্রদায়িকতামুক্ত, প্রকৃত দেশপ্

:- সেই কখন থেকে প্রচন্ড ভীরে এদিক ওদিক হেটেই যাচ্ছি, আমার খুব ক্ষিধে পেয়েছে, চলনা কিছু খেয়ে নেই। :- আরে বাবা ! খাব- খাব, এত তাড়াহুড়ো করার কি আছে? সবে মাত্র সাড়ে এগার বাজে। একটার দিকেই না হয় যাই। :- আচ্ছা! আজকে কোথায় খাব আমরা? :- কোথায় খেতে চাও ? তুমিই বল। (মনে মনে :- শাহবাগের আশেপাশে তৃপ্তি ভরে খাওয়া যাবে এমন দু চারটা নাম জানলেতো !!) :- ডু ইউ হেব এ্যনি প্রব ইফ উই হেভ এট গোল্ডেন চিমনী ? :- ওকে বেইবি, আই’ইল টেইক ইউ আউট টু গোল্ডেন চিমনী টুডেই..(মনে মনে ভাবি, ওর সাথে থাকতে থাকতে ইদানিং কালে ভুলে ভরা স্পিকিং প্রাকটিসটা ভালই হচ্ছে.. মেই বি.. ) যথারীতি, উত্তর-পূর্ব কর্ণারে জানালার পাশে রাখা টেবিলের এপাশটায় আমি আর ঠিক বিপরীতে বাকা চাহনীতে ও।

ওয়েটার এসে অর্ডার নিয়ে গেল, ফ্রাইড রাইস, মিক্সড ভেজিটেবল, সিজলিং বীফ আর পানীয়। ভেরি সিম্পল বাট মাচ ডেলিশাছ, খাবার শেষে ১৩৮০ টাকা বিল দিয়ে চলে এলাম। একটু আবেগী আদর, দুষ্টু খোচা, আর সম্মোহনি সারাটা দিনের সঙ্গ; কেমন যেন একটা ঘোরের মধ্যেই কেটে গেল ১৪১৭তম পহেলা বোশেখটা আর অবশ্যই আমার ক্রমশই আধুনিক হয়ে উঠার একটি অনন্য প্রহর। সন্ধায় বিদায় নিয়ে ফিরে আসার ঠিক আগ মুহূর্তে আমার কাধে হাত রেখে ওর জরানো কন্ঠে ”তুমিতো দিন দিন খুব স্মার্ট হয়ে যাচ্ছ দেখছি। দেখো আবার যেন ঈদের চাদ না হয়ে যাও!!” প্রতিধ্বনিত হচ্ছে প্রতিটি ক্ষনে, মনে মনে , অনুরননে।

আর ভাবছি, আসলেই আমি কি দিন দিন উত্তরাধুনিক স্মার্ট হচ্ছি? নাকি বঙ্গবাজারের কমদামি ১৮০ টাকার শার্ট ১২০-১৫০ টাকার জুতা পায়ে দেয়া আর কেতাবি শুদ্ধ ভাষায় কথা বলতে না পারার কারনে ইউনির প্রথমদিনেই ”ক্ষেত”খেতাব পাওয়া , নিয়ম করে সরলপ্রাণ মায়ের ভালবাসার চুমুহীন একটা রাতও ঘুমুতে না যাওয়া এই আমি পোশাকি ফ্রেমের কালার ডিজাইনে সত্তিকারের ভালবাসাহীন অন্ধ এক মোহের টানে ’সিঙ্গল ফ্যামিলি কনসেপ্ট’ এর জরায়ু বেয়ে তথাকথিত আধুনিক সমাজের ’ক্লাসে’ উঠার বিক্ষিপ্ত হামাগুড়ি দেবার তাড়নায় কাতর হচ্ছি। আর নিজের -রুট ভুলে যাওয়া অস্তিত্তের সাথে করছি প্রতিনিয়ত ভন্ড প্রতারণা। যেখানে গ্রামের বাড়ীতে রাতে খেতে বসলে মা এখনও কচুশাক আর আলু ভর্তা পাতে তুলে দেয়। নিজে শুধু ডাল দিয়ে একপ্লেট ভাত মাখতে মাখতে বলে বাবা ঢাকায় এত কষ্ট করার কি দরকার? গ্রামে চলে আয়। পাশের ইসকুলটায় দেখ একটা চাকরি নেয়া যায় কিনা? টুকটুক দেইখা একটা বউ নিয়া আসুম তোর লাইগা।

তুই কষ্ট কইরা যা কামাবি, তাতেই তুই আমি আর আমার চাদনি সোনার বউডা সুন্দর দিন-পার কইরা দিতে পারমু। গায়ে তার এখনও গত ঈদে কিনে দেয়া ২২০ টাকার কাপরটা (দুই তিন জায়গায় ছিরে যাওয়া)। নতুন একটা কাপড় কিনে দিতে চাইলে বলে আমার এখন নতুন কাপড় লাগবোনা, পারলে তোর বাবার জন্যে একটা লুঙ্গি আর দুইটা হাফ হাতা গেঞ্জি কিইন্যা আন। আর লাজুক অপরাধী মুখে একটা আবদার :- বাবা! পারলে আগামী মাসে তোর বাপের লাইগা একটা হুইল চেয়ার আনিস। আজকের রাতটা যেন আর পার হতেই চায় না।

একটা হুইল চেয়ারের দাম আর কত? বড়জোর ৫-৬ হাজার টাকা হবে হয়তো! আর কালকে সারাদিনেই কম করে হলেও ২০০০ গেছে। মাসেতো ওর পিছনে এইভাবে এটলিস্ট ২-৩ এর মত যায়ই। আমিতো এমন ছিলামনা। কিসের নেশায় কোন সে অনুঘটক আমাকে এমন স্মার্ট হতে অনুপ্রাণিত করছে প্রতিনিয়ত ? নাহ! আর ভাবতে পারছিনা। একি অনুশোচনা! উত্তরাধুনিক স্মার্ট হওয়া! একটু** ’ক্লাসে’ উঠার বিক্ষিপ্ত হামাগুড়ি! নাকি নিজের অস্তিত্তের প্রতি নির্লজ্য বিশ্বাসঘাতকতা!!!!.? প্রিয় ব্লগার, গল্প লেখা একদমই পারিনা।

বিক্ষিপ্ত ভাবনার অগোছালো আলাপনে কেউ বিরক্ত হয়ে থাকলে দয়া করে ক্ষমাসুন্দর কমেন্টে ত্রুটিগুলো ধরিয়ে দেবেন, কৃতার্থ থাকব।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.