কবিতা:
এসো পূর্নবার জন্ম নেই মৃত নখের নীচে
-এম জসীম
জংলা ভূমি হয়েছে বিরাণ শ্রমে-ঘামে
হাতের শশীর ক্ষয়ে কর্ষণ দিয়েছে উর্বরতা
ঘামের সেচে ভরে গেছে ক্ষেত, ফলে- ফুলে ; শস্য দানায়
আহা! জমি আমার
ম্রেই,ত্যালে, আর লাইং আমার
সেইতুয়ে আমার পুণ্যভূমি ।
এখন সবই ঊষা-ধূসর-বিবর্ণ প্রিয়তমা
সব কেড়ে নিল ভ্রষ্ট নারকের থাবা
জলা, ভূমি, ফল-ফুল আর রমণীর কোমল হাতের বুঁননে গড়া শস্য ক্ষেত
সব, সব নিল ওরা !
শশীর য়ে কর্ষিত জমিন-আকাশ জুড়ে শকুনের ছায়া ঘেরা
কষ্টের পচাগলা ত বুকে ছড়ায়-জড়ায় মৃত্যু বাসনা
তবু বজ্রের ক্রোধ ফুঁসে ওঠে তেলহীন শলতের মত
ক্রোধে দাঁতহীন চিতার মতো ঝলসে উঠে ,বলি
‘শ্বেতপুস্পে ঢালো গাঢ় রক্তরস’।
বলো, অস্তচলগামী সূর্য, তুমিই বলো
নিজভূমে এ কেমন পরবাস ?
পরবাসী যুবক, আরা’র নেশায় মগ্ন থেকোনা আর
তোমার দেহে বিষ দাঁত বসিয়েছে ফনিমনসা
বরং দেবতাদের প্রার্থনা কর, বল
মৃত্যুভেদ করে জেগে ওঠো, হে মৃত পৌরুষেরা
অরণ্যে ফোটাও জোনাকীর ফুলকি
ফুটে ওঠো পূর্বাত্মারা, ওঠো
জ্বলে ওঠো, জ্বলা নেভা ধ্র“পদ ঝাড়বাতির শবাঘর থেকে
জেগে ওঠো পুরোহিত-ওয়া
‘কাকলা’ জমিয়ে রাখুক দেহের সুবাসিত ছায়া
জাগো, আবার জাগাও দস্যুর বীর্যবানের মতো রাখাইন শৌর্য।
হাওয়ায় ভাসছে এ কোন পিশাচ বাঁশির সুর...
শাদা গংখের শরীরে সারসের পাখা টেনে ধরেছে
এ কোন নরমুন্ড খাদক
স্বাধীন গংখের বুকে এ কোন সীসাবর্ণের সাম্রাজ্য ?
এ কি তবে সভ্যতা ?
কন্ঠছেড়ে এবার বলো, নাহ্ এই সভ্যতা আমরা মানিনা।
এসো, প্রানজ এসো
আবার মাটি ফুরে বেরিয়ে এসো অপঘাতে মৃত ছায়াজন
হুহু করে শ্বাস ফেলে এসো সন্ধ্যার অনতিপূর্বে
স্বজন আত্মজদের পাঁজরে ঝলকে দাও পূর্বজাগরণ।
জল, হাওয়া ও মৃত্তিকার প্রাণের উৎস খুঁড়ে বেরিয়ে এসো
করোটির খোল ঘুরে এসো, আমাদের খোলে রাখো আত্মা
ডেকে আনো সব দেবতা-পুরোহিত
আবার ত্রোস্তগানে জেগে উঠি আমরা, এসো লুবিউ-অ্যাপি
বাদামী ধানের তে ভরে উঠুক ম্রিংমার স্পর্শে
সান্ধ্য শিশিরে আবার ছড়িয়ে পড়–ক গাঢ় শস্যের সৌরভ।
১১.৪.২০১০
টিকা: এই শব্দগুলো রাখাইন ভাষা থেকে ব্যবহৃত
কাকলা-রঙ্গিন কাগজ ও বাঁশ দিয়ে মোড়ানো শবাঘর
ম্রেই-নদী
ত্যালে-সাগর
লাইং- ঢেউ
সেইতুয়ে-প্রিয়তমা
আরা-চোলাই মদ
গংখে-আকাশ
ওয়া-ভিুত্ব লাভ
লুবিউ-যুবক
অ্যাপি-যুবতি
ম্রিংমা- রমনী
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।