আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পোল্যান্ডে বিমান দূর্ঘটনা



স্মোলেনস্ক, রাশিয়া, এপ্রিল ১০ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/রয়টার্স)- রাশিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত হয়ে পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট লেস কাজিনস্কিসহ ৯৭ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে প্রেসিডেন্ট কাজিনস্কির স্ত্রী মারিয়া, পোলিশ সেনাপ্রধান, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্ণর, উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, ইতিহাসবিদ ও তাদের পরিবারের সদস্যরাও রয়েছেন। তারা প্রেসিডেন্টের সফরসঙ্গী ছিলেন। এর আগের খবরে বলা হয়, বিমানে ১৩২ জন আরোহীর সকলেই নিহত হয়েছে। পরে কর্মকর্তারা জানান, মৃতের সংখ্যা ৯৭।

কাজিনস্কি ৮৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল নিয়ে কাতিন শহরে এক স্মরণ সভায় যোগ দেওয়ার জন্য যাচ্ছিলেন। ১৯৪০ সালে রুশ সেনাদের গনহত্যার শিকার পোলিশদের স্মরণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তিনি সরকারি বিমানে ওয়ারশ থেকে রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় স্মোলেনস্কের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। প্রেসিডেন্ট ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী তুপালভ টিইউ-১৫৪ বিমানটি শনিবার স্মোলেনস্ক শহরের কাছে বিমান বন্দরে অবতরনের সময় বিধ্বস্ত হয়। স্মোলেনস্ক স্থানীয় সরকারের মুখপাত্র আন্দ্রেই ইয়েভসেইয়েনকভ বলেন, "বৈমানিকের ভুলেই সম্ভবত বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে বিমানটিকে মস্কো অথবা মিনস্ক বিমানবন্দরে অবতরনের জন্য বলা হয়েছিলো।

কিন্তু বৈমানিক এই বিমানবন্দরে অবতরনের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। " স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান, স্মোলেনস্ক বিমানবন্দর থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে অবতরন প্রস্তুতিকালে ঘন কুয়াশার মধ্যে বিমানটি গাছের আগায় বাড়ি খেয়ে জঙ্গলে আছড়ে পড়ে। ওয়ারশতে পোলিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র জানান, বিধ্বস্ত হওয়ার পরপরই বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক এই ঘটনাকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে দুঃখজনক বলে অভিহিত করেছেন। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, তিনি ঘটনাস্থলে যাবেন।

প্রেসিডেন্ট কাজিনস্কির মৃত্যুর খবর জেনে তার শত শত সমর্থক ও ভক্ত পোল্যান্ডের রাজধানীতে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের বাইরে ভীড় জমায়। তারা মোমবাতি জ্বালিয়ে ও ফুল দিয়ে কাজিনস্কির স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানায় এবং প্রর্থনা করে। তার মৃত্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মেরকেল, ব্রিটেনের প্রধানমন্দ্রী গর্ডন ব্রাউন, রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ভ­াদিমির পুতিন শোক প্রকাশ করেছেন। কাজিনস্কি (৬০) ছিলেন দেশের অত্যন্ত প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ। তিনি ছিলেন তার দেশের নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ট্রেড ইউনিয়ন নেতা, মানবাধিকার কর্মী ও সাবেক প্রেসিডেন্ট লেস ওয়ালেসার এক সময়ের ঘনিষ্ট সহযোগী।

পরে তিনি তার ভাইয়ের সঙ্গে মিলে ডানপন্থী ল এন্ড জাস্টিস পার্টি গঠন করেন। ২০০৫ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি দল থেকে পদত্যাগ করেন। তবে তিনি ছিলেন এ দলের সমর্থক। তার মত্যুতে দেশে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। আগামী অক্টোবরে দেশে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা ছিলো।

কিন্তু তিনি মারা যাওয়ায় সংবিধান অনুযায়ী দুমাসের মধ্যে অবশ্যই নির্বাচন হতে হবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।