আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কিংডম অব হ্যাভেন: ক্রুসেডারদের নিয়ে এপিক মুভি


এপিক সিনেমা দেখার সময় একটা ভয় কাজ করে , মনে হয় এই মুভিটা হয়তো সত্যিকে লুকানোর জন্য এত আয়োজন করে তৈরী করা হয়েছে। অনেক গুলো ক্ষেত্রেই দেখেছি একটা মিথ্যা প্রচারনার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম এই সিনেমাকে। সাধারণত এ ধরনের সিনেমা দেখার পরেই আমি উইকি এবং অন্যান্য সাইট ঘেটে পড়ে নিই বিভিন্ন সমালোচনাগুলো। একই ভয় কাজ করছিল 'কিংডম অব হ্যাভেন' দেখার সময়। কিন্তু সিনেমার শেষে যখন পরিচালকের নাম উঠল, রিডলি স্কট , বুঝলাম এতে কারিগরী কম থাকবে।

রিডলি স্কটের সাথে অনেক গুলো সিনেমার নাম জড়িত - গ্লাডিয়েটর , ব্লাক হক ডাউন , বডি অব লাইস (আমার একটা রিভিউ আছে এটি নিয়ে ), আমেরিকান গ্যাঙস্টার ইত্যাদি। কিঙডম অব হ্যাভেন - গ্লাডিয়েটর একই ধরনের একটি সিনেমা, তফাৎটা হলো- গ্লাডিয়েটর ১৮০ খ্রীস্টাব্দের কাহিনী আর কিংডম অব হ্যাভেন ১১৮৪ খ্রীস্টাব্দের কাহিনী। ভয়টা সেখানেই। কারণ ঠিক সেই সময়টাতেই ঘটে গিয়েছিল ক্রুসেড - মুসলমান এবং খ্রীস্টানদের ধর্মযুদ্ধ। খ্রীস্টান ক্রুসেডের ইতিহাসে ব্যলিন অব ইবেলিন খুব বিখ্যাত চরিত্র।

মুসলমান সেনাপতি ইতিহাসখ্যত সালাউদ্দীনের সাথে জেরুজালেম রক্ষার লড়াই চালিয়েছিলেন তিনি, তিনি একজন নাইট। প্রধাণত খ্রীস্টান দৃষ্টিভঙ্গী থেকে দেখানো হলেও মুসলমানদের প্রতি যথার্থ শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হয়েছে এই মুভিতে। এই ধরনের দৃশ্যগুলো পরিচালকের ক্ষমতা সম্পর্কে শ্রদ্ধা জাগায় ইতিহাসে ধর্মযুদ্ধ হিসেবে খ্যাত হলেও ক্রুসেডের পেছনে যে কতক অর্থ আর রক্ত লোলুপ সেনাপতি-রাজার ভূমিকা দেখতে পাওয়া যায়। ব্যলিন অব ইবেলিন চরিত্রে অভিনয় করেছেন অরল্যান্ডো ব্লুম। একজন যোদ্ধার চরিত্রে সে কতটা মানানসই সে নিয়ে সমালোচকদের মধ্যেই যথেষ্ট তর্ক বিতর্ক রয়েছে।

ফ্রান্সের একজন কামার থেকে লড়াকু যোদ্ধা, জেরুজালেম রক্ষার মূল দায়িত্বপালনকারী নাইটে রূপান্তরের কাহিনীটা সাধারণ নয়। সমসাময়িক আর্ও বিখ্যাত চরিত্র যেমন - রাজা চতুর্থ বাডউইন, রানী সিবেলা (আমি পাগল ইভা গ্রীনের রূপে), মুসলমান রাজা সালাদিন ইত্যাদি ফুটে উঠেছে মুভিতে। সেই সাথে রয়েছে এপিক মুভির অন্যতম বৈশিষ্ট্য - বিশাল বিশাল যুদ্ধের অসাধারণ সব চিত্রায়ন। মুসলমান রাজা সালাউদ্দীন সম্পর্কে খুব বেশী না জানলেও এতটুকু জেনেছিলাম যে তিনি জেরুজালেম দখল করার পরে অনর্থক একটি হত্যাকান্ড্ও ঘটাননি - তাই দেখলাম মুভিতে। সিনেমার সিনেমার চিফ অ্যাকাডেমিক কনসালটেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন একজন ইরানী মুসলিম পন্ডিত, নাম - হামিদ দেবাশি ।

হয়তো এ কারনেই মুভিতে বর্নিত কাহিনী নিয়ে খুব একটা ঝামেলা পোহাতে হয় নি রিডলি স্কটকে। তবে বিভিন্ন ঐতিহাসিক এই নিয়ে বিভিন্ন পয়েন্ট উপস্থাপন করেছেন - দেখিয়েছেন বিভিন্ন ইতিহাস বিকৃতির ঘটনা। ক্রুসেডের কাহিনী নিয়ে এটাই আমার দেখা প্রথম সিনেমা। ভালো লেগেছে, আপনাদের্ও লাগবে আশা করছি। দারাশিকো.ইনফো
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।