আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বড় গল্প-উদ্বাস্তু ঘুঘু : পর্ব-২

সান্ধ্যকালীন কোর্স বাতিল মানে কারো শিক্ষার সুযোগ কেড়ে নেয়া

** মনে হয়, কেউ কেউ বড় গল্প শুনেই ভয় পেয়েছে। যাহোক যারা সাথে আছেন তাদেরকে ধন্যবাদ। ধন্যবাদ তাদেরকেও-যারা সাথে নাই। দিল্লী অনেক-ই দূর। আশা করি বন্ধুরা সুবিধা মতো আমাদের সাথে যোগ দেবেন।

পর্ব-১ :http://www.somewhereinblog.net/blog/AshiqueReja007/29127283(যদি কেউ আগ্রহী হন) প্রস্তাবনা ধারণা করা হয় প্রথম প্রজন্মের জতুগৃহবাসী ছিল শুদ্ধাচারী। তাদের জীবনাচার ছিল অমলিন। তাদের ছিল প্রচন্ড গতি। নিবেদনে ঐকান্তিকতা। প্রচন্ড পরিশ্রমী এ প্রজন্মের বুদ্ধিবৃত্তিক জীবেরা কর্মে প্রায় নির্ভুল এবং নিপুন।

তারা ব্যবহৃত হয় সবুজ সারের মত। দ্বিতীয় প্রজন্মে তারা আত্ম-কেন্দ্রীক ও স্বেচ্ছাচারী হয়ে পড়ে। কর্মে নির্ভুল, দক্ষতায় দক্ষতার সমার্থক। যোগ্যতায় গুণের প্রতিশব্দ এবং তারা বিশ্বাস করতো যে ঈশ্বর তাদের ভিতরেই বর্তমান এবং নিজেকে সন্তুষ্ঠ করে আত্মপ্রসাদ লাভই ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করবার একমাত্র সঠিক উপায়। তারা উপযুক্ত ক্ষেত্র হয়েছিল।

পরবর্তী প্রজন্মে তাদের জীবন থেকে আলো তিরোহিত হয় আর তারা হয়ে ওঠে অন্ধকারের প্রতীক। শিল্পীত মিথ্যা, লোভনীয় প্রবঞ্চনা, চমৎকার শঠতা, স্থুল অশ্লীলতার মহিরুহ অথবা কাঙ্খিত ফসলের আশাপ্রদ বীজ। পরা সে সময় জন্মেছিল। প্রকৃত নিঃশ্ছিদ্র অন্ধকারের বুক চিড়ে বেড়িয়ে যাওয়া এক চিলতে আলোর ফলা ছিল সে। পদতলে ছিল সন্দেহমুক্ত খাঁটি অজৈব।

বৃক্ষের কান্ড সিনথেটিক না হবারও কোন কারণ ছিল না। পাতায় রান্না অসম্ভব, বাতাস সালোক সংশ্লেষনের অনুপযুক্ত। তবু সেই বৃক্ষেই কখনও ফলে ফল। মহান অপরিহার্য পরম অস্তিত্বের ইচ্ছায় কড়কড়ে শুকনা পাতা চিপে বের করা এক ফোঁটা ঔষধের মত কিংবা কাল অমাবস্যার রাত্তির শেষে লাল সুর্যোদয়ের আশার মত সে ফলে। ধ্বংসাত্মক আগুনের কোন লেলিহান লোল জিহ্বা নয়।

তার ছিল দিপ্তি। তীব্র, বজ্রচেরা গতির উত্তরাধীকারী হওয়ার বদলে সে ছিল ধীর, স্থির। বাক সংযত। দৃষ্টি নত। হৃদয় স্পর্শকাতর।

ভক্তি অন্তপ্রাণ। অবশ্যই পরমেশ্বরের ইচ্ছাই সর্বশেষ কথা, যার পরে আর কিছু নেই। আছে সব নাটকের যবনিকা। সব ফসলের মাড়াই, পদার্থ, অপদার্থ নির্বিশেষে স্বীয় সংজ্ঞা বহির্ভূত হওয়ার সীমানা। কুশিলব কি জানে, নাট্যকারের ইচ্ছা কি ? কিংবা কোন মহৎ সৃষ্টির উপকরণও কি স্রষ্টার মহত্ত্বকে ধারণায় আনতে সক্ষম ? দ্রষ্টা স্রষ্টার আছে চারজন প্রপ্রজ্ঞা বা বুদ্ধিবৃত্তি আর অগণন ইচ্ছাপূরণ পরিতোষক।

একদিন মাড়াই অথবা জতুগৃহে বইত্* নামে(পবিত্র গ্রন্থ অনুসারে ডকট্রিন অব নেসেসিটি তত্ত্বের প্রথম প্রাক্টিস করা হয় তখন এবং স্বঘোষিত উদ্ধারকর্তার প্রেরিত ফ্রিডম ট্রুপ অসামান্য দক্ষতায় সে দায়িত্বপালন করেছিল। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ও অসমর্থিত একটি সূত্র মতে, সেটি ছিল প্রকৃত মাৎসন্যায় এবং এথিক্স, বিধি ও ক্ষমতা নীতির একটি মালপ্রাক্টিস)। বইতের শিঙ্গা বাজে, উজানে, সৃষ্ট স্পেস, পরিতোষক আর পদতলে জতুগৃহবাসী বুদ্ধিবৃত্তিক জীবদের অন্তরের বাহিরে হাওয়ায় হাওয়ায় করুণ শোকের সুর নয়। উৎসব, উচ্ছ্বাস কিংবা এবংবিধ সুরে গিনিপিগের অবোধ আত্মীয়দের দৈনন্দিন দূঃখ, যাতনা, লোভ, হিংসা, দ্বেষ, ঈর্ষা, শেরেক-বেদাত, কৃতি, কুকৃতি, ভুল, অপরাধ, নিরবতা, সাহসিকতা, স-ব মোহন বাঁশির কেমন সূরে পেজা তুলা মত উড়তে থাকে দিগ্বিদিক। সঙ্গীত পরিচালক পরম প্রজ্ঞার ইচ্ছা অনুসারে গীত যায় বদলে আর সেই আবহ সঙ্গীতে সূর মুর্চ্ছনায় ভাসতে ভাসতে বিপুল বইত জলে নামে কাঙ্খিত সত্য আহরণে কিংবা মাৎসন্যায়ে।

অগণন নারী, শিশু,বৃদ্ধ, বির্যবান, বির্যবতী, গর্ভবতী, অভিসারী, মিলিত, কর্মী আর ভোগীদের অজ্ঞাত, নিশ্চিত মৃত্যুর ভয়ে ছুটোছুটি। একজন চিত্র পরিচালক অনিমেশ দৃষ্টিতে মৃত্যু নয়, আর্ত মুখচ্ছবি নয় বরং দৃশ্যচিত্রের অসম্পূর্ণতার কথা ভাবেন। তাই গগণবিদারী নিস্ফল আর্তরবের জন্য থাকে আঘাতের আয়োজন। শৃঙ্গারের চুড়ান্ত মুহুর্তটাকে ভরিয়ে তুলতে শীৎকারের প্রয়োজনে থাকে প্রহরণ। স্খলনে মিলনের, মরণে জীবনের, সূর্যাস্তে দিনের, সুর্যোদয়ে রাত্রির শেষ।

প্রতিশ্রুত অমোঘ কেয়ামতের নিদারুণ রাত্রিরও আছে অবসান। অবসানে ? ইতস্তত পড়ে থাকে মৃতবৎস, কন্যারা, অঙ্কুরে বিনষ্ঠ অমিত সম্ভাবনারা, পদতলে পৃষ্ট প্রাণহীন শিশু, নারী, পুরুষ, বয়োবৃদ্ধ, গর্ভবতী হোক আর প্রসূতি; স্বাদু, ওষধী বা অমৃতগন্ধী হোক; যদি সে স্বীয় অভ্যস্ত স্কেলের মাপে উদ্দিষ্ট না হয়। আস্ত একখানা দায়মুক্তি অধ্যাদেশ পকেটে নিয়ে নিঃসঙ্কোচে, অবলীলায় নশ্বর অজ/ইতর বিশেষদের পায়ে দলে ডেরায় ফেরে ঈশ্বরের প্রতিভূ বিমূর্ত শিকারী বা ফ্রিডম ট্রুপ। কাঁধের পলোতে বাতাসের লুকোচুরির শব্দ অথবা শোকার্ত দীর্ঘশ্বাস। হাতে ? ধ্বংস, ভস্মের ছাইয়ের উত্তরাধীকার আর আপ্লুত এক বায়ু পরাগী প্রাপ্ত বয়স্ক বীজ।

* বিল/হাওর/বাওরে গণহারে মাছ শিকারের দল(শব্দটি উত্তরাঞ্চলে ব্যবহৃত হয়) চলবে.............

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।