আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সেলামী না দিলে বাড়ির গাছ কাঁটার ছাড়পত্র পাওয়া যায় না

thanks all over

নিজের সৃজিত ও পরিপক্ক গাছ কাটার জন্য বনকর্মকর্তাদের সেলামী আর নিয়মের বেড়াজালে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন শ্রীমঙ্গলের শত শত মানুষ। সহজতর কানুন রহিত করায় ব্যক্তিগত গাছ কেটে নিজের কাজে অথবা বিক্রয় করতে না পেরে নানা বিড়ম্বনায় পড়েছেন স্বল্পবিত্তবানসহ সর্বস্থরের জনসাধারণ। সারা দেশের সংরতি বনের কাঠ চোরাচালানী কর্তৃক নির্বিচারে নিধনের ফলে বন হয়েছে উজাড়। বনের অভাব মেটাতে মানুষ যখন বসত বাড়িসহ বনায়ন করতে আগ্রহী হয়ে উঠলেও নিজের সৃজিত গাছ কর্তন করতে রেঞ্জারসহ সংশ্লিষ্টদের মোটা অংকের সেলামী না দিলে বৃ কর্তন করার অনুমোদন পাওয়া যায় না। এমন অভিযোগ অসংখ্য জনের।

সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে ব্যক্তিগত গাছ কাঁটার েেত্র নিয়ম বেঁধে দিয়েছে। প্রথমে তহশীলদার, কানুনগো, সহকারী কমিশনার (ভুমি) কর্তৃক সৃজিত গাছের ভুমির মালিকানা প্রত্যয়নপত্র ও খাজনার রশিদসহ আবেদন স্থানীয় রেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয়ে করার পর রেঞ্জ কর্মকর্তা সরেজমিন তদন্ত করে সত্যতার প্রত্যয়নসহ গাছ কাটার সুপারিশ করে আবেদন পাঠান উপবিভাগীয় বনকর্মকর্তার কার্যালয়ে। সেখান থেকে বিভাগীয় বনকর্মকর্তার কার্যালয়ে পাঠন হয়। কিন্তু গাছ কর্তনের তদন্ত করতে গেলে রেঞ্জকর্মকর্তাকে গাড়ি ভাড়াসহ ৩ হাজার টাকা, এসিএফ কে ২ হাজার টাকা এবং তাদের সাথে যে সকল বন রী বা গার্ড যাবে তাদের প্রত্যেককে দিতে ৫’শ টাকা করে। ১০টি থেকে তদোধিক গাছের ছাড়পত্রের জন্য এমন অলিখিত নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয়েছে শ্রীমঙ্গলস্থ মৌলভীবাজার রেঞ্জ অফিস থেকে।

এখানেই ভোগান্তির শেষ নয়। গাছ কাটার অনুমতি বা ছাড়পত্র পাওয়ার পরে মার্কা দিতে হয়। ওই মার্কা দেওয়ার জন্য প্রতি ঘনফুটে ২৫ টাকা হারে, বৈধ জ্বালানী কাঠ পরিহনের জন্য প্রতি গাড়িতে ২ হাজার টাকা, টিপির জন্য এক হাজার টাকা রেঞ্জ কর্মকর্তাকে দিতে হয়। সংশ্লিষ্টদের এসব দাবী পুরণ করতে না পারলে কেউ গাছ কাটার অনুমতি পায় না। তাছাড়া গাছ কেটে বিক্রয় কিংবা ছিড়াতেও পারে না।

অথচ সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে শ্রীমঙ্গলের বনাঞ্চল উজাড় করছে বন্যদস্যুরা। চোরাই কাঠ স মিলে চিড়ানো নিষেধ হলেও শ্রীমঙ্গলের স মিলগুলোতে এসব নিয়মের প্রতি কেউ তোয়াক্কা করছে না। ফলে পরিবেশ রায় সরকার কর্তৃক বনায়ন বৃদ্ধি শ্লোগান ‘গাছ লাগান, পরিবেশ বাঁচান’ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। শ্রীমঙ্গল উপজেলার জাম্বুরাছড়ার তাহির মিয়া, সুদর্শন তাতী, হুগলিয়ার জমির মিয়া, শ্রীমঙ্গল কালীঘাট রোডের চারু মিয়াসহ অসংখ্য ভোক্তভোগী অভিযোগ করে বলেন, নিজের বাড়িতে গাছ লাগালেও রেঞ্জারসহ সংশ্লিষ্টদের ঘুষ না দিলে গাছ কাটার অনুমতি পাওয়া যায় না। ঘুষ না দিলে অবেদনের ফাইল বন্দি হয়ে পড়ে থাকে দীর্ঘদিন।

ফাইলের জট ছাড়াতে ভুক্তভোগীকে বেশ কদিন রেঞ্জ অফিস, এসিএফ অফিস ও বিভাগীয় অফিসে তাগাদা ও তদবির করতে হয়। এতকিছুর পরেও ডিএফও কাজে ব্যস্ত থাকলে একটি গাছ কাটার অনুমতি পেতে কমপে দেড় থেকে ২ মাস বিলম্ব ও প্রচুর টাকা খরচ হয়। যারা অর্থ ব্যয় করতে পারে না, তাদের আবেদন হারিয়ে যায় রহস্যজনক কারণে। সংশ্লিষ্ট রেঞ্জার কর্তৃক ঘুষ গ্রহনের ব্যাপারে ২৪ মার্চ তাহির মিয়া একটি লিখিত অভিযোগ সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তার বরাবরে প্রেরণ করেছেন। যার অুনলিপি বন ও পরিবেশ মন্ত্রনালয়ের সচিব, ঢাকাস্থ প্রধান বন সংরক, মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক, শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শ্রীমঙ্গল রিপোর্টার্স ইউনিটিতে প্রেরণ করা হয়েছে।

এব্যাপারে শ্রীমঙ্গলস্থ মৌলভীবাজার রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল হাশেমের সাথে কথা বলার জন্য তার অফিসে একাধিকবার গিয়েও পাওয়া যায়নি। মোবাইলে যোগায়োগ করার চেষ্টা করার পর মোবাইল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে রেঞ্জ অফিসের সংশ্লিষ্ট বনরীরা জানান, ভোক্তভোগীদের অভিযোগ সঠিক নয়।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।