আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দুর্নীতি দমন কমিশন কোন পথে ?

আমি আছি আবার নাই

বাথরুমের একটি প্যানে বসাতে শ্রমিক লেগেছে ১২২ জন ! বিস্ময়কর হলেও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কোম্পানী লিমিটেড-বিটিসিএল এর খুলনা অফিসে এমন ভূতুরে বিল পেয়েছিল দুর্নীতি দমন কমিশন। এভাবে অফিসটিতে সে সময় রক্ষণাবেক্ষন ও মেরামতের নামে বিভিন্ন খাতে ৩৩ কোটি টাকার দুর্নীতির তথ্য পেয়েছিল কমিশন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুর্নীতি বিরোধী অভিযানের খোঁজখবর যারা রেখেছিলেন তারা অবশ্য বিষয়টি জানেন। এভাবে দুর্নীতির আধিপত্য ও প্রভাব তৃতীয় বিশ্বের দেশ বাংলাদেশের সরকার ব্যবস্থাপণা ও সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে কিভাবে গেড়ে বসেছে তা উঠে আসে সে সময়। বাংলাদেশের ক্ষমতা কাঠামোয় কে বসবে, কারা চালাবে দেশ, খোলাস করে বললে নির্বাচনে কোন দল বা কে কত পয়সা ঢালবে তা নির্ভরশীল হয়ে পড়ে অবৈধ উপায়ে কে কত কামিয়েছে তার ওপর।

জোট সরকার ক্ষমতা ছাড়ার আগে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কত পয়সা ঢালতে পারবে বা কত পয়সা গছাতে পেরেছে চারদলীয় জোট তা সে সময় গুরুত্বপূর্ন হয়ে উঠেছিল। ক্ষমতায় না থাকলেও আওয়ামী লীগের নির্বাচনী মনোনয়নেও তখন পয়সা ওয়ালাদের খোজঁ ভালোভাবেই পড়েছিল। পত্রিকায় খবর হয়েছিল কোন শীর্ষ নেত্রী বা নেতা মনোনয়নের ক্ষেত্রে কত টাকা নিয়েছে। রাজনীতির কারনেই গত দেড় দশকে নির্বাচিত সরকারের আমলে প্রতিদ্বন্ধী দুই প্রধান রাজনৈতিক দল একে অপরকে ঘায়েল করতে তুলেছে দুর্নীতির অভিযোগ। তবে বড় পরিহাস যে, সরকারী ও রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় জনগনের সম্পদ লুটপাট ও অর্থ আত্মসাত কিন্তু থেমে থাকেনি।

বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে এই সত্যগুলো বেরিয়ে এসেছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী থেকে মন্ত্রী,এমপি, মেয়র, চেয়ারম্যান, কমিশনার,আমলা,ব্যবসায়ী, শিল্পপতি ও তাদের পরিবার, কিভাবে দুর্নীতি করেছেন, ছিলেন ধরা ছোয়ার বাইরে তার হিসাব সাধারণ মানুষ জেনেছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের তৎপরতায় সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে নিম্ন পর্যায়ে, বেসরকারীভাবে দুর্নীতি কিভাবে ছড়িয়েছে, শেকড় গেড়েছে তা জানা গেছে। তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের দুর্নীতি বিরোধী অভিযান নিয়ে বিতর্ক থাকলেও সাধারণ মানুষ সমর্থণ করেছিল। কিন্তু রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় আসার পর দুর্নীতি বিরোধী কার্যক্রম আবার সেই আগের মতো, গতি হারিয়ে ফেলেছে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের মসনদে পরিবর্তন এসেছে, পদত্যাগ করেছেন আলোচিত চেয়ারম্যান হাসান মশহুদ চৌধুরী। উচ্চ ও নিম্ন আদালতে দুর্নীতির ৭১০টি মামলার ওপর স্থগিতাদেশের শুনানী হচ্ছে না দীর্ঘদিন। মরার ওপর খাড়ার ঘা’র মতো দুর্নীতি দমন কমিশন আইন সংশোধনের নামে এখন চলছে এর ক্ষমতা কমানোর চেষ্টা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতি বিরোধী অবস্থান বারবার ঘোষণা করলেও তার পারিষদ ব্যস্ত কমিশনের কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ করার কাজেই। এ অবস্থায় সাধারণ মানুষের প্রশ্ন দুর্নীতি দমন কমিশন বা দুর্নীতি বিরোধী অভিযান কোন পথে ? কতটা স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন? ব্রিটিশ আমলে ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষের প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দুর্নীতির ভ্র“ন খোঁজা শুরু হয়।

গঠন করা হয় খাদ্য বিভাগের অধীনে এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ। পরবর্তী চার বছরে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ প্রনয়ণ ও ওই ব্রাঞ্চকে সিআইডির অধীনে আনা হয়। ১৯৫৭ সালের ১ এপ্রিল পূর্ব পাকিস্তান দুর্নীতি দমন আইনের আওতায় স্বতন্ত্র অধিদপ্তর হিসেবে যাত্রা শুরু করে পূর্ব পাকিস্তান দুর্নীতি দমন ব্যুরো। কিন্তু প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এর কর্তৃত্ব ও কার্যকরিতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পাকিস্তান আমল গড়িয়ে বাংলাদেশে বিভিন্ন শাসনামলেও যে প্রতিষ্ঠানটি কার্যকর হয়নি তার প্রমান মেলে পরপর পাচঁবার দুর্নীতিতে বাংলাদেশের শীর্ষ অবস্থানে।

এ অবস্থায় ২০০৪ সালে তখনকার বিএনপি নেতৃত্বাধীন সরকার দেশীয়-আন্তজার্তিক চাপে স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন করতে বাধ্য হয়। বিলুপ্ত ঘোষণা করে দুর্নীতি দমন ব্যুরো। কিন্তু-তারপরও জোট সরকারের আমলে দুর্নীতি দমন কমিশন দাড়াতে পারেনি। তখনকার চেয়ারম্যান-সদস্যদের দ্বন্ধ,সরকারের প্রতি নতজানু ও রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি, সাহসের অভাবের পাশাপাশি তাদের বার্ধক্য প্রশ্নের মুখে দাড় করায় প্রতিষ্ঠানটির কাগজে কলমের স্বাধীনতাকে ? তাই তাদের কাজের মাধ্যমে কোন দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়নি। তবে প্রেক্ষাপট পাল্টে যায় সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে।

২০০৭ এর ফ্রেব্রুয়ারীতে চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ দেন তখনকার সদ্য সাবেক উপদেষ্টা, সাবেক সেনা প্রধান লেঃ জেনারেল (অব্) হাসান মশহুদ চৌধুরী। যাদের দুর্নীতি নিয়ে উচ্চবাচ্য করার কোন সুযোগ বা সাহস এর আগে ছিল না তিনি সেসব বিষয়েই হাত দেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়াসহ যাদের দাপটে, দুর্নীতিতে বাংলাদেশ পরপর পাচঁবার শীর্ষ দেশের কলঙ্কতিলক পরে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে আলোচনায় আসেন। পাশাপাশি সেবাখাতগুলোর দুর্নীতি উদঘাটনেও সচেষ্ঠ হন। কিন্তু দুর্নীতি দমন কমিশনের কাজে সেনা সমর্থিত সরকার ও দুর্নীতি বিরোধী টাস্কফোর্সের হস্তক্ষেপ নিয়ে সে সময়েও প্রশ্ন ওঠে, কমিশন আসলেই তখন কতটা স্বাধীনভাবে কাজ করেছে।

আর বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম রহমান যোগদানের পর কমিশনের স্বাধীন সত্ত্বাকে টিকিয়ে রাখাই এখন তার সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। কেননা তার সামনে রয়েছে খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ। দুর্নীতি দমন কমিশনের স্বাধীনতা খর্ব করে-এমন আইন সংশোধনের প্রস্তাবেও কমিশন এখন ব্যাকফুটে। ঢিমেতালে দুদক ঃ সরকারের পালা বদলে পরিবর্তন এসেছে দুর্নীতি দমন কমিশনে। গত বছরের ২ এপ্রিল বাধ্য হয়েইে পদত্যাগ করেন এর চেয়ারম্যান হাসান মশহুদ চৌধুরী।

ব্যাক্তিগত কারণ দেখালেও অভিযোগ ওঠে, সরকারের সহযোগিতা না পাওয়ায় পদত্যাগ করেছেন তিনি। এরপর এনার্জি রেগুলেটরী কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে বিদেশ সফরে থাকার সময়ই সাবেক আমলা গোলাম রহমান নিয়োগ পান দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে। তবে নিয়োগের এক মাস পর কমিশনে যোগ দেন সৎ ও দক্ষ হিসেবে সুনাম থাকা সাবেক এই আমলা। কমিশনে যোগ দিয়েই অবশ্য তিনি হুট করে কাজ শুরু করেননি। সময় নেন তিন মাস।

এরপর প্রেস কনফারেন্সে জানান, দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে দুটি বাধার কথা। রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও দুর্নীতির মামলার বিচারে দীর্ঘসুত্রতা। এর মাঝেই চলে যায় বছরের ৬ মাস। প্রশ্ন উঠে দুর্নীতি দমন কমিশন কি ফিরে গেছে আগের অবস্থানে। কেননা দুর্নীতি দমনের বদলে এ সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে কমিশন কত টাকা খরচ করেছে, আইনজীবীদের পিছনে কতটাকা ঢেলেছে এর হিসাব কিতাব নিয়ে নানা প্রশ্নের জবাব দিতেই চলে যায় সময়।

বিশেষ করে, সরকারী প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ও এর চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীরের তলবের মুখে পরে দুর্নীতি দমন কমিশন। এখানে উল্লেখ্য করা যেতে পারে, দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় তার ১৩ বছরের সাজা হয়েছিল। এভাবে তলবের মাঝে পরে বর্তমানের চেয়ে অতীতের কাজের জবাবদিহিতার টানাপোড়েনে সময় কেটে যায় কমিশনের। তবে কমিশন চেয়ারম্যান গোলাম রহমান জানিয়েছেন, তার দায়িত্ব নেয়ার আগে থেকেই কমিশনের কাজের গতি কমলেও মামলা, চার্জশীট, কিন্তু থেমে থাকেনি। আবার পুরনো অনেক মামলার অভিযোগ না পাওয়ায় ফাইনাল রিপোর্টও দেয়া হয়েছে।

কমিশন জানিয়েছে, গত বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০২ টি দুর্নীতির মামলা করা হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও তার বড় ছেলের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার চার্জশীটসহ ২২৬ টি চার্জশীট দেয়া হয়েছে। অভিযোগের প্রমাণ না পাওয়ায় প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনার ২টিসহ ১০৬ টি মামলার ফাইনাল রিপোর্ট দেয়া হয়েছে। এছাড়া মানি লন্ডারিং এর মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দুই ছেলে তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশীট এবং আরো কয়েকটি মানি লন্ডারিং এর অভিযোগ খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করেছে কমিশন। পাশাপাশি সেবাখাত গুলোতে নতুন করে কাজ শুরু করা হয়েছে।

ব্যাপক না হলেও ফাঁদ পেতে ধরা হচ্ছে বিভিন্ন সরকারী অফিসে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের। তবে এসব কিছুর সফলতা এর বিচার প্রক্রিয়া কতটা দ্রুত হবে তার ওপর নির্ভর করবে বলে মনে করেন কমিশন চেয়ারম্যান। স্থগিতাদেশে স্থগিত দুর্নীতি দমন কমিশনের কার্যক্রম ঃ দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন হওয়ার পর সারা দেশে দুর্নীতির অভিযোগে ১ হাজার ৭৬৯টি মামলা করা হয়। এর বেশিরভাগই অবশ্য গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে হয়েছে। তবে এসব মামলার মধ্যে ৭১০ টির বিচার কার্যক্রম দীর্ঘদিন আদালতে স্থগিত হয়ে আছে।

এর মধ্যে উচ্চ আদালতে ৫০৮ টি ও নিম্ন আদালতে ২০২ টি। অন্যদিকে কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৮০ সাল থেকে বিলুপ্ত দুর্নীতি দমন ব্যুরোর দায়ের করা প্রায় ৩৭’শ মামলা এখনও বিচারাধীন। এর মধ্যে নিম্ন আদালতে প্রায় ২২’শ ও উচ্চ আদালতে রয়েছে ১৫’শ মামলা। বিগত প্রায় ৩০ বছরেও এসব মামলার সুরাহা হয়নি। কমিশন জানিয়েছে, বিশেষ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে যেসব মামলার কার্যক্রম এখনও থেমে আছে এর পেছনে রয়েছে সরকার দলীয় দুজন এমপির মামলা।

আওয়ামী লীগ এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লার একটি আপিলের কারনে কমিশনের উচ্চ আদালতে ৪২৮ টি মামলার কার্যক্রম স্থগিত হয়ে আছে। অন্যদিকে বিশেষ আদালতে দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক মন্ত্রী ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীরের তের বছরের সাজা হাইকোর্টে বাতিল হয়ে গেছে। এর বিরুদ্ধে কমিশন সুপ্রীম কোর্টে আপিল করেছে। কিন্তু দীর্ঘ দিনেও এর শুনানী হচ্ছে না। এর ফলে নিম্ন আদালতে বিচারের রায় হওয়া ৬৭ টি মামলার ভাগ্য ঝুলে আছে।

তাই কমিশন এগোতে চাইলেও রুই, কাতলা শুধু নয় বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসুত্রতার কারনে চুনোপুটির খোঁজ নেয়াও কমিশনের পক্ষে দুরুহ হয়ে পড়েছে। স¤প্রতি কমিশনের পক্ষ থেকে স্থগিত থাকা মামলার দ্রুত শুনানীর জন্য উচ্চ আদালতে পৃথক বেঞ্চ গঠনের কথা বলা হয়েছে। কমিশন চেয়ারম্যান গোলাম রহমান ও মহাপরিচালক কর্নেল হানিফ ইকবাল এ নিয়ে অ্যাটর্নী জেনারেল মাহবুবে আলমের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। অ্যাটর্নী জেনারেল বিষয়টি প্রধান বিচারপতির নজরে আনার আশ্বাস দিয়েছেন। কমিশন চেয়ারম্যান গোলাম রহমান বলেন, দুর্নীতির মামলার বিচার না হওয়ায় দুর্নীতিবাজরা উৎসাহিত হচ্ছে।

তিনি উদাহরন হিসেবে বলেন, ১৯৮০ সালের একটি মামলার বিচার কার্যক্রম এখনও থেমে আছে। এক্ষেত্রে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি’র ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ও সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমেদ বলেন, দুর্নীতির মামলার বিচার না হওয়া একটি রাষ্ট্রের জন্য খারাপ উদাহরন। তিনি দুর্নীতি মামলার গুরুত্ব বুঝে তা দ্রুত নিস্পন্ন করতে উচ্চ আদালতে পৃথক বেঞ্চ গঠনের তাগিদ দিয়েছেন। বিশিষ্ট আইন বিশেষজ্ঞ ও ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির স্কুল অব্ ল এর পরিচালক ড. শাহদীন মালিক বলেন, দুর্নীতির মামলা যাতে আদালতে ভালোভাবে উপস্থাপন করা হয়, আইনগত দুর্বলতা ও তদন্ত কার্যক্রমের ঘাটতি যাতে না থাকে এ জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী প্যানেলকে আরো শক্তিশালী করা উচিত। বিশেষ আদালত প্রায় নিস্ক্রিয় ঃ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুর্নীতির মামলা দ্রুত নিস্পত্তির জন্য সারা দেশে ১৯ টি বিশেষ জজ আদালত গঠন করা হয়েছিল।

তখন সেসব আদালতে দুর্নীতির মামলার বিচারের জন্য বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সনকে কাঠগড়ায় দাড়াতে হয়েছিল। এখনকার অনেক প্রভাবশালী, প্রতাপশালী মন্ত্রী এমপি ও বিরোধী দলে থাকা ডাকসাইটে নেতাদের দুর্নীতির মামলার বিচারের সময় নতজানু অবস্থায় দেখা গেছে। কিন্তু ক্ষমতার বদলের সাথে সাথে পাল্টে গেছে সব। উল্টো আলোচিত সেই আদালত গুলো এখন প্রায় নিস্ক্রিয়। ১৯টি মধ্যে এখন ১০টির কার্যক্রম ঢিমেতালে চলছে।

টিআইবির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমেদ বলেন, দুর্নীতির মামলার বিচারের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গঠিত এসব বিশেষ আদালতের কার্যক্রম বাড়াতে হবে। আইন সংশোধন নাকি নখদন্তহীন করার প্রস্তাবঃ ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতি দমন কমিশনকে আরো কার্যকর করার কথা বললেও কয়েকমাস না যেতেই ঘটছে এর উল্টোটা। দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ সংশোধনের নামে সরকার দুর্নীতি দমন কমিশন আইন পর্যালোচনা কমিটি গঠন করেছে। কিন্তু এই কমিটি আইন সংস্কারের মাধ্যমে কমিশনকে কার্যকর করার বদলে যে সংশোধনী প্রস্তাব করেছে তাতে প্রতিষ্ঠানটি যে নখদন্তহীন হয়ে পড়বে এমন আশঙ্কা খোদ দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান গোলাম রহমানের। প্রস্তাব অনুযায়ী, কোন সরকারী কর্মকর্তা বা কর্মচারী দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হলে তার মামলা আমলে নিয়ে বিচার করার ক্ষেত্রে সরকারের অনুমোদন নিতে হবে।

এতে কমিশনের মামলা করার স্বাধীনতা খর্ব হবে। আর্থিক ক্ষমতা চেয়ারম্যানের বদলে সচিবকে দেয়ার যে প্রস্তাব অর্থাৎ সচিবকে প্রিন্সিপাল অ্যাকাউন্টিং অফিসার করলে কমিশনে বাড়বে আমলাতান্ত্রিক প্রভাব। এছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশন এর কাজের জন্য আগে রাষ্ট্রপতির কাছে রিপোর্ট জমা দিতো। কিন্তু নতুন প্রস্তাবে এর জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে দায়বদ্ধ থাকার কথা বলা হয়েছে। এতে কমিশনের সিদ্ধান্ত গ্রহনে সরকারের হস্তক্ষেপ করার সুযোগ সৃষ্টি হবে।

অন্যদিকে গোপনীয়তার কথা বলে অভিযুক্ত কারো আয়কর ও ব্যাংক হিসাবের তথ্য যাতে কমিশন সরাসরি না পায় সে বিষয়েও প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে কমিশনের তদন্ত ও অনুসন্ধান কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে বলে মনে করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান। তিনি বলেন, এ ধরনের আইন করা হলে আমরা মেনে নেবো না। সাবেক উপদেষ্টা ও টিআইবির চেয়ারম্যান এম হাফিজউদ্দিন খান বলেন, মামলার ক্ষেত্রে সরকারের অনুমোদনের যে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে এতে দুর্নীতি বিরোধী অভিযান বাধাগ্রস্ত হবে। তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি দুর্নীতির মামলার অনুমোদনের সময় লেগেছিল ১৪ বছর।

বছরের পর বছর এরকম মামলা পরে থাকতে দেখেছি। অবশ্য তিনি এনবিআর বা ব্যাংক থেকে তথ্য নেয়ার ক্ষেত্রে যেসব প্রতিষ্ঠান গোপনীয়তার কথা বলছে তা মানা উচিত বলে মনে করেন। যারা অভিযুক্ত দুর্নীতি দমন কমিশন তাদের তথ্য আদালতের মাধ্যমে নিতে পারে এমন বিধান করা উচিত বলে তিনি জানান। টিআইবির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ বলেন, সরকার যেহেতু জাতিসংঘের দুর্নীতি বিরোধী সনদ স্বাক্ষর করেছে তাই চাইলেও দুর্নীতি দমন কমিশনকে দুর্বল করতে পারে এমন আইন করা উচিত হবে না। পড়ে আছে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রস্তাব ঃ দুর্নীতি দমন কমিশনের কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করতে প্রায় দেড় বছর আগে এর কিছু আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেয় কমিশন।

তখনকার চেয়ারম্যান হাসান মশহুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে সংশোধনী প্রস্তাব পাঠানো হয় মন্ত্রী পরিষদ বিভাগে। প্রস্তাবে দুর্নীতি বা ফৌজদারী মামলায় দুর্নীতি দমন কমিশনকে পক্ষ ভুক্ত করার কথা বলা হয়। কেননা অভিযুক্তরা মামলার কার্যক্রম চ্যালেঞ্জ করায় এক্ষেত্রে পক্ষ ভুক্ত না থাকায় সমস্যায় পরে কমিশন। মামলার তদন্ত কার্যক্রমে আরো সুচারু করতে অন্য প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে তদন্তের প্রস্তাব দেয়া হয়। অন্যদিকে কাজের চাপ কমাতে বেসরকারী কোন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীর দুর্নীতির অভিযোগ সেই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে করার কথা বলা হয়।

কিন্তু গত দেড় বছরেও এসব প্রস্তাব পাশের উদ্যোগ ফাইল বন্দী হয়ে আছে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগে। বড় চ্যালেঞ্জ মামলা প্রত্যাহার মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাজনৈতিক হয়রানীমূলক মামলা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়। এসব মামলা মূলত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও চারদলীয় জোট সরকারের আমলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা। এর মধ্যে দুর্নীতির মামলাও রয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের আইন ও প্রসিকিউশন সেল জানিয়েছে তাদের কাছে, প্রায় ১৫০ থেকে ১৫৫ টি দুর্নীতির মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ পাঠিয়েছে সরকার।

এর মধ্যে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য তোফায়েল আহমেদ, চট্রগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের মামলা রয়েছে। বাকী মামলার প্রায় সকলেই আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী, এমপিসহ নেতা কর্মী। কমিশন জানিয়েছে, এসব মামলা দুর্নীতি দমন ব্যুরোসহ, চারদলীয় জোট সরকার এবং পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে করা হয়েছে। কমিশন চেয়ারম্যান গোলাম রহমান জানিয়েছেন, যেসব সুপারিশ এসেছে এর মধ্যে বিলুপ্ত দুর্নীতি দমন ব্যুরোর মামলা এখন পর্যন্ত বেশী। তিনি জানান, এর মধ্যে যাচাই বাছাই করে দুর্নীতির প্রমান না পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে বিএনপি সরকারের আমলে দায়ের করা বঙ্গবন্ধু যাদুঘর ও ন্যাম ভবন দুর্নীতির অভিযোগে না পাওয়ায় ফাইনাল রিপোর্ট দেয়া হয়েছে।

তবে একই ধরনের দুর্নীতির মামলা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলীয় নেত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধেও রয়েছে। কিন্তু এসব মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করেনি সরকার। এ অবস্থায় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন। কেননা সরকার সুপারিশ করলেও মামলা প্রত্যাহারের ক্ষমতা শুধু দুর্নীতি দমন কমিশনের। ইতিমধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একই ধরনের দুর্নীতির মামলা করা হয়েছে। তাই এক্ষেত্রে শুধু সরকারী দলের মামলা প্রত্যাহার করা হলে তা হবে বৈষম্যমূলক। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এক্ষেত্রে মনে করেন, দুর্নীতির মামলা প্রত্যাহার না করে আদালতের মাধ্যমেই সুরাহা করা উচিত। রাজনৈতিক চাপে বাছ বিচার না করে দুর্নীতির মামলা প্রত্যাহার করা হলে দুর্নীতি বিরোধী কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ হবে। মন্ত্রী এমপিদের সম্পদের হিসাব কি দেয়া হবেঃ সম্পদের হিসাব বিবরনী যাচাই করার মাধ্যমে বিশ্বের অনেক দেশ দুর্নীতির অভিশাপ থেকে বেরিয়ে এসেছে।

কোরিয়া, থাইল্যান্ড ও ফিলিপাইনের আইনে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে জনপ্রতিনিধিদের সম্পদের বিবরণী প্রকাশ করতে হয়। দুর্নীতি বিরোধী জনগনের মনোভাব বুঝতে পেরে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার আগে ও পরে মন্ত্রী-এমপিদের সম্পদের হিসাব প্রকাশের ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু সরকারের এক বছর হতে চললেও এখনও সেই অঙ্গীকার বাস্তবায়ন হয়নি। এই প্রেক্ষাপটে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান বলেছেন ‘মন্ত্রী-এমপিরা সম্পদের হিসাব জমা দিলে উদাহরন সৃষ্ঠি হবে। দুর্নীতি কমে আসবে।

এতে আমলারাও উদ্ভুত হবে। ’ এখানে চাপাপড়া একটি বিষয়ও তুলে ধরতে চাই, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ১২ লাখ সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীর সম্পদের হিসাব নেয়া হয়েছিল। এই হিসাবের কি অবস্থা। সরকারের দুর্নীতি বিরোধী যে অঙ্গীকার তা বাস্তবায়নে এই হিসাবও খতিয়ে দেখা উচিত বলে মনে করে দুর্নীতি দমন কমিশন। কেননা তত্ত্বাবধায়ক আমলেই এই হিসাব খতিয়ে দেখার জন্য চিঠি দিয়েছিল কমিশন।

কিন্তু মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ থেকে তার জবাব এখনও পায়নি দুর্নীতি দমন কমিশন। সূচকের অগ্রগতি ধরে রাখাই চ্যালেঞ্জ ?এবার ট্রান্সপারেন্সী ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতির ধারণা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩। উন্নতি হয়েছে আগের বারের চেয়ে, অর্থাৎ দুর্নীতি কমেছে। কিন্তু এই সূচক কি প্রকৃত চিত্রের জানান দিচ্ছে। কেননা আগের বছরের চেয়ে দুর্নীতি কমেছে মাত্র দশমিক তিন ভাগ।

২০০১ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত পরপর পাচঁবার বাংলাদেশের দুর্নীতিতে শীর্ষ দেশ ছিল। আলোচিত এই পাচঁ বছরেরর হিসাব কষলে অবশ্য বলাই যায় দুর্নীতির রোধে কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে আমাদের। ২০০৬ এ ৩, ২০০৭ এ ৭, ২০০৮ এ ১০। অবস্থান পাল্টেছে। হচ্ছে অগ্রগতি।

কিন্তু সূচকে অগ্রগতি বা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যে এক বছরেও কোন মন্ত্রীর নামে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেনি এই আত্মতৃপ্তি নতুন বছরে থাকবে তো। যখন বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের টেন্ডার বারবার পেছানোর ক্ষেত্রে অভিযোগ উঠছে হস্তক্ষেপের, টেন্ডার নিয়ে বছর জুড়েই ছাত্রলীগ, যুবলীগ থেকেছে আলোচনায় তখন কতটা আশাবাদী হওয়া যায় নতুন বছরে তা নির্ভর করবে এসব প্রশ্নের ইতিবাচক সমাধানে। টিআইবি মনে করে, দুর্নীতির সূচকে অগ্রগতি অর্জনের চেয়ে ধরে রাখাই কঠিন চ্যালেঞ্জ হবে নতুন বছরে। দুর্নীতি দমন কমিশন কার্যকরে টিআইবির সুপারিশ স¤প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশনকে কিভাবে আরো কার্যকর করা যায় এ নিয়ে গোল টেবিল বৈঠক করে ট্রান্সপারেন্সী ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি। উঠে আসে গুরুত্বপূর্ন কিছু প্রস্তাব।

এতে দুর্নীতি বিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা করতে সরকারের সদিচ্ছার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হয়। কমিশনকে স্ব-শাসিত করার পাশাপাশি এর অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ও সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারে এমন আইন সংশোধনের কথা বলা হয়। তবে আইন সংস্কার করতে হলে সরকারী আমলাদের ওপর তা ছেড়ে না দিয়ে এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দেয়া হয়। কমিশনের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে জুডিশিয়াল কমিটি গঠন এবং নাগরিক কমিটি গঠনের মাধ্যমে এর কার্যক্রম পর্যবেক্ষন করার বিষয়টিও উঠে আসে আলোচনায়। এছাড়া কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পত্তির হিসাব প্রদান, জনবল বৃদ্ধি ও তাদের বেতন বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে টিআইবি।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, টিআইবির দীর্ঘদিনের পর্যবেক্ষনে এসব প্রস্তাব উঠে এসেছে। দুর্নীতির কারনে দেশের জাতীয় প্রবৃদ্ধির ২.১ থেকে ২.৯ ভাগ কমে যায়। এ জন্য টিআইবি মনে করে দুর্নীতি দমন কমিশনকে আরো কার্যকর করা উচিত। তোমার পতাকা যারে দাও/বহিবার শকতি তারে দাও সর্বশেষ রাষ্ট্রপতির কাছে দুর্নীতি দমন কমিশন যে বার্ষিক রিপোর্ট দিয়েছে তাতে বলা হয়েছে, ‘সরকারী ও রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় জনগণের অর্থ ও সম্পদ লুটপাটের একটি স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছিল বাংলাদেশ। এর সঙ্গে ব্যাপকভাবে জড়িয়ে পড়েছিলেন সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্তাব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।

শীর্ষ পর্যায়ের এক শ্রেণীর রাজনীতিক, উধ্বর্তন কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী-শিল্পপতিরা ব্যক্তি, পরিবার ও গোষ্ঠীগতভাবে সব নিয়মনীতি ও আইন কানুনের উর্ধ্বে অবস্থান করছিলেন। তাঁরা তাদের হীন স্বার্থ রক্ষায় জাতীয় স্বার্থ বিকিয়ে দিতে অনেক ক্ষেত্রে কুন্ঠিত হননি। ’ তখনকার চেয়ারম্যান হাসান মশহুদ চৌধুরী তার দেয়া রিপোর্টে সাহস করে এই সত্য উল্লেখ্য করলেও বর্তমান কমিশনের চ্যালেঞ্জ এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করা। তবে গত প্রায় ১ বছরে চেষ্টা থাকলেও কমিশন কতটা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পেরেছে এ নিয়ে প্রশ্ন কিন্তু ইতোমধ্যেই উঠেছে। তাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের যে আকাঙ্খা দায়িত্ব নিয়ে বর্তমান কমিশন তার কতটা বাস্তবায়ন করতে পারবে সেটাই দেখার বিষয়।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.