আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নিউট্রন তারায় কার্বন বায়ুমণ্ডলের সন্ধান ।



সুপারনোভার অবশিষ্টাংশ ক্যাসিওপিয়া এ বা সংক্ষেপে ক্যাস এ- এলাকায় অবস্থান করা একটি নিউট্রন তারার পাতলা কার্বনের আবরণ থাকার প্রমাণ মিলেছে। নাসার চন্দ্র এক্স-রে, অবজারভেটরি পাতলা কার্বন স্তরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। বিষয়টি কেন্দ্র করে গত ১০ বছর ধরে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মধ্যে রহস্যের ঘনঘটা চলছিল। তারা ঠিক বুঝে উঠছিলেন না যে, নিউট্রন তারাকে কেন্দ্র করে বিরাজমান ওই পাতলা আবরণটি আসলে কি। সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েন হো বলেছেন, সুপারনোভার অবশিষ্টাংশের কেন্দ্রে থাকা ঘনীভূত ওই নিউট্রন তারাটি আবিষ্কারের পর থেকেই সেটিকে ঘিরে তৈরি হয় নানা রহস্য।

যার ব্যাখ্যা পাওয়া যাচ্ছিল না। এখন আমরা বুঝতে পারছি সেখানে উত্তপ্ত নিউট্রন তারায় কার্বন বায়ুমণ্ডল তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী নেচার-এ। ওয়েন হো এবং তার আলবার্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকর্মী ক্রেইগ হেইনকে চন্দ্রের এক্স-রে স্পেকট্রাম বিশ্লেষণ করে দেখেছেন। এরপর তারা একমত হয়েছেন যে, ক্যাসিওপিয়া এতে অবস্থান করা নিউট্রন তারায় অতি পাতলা কার্বনের আবরণ রয়েছে।

এই প্রথম বিচ্ছিন্ন কোনো নিউট্রন কার্বন থাকার নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া গেল। ১৯৯৯ সালে ক্যাসএ-এর প্রথম ইমেজ বা চিত্র সংগ্রহ করে চন্দ্র। ওই চিত্রে চিহ্নিত করা যায়নি এমন এক্স-রে সোর্স বা উেসর সন্ধান পাওয়া যায়। ধারণা করা হয় সেখানে একটি নিউট্রন তারা রয়েছে। কোনো তারা বিস্ফোরিত হলে সেটি সাধারণত নিউট্রন তারায় পরিণত হয়ে থাকে।

কিন্তু গবেষকরা তারাটির গঠন কাঠামো নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়ে যান। সেখান থেকে কোনো এক্স-রে বা রেডিও পালস বা অন্য কোনো রেডিও পালসার একটিভিটি থাকার ইঙ্গিত মেলেনি। কিন্তু এবার ওয়েন হো এবং ক্রেইগ হেইনকে ওই তারা থেকে এক্স-রে উদ্গীরণ হতে দেখেন এবং গবেষণার পর নিশ্চিত হন যে, ওই নিউট্রন তারাকে কেন্দ্র করে পাতলা কার্বনের স্তর রয়েছে। নিউট্রন তারার আকার এতই ক্ষুদ্র হয়ে থাকে যে, তার সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারা সহজ হয় না। এ ধরনের তারার ব্যাস হয় প্রায় ৪ ইঞ্চি।

তবে প্রচণ্ড মধ্যাকর্ষণ বলের কারণে বায়ুমণ্ডলের কার্বন রয়েছে খুবই ঘনীভূত অবস্থায়। তারার পৃষ্ঠের মধ্যাকর্ষণ বল পৃথিবীর তুলনায় ১০ হাজার কোটি গুণ বেশি। তারাটির বয়স হবে কয়েকশ’ বছর। অন্য নিউট্রন তারার চেয়ে এটি দশগুণ বেশি তরুণ। এর কার্বন ঘনত্ব হীরকের মতো এবং চাপ পৃথিবীর কেন্দ্রে থাকা চাপের দশগুণ বেশি।

তাপমাত্রা অন্তত ২০ লাখ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের তুলনায় ওই তারা অনেক বেশি। মধ্যাকর্ষণ বল প্রবল থাকায় তারাটির বায়ুমণ্ডল পাতলা বলে অনুমান করা যায়। নিউট্রন তারার কার্বন বায়ুমণ্ডল থাকার বিষয়টি চাঞ্চলের সৃষ্টি করেছে। জীবন সৃষ্টির অন্যতম উপাদান হচ্ছে কার্বন।

তাই কার্বনের অস্তিত্ব মানেই সৃষ্টির সম্ভাবনা। ফলে গবেষকদের বিষয়টি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হচ্ছে বেশি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।