আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশের রাজনীতির ভবিষ্যত ও দুই যুবরাজ

© ২০০৬ - ২০১১ ত্রিভুজ

জন্মের পর থেকে আমারা রাজনীতি বলতে যা বুঝি তা অনেকটা এরকম- - বিরোধীদল মানেই হরতাল, ভাংচুর, অবরোধ, সরকার পক্ষকে গালাগালি, মারামারি, আন্দোলন ও সরকার পতনের চিন্তা - সরকারি দল মানেই বিরোধী দলকে অন্যায় ভাবে দমন, দুর্নীতি, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস - আম জনতা মানেই সরকারকে গালাগালি, সমালোচনা এবং দেশ নিয়ে হতাশা - সরকারি দলের সমর্থক জনতা মানেই সরকারের সকল কাজকে (ভাল বা মন্দ) হালাল করার উদ্ভুট প্রচেষ্টা, বিরোধী দলের সমর্থকদের আক্রমণ - বিরোধী দলের সমর্থক জনতা মানেই, সরকারের প্রায় সকল কাজের সমালোচনা, সরকারি দলের সমর্থকদের আক্রমণ ....ইত্যাদি ইত্যাদি। এটা সত্য যে আমাদের দেশে সরকার জনগনের চাইতে নিজের দলের প্রতি বেশি নজর দেয়। কিন্তু তাই বলে সরকারের সকল কাজই সমালোচনাযোগ্য নয়। সুতরাং সরকারের ভাল কাজের প্রশংসা ও খারাপ কাজের সমালোচনা চলতে পারে। গণহারে সমালোচনা করলে আসল সমালোচনাটার গুরুত্ব নষ্ট হয়।

একই কথা বিরোধী দলের জন্যও প্রযোজ্য। কিন্তু দলীয় অন্ধ লোকজন কখনো এসব ভাবার অবকাশ পায় বলে মনে হয় না। এর জন্য আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি দায়ী না অন্ধ জনগণ দায়ী সেটা নিয়ে গবেষণা হতে পারে। আগেই বলেছি, এই দেশে সরকারি দল বিরোধী দলকে শত্রু জ্ঞান করে বেশিরভাগ সময়। আবার বিরোধী দলও সরকারি দলকে শত্রু মনে করে থাকে।

অথচ দুইজনের লক্ষ্যই এক, জনগনের জন্য কাজ করা। কিন্তু সেই মনোভাব আমাদের ভেতরে এখন পর্যন্ত সেভাবে গড়ে ওঠেছে বলে মনে হয় না। বিএনপি জোট সরকারের আমলে সজীব ওয়াজেদ জয় যখন দেশে এল তখন তারেক জিয়া তাঁকে ফুল দিয়ে বরণ করে নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু জয় দেশে ফিরার পর বাংলাদেশী রাজনৈতিক সংস্কৃতি ধরে রাখার জন্যই হয়তো আওয়ামীলীগের লোকজন জয়কে সেই সংবর্ধনা গ্রহণ করতে দেয়নি মনে হয়েছে। আমরা জানি শেখ মুজিবর রহমানের ৭১ পুর্ববর্তী জনপ্রিয়তা ও ৭১ পরবর্তী জনপ্রিয়তার ভেতরে আকাশ পাতাল ফারাক ছিল।

স্বাধীনতার পরে শেখ মুজিবর রহমানের মত দুরদর্শী একজন নেতার অধঃপতনের পেছনে অন্যতম একটি কারণ ছিল চাটুকারদের দৌরাত্ব্য। শেখ হাসিনাও এই ধারা থেকে মুক্ত নন, এবং তার ফল তিনি পেতে যাচ্ছেন শীঘ্রই। যেসকল চাটুকাররা আজ শেখ হাসিনার চারদিক ঘিরে রয়েছে শেখ হাসিনার মৃত্যুর পর এরাই আবার শেখ হাসিনার সমালোচনায় ব্যস্ত হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। আজকের আওয়ামীলীগের শীর্ষপর্যায়ে এমন অনেক নেতা ও বুদ্ধিজীবীও আছেন যারা একসময় শেখ মুজিবকে নিকৃষ্টতম গালি দিতেও কুন্ঠাবোধ করেনি। একদিকে শেখ মুজিবের খুনীদের বিচারে শেখ হাসিনা সান্ত্বনা খুঁজছেন অন্যদিকে শেখ মুজিবকে অবমাননাকারীদের সাথে নিয়ে সরকার পরিচালনা করছেন।

হায় সেলুকাস। অবস্থাদৃষ্টি এটাই প্রতিয়মান হয় যে সজীব ওয়াজেদ জয় ও তারেক জিয়া আমাদের ভবিষ্যত নেতৃত্বে আসতে যাচ্ছে। বিগত সরকারের আমলে বিএনপি যেসকল ভুল করেছে সেগুলো থেকে তিনি কতটা শিক্ষা গ্রহণ করেছেন তার উপরে নির্ভর করে তাঁর ভবিষ্যত রাজনৈতিক সফলতা। এবং শেখ হাসিনা যেসকল ভুল করেছেন সেগুলো থেকে কতটুকু শিক্ষা গ্রহণ করার করতে পারলেন তার উপরে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ভবিষ্যত। হানাহানির রাজনীতির অবসান ঘটিয়ে সুন্দর ও সুস্থ্য রাজনৈতিক সংস্কৃতি চালুর বিষয়ে নতুন দুই যুবরাজ কতটুকু সফল হবেন সেটাই এখন দেখার বিষয়।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.