আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রতিস্থাপনের জন্য রিকন্ডিশন্ড ফুসফুস!

সত্য বলেছি, সত্য বলছি এবং আরো সত্য বলেই যাব

ব্রিটেনে প্রথমবারের মত কোন একজন সিস্টিক ফাইব্রোসিসের রোগী জেমস ফিনলেসন পূণর্জীবন পাওয়া ফুসফুস প্রতিস্থাপন করলেন। এমন একটি ফুসফুসকে তারা সুস্থ্য করে ফিরিয়ে আনলেন, যাকে আগে পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। নিউক্যাসেলভিত্তিক বিজ্ঞানী ও সার্জনরা এ সাফল্যের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এর ফলে ঘটনাচক্রে বিদ্যমান প্রতিস্থাপনযোগ্য অঙ্গের পরিমাণ দ্বিগুণ হতে পারে । বর্তমানে এর যা চাহিদা, তাতে অনেক রোগীর ট্রান্সপ্লান্ট অপারেশনের জন্য অপেক্ষা করতে করতে জীবনের আয়ু শেষ হয়ে যায়। ফুসফুসের ভঙ্গুর প্রকৃতির কারণে শেষ সময়ে তা দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে।

মানবকল্যাণে দান করা প্রতি পাঁচটি ফুসফুসের মধ্যে বর্তমানে চারটিই ট্রান্সপ্লান্টের সময় নষ্ট হবার ঝুঁকিতে থাকে। তবে নিউক্যাসেলের ফ্রিম্যান হাসপাতালের এই অপারেশনটিই হলো প্রথম যেখানে এই পরিত্যক্ত অঙ্গকে সুস্থ করে প্রতিস্থাপনের কাজে লাগানো গিয়েছে। যে কৌশলটি এখানে কাজে লাগনো হয়েছে তা হলো ফুসফুসকে একটি হার্ট বাইপাস যন্ত্রের সাথে সংযুক্ত করা হয়েছে এবং এরপর কঠোর নিয়ন্ত্রণে অক্সিজেন, আমিষ, অ্যান্টিবায়োটিক ও অন্যান্য পুষ্টি পাম্প করা হয়েছে ক্ষতিগ্রস্থ টিস্যুর মধ্যে। এর ফলে টিস্যু সংক্রমণ কমে যায় এবং এমনকি ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যুকেও সুস্থ্য করে তোলে। তার সাথে সাথে ফুসফুসের অক্সিজেন আদান প্রদানের এবং বায়ুপথের চাপ নিয়ন্ত্রনের ক্ষমতাও পর্যবেক্ষণ করা হয় নিয়মিতভাবে।

এরপর প্রায় ৬ ঘন্টার মধ্যেই পূণর্জীবন পাওয়া ফুসফুসটি রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপনের যোগ্য হয়ে ওঠে। মি. ফিনলেসনকে গত নভেম্বরের শেষ দিকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয়া হয় এবং তিনি খুব দ্রুতই সুস্থ হয়ে উঠছেন বলে জানা যায়। প্রফেসর অ্যান্ড্রু ফিশার, নিউক্যাসেল ইউনিভার্সিটির Institute of Cellular Medicine এর অধ্যাপক বলেন, 'যে ফুসফুসটি এ প্রতিস্থাপন অপারেশনের জন্য নেয়া হয়েছিল তা বিশ্বের যেকোন দেশের প্রতিস্থাপন কেন্দ্রে ‘সম্পূর্ণরূপে পরিত্যক্ত’ বলে ঘোষিত হতো”। তিনি আরো বলেন, “আমাদের হাতে এখন সম্ভাবনা আছে প্রতিস্থাপনযোগ্য ফুসফুসের সংখ্যা দ্বিগুণ করার। এটা অবশ্যই প্রতিস্থাপনে অপেক্ষারত রোগীদের মনে আশার সঞ্চার করবে।

“ এক বছরের বেশী সময় ধরে ক্যানাডিয়ান সার্জনরা এই পদ্ধতি ব্যবহার করে আসছেন। প্রফেসর ফিশার বলেন, “প্রত্যেকটি ‘রিকন্ডিশন্ড ফুসফুস’ প্রতিস্থাপিত রোগীর পূর্ব লক্ষণ থেকে ভালো টেকসই প্রতিস্থাপনের আশা করা যাচ্ছে”। এই গবেষণাটি অর্থায়ন করেছিল “সিস্টিক ফাইব্রোসিস ট্রাস্ট” এবং এ বিষয়ে এ কোম্পানীর একজন মুখপাত্র বলেন, “এ রোগে আক্রান্ত শত শত রোগী এবং অন্যান্য ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত রোগীরা এর মাধ্যমে উপকৃত হবে”। তিনি আরো বলেন, “প্রতিস্থাপনের জন্য অপেক্ষারত অবস্থাতেই বর্তমানে সিস্টিক ফাইব্রোসিসের অর্ধেক রোগী মৃত্যুবরণ করেন”।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।