আমার উপরে কত গাড়ী চলে!
তারকা ব্লগার লালসালুর আজকের দুইটা পোষ্ট দেখলাম খুব হিট পেয়েছে একটাঃ সুন্দরী প্রতিযোগিতার ইফেক্ট আরেকটাঃ থ্রী ইডিয়টস । হিট পাওয়ার কারন আছে। ওই পোষ্টে লাক্স-চ্যানেল আই সুন্দরীর বিভিন্ন ভঙ্গীমার ছবি ছিল। ছেলে পুলেরা দেখি ভালই সাড়া দিয়েছে ওই পোষ্টে। এই পোষ্ট পড়ে আমার এক কলিগের কথা মনে পড়ে গেল।
এই কলিগ বিয়ের জন্য কী রকম মেয়ে খুঁজেছিলেন তা দেখুন।
মেয়ে হতে হবে ফরসা ধবধবে সাদা,
বুদ্ধিমতী না হলেও যেন না হয় গাধা।
বয়স যাতে না হয় বাইশের বেশী,
চাল চলন দেখে মনে হবে যেন বিদেশী।
মোটা তো চলবেই না হতে হবে স্লিম,
যেমন দেখা যায় নায়িকা অব হিন্দি ফিল্ম।
কালো তো চলবেই না এমনকি শ্যামলা,
শবশুরকে হতে হবে ধনী ব্যাবসায়ী বা আমলা।
আমি ওকে অনেক বোঝালাম- মানুষের বাহ্যিক সৌন্দযই সব কিছু না। শধু সুন্দরী দেখে বিয়ে করলে পরে বিপদ হবে। বরতমানে বেশীরভাগ সুন্দরী মেয়ের চরিত্র নিয়ে আমার যথেষ্ঠ সন্দেহ আছে। ছেলেটা আমার কথা শুনল না। বলত, আজকালকার ছেলে মেয়েদের একটু আকটু ‘কাহিনী’ থাকবেই।
ছেলেটা আবার খাঁটি ‘সুশীল’। আমার সেই কলিগ দেখতে অনেক সুন্দর। বাপেরও অনেক টাকা আছে, তাই সে তার চাহিদা অনুযায়ী ধনী আমলার অপূরব সুন্দরী মেয়েকে বউ হিসেবে পেল। শবশুরের টাকায় দেশের বাইরে হানিমুন করতে গেল। প্রচুর টাকার মালিক শবশুর মশাই আমার কলিগকে একটা নতুন ফ্ল্যাট ও গাড়ী উপহার দিয়েছে।
ভালই কেটেছিল কয়দিন। তারপরে হঠাৎ করে ছেলেটার মন খারাপ দেখলাম। বুঝলাম, দাম্পত্য কলহ। জিজ্ঞেস করার পরে যা উত্তর পেলাম।
কপাল খারাপ আমার কারে করলাম বিয়া,
যারে ভাবতাম আপন আর সে করে পরকীয়া।
বাসায় প্রতিদিন আসে তার অনেক ছেলে Friend,
বলে ছেলে-মেয়ে বন্ধুতব নাকি এই যুগের Trend.
রাতের বেলা সেই বন্ধুদের সাথে কথা চলে ফোনে,
আমি প্রতিদিন করি বারণ- আমার কথা কে শোনে?
ফেইসবুক, ম্যাসেঞ্জারে তাদের সাথে করে কত যে চ্যাট,
আমি কিছু বলতে গেলে করে আমাকে Threat.
বলে আমি নাকি নারী সবাধীনতার বিরোধী,
চলে যেতে পার তুমি- ভাল না লাগে যদি।
ভারসিটির পোলাপানেরা আমার জন্য পাগল,
আমার আর দরকার নেই তোমার মত ছাগল।
দিতে হয় তাকে দামী পোষাক দামী গহনা,
এসব বিষয়ে তার কোনো দেরী সহেনা।
বউকে ছাড়লে ছাড়তে হবে ফ্ল্যাট ও গাড়ী,
না ছাড়লে অকালে আমায় দিতে হবে ওইপাড়ে পাড়ি।
এসব কথা ফ্যামিলির কাছে রেখেছিলাম লুকিয়ে,
লুকিয়ে কাঁদতে কাঁদতে চোখের পানি ফেলেছি শুকিয়ে।
নাহ আর ছন্দ মেলাতে পারছি না। এরপরে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। মেয়েটা ভেবেছিল যেসব ছেলে তাকে খুব গুরুতবের সাথে দেখত তাদের কেউ তাকে বিয়ে করবে। না, তা হয়নি। ওই মেয়েটাকে আসলে ওর ‘ছেলে বন্ধুরা’ ‘খারাপ মেয়ের’ চোখেই দেখত।
পরে মেয়েটা বুঝতে পারে। কিন্তু ততদিনে কিছু করার নেই।
উপসংহারঃ যারা মানুষের চেহারাটাকে গুরুতবের সাথে দেখেন তারা ঠগবেন। একটা মেয়ের সৌন্দয্য বিয়ের পরে এক মাসের বেশী ভাল লাগবে না কিন্তু তার গুণাবলী আপনার জীবনটাকে সুন্দর করে দিবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।