আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দেখুন তো পাখিটি চিনতে পারেন কি না?

কানাকে কানা, খোঁড়াকে খোঁড়া বলিও না, ইহাতে উহারা কষ্ট পায়
দেখুন তো পাখিটি চিনতে পারেন কিনা? গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী এবং জলাশয়ের আশে পাশে বিচরণকারী এই পাখির নাম ডাহুক। ইংরজীতে যাকে বলা হয় Waterhen, ডাহুক খুব সুন্দর একটি পাখি। মনে আছে কবি ফররুখ আহমদের ডাহুক কবিতা পড়ে খুবই মুগ্ধ হয়েছিলামঃ আপনি দেখলেই এর সৌন্দর্যের প্রেমে পড়ে যাবেন! খুবই লাজুক আর ভীরু স্বভাবের এই পাখিটি সাধারণতঃ লোক চক্ষুর অন্তরালেই থাকতে পছন্দ করে। পুকুর বা এঁদো ডোবার আশেপাশের ঝোপঝাড়ে অথবা বাঁশের ঝাড়ে লুকিয়ে থাকা এই পাখিটি মাঝারি আকারের। লাজুক স্বভাবের-মানুষের সাড়া পেলেই লুকিয়ে পড়ে ঝোপ ঝাড়ের মধ্যে।

এর লেজ ছোট হলেও পা দুটো বেশ লম্বা। পায়ের আঙুলও বেশ লম্বা। সহজেই দৌড়ে আপনার চোখের সামনে থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে যাবে, আর রেখে যাবে আফসুফ। আহারে আরেকটু যদি সময় নিয়ে দেখতে পেতাম! এর পিঠের রঙ ধূসর ছাই রংয়ের, খয়েরী-কালো, মাথা ও বুক সাদা। লেজের নীচের অংশে লালচে আভা।

ঠোট হলুদ রঙের, ঠোঁটের উপরে লাল রঙের একটি ছোট্ট দাগ আছে। শুনেছি ডাহুক অনেক সময় বসত বাড়িতে পোষ মানে। প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ও অনুগত এই পোষা ডাহুক পাখি দিয়ে গ্রামের কৃষক শিকারীরা অন্য ডাহুক পাখিদের দলে ভিড়িয়ে আনার কাজটি করে। আষাঢ়- শ্রাবন মাস এদের প্রজননকাল। জলাশয়ের ধারে ঝোপের মধ্যে এরা বাসা বানায়।

ডাহুক ৬-৭টি ডিম দেয়। ডিমের রঙ ফিকে হলুদ বা গোলাপি মেশানো সাদা। স্বামী স্ত্রী মিলে ডিম তা দেয়। তবে অদ্ভুত ব্যাপার হল এ পাখির বাচ্চাগুলো কালো রঙের, পোকামাকড়, শামুক, উদ্ভিদের ডগা, শস্যদানা এদের প্রিয় খাবার। তবে বাচ্চার খাবার গ্রহণের সময় ঘটে সবচেয়ে মজার ঘটনা।

অন্য বেশিরভাগ পাখিরা তাদের বাচ্চাকে মুখে তুলে খাইয়ে দেয়। কিন্তু মা ডাহুকী কখনও বাচ্চাদের তুলে খাওয়ায় না। রাতে ডাহুকের টুবুক টুবুক ডাক শুনে আপনি হারিয়ে যাবেন অতল সুপ্তিতে। গ্রামের সবাই এর ডাক শুনে সহজেই একে চিনতে পারে। এই ডাক পুরুষ পাখির, যা বর্ষাকালে বেশি শোনা যায়।

একটানা অনেকক্ষণ ডেকে শ্বাস নেয়। ডাহুক এর স্ত্রী প্রতিশব্দ ডাহুকি। ডাহুক বাংলাদেশের একটি বিপন্ন পাখি। একে এখন অতটা আর দেখা যায়না। জানা যায়, ডিম থেকে বাচ্চা বের হবার সাথে সাথে প্রাকৃতিক নিয়মেই বাচ্চাগুলো বাসা থেকে মাটিতে নেমেই বাচ্চাগুলো মা বাবার পিছনে পিছনে হেঁটে হেঁটে খাবার খুঁটে খুঁটে খায়।

বিলুপ্ত প্রায় পাখিটি রক্ষায় সবাই এগিয়ে আসবেন। বিশেষ করে পাখি খেকোরা একটু সংযমী হবেন।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.