আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাহিত্যচর্চা / সাময়িকপত্র থেকে দৈনিকের পাতায়

আমার ভাল লাগার জগৎ শিল্প, সাহিত্য সংস্কতি। এবং সবার উপরে দেশ।

সাহিত্যচর্চা / সাময়িকপত্র থেকে দৈনিকের পাতায় রফিকউল্লাহ খান সাহিত্য রূপসমূহের ক্রমায়ত বৈচিত্র্যশীল হয়ে ওঠার মধ্যেই তার রচয়িতা এবং পাঠকসংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাজসভা থেকে জনসভায়, কয়েক শ' থেকে লাখ লাখ মুদ্রণসংখ্যায় একই রচনার প্রকাশ ও প্রচার সাহিত্যকে সাধারণ পাঠকের কৌতূহল ও পঠন-পাঠনের সীমানায় নিয়ে এসেছে। এই বিবর্তন কয়েক শ' বছরের নয়, কয়েক সহস্রাব্দের।

সব ভাষার সাহিত্যের শেকড় যেমন তার মাটির গভীরে প্রোথিত, তেমনি এই ভূমিতল- উত্থিত সাহিত্য অনুধাবনের জন্যও বিশ্বসাহিত্যের ইতিহাস ও তার ধারাক্রম সম্পর্কে সমৃদ্ধ ধারণা থাকা প্রয়োজন। পৃথিবীর অধিকাংশ সমাজের সাহিত্যের ধারা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, লোকায়ত ধারাটিই অনেক বেশি বেগবান ও প্রাণময়। কিন্তু কথকতা এবং মৌখিক ধ্বনি-কাঠামোর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকার ফলে পৃথিবীর অনেক লোকভাষার সাহিত্যই আজ অর্ধমৃত কিংবা মৃতপ্রায়। সেসব সাহিত্যের জীবাশ্ম অনুসন্ধান থেকে কোনো কোনো জাতির ইতিহাসে রেনেসাঁসের মতো মহাযুগান্তকারী ঘটনা ঘটে গেছে। একটি মাত্র ভাষাজ্ঞান থেকে সাহিত্যচর্চার এই বিপ্লবাত্মক রূপান্তর সম্ভব ছিল না।

প্রাচীন এবং মধ্যযুগের সাহিত্যের মূল ধারাটি ছিল রাজসভানির্ভর। প্রত্যক্ষ রাজসভা কিংবা তার তত্ত্বাবধান। মধ্যযুগে ধর্মের প্রবল প্রতাপ, পৌরাণিক যুগের লোকায়ত বিশ্বাস ও সংস্কার-আশ্রিত সাহিত্যকে অনেকটাই গ্রাস করে ফেলেছিল। কিন্তু রেনেসাঁসের বিশ্বজনীন চেতনার কালে, ভাষা সাম্রাজ্যবাদী রূপ পরিগ্রহণের আগেই বহুভাষিক কবি-শিল্পীরা পুরাণের ফসিল থেকে বের করে আনতে থাকেন একেকটি মূল্যবান সাহিত্যরত্ন। এলিজাবেথান যুগের ইংরেজি সাহিত্য এবং উনিশ শতকের বাংলা সাহিত্য তার প্রমাণ।

ষোড়শ, সপ্তদশ, অষ্টাদশ ও ঊনবিংশ শতাব্দীব্যাপী দক্ষিণ ও মধ্য ইউরোপের অনেক ভাষার সাহিত্যেই এই নবচেতনার স্ফূরণ লক্ষ করা যায়। ২. উনিশ শতকের বাংলাভাষী ভূখণ্ড ভারতবের্ষর যে কোনো ভূভাগ থেকে স্বতন্ত্র ছিল। এই ভূখণ্ডেই ভারতের স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়, আবার এ ভূখণ্ডেই স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের চেতনা সর্বাগ্রে অঙ্কুরিত ও বিকশিত হতে থাকে। রাজসভা থেকে সাহিত্যের গতিবিধি জনসভা তথা জনগণকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হতে শুরু করে। প্রথম 'গণমাধ্যম' 'সমাচার দর্পণ' (১৮১৮)-এর প্রকাশ শব্দশিল্পকে পেঁৗছে দেয় শিক্ষিত মানুষের দোরগোড়ায়।

ভাষার মুদ্রিত রূপ কেবল গ্রন্থাগার কিংবা পণ্ডিতের টেবিলে নয়, তা পেঁৗছে যেতে থাকে অল্পশিক্ষিত মানুষের হাতে হাতে। ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের 'সংবাদ প্রভাকর' (১৮৩১) প্রকাশের ফলে এই জনসভার সাহিত্যচর্চার গতি হয় আরো বেগবান, বৃহত্তর জনজীবনমুখী। সাহিত্যিকের হাত কীভাবে রাজসভা থেকে জনসভা, জনসভা থেকে বৃহত্তর লোকজীবনমুখী হয়ে ওঠে ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত তার প্রমাণ। তিনি ছিলেন একাধারে সম্পাদক, কবি, কর্মী, সংগঠক, আবিষ্করক। প্রথমে সাপ্তাহিক রূপে প্রকাশিত হলেও ১৮৩৯ খ্রিস্টাব্দের ১৪ জুন দৈনিক রূপে আত্মপ্রকাশ করে 'সংবাদ প্রভাকর'।

বাংলার সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক জীবনের ঘটনাবলির সমান্তরালে লুপ্তপ্রায় সাহিত্যকর্ম আবিষ্কার, লোকসাহিত্য আবিষ্কার ও প্রকাশ এবং নতুন লেখকদের রচনা প্রকাশ এই পত্রিকার অনন্য ঐতিহাসিকতা প্রমাণ করেছে। বিভন্ন সভাকবি এবং পাঁচালীকারদের রচনা সংগ্রহ ও প্রকাশ তার অতুলনীয় কীর্তি। সাহিত্যচর্চাকে বেগবান, বিতর্কমূলক ও গণমুখী করার লক্ষে তিনি 'সংবাদ রত্নাবলী', 'সংবাদ সাধুরঞ্জন' ও 'পাষণ্ডপীড়ন' নামে আরো তিনটি পত্রিকা প্রকাশ করেন। অক্ষয় কুমার দত্তের সম্পাদনায় ১৮৪২ সালে প্রকাশিত সাময়িক পত্রিকা 'তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা'য় কেবল তত্ত্ববিদ্যা, সাহিত্য, দর্শন, ইতিহাস, পুরাতত্ত্ব, বিজ্ঞান ও ভূগোল বিষয়ক প্রবন্ধের সঙ্গে নারী শিক্ষা ও বিধবা বিবাহের সমর্থন এবং বাল্যবিবাহবিরোধী উচ্চমানের প্রবন্ধ প্রকাশিত হতো। তিনি সংস্কৃত, ফরাসি ও জার্মান ভাষায় সুপণ্ডিত ছিলেন।

একটি শক্তিশালী, সৃষ্টিশীল ও সুদূররপ্রসারী সাহিত্যগোষ্ঠী গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত 'বঙ্গদর্শন' (১৮৭২) পত্রিকার প্রকাশ বাংলা সাময়িকপত্রের জগতে অনন্যসাধারণ ঘটনা। সৃষ্টিশীলতা ও মননচর্চাকে শিক্ষিত মধ্যবিত্তজীবনে সম্প্রসারিত করার ক্ষেত্রে 'বঙ্গদর্শন'-এর ভূমিকা ঐতিহাসিক। এ প্রসঙ্গে আরো কয়েকটি পত্রিকার কথা আমাদের বিষয়ভাবনার সূত্রেই প্রাসঙ্গিক মনে করছি। বাংলা, ইংরেজি, ফারসিসহ কয়েকটি ভাষায় সুপণ্ডিত, বাংলা সাহিত্যের প্রথম ঔপন্যাসিক প্যারীচাঁদ মিত্র মহিলাদের জন্য 'হিতকরী', 'মাসিক পত্রিকা' (১৮৫৪) সম্পাদনা করে বাংলা সাময়িকীর জগতে নতুন ধারার সৃষ্টি করেন। ডিরোজিও-র অন্যতম শিষ্য, বাংলার নবজাগরণের মূল ধারার সাধক প্যারীচাঁদ মিত্র নারী শিক্ষা, নারী অধিকার এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক জীবনের বহুবিধ অসঙ্গতি দূর করার লক্ষে সাহিত্য সৃষ্টি ও পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন।

উল্লেখ্য, উনিশ শতকে সাময়িকপত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অধিকাংশই ছিলেন লেখক, কবি, অনুবাদক, কথাশিল্পী কিংবা প্রাবন্ধিক। উনিশ শতকে কেবল কলকাতাকেন্দ্রিক জীবনেই নয়, বর্তমান বাংলাদেশ থেকেও বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সাময়িকপত্র প্রকাশিত হয়েছিল। তৎকালীন সমাজের দলিল হিসেবে ওইসব পত্রিকার মূল্য অপরিসীম। ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুনের 'উনিশ শতকে পূর্ববঙ্গের সমাজ' (২০০৬) গ্রন্থসূত্রে আমরা জানতে পারি ১৮৫৭ থেকে ১৯০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত পূর্ববঙ্গ থেকে ২৪১টি সাময়িকপত্র/সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়। তার মতে "... পূর্ববঙ্গ থেকে প্রকাশিত ২৪১টি সংবাদ সাময়িকপত্রের অনেকগুলোই ছিল সাপ্তাহিক এবং নিয়মিত।

যেমন 'ঢাকা প্রকাশ'-এর আয়ু তো ছিল প্রায় এক শ' বছর। কালীপ্রসল্পম্ন ঘোষ সম্পাদিত সাহিত্য মাসিক বান্ধবকে অনেকে আখ্যা দিয়েছিলেন 'দ্বিতীয় বঙ্গদর্শন' বলে। " উনিশ শতকের বাংলার সাময়িকপত্র-সংবাদপত্রের ইতিহাস বাংলার নবজাগরণেরই শিল্পফসল। 'সংবাদ প্রভাকর' প্রকাশের পর থেকে সাহিত্যচর্চার সমান্তরালে সামাজিক-সাংস্কৃতিক জীবনে সংঘটিত ঘটনা প্রবাহের বিশ্নেষণ, নতুন লেখক সৃষ্টি েযমন বৃদ্ধি পেতে থাকে, তেমনি শিক্ষার প্রতিও বৃদ্ধি পেতে থাকে মানুষের আগ্রহ। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিপ্লব বাঙালির সামাজিক-রাজনৈতিক ইতিহাসের সঙ্গে সঙ্গে সাময়িকপত্র ও সংবাদপত্রের ক্ষেত্রেও ঘটে যুগান্তকারী পরিবর্তন।

লেখকদের মধ্যে রাজনীতি সচেতনতা বৃদ্ধি পায় বহুগুণে। এ ক্ষেেত্র কলকাতা থেকে প্রকাশিত 'সোমপ্রকাশ' (১৫ নভেম্বর, ১৮৫৮) পত্রিকার ভূমিকা ছিল তাৎপর্যপূর্ণ। পরবর্তীকালের অনেক পত্রিকার মধ্যেই 'সোমপ্রকাশ'-এর প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। পূর্ববঙ্গের প্রথম সংবাদপত্র 'রঙ্গপুর বার্তাবহ' আত্দ্মপ্রকাশ করে ১৮৪৭ সালে। ১৮৬০ সালে রংপুর থেকে আরো একটি পত্রিকা প্রকাশিত হয়েছিল 'রঙ্গপুর দিকপ্রকাশ' নামে।

ঢাকার প্রথম সংবাদপত্র 'ঢাকা প্রকাশ' কবি কৃষষ্ণচন্দ্র মজুমদারের সম্পাদনায় ১৮৬১ সালে যাত্রা শুরু করে। অনেকটা কলকাতার 'সোমপ্রকাশ'-এর আদলে বিন্যস্ত এ পত্রিকার প্রভাব জনজীবনে কার্যকর ভূমিকা পালনে সমর্থ হয়েছিল। কুমারখালীর বাংলা পাঠশালার শিক্ষক কাঙ্গাল হরিনাথ ১৮৬৩ সালে মাসিক 'গ্রামবার্তা প্রকাশিকা' প্রকাশ করেন। সাহিত্য, দর্শন, বিজ্ঞান প্রভৃতি বিষয়ে রচনা থাকলেও প্রধানত নীলকর ও জমিদারদের কৃষকদের ওপর শোষণ-নিপীড়নের তথ্যনির্ভর রচনা প্রকাশের জন্য পত্রিকাটি খ্যাতি লাভ করে। এভাবে বাঙালির সাহিত্যচর্চা উনিশ শতক থেকেই রাজসভা থেকে জনসভায়-- জনসভা থেকে বৃহত্তর জনজীবনের ভূমিতল স্পর্শ করে।

সমাজ সংস্কার আন্দোলন, নারী শিক্ষা, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতিষ্ঠা, পাশ্চাত্য সাহিত্য-সংস্কৃতি সম্পর্কে জনজীবনে সচেতনতা সৃষ্টিই প্রকাশিত সাময়িকপত্র ও সংবাদপত্রের মূল লক্ষ্য ছিল। রক্ষণশীল দৃষ্টিভঙ্গি লালনকারী পত্রিকা যে ছিল না তা বলা যাবে না। কিন্তু সমাজগতির চারিত্র্যই ছিল প্রগতি ও আলোকমুখী -- মনুষ্যত্ব্যের অপার সম্ভাবনার শত উৎসমুখ খুলে দেওয়ার প্রতি। রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, প্যারীচাঁদ মিত্র, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রমুখ এই মহাকালের একেকটি শিল্পস্তম্ভ। ৩. ঐতিহাসিক কারণেই উনিশ শতকের নবজাগরণে বাঙালি মুসলমানের অংশগ্রহণ বিলম্বিত ও বিঘ্নিত হয়।

জনগোষ্ঠীর একটা বড় অংশের সংশ্লিষ্টতা না থাকায় ওই নবজাগরণকে খণ্ডিত বললেও অতু্িক্ত হবে না। কিন্তু বাঙালি মুসলমান বিশ শতকের প্রথম তিন দশকে অতি দ্রুত তাদের এই সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করতে সমর্থ হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এবং রুশ বিপ্লবের রক্তিম অভিজ্ঞতার ছোঁয়া তাদের নবজাগরণের তারুণ্যদীপ্ত উদ্দীপনার সঙ্গে সাম্যবাদী রাজনীতির গণমুখী চেতনাকে যুক্ত করে দেয়। উনিশ শতকেও বাঙালি মুসলমানের সম্পাদনায় পত্রিকা প্রকাশিত হয়েছে। তবে অধিকাংশই রণশীলতা এবং পশ্চাৎপদ দৃষ্টিভঙ্গিকে লালন করেছে।

সাহিত্যচর্চার মাধ্যম হিসেবে এককভাবে বাংলা গ্রহণের দ্বিধা তাদের সৃষ্টিশীলতা ও মননচর্চাকে গতিশীল করতে ব্যর্থ হয়েছে। যেমন, ১৮৩১ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা থেকে শেখ আলিমুল্লাহর সম্পাদনায় প্রকাশিত 'সমাচার সভারাজেন্দ্র' বাংলা ও ফারসি ভাষায় প্রকাশিত হয়। ১৮৪৬ সালে মৌলভী ফরিদুদ্দীন খাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত 'জগদুদ্দীপক ভাস্কর' নামক সাপ্তাহিক সংবাদপত্রটি ছিল পঞ্চভাষিক। উনিশ শতকের বাঙালি মুসলমানদের সম্পাদনায় প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য পত্রিকাগুলো হলো : মীর মশাররফ হোসেনের সম্পাদনায় প্রকাশিত মাসিক পত্র 'আজীজন নেহার' (১৮৭৪), শেখ আবদুর রহিম সম্পাদিত সাপ্তাহিক সংবাদপত্র 'সুধাকর' (১৮৮৯), মীর মশাররফ হোসেন সম্পাদিত পাক্ষিক পত্র 'হিতকরী' (১৮৯০) প্রভৃতি অসাম্প্রদায়িক, হিন্দু মুসলমানের মিলনকামী এবং বাংলা ভাষায় সাহিত্যচর্চার ধারা সমৃদ্ধ করে। এ ছাড়া শেখ আবদুর রহিম সমঙ্াদিত 'মিহির' (১৮৯২), 'মিহির ও সুধাকর' (১৮৯৫), 'কোহিনুর' (১৮৯৮)_ সমঙ্াদক : এসকেএম মহল্ফ্মদ রওশন আলী, মোজাল্ফ্মেল হক সমঙ্াদিত 'লহরী' (১৯০০), সৈয়দ এমদাদ আলী সমঙ্াদিত মাসিক সাহিত্যপত্র 'নবনহৃর' (১৯০৩), মুহল্ফ্মদ শহীদুল্ক্নাহ ও মোহাল্ফ্মদ মোজাল্ফ্মেল হক সমঙ্াদিত 'বঙ্গীয়-মুসলমান সাহিত্য-পত্রিকা' (১৯১৮) প্রভৃতি বাঙালি মুসলমানকে অসামঙ্্রদায়িক রাজনীতিসচেতন, বাংলা ভাষা ও সাহিত্যমনস্ট্ক এবং মননমুখী হতে সহায়তা করে।

'সমাচার দর্পণ' (১৮১৮) প্রকাশের এক শ' বছর পরে ১৯১৮ খ্রিসদ্বা্বেন্ধ মোহাল্ফ্মদ নাসিরউদ্দীনের সমঙ্াদনায় প্রকাশিত হয় মাসিক সাহিত্যপত্র 'সওগাত'। উদার ও প্রগতিশীল দৃষদ্বিভঙ্গি, মুক্তবুদব্দি চর্চায় বিশ্বাসী, মুসলমান সমাজে নারীমুক্তি আন্দোলনের সমর্থক এবং মুসলমান তরুণদের মধ্যে নতুন নতুন লেখক সৃষদ্বি ও তাদের কার্যকর সহায়তা 'সওগাত' পত্রিকার অনন্যতার পরিচয়বাহী। ইতিহাসের মানদ-ে বিচার করলে এই দীর্ঘজীবী পত্রিকা (১৯৪৭-এর দেশ বিভাগের পর পত্রিকার অফিস কলকাতা থেকে ঢাকা চলে আসে এবং নবপর্যায়ে প্রকাশিত হতে থাকে) বাঙালি মুসলমানের জীবনচেতনার আধুনিকায়নে যুগানস্নকারী ভূমিকা পালন করেছে। 'বঙ্গদর্শন' থেকে 'নবযুগ' (১৯১৪) বাঙালির সৃষদ্বিশীল সাধনা ও মননচর্চার েেত্র যে গতি, বৈচিত্র্য ও সমৃদব্দির ধারা সৃষদ্বি করেছিল, 'সওগাত' থেকে 'শিখা' (১৯২৬) পর্যনস্ন সেই ধারার সঙ্গে যুক্ত হলো বিশ্বজনীন জ্ঞানসাধনা, ভারতের স্ট্বাধীনতা আন্দোলন গণমানুষের মুক্তির সংগ্রাম এবং মুসলিম সমাজের কুসংস্ট্কারের বিরুদব্দে প্রকাশ্য বিদ্রোহ। 'শিখা' ছিল 'মুসলিম সাহিত্য সমাজে'র মুখপত্র।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিম-লে গঠিত এই সংগঠনের কার্যত্রক্রম ঢাকার নবাববাড়ির রণশীল রক্তচু ও গোঁড়া মুসলমানদের দ্বারা বারবার বাধাগ্রস্টস্ন হয়েছে। কিন্তু যাদের মতো_ 'জ্ঞান যেখানে সীমাবদব্দ, বুদব্দি যেখানে আড়ষদ্ব; মুক্তি সেখানে অসল্ফ্ভব'_ তাদের মুক্তচিনস্নার লেখনী থামানো যায়নি। ১৯১৮-২৬ এই সময়সীমায় বাংলা সাময়িকপত্রের জগতে এক নবধারার সৃষদ্বি। প্রকাশিত হয় কয়েকটি ভিল্পম্নধারার সাময়িকপত্র। ১৯১৯ খ্রিসদ্বা্বেন্ধ চট্টগ্রাম থেকে আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ ও আবদুর রশীদ সিদ্দিকীর সমঙ্াদনায় প্রকাশিত হয় মাসিক সাহিত্যপত্র 'সাধনা'।

মোজাল্ফ্মেল হকের সমঙ্াদনায় ১৯২০ সালে প্রকাশিত হয়। এই মাসিক সাহিত্য পত্রিকা নানা কারণে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এ পত্রিকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখাও পত্রিকাটিতে প্রকাশিত হয়েছে। "মোসলেম ভারতে'র প্রধান উদ্দেশ্য সাহিত্যের মাধ্যমে 'উত্থান প্রয়াসী' ও 'পতিত' মুসলমান সমাজের কল্যাণসাধন এবং তৎসহ হিন্দু-মুসলমান মিলন দৃঢ়তর করা।

কাজী নজরুল ইসলাম ও কমরেড মোজাফ্ফর আহমদের সমঙ্াদনায় ১৯২০ সালে 'নবযুগ' পত্রিকা প্রকাশিত হয়। ব্রিটিশ সরকারবিরোধী জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সমর্থক এই দৈনিক পত্রিকার আর্থিক ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহায়তা করেছিলেন একে ফজলুল হক। রাজরোষে পড়ে 'নবযুগ' পত্রিকার জামানত বাজেয়াপ্টস্ন হয়। ১৯২২ খ্রিসদ্বা্বেন্ধ অর্ধসাপ্টস্নাহিক 'ধহৃমকেতু' কাজী নজরুল ইসলামের সমঙ্াদনায় প্রকাশিত হয়। " পত্রিকাটি অভূতপহৃর্ব জনপ্রিয়তা অর্জন করে।

'ধহৃমকেতু' ধর্মনিরপেতা ও হিন্দু-মুসলমান সামঙ্্রদায়িক মিলনের সমার্থক। রাজনীতিতে স্ট্বরাজের পরিবর্তে পহৃর্ণ স্ট্বাধীনতার দাবি করে : 'ভারতবর্ষের এক পরমাণু অংশও বিদেশির অধীনে থাকবে না। ভারতবর্ষের সমঙ্হৃর্ণ দায়িত্দ্ব, সমঙ্হৃর্ণ স্ট্বাধীনতা রা, শাসনভার, সমস্টস্ন থাকবে ভারতীয়ের ওপর' (মুস্টস্নাফা নহৃরউল ইসলাম : 'সাময়িকপত্রে জীবন ও জনমত')। সরকারবিরোধী রচনার জন্য কাজী নজরুল ইসলাম কারারুদব্দ হন। সাপ্টস্নাহিক 'লাঙল' (১৯২৫) 'শ্রমিক-প্রজা-স্ট্বরাজ সমঙ্্রদায়ের মুখপত্র' রূপে কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয়।

রবীন্দ্রনাথের আশীর্বাদধন্য এই পত্রিকা সল্ফ্ভবত এ দেশে কমিউনিসদ্ব ভাবধারা প্রচারণার কাজে প্রথম বাংলা সাময়িকপত্র। প্রধান পরিচালক : কাজী নজরুল ইসলাম; সমঙ্াদক : মণিভূষণ মুখোপাধ্যায়। পরবর্তী সময়ে এ পত্রিকা কমরেড মোজফ্ফর আহমদ সমঙ্াদিত 'গণবাণী' (১৯২৬) পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত হয়। 'লাঙল'-এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে 'গণবাণী' 'বঙ্গীয় কৃষক ও শ্রমিক দলে'র মুখপত্রে রূপ লাভ করে। সমঙ্াদক তার বক্তব্যে বলেন : 'আমরা চাই ভারতবর্ষ পরশাসন-কবল হতে পহৃর্ণ বিমুক্ত হোক।

কিন্তু সে বিমুক্তির ভিত্তি ভারতের জনসাধারণের মতের উপর সুপ্রতিষ্ঠিত হবে_ বিশিষদ্ব শ্রেণীসমহৃহের মতের উপরে নয়। জয় গণ-ভারতের জয়। ' 'গণবাণী' পত্রিকায় কমিউনিসদ্ব ম্যানিফেসদ্বোর বঙ্গানুবাদ এবং কাজী নজরুল ইসলামের 'লাল পতাকার গান' প্রকাশিত হয়। সাহিত্য ও রাজনীতির এই যৌথায়নের ফল যে সুদহৃরপ্রসারী হয়েছিল, ইতিহাস তার প্রমাণ। কাজী নজরুল ইসলামের আবির্ভাবের অব্যবহিত পরে 'কল্ক্নোল' (১৯২৩) পত্রিকাকে কেন্দ্র করে বাংলার সাহিত্য জগতে বৈপ্ট্নবিক পরিবর্তন ঘটে।

সাহিত্যের সবগুলোর রূপের (ঋড়ৎস) বিষয় ও শিল্কপ্পচেতনায় রবীন্দ্রনাথকে অতিত্রক্রম করার প্রয়াস প্রবল হয়ে ওঠে। এই কলকাতাকেন্দিক সাহিত্য-আন্দোলনের ভিত্তি যে ঢাকায় সহৃচিত হয়েছিল, সাহিত্যের ইতিহাসকার সুকুমার সেনের বক্তব্যে তার প্রমাণ সুসঙ্ষদ্ব : "কল্ক্নোলের বীজ বপন হইয়াছিল ঢাকায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জগল্পম্নাথ হলের ছাত্রদের বার্ষিক পত্রিকা 'বাসনস্নিকা'য় (১৯২২)। স্ট্বভাবতই বিদ্যালয় ও ছাত্রনিবাসের আওতায় এ বীজ সতেজে প্ররূঢ় হতে পারে নাই। কল্ক্নোলের প্রবাহ কিছুদহৃর গড়াইলে পর ইহার একটি কচি শাখা বাহির হইয়াছিল ঢাকায়_ 'প্রগতি' (১৯২৭)। " বাংলাদেশের সাময়িকপত্র ও সাহিত্য আন্দোলনের েেত্র এ ঘটনার গুরুত্দ্ব অপরিসীম।

১৮১৮ থেকে ১৮৩০ পর্যনস্ন বাংলা ভাষায় অনেক পত্র-পত্রিকা প্রকাশিত হয়। যেগুলোর অধিকাংশই কলকাতাকেন্দ্রিক। '১৯২৬ সালে নবপর্যায়ে সওগাত বেরুবার আগে ও পরে বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা, সাধনা, ভাস্ট্কর, বঙ্গনহৃর, নবনহৃর, আঙ্গুর, ধহৃমকেতু, সাম্যবাদী এবং শিখা, জাগরণ, বুলবুল, নওরোজ, জয়তুসহ কয়েকটি বিশেষ উল্ক্নেখযোগ্য বার্ষিক, ত্রৈমাসিক, মাসিক, সাপ্টস্নাহিক বেরিয়ে বল্পব্দ হয়ে যায়। এসবের কোনো কোনোটার আরো অগ্রসর ভূমিকার প্রতিশ্রুতিও ছিল। তবে ড. আনিসুজ্জামানের তথ্যানুযায়ী ১৯১৮ থেকে ১৯৩০ পর্যনস্ন প্রকাশিত পত্র-পত্রিকার প্রকাশ সংখ্যা ৮২।

কোনোটাই দীর্ঘায়ু হয়নি। পাকিস্টস্নান প্রতিষ্ঠা পর্যনস্ন সওগাত ও মোহাল্ফ্মদীই ধারাবাহিক এবং প্রধান সাময়িকপত্রের ভূমিকা পালন করেছে' (হাসান হাফিজুর রহমান : সওগাত থেকে সমকাল)। ঢাকায় মুসলিম সাহিত্য-সমাজের মুখপত্র 'শিখা' নানা দিক থেকে 'সওগাত'-পরবর্তী সর্বাপো উল্ক্নেখযোগ্য পত্রিকা। ১৯২৬ থেকে ১৯৩১ পর্যনস্ন পরপর পাঁচ বছর এই পত্রিকা প্রকাশিত হয়েছিল। প্রথম বর্ষের পরবর্তী দু'বছর সমঙ্াদনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন এবং শেষ দুই খ- যথাত্রক্রমে আহল্ফ্মদ আবদুর রশীদ ও আবুল ফজল।

'শিখা'র বৈপ্ট্নবিক আদর্শ ও দৃষদ্বিভঙ্গি ওই কালের বাঙালি জীবনে গভীর ছাপ ফেলেছে বলা যাবে না। কিন্তু কালানস্নরে 'শিখা'য় প্রকাশিত রচনাগুলো নানা মাত্রিক তাৎপর্যে বৈশিষদ্ব্যম-িত। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের মাত্র চার বছর পর ঢাকা থেকে ১৯৫১ সালে 'সওগাত' পত্রিকা নতুন করে আত্দ্মপ্রকাশ করে। 'শিখা' গোষ্ঠীর অনেকেই এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯৫৭ সালে সিকান্দার আবু জাফরের উদ্যোগ ও সমঙ্াদনায় উল্পম্নতমানের সাহিত্য পত্রিকা 'সমকাল' প্রকাশিত হয়।

হাসান হাফিজুর রহমানের মনস্নব্য এ েেত্র উল্ক্নেখযোগ্য : 'আশ্চর্য যোগাযোগ বলতে হবে। পাকিস্টস্নান সাহিত্য সংসদ এবং সমকাল বস্ট্তুত মুসলিম সাহিত্য সমাজ, শিখা এবং সওগাতেরই উত্তরসহৃরি, ঐতিহ্যধারায় পুষদ্ব। পাকিস্টস্নান প্রতিষ্ঠার পরে এই তরুণ দল এবং নবীন পত্রিকার যাত্রা শুরুও হলো শিখা আর সওগাতের সমঙ্াদকদ্বয়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার সমল্প্বয়ী হাত ধরে। যে মানবিক মহৃল্যবোধ সওগাতে ভিত্তি পেয়েছিল, ৪০ বছর পর সমকালেই তা নতুন উদ্ভাবনা খুঁজে পেল। সওগাতের নেতৃত্দ্বের অবসান ঘটেছিল।

সমকালের নেতৃত্দ্ব শুরু হলো। ' 'সমকাল' যে ধারার সহৃত্রপাত করে তার প্রেরণা থেকেই 'উত্তরণ' ও 'কণ্ঠস্ট্বর'-এর মতো সৃষদ্বিশীল সাহিত্য ও শিল্কপ্পসচেতন পত্রিকার প্রকাশ এবং 'স্ট্বার ও সুনিকেত মল্ক্নার'-এর মতো মৌলিক ও ব্যতিত্রক্রমী লিটল ম্যাগাজিনের আত্দ্মপ্রকাশ বাংলাদেশের সাময়িক পত্রিকার জগৎকে সমৃদব্দতর করেছে। দেশ বিভাগের পর ১৯৪৮ সাল থেকে সহৃচিত ভাষা আন্দোলন, ১৯৫২'র জাতিসত্তার রক্তিম উজ্জীবন এবং পরবর্তী সামাজিক-রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ এ ভূখ-ের সাহিত্য সাময়িকী ও দৈনিক পত্রিকার জগতে নবধারার সহৃত্রপাত করে। গণচিহিক্রত সাহিত্য-শিল্কপ্প পাকিস্টস্নানের নয়াঔপনিবেশিক-স্টৈ্বরতান্পিক সাংস্ট্কৃতিক রুচি ও দৃষদ্বিভঙ্গি থেকে স্ট্বতন্প হয়ে যায়। দৈনিক পত্রিকার 'রবিবাসরীয়' সংখ্যার মাধ্যমে ব্যাপক জনগোষ্ঠীর মাঝে নব্য বিকাশমান স্ট্বাধীনতাকামী বাঙালি জাতিসত্তার অনস্নরিত আকাগ্ধা পেঁৗছে দেওয়া হয়।

প্রতিদিনের রাজনীতি সাহিত্যের বিশুদব্দ শিল্কপ্পলোককে হয়তো বা কিছুটা রক্তাক্ত করেছে; কিন্তু বাংলাদেশের সাহিত্য একটা জাতিগত স্ট্বতন্প রূপ অর্জন করেছে। ১৯৪৭-৭০ সময়কালে এ দেশে প্রকাশিত সাময়িকপত্রের সংখ্যা ৫০০ (সহৃত্র : শামসুল হক : বাংলা সাময়িকপত্র (১৯৪৭-৭০)। এসব সাময়িকপত্রের মধ্যে প্রগতিবাদী, আধুনিক চিনস্নাধারার সাময়িকপত্রের পাশাপাশি পাকিস্টস্নানবাদী সাহিত্যিক আবর্জনাও কম ছিল না। তবে সেসব পত্রিকা ষাটের দশকের শেষানস্নে এসেই অনস্নর্হিত হতে শুরু করে। ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদব্দের রক্তস্রোত বাংলাদেশের সাহিত্যলোককেও নতুন সল্ফ্ভাবনার পথে ধাবিত করে।

৪. স্ট্বাধীনতার পর ১৯৭২ সাল থেকে স্ট্বাধীন বাংলাদেশে সাময়িকী এবং দৈনিক পত্রিকা প্রকাশনার প্রাচুর্য অবিশ্বাস্য। ১৯৭২ সালেই বাংলাদেশে ২৮১টি পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী আত্দ্মপ্রকাশ করে [সহৃত্র : শামসুল হক : বাংলা সাময়িকপত্র (১৯৭২-৮২)]। একটি তথ্য (দৈনিক জনপদ, ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৫) থেকে জানা গেছে, ১৯৭৪ সাল পর্যনস্ন দেশে মোট ১০৬টি মাসিক পত্রিকা, ৩৭টি দৈনিক, ১৭৪টি সাপ্টস্নাহিক, ১৫টি মাসিক ও ৮টি ত্রৈমাসিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়। স্ট্বাধীনতা-উত্তর বিগত ৩৬ বছরে সাময়িক পত্রিকা ও দৈনিক পত্রিকার সংখ্যা বৃদব্দি পেয়েছে বহুগুণে। বিশ্বজ্ঞানের সংসঙ্র্শ আমাদের লেখকদের সাহিত্যচর্চার পরিধি বাড়িয়ে দিয়েছে বিচিত্রধারায়।

পাঠকের পঠন-পাঠনের আগ্রহ সংখ্যায় এবং প্রাচুর্যে অতীতের যে কোনো সময়কে অতিত্রক্রম করে গেছে। বিশ শতকের ষাট-সত্তরের দশকের মতো ছোট কাগজের সেই শিল্কিপ্পত উজ্জ্বল লাবণ্য এখন বেশি চোখে পড়ে না। কখনো কখনো মনে হয় বিজ্ঞাপনী সংস্ট্থাগুলো সাহিত্য প্রচারের দায়ভার গ্রহণ করেছে। দৈনিক পত্রিকার রচনাগুলো প্রতিবছর ফেব্রুয়ারিতে সুদৃশ্য গ্রন্থাকারে প্রকাশনা সংস্ট্থার টেবিলে শোভা পাচ্ছে। আমরা এখন সাময়িক পত্রিকা, ছোট কাগজ, মননশীল সাহিত্য পত্রিকার জগৎ থেকে পেঁৗছে গেছি দৈনিক পত্রিকার সাহিত্যের পাতায়।

প্রতি সপ্টস্নাহে লাখ লাখ পাঠকের কাছে পেঁৗছে যাচ্ছে লেখকদের কবিতা, গল্কপ্প, প্রবল্পব্দ, চিনস্নামহৃলক রচনা, ভ্রমণকাহিনী প্রভৃতি। জ্ঞান ও শিল্কপ্প কতটা ভাসমান এবং দৈনিক_ তার মহৃল্যায়ন দুরূহ। প্রতিদিনের অতীত হওয়া দৈনিকে সাহিত্যের এই গণায়নের পরিণতির বিচারের ভার সময়ের হাতে ছেড়ে দেওয়াই নিরাপদ এবং যুক্তিযুক্ত।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।