আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নয় হাজার রোহিঙ্গা দ্রুত ফেরত নেবে মিয়ানমার : যুগান্তর ৩০/১২/২০০৯

যখন শুনি কেউ এদেশের খেয়ে-পড়ে দুর্ণাম করে এ দেশের তখন শরীরে জ্বালা ধরে যায়, ইচ্ছে করে পিষে মারি শা__দের।

আনুমানিক নূন্যট ৫লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আছে: আর মাত্র নয় হাজার রোহিঙ্গা দ্রুত ফেরত নেবে মিয়ানমার Click This Link কূটনৈতিক রিপোর্টার বাংলাদেশে অবস্থানরত চার লাখের বেশি মিয়ানমারের নাগরিকের মধ্য থেকে যে ৯ হাজার তালিকাভুক্ত শরণার্থীর নাগরিকত্ব যাচাই সম্পন্ন হয়েছে তাদের দ্রুত সে দেশে ফেরত পাঠানো হবে। এদের ফেরত নেয়ার প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পাদনের বিষয়ে সহযোগিতা করতে রাজি হয়েছে মিয়ানমার। মঙ্গলবার ঢাকায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রথম দিনের বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল কায়েস এ তথ্য জানিয়েছেন।

সামরিক জান্তা শাসিত মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে এটি চতুর্থ বৈঠক। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে মঙ্গলবার সকালে দুু’দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক শুরু হয়। এতে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল কায়েস এবং মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দেশটির উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী মং মিন্ট। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল অনুপ কুমার চাকমা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিষয়ক ডেস্কের মহাপরিচালক ইমতিয়াজ হোসেন ও বহিঃপ্রচার অনুবিভাগের মহাপরিচালক সাইদা মুনা তাসনিম। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে বিভিন্ন অমীমাংসিত ইস্যু নিষ্পত্তি করার লক্ষ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রী পর্যায়ে একটি যৌথ কমিশন গঠন করতে চুক্তি হবে।

সীমান্ত সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির বিষয়ে আলোচনা করতে বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মইনুল ইসলাম আগামী মাসে মিয়ানমার সফরে যাচ্ছেন। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী রাখাইন প্রদেশে বাংলাদেশের অর্থায়নে একটি বিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তুলে সেখান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির প্রস্তাব করা হয়েছে। মিয়ানমার থেকে মোট ২ লাখ টন চাল আমদানি করা হবে। সমুদ্রসীমা নির্ধারণের বিষয়ে সালিশের পরিবর্তে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে তা নির্ধারণের জোর দাবি জানিয়েছে মিয়ানমার। পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল কায়েস বলেন, এ বৈঠকে মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সামগ্রিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

সেখানে ইস্যুর একটি বড় তালিকা টেবিলের সামনে নিয়েই তারা বসেছেন। দ্বিপক্ষীয় ¯^v_© সংশি ষ্ট বিভিন্ন ইস্যু এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তনের ইস্যুটি আলোচনায় প্রাধান্য পেয়েছে। তালিকাভুক্ত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সিংহভাগ আগেই প্রত্যাবাসন সম্পন্ন হয়েছে। তবে কক্সবাজারের দুটি শরণার্থী ক্যাম্পে এখনও পর্যন্ত ২৮ হাজার তালিকাভুক্ত শরণার্থী রয়ে গেছেন।

তাদের মধ্য থেকে ৯ হাজারের নাগরিকত্ব যাচাই সম্পন্ন করেছে মিয়ানমার। অবশিষ্ট শরণার্থীদেরও নাগরিকত্ব যাচাই সম্পাদনের পর তারা মিয়ানমারের নাগরিক হলে ফেরত নেবে। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, তালিকাভুক্ত শরণার্থীদের মধ্যে যারা মিয়ানমার থেকে এসেছিলেন তাদের সন্তানরাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। তালিকাভুক্ত ২৮ হাজার শরণার্থী মিয়ানমার ফিরে যেতে প্রস্তুত। মিয়ানমারের দিক থেকে যাচাই সম্পন্ন হওয়ার পর ফেরত নিতেও রাজি হয়েছে।

বাংলাদেশ তালিকাভুক্ত ২৮ হাজার শরণার্থীর তালিকা আগেই মিয়ানমারের কাছে হস্তান্তর করেছে। তিনি বলেন, তালিকাভুক্ত শরণার্থীদের বাইরেও µgvš^‡q মিয়ানমারের নাগরিকরা উদ্বাস্তু হিসেবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছেন। তারা অর্থনৈতিক উদ্বাস্তু। এই রোহিঙ্গাদের সংখ্যা উলে¬খ না করে সচিব বলেন, তাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। মিয়ানমার একই রকম প্রক্রিয়ায় তাদের নাগরিকত্ব যাচাই করে ফেরত নেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করবে।

পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে বৈঠকের আগে পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল কায়েস ঝটিকা সফরে কক্সবাজারে অবস্থিত কুতুপালং ও নোয়াপাড়া শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেছেন। শরণার্থী শিবিরের বাইরে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের অবস্থানও সরেজমিন প্রত্যক্ষ করেছেন। তিনি বলেন, সেখানে তিনি হাতে তৈরি অনেক ঘর দেখতে পেয়েছেন যেখানে রোহিঙ্গাদের বসতি। এরাও মিয়ানমার থেকে আগত। তাদের ফেরত নিতেও মিয়ানমারের অনীহা নেই বলে সচিব জানান।

মিজারুল কায়েস বলেন, মিয়ানমারের নাগরিকদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া যত সংক্ষেপে সম্ভব সম্পন্ন করার ব্যাপারে বাংলাদেশ সচেষ্ট। দু’দেশের দূতাবাসের মাধ্যমে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দ্রুত ফেরত পাঠানোর পথে অগ্রসর হব। যৌথ কমিশন : পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল কায়েস বলেছেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে অমীমাংসিত বিভিন্ন ইস্যু নিষ্পত্তি করতে শিগগিরই পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে যৌথ কমিশন গঠিত হবে। এ লক্ষ্যে দু’দেশের মধ্যে একটি চুক্তি সম্পাদিত হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্র যত বাড়বে, দু’দেশের ইস্যু নিষ্পত্তির সম্ভাবনাও তত বাড়বে।

পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে এক্ষেত্রে দৃশ্যমান অগ্রগতি সহজ হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে যৌথ কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া মিয়ানমার সম্পন্ন করেছে। বাংলাদেশের পক্ষে প্রক্রিয়াগত কার্যক্রম সম্পাদন শেষ হলে দ্রুত এ যৌথ কমিশন গঠিত হবে। সীমান্ত ইস্যু : মিজারুল কায়েস বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে সীমান্ত সংক্রান্ত বিভিন্ন বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে আলোচনা করতে বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মইনুল ইসলাম আগামী মাসে মিয়ানমার সফরে যাচ্ছেন। সীমান্তের ব্যাপারে দু’দেশের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে ফোকাল পয়েন্ট নির্ধারণ করা হবে।

এক্ষেত্রে চট্টগ্রামের জিওসি বাংলাদেশের পক্ষে ও মিয়ানমারের পক্ষে ওয়েস্টার্ন কমান্ড যোগাযোগ রক্ষা করবেন। গ্যাস ও বিদ্যুৎ আমদানি : পররাষ্ট্র সচিব বলেন, তাদের আলোচনায় মিয়ানমার থেকে গ্যাস ও বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বিদ্যুতের বিষয়ে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে বাংলাদেশের অর্থায়নে একটি বিদ্যুৎ প্রকল্প গ্রহণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ আমদানি করতে পারবে। এ প্রস্তাবের বিষয়ে মিয়ানমারের সাড়া ইতিবাচক।

এ প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত কৌশল নির্ধারণ করবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়। সচিব বলেন, মিয়ানমার থেকে গ্যাস আমদানির প্রস্তাবে সুস্পষ্ট আশ্বাস পাওয়া যায়নি। মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল বলেছে, এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত গ্যাস রফতানির বিষয়ে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে। ফলে নতুন কোন গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কার হলে গ্যাস আমদানির বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। চাল আমদানি : পররাষ্ট্র সচিব বলেন, মিয়ানমার থেকে এক লাখ টন সেদ্ধ চাল ও এক লাখ টন আতপ চাল আমদানির প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ।

এ আমদানি প্রক্রিয়া সহজ করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। ফলে আমদানি কার্যক্রম দ্রুত সম্পাদন করা সম্ভব হবে। ভিসা ইস্যু : বাংলাদেশের নাগরিকদের যাতে সহজে ভিসা প্রদান করা হয় সে বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে সচিব জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের এক বছর মেয়াদি মাল্টিপল ভিসা ইস্যু করতে মিয়ানমার রাজি হয়েছে। সীমান্ত পাসের মেয়াদ ও পরিধি দুই-ই বৃদ্ধি করার প্রস্তাব বাংলাদেশ করেছে।

বর্তমানে বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে মংডু পর্যন্ত যাওয়ার জন্য ১৪ দিনের বর্ডার পাস ইস্যু করে মিয়ানমার। বাংলাদেশ এক মাসের জন্য সিতুইয়ে পর্যন্ত এ পাস ইস্যুর প্রস্তাব করেছে। মিয়ানমার প্রতিনিধি দল ইয়াঙ্গুনের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে জানাবে। সমুদ্রসীমা : সমুদ্রসীমা নির্ধারণের বিষয়ে বাংলাদেশের সালিশে যাওয়ার পরিবর্তে দ্বিপক্ষীয়ভাবে আলোচনা করে নিষ্পত্তির প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেছে মিয়ানমার। পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল কায়েস অবশ্য সালিশ থেকে সরে আসার বদলে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা ও সালিশ উভয় প্রক্রিয়ায় সম্পাদনের ব্যাপারে বাংলাদেশের অবস্থান ব্যক্ত করেছেন।

সচিব বলেন, দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করে সমুদ্রসীমা নির্ধারণ করতে আগামী ৮ ও ৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে পৃথক একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সড়ক যোগাযোগ : সচিব পর্যায়ের এবারের বৈঠকে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের বিষয়ে কোন অগ্রগতি হয়নি। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, সরাসরি সড়ক ও বিমান যোগাযোগ স্থাপনের ইস্যুতে কোন অগ্রগতি হয়নি। মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সড়ক, বাংলাদেশ-মিয়ানমার-চীনের মধ্যে ত্রিদেশীয় সড়ক এবং এশীয় হাইওয়ের মাধ্যমে যোগাযোগের ইস্যু টেবিলে রয়েছে। কবে থেকে এ সড়ক নির্মাণ হবে তার দিনক্ষণ নির্ধারণ হয়নি।

এ ইস্যুতে অগ্রগতি এটুকুই যে, মিয়ানমার এ ধরনের সড়ক যোগাযোগ সৃষ্টির গুরুত্ব অনুধাবন করে। বিমসটেক সচিবালয় : বাংলাদেশ বিমসটেকের সচিবালয় ঢাকায় স্থাপনের বিষয়ে মিয়ানমারের সমর্থন চেয়েছে। শ্রীলংকা Kj‡¤^v‡Z বিমসটেক সচিবালয় স্থাপন করতে চায়। বাংলাদেশ যুক্তি দেখিয়েছে, বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান বিমসটেকের কেন্দ্রে। ফলে সদস্য রাষ্ট্রগুলো সহজেই যোগাযোগ করতে পারবে।

পাশাপাশি বিমসটেক সদস্য দেশগুলোর সবার দূতাবাস ঢাকায় রয়েছে। শ্রীলংকায় তা নেই। ফলে এদিক দিয়েও ঢাকায় বিমসটেক সচিবালয় স্থাপন করে যোগাযোগ রক্ষা করা সহজ হবে। Click This Link


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।