আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সম্পর্কে টানাপোড়োন: যুগান্তর ৩০/১২/২০০৯

যখন শুনি কেউ এদেশের খেয়ে-পড়ে দুর্ণাম করে এ দেশের তখন শরীরে জ্বালা ধরে যায়, ইচ্ছে করে পিষে মারি শা__দের।

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সম্পর্কে টানাপোড়েন Click This Link মাসুদ করিম বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক এ মুহূর্তে বিশ্বাস ও অবিশ্বাসের দোলাচলে রয়েছে। বাংলাদেশের অন্যতম প্রতিবেশী এ দেশটির সঙ্গে বর্তমান সরকারের শুরুর দিকে সীমান- ইস্যুতে বেশ উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সমুদ্রসীমা নির্ধারণের ইস্যু সালিশে নিয়ে যাওয়ার পর এ আস্থার সংকট তীব্র আকার ধারণ করে। মিয়ানমার ক্রমাগতভাবে বিষয়টি দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তির আগ্রহ ব্যক্ত করলেও সমুদ্রসীমা নির্ধারণে বাংলাদেশের ন্যায়ভিত্তিক পদ্ধতি অনুসরণের প্রস-াব অগ্রাহ্য করে চলেছে।

মিয়ানমার চায় সমদূরত্বের ভিত্তিতে সমস্যার সমাধান করতে। সমুদ্রসীমার প্রশ্নে আগামী ৮ ও ৯ জানুয়ারি চট্টগ্রামে দু’দেশের মধ্যে আবার বৈঠক বসবে। সমুদ্রসীমা নির্ধারণে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তির প্রয়াস বিগত ৩৫ বছরে সম্পন্ন না হওয়ায় বাংলাদেশ সালিশে গেছে। তবে বাংলাদেশ বলছে, বিষয়টি দ্বিপক্ষীয়ভাবে নিষ্পত্তির বিষয়েও প্রয়াস চালানো হবে। আগামী রাউন্ডের বৈঠক এ লক্ষ্যেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের অমীমাংসিত ইস্যুর সংখ্যা অনেক। তবে সামরিক জান-া শাসিত এ প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে এসব ইস্যুর নিষ্পত্তি করার প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোও সীমিত। বিশেষ করে প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর ইস্যু ঝুলে আছে বছরের পর বছর। এ রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের ভোটার হচ্ছে। অবৈধভাবে বাংলাদেশী পাসপোর্ট সংগ্রহ করে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে।

অর্থনৈতিক কারণে রোহিঙ্গারা দলে দলে নাফ নদী পেরিয়ে বাংলাদেশে আশা শুরু করে নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে। প্রথম দিকে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরাল ছিল বিধায় দু’লাখ ৩৬ হাজার রোহিঙ্গা ফেরত পাঠানো সম্ভব হলেও যতই দিন যাচ্ছে রোহিঙ্গা সমস্যা প্রকট হচ্ছে। সীমান- দিয়ে রোহিঙ্গাদের আগমনের কারণে উত্তেজনা ছড়ায়। এসব রোহিঙ্গা শরণার্থী নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশের আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায়। মিয়ানমারের মতো প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান- খুব দীর্ঘ না হলেও এ দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতার ক্ষেত্র অবারিত।

কিন্তু সম্পর্কের টানাপোড়েনের কারণে এ সম্ভাবনা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। বাংলাদেশের পূর্বমুখী কূটনীতির সূচনালগ্নে মিয়ানমারের ওপর দিয়ে সড়কপথে চীন, লাওস, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম তথা পূর্বের দেশগুলোর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ সম্ভব ছিল। কিন্তু চলমান পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের আলোচনায় এ ইস্যুতে অগ্রগতি হয়নি। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর প্রশ্নে বাংলাদেশ সিরিয়াস হলেও মিয়ানমারের আগ্রহ এ বিষয়ে কম। এ মুহূর্তে যদিও দেশটি ৯ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে রাজি হয়েছে।

তবে এ প্রক্রিয়া সম্পাদন হতে কত সময় লাগবে তার কোন সময় নির্ধারিত নেই। তার ওপর অনিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের আগমন চলছে। বর্তমানে প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে। বাংলাদেশের সীমানে-র ওপারে মিয়ানমার যেভাবে সামরিক কাঠামো গড়ে তুলছে, তাতে প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে তার আস্থার সম্পর্কের সংকট রয়েছে বলেও অনেকে মনে করেন। মিয়ানমার থেকে গ্যাস আমদানি, বিদ্যুৎ আমদানি, মিয়ানমারের কৃষি জমি লিজ নিয়ে বাংলাদেশের চাষাবাদের প্রস-াব, সংকটের সময় মিয়ানমার থেকে চাল আমদানির প্রস-াব সবই ঝুলে আছে।

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় যাওয়ার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বিমসটেক সম্মেলনে যোগ দিতে মিয়ানমার সফর করেছেন। মিয়ানমার থেকে বড় ধরনের কোন সফর বাংলাদেশে অবশ্য হয়নি। মিয়ানমারে সামরিক জান-া ক্ষমতায় থাকায় দেশটির সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বিভিন্ন অমীমাংসিত ইস্যুতে কাঠামোগত আলোচনা চালানো কঠিন। দেশটি অবশ্য আগামীতে এক ধরনের নির্বাচন করতে যাচ্ছে। তবে প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সামরিক জান-ার সঙ্গেই আলোচনা শুরু করেছে।

তার অংশ হিসেবে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে দু’দিনের বৈঠক ঢাকায় শুরু হয়েছে। সিদ্ধান- হয়েছে, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে যৌথ কমিশন গঠিত হবে। এ কাঠামো গড়ার পাশাপাশি সীমান- ইস্যু নিয়ে আলোচনা করতে বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মইনুল ইসলাম আগামী মাসে মিয়ানমার সফরে যাচ্ছেন। ফলে দু’দেশের মধ্যে এক ধরনের আলাপ-আলোচনার প্রবণতা লক্ষ্য করা গেলেও পারস্পরিক আস্থাহীনতায় এসব আলোচনা থেকে ফল পাওয়া যাচ্ছে সামান্যই। সরকারের তরফে আশা করা হচ্ছে, আগামী দিনেও মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই বিভিন্ন ধরনের অমীমাংসিত ইস্যুর নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে।

Click This Link

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।