আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সমুদ্রগামী জাহাজের ডিজাইন তৈরিতে বিশ্ব অঙ্গনে স্থান করেছে বাংলাদেশ: দেশে প্রথম বারের মতো ড্রেজারও তৈরি হতে যাচ্ছে

পরে বলবো

বিদেশে জাহাজ রপ্তানীর কার্যাদেশ পাবার পর এবার সমুদ্রগামী জাহাজের ডিজাইন তৈরির েেত্র বিশ্ব অঙ্গনে স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের একজন স্থপতির তৈরি করা নকশার অনুমোদন দিয়েছে ফ্রান্সের আন্তর্জাতিক বু্যরো ভ্যারিটা কাসিফিকেশন সোসাইটি। অন্যদিকে সমুদ্রগামী জাহাজের পর এই প্রথম ড্রেজার তৈরি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। নেদারল্যন্ডের একটি প্রতিষ্ঠানের কারিগরি সহায়তা নিয়ে ৫৮ কোটি টাকায় তিনটি ড্রেজার তৈরির কার্যাদেশ পাচ্ছে বাংলাদেশের একটি প্রতিষ্ঠান। নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, আন্তর্জাতিক এই স্বীকৃতি বাংলাদেশের জাহাজ শিল্পকে আরো এক ধাপ গিয়ে নিলো।

আন্তর্জাতিক মানের ডিজাইন তৈরির েেত্র সরকার সব ধরনের সহায়তা করবে বলেও জানান তিনি। জাহাজ নির্মান শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা জানান, দেশের কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ২০১৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন দেশে জাহাজ রপ্তানীর কার্যাদেশ পেয়ে এখন ব্যস্ত নির্মান কাজে। যুক্তরাষ্ট্র, ফ্্রান্স, জার্মানী ও জাপানসহ কয়েকটি দেশে ১০ টি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা সমুদ্রগামী জাহাজ ও সি ট্রাকের ডিজাইনের অনুমোদ দিয়ে থাকে। তাই বাংলাদেশে সমুদ্রগামী জাহাজ নির্মানের ডিজাইন সিঙ্গাপুর ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে তৈরি করে আনতে বিপুল পরিমান অর্থ ব্যয় হওয়ার পাশাপাশি সময় লেগে যায় কমপ ে৬ মাস। এই পরিস্থিতিতে থ্রী এঙ্গেল মেরিন কনসালটেন্টের প্রকৌশলী আমিনুল ইসলামের তৈরি করা জাহাজের নকশা গত মে মাসে অনুমোদন পায় বু্যরো ভ্যারিটা কাসিফিকেশন সোসাইটিতে।

তার এ নকশায় নির্মান করা হচ্ছে বিআইডবি্লউটিসির দুটি সমুদ্রগামী জাহাজ। সুত্র জানায়, কর্নফুলী শিপ বিল্ডার্স লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান ১৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা মুল্যে ৪ টি সি ট্রাক সরবরাহের জন্য বিআইডবি্লউসি'র সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী সি ট্রাকের ডিজাইন আন্তর্জাতিক কাসিফিকেশন সোসাইটি থেকে অনুমোদন পেতে হয়। তাই কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স সি ট্রাকের ডিজাইনের জন্য সিঙ্গাপুর ভিত্তিক ভারতীয় কোম্পানী জেডি মেরিনের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এ প্রতিষ্ঠানটি ডিজাইনের জন্য ৩৫ লাখ টাকা চায়।

এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান থ্রি এঙ্গেল মেরিন কনসাল্টেন্ট মাত্র ১২ লাখ টাকায় ডিজাইনের প্রস্তাব দিলে কর্নফুলী শিপ বিল্ডার্স তাদেরকে কার্যাদেশ দেয়। পরে তাদের করা ডিজাইন গত ৩০ এপ্রিল বু্যরো ভ্যারিটা সোসাইটিতে পাঠানো হলে ২৩ দিন পর মে মাসে এর অনুমোদ দেয়। স্থপতি আমিনুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশে ৮ টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা তার মতো সি ট্রাক ও সমুদ্রগামী জাহাজ তৈরির েেত্র কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করছে। সরকারি সহায়তা পেলে এ সব প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক মানের নকশা তৈরি করে বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমুর্তি উজ্বল করতে পারবে। স্থপতি আমিনুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশে ৮ টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা তার মতো সি ট্রাক ও সমুদ্রগামী জাহাজ তৈরির েেত্র কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করছে।

সরকারি সহায়তা পেলে এ সব প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক মানের নকশা তৈরি করে বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমুর্তি উজ্বল করতে পারবে। বিশেষ করে সহজ শর্ত ও স্বল্প সুদে ঋন এবং লজিস্টিক পাপোর্ট দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান তিনি। তিনি জানান, বিদেশে একটি নকশা করতে ৩৫ থেকে ৪০ লাখ টাকা খরচ হয়। সেখানে বাংলাদেশে তারা ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকায় করতে পারবে। এর ফলে দেশের টাকা আর বিদেশে যাবে না।

নিজের দেশে নকশা তৈরি করতে পারলে রপ্তানী মুল্যের শতকরা ১৫ ভাগ ব্যয় কমানো এবং বিপুল পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন জাহাজ শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা। নৌ পরিবহন মন্ত্রী জানিয়েছেন, সমুদ্রগামী জাহাজের নকশা এখন বাংলাদেশে হওয়ায় নির্মান খরচ অনেকটা কমে যাবে। তাই জাহাজ শিল্পের পাশাপাশি নকশা নির্মান খাতের উন্নয়নেও পদপে নেবে সরকার। এ দিকে বিদেশে রপ্তানীর জন্য জাহাজ তৈরির কার্যাদেশ পাবার পর এবার ড্রেজার তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ। সর্বনিম্ম দরদাতা হিসেবে বিআইডবি্লউটিএ'র তিনটি ড্রেজার তৈরি করতে যাচ্ছে নেদারল্যান্ডের বোস্টা এলএমজি কোম্পানী ও বাংলাদেশের কর্নফুলী শিপ বিল্ডার্স যৌথ ভাবে।

কার্যাদেশ পাবার পর চট্টগ্রামের ডকইয়ার্ডে ১৮ মাসের মধ্যেই এ গুলো তৈরি করা হবে। যা হবে বাংলাদেশে এই প্রথম। কর্নফুলী শিপ বিল্ডার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এম এ রশিদ জানান সরকারি সহায়তা পেলে তারা বাংলাদেশে যুদ্ধ জাহাজও বানাতে পারবেন। তার মতে যুদ্ধ জাহাজ বানানো তাদের জন্য তেমন কোন কঠিন কাজ নয়। বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের দুর্ঘটনা কবলিত বাংলার সৌরভ জাহাজ পরিত্যাক্ত হয়ে যাবার পর এটাকে নতুনের মতো করে তৈরি করেছে কর্নফুলী শিপ বিল্ডার্স।

এর পরেই আলোচনায় উঠে আসে এ প্রতিষ্ঠানটি। ইঞ্জিনিয়ার রশিদ বলেন, ভারতের জন্য ১৬ টি ড্রেজার তৈরি করা হবে চট্টগ্রামে তার ডক ইয়ার্ডে। বোস্টা এলএমজি কোম্পানী এ গুলো নির্মানের কাযর্াদেশ পেয়েছে। এ কাম্পানীর সঙ্গে যৌথ ভাবে নির্মান করে এ গুলো ভারতের কাছে হস্তান্তও করা হবে। আর বিআইডবি্লউটিএর ড্রেজার তিনটির কার্যাদেশ পাবার পর দেড় বছরের মধ্যেই হস্তান্তর করা হবে।

সমুদ্রগামী জাহাজ তৈরির পাশাপাশি কয়েক বছরের মধ্যেই দেশের চাহিদা অনুযায়ী ড্রেজার তৈরি করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন, জাহাজ শিল্প মালিকরা। দেশের জাহাজ শিল্প উন্নয়নে সব ধরনের সহায়তা দেয়া হবে বলে জানান নৌ পরিবহন মন্ত্রী ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।