আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পরলোকে যাওনের রাস্তা কোনডা?

আসেন দুর্নীতি করি। আর এই দুনিয়াটাকেই খুচাই!

> তা ভাইজান, আপনের প্রবলেম কি আছিলো? > আর কইয়েন না, এলাকার লোকজন আমারে কি জন্য দেখবার পারে না সেইডাই বুঝি না। আসলে কারো ভালো কেউ স হ্য করে না! > কেন? আপনে কি গোসল করতেন না কি যে আপনারে কেউ স হ্য করে না? > ধুর মিয়া...বিটলামি করেন কেন..স্টুডেন্ট মানুষ কম কথা কইবেন। আসলে যখন অল্প শিক্ষিত মানুষ বেশি টাকা পয়সা কামায় ফেলায় তখনই তার শত্রু বাড়ে। একদিন সকালে ঘুম থিকা উইঠা শুনি পুলিশ আইছে।

কোনো মতে পলাইয়া সোজা বেনাপোল বর্ডারে আইসা শুনি আমাগো পাশের বাড়ির মতিমিয়া আর তার বদমাইশ ছাওয়ালরে মাইরা ২৪ টুকরা করছে। আর এর ১ নম্বর আসামী নাকি আমি! এই দুঃখে ৩ বছর ধইরা আমি দেশে যাই না। > এই খানে একখান কথা...। বাবা পোলারে কি সব মিলাইয়া ১২-১২ কইরা ২৪ টুকরা নাকি দুইটার প্রত্যোকটারে ২৪-২৪ কইরা ৪৮ টুকরা? চক্ষু লাল কইরা এমনে চাইলো মনে হইলো ঐ পোলার জায়গায় আমারে ২৪ টুকরা করলে তার এই রাগ কমবো তার আগে না...ভাইজান, মাইন্ড কইরেন না..। ফান্টা খান।

এক আজিব কিছিমে পড়ছি..। বাসে উঠার আগে প্রচুর পানি পিপাসা পাইছিলো। বাসে উইঠা দুই চিমুক দিয়া এমুন হিস্যুতে ধরছে যা না পারি খাইতে না পারি সইতে! > তাইলে মিয়া বাসে উঠছেন কেন? হিস্যু কইরা ফান্টা খাইয়া হাটা দিতেন! দেন আপনের ফান্টা আমি গিলি। আমি মনে বড় আফসোস নিয়া তারে ফান্টা খান দিলাম আর তারচেয়ে বড় আফসোস নিয়া তার ফান্টা গিলা দেখতে লাগলাম। পুরা দেশি টাকায় ১০০ টাকা নিছে এই ৫০০ এমএল।

> তা ভাই, সামনে আমি নামুম...আসেন আমার লগে...আরো অনেক বাঙ্গালি আছে যারা ঐখানে কাজ করে..ঘুইরা যান, চিন্যা যান, আখেরে কামে লাগবে। > ভাইজান আমার স্টপেজ আইতে আরো ৩ ঘন্টা..। অতক্ষন মনে হয় পারুম না বিলের বান ঠেকাইতে। আপনের ঐখানে কি হিস্যু করনের কামরা থাকলে বইলেন...বাইরে ১৪ ইন্ঞ্চি বরফের উপর শুর করলে ইন্ঞ্জিন শুইধা সমস্যা হইয়া যাইবো। আমার ঘাড়ে একটা রাম থাপ্পড় দিয়া কইলো...এমুন হাসির কথা মেলাদিন পর শুনলাম...বইলা হাহা কইরা হাসতে লাগলো।

আর তার থাপ্পড় খাইয়া মনে হইলো পাজরের দুইটা হাড্ডি ঘাড়েরর লগে আতকা গুতা খাইলো। যাই হোক ৫ মিনিটের পর উনার স্টপেজ এ নামবার লগে লগেই একটা বিশাল চেইন শপে নিয়া গেলো, মনে হয় লিডেল..। গিয়াই টয়লেট খুইজা পুরা পাংখা। মাগার একখান আফসোস ১০০ টাকার ফান্টা খান অহন পাইলে জব্বর হইতো। > কি কাজ হইছে? > হ হইছে..।

তয় ক্ষুধা লাগছে! আশেপাশে ম্যাক ডুনাল্ড নাই? >আরে মিয়া কিয়ের ম্যাক ডুনাল্ড....আগে বাসায় লও। এই সারছে....আমারে অহন কয় টুকরা করে আল্লা মালুম...তাও পিছ পিছ গেলাম কারন নেক্সট বাস ৬ টায় মানে ২ ঘন্টা পর...আর ইদানিং বিকাল ৩ টায় সন্ধ্যা হয়। সেই তুলনায় অখন রাইত। যাই হোউক একটু হাটতেই বরফের মধ্যে দেখি বিশাল একখান কর্নফুলি গার্ডেনের মতো এ্যাপার্টমেন্ট। সে সোজা নিয়া ৫ তলার একটা রুমে ঢুকতেই দেখি ঐ বিশাল রুমে আরও দুজন সোফায় বসে মদের বোতল নিয়ে গান শুনছে।

আমাকে দেখে বললো,...এইটা আবার কে? > স্টুডেন্ট। > ও আইচ্ছা..আপনের নাম কি? > রনি। > আপনি কি মিরপুরের রনি? > হ। > তো শাহাদাতের সাথে যোগাযোগ আছে? > (চামে একখান ঢোক গিল্লা) আমি জন্মের পর থিকা কুনো শাহাদাতের সাথেই পরিচয় নাই। > ও মামা..।

এইটা তো দেখি পিওর লোকড়া!.....। বইলা সবাই হাসাহাসি শুরু করলো। এদিকে যার সাথে আমি আসলাম সে তখন রুমে ৪ টা গ্লাস এর এক বাটি গোস্ত নিয়ে আসলো। আমার হাতে একটা স্কটিশ হুইস্কির বোতল ধরাইয়া দিয়া কইলো....কালকা কিনছি এই গ্রান্ট..। ওপেন করেন।

> (আমি হাতে নিয়া আক্কেল গুড়ুম হইয়া) ভাই আমি নামাজী মানুষ, লাল পানি খাই না..আস্তাগফিরুল্লাহ। সবাই গোলগোল কইরা তাকাইয়া কইলো, শিবির নাকি? এইটা বইলাই দুমাদুম হাসি। >যাই হোউক, আমি মামুন, আমারে চিনছেন? > না ভাই, আনফরচুনেটলি মামুন নামের কোনো ব্যাক্তির সাথে এই প্রথম দেখা হইলো। > (আরো একটা বাজ খাই হাসির পর) পেপার পড়তেন দেশে থাকতে? ২০০৫ এক এমপিকে ব্রাশ ফায়ার করা হয়। সেইকেসে বেশ কয়েকজনরে ডাবল ফাসির অর্ডার দেয়া হয়, আমি তার একজন।

>(গলা দিয়া ঢোক গিলারও কিছু না পাইয়া) ভাই, আপনাদের সবাই কি এই সব ১৪ শিকার লোক? > হ এইডা ঠিক কইছেন...এইযে এই বিল্ডিং খান যার সে ১৯৮৮ সাল থিকা দেশ ছাড়া...১৯৮৬ সালে তার নামে এরশাদ সরকার ৫০০০০ টাকা পুরস্কার ঘোষনা করছিলো, পুরা দক্ষিনান্ঞ্চলে তার নামে ১৫ টা খুনের মামলা আছে। > ভাই আমি এই এক বাটি গোস্ত খাইয়া চইলা যাইতে চাই। আমি ভাই মূর্খ মানুষ বইলা এইখানে জ্ঞানের খোজে আসছি কিন্তু এই বাসায় আইসা দেখলাম পরলোকে যাওনের সিড়িও পাইয়া গেছি। বিয়া শাদী অখনও করি নাই, তাই অখন মরলে একটা আফসোস থাইকা যাইবো। > কথা তো দেখি ভালোই কও মিয়া, কি করো পড়ালেখার পাশাপাশি? > একখান নাইট ক্লাবে একজনের প্রক্সি দেই.মাগার সে ফিরা আহনে আমার চাকরি নট।

তাই পরীক্ষা দিতে যাতেছি..। পরীক্ষা শেষ কইরা আবার এইখানে চাকরি পুনরুদ্ধারের কাজ করুম। >হুমম..। বেতন কত দিতো? > জ্বী মাগনা। এই কথা শুইনা তারা সবাই এক লগে টাস্কি খাইয়া গেলো....।

তুমারে কি দেইখা ভিসা দিলো সেইডাও বুঝতাছি না....আর স্টিমারের লেন্জ্ঞা ধইরা এইখানে আইলা কেমনে সেইডাও বুঝতাছি না....। তুমার মাথায় দেখি কাঠাল ভাঙ্গনের লিগা আলাদা স্টেডিয়াম কইরা দিছো দেখতাছি। > শুনো, পরীক্ষা দিয়া সোজা আমাগো এইখানে আইয়া পড়বা....তুমার দায়িত্ব আমাগো..। শুনো এই দেশে ভালা মানুষের জায়গা নাই...তুমি এত লেখা পড়া করছো, এত চাকরি করছো....কিন্তু দেখো ভালো পাইয়া তুমারে কেমনে.....ব্লা ব্লা..। সাঈদী সাহেবের ওয়াজও মনে হয় এর চেয়ে ভালা।

এরা নয়া রেস্টুরেন্ট দিছে এই শহরে, সবাই দেশে কন ভিক্টেড, সেই কেসের কাগজ দেখাইয়া পলিটিক্যাল এ্যাসাইলাম নিয়া এখন এই দেশের নাগরিক। যাই হোক, মানুষ গুলো মনে হয় খারাপ না। কারন এইখানে আইসা আমার ১০০ টাকার আধা লিটার ফান্টা খাইয়া আমারে চাকরি দিবো এইটা আমার স্বপ্নেও আসে নাই। এমন সময় পাশের রুম থেকে একটা মেয়ে এসে বললো.... বাবা কিছু দাও, একটু পাবে যাবো। > পকেটে কিছু নাই, আচ্ছা এই ছেলেটার সাথে পরিচয় হ....বলতে পারিস খুবই নাদান একটা পোলা।

> তোমার দেশের সবাই কি প্রথমে নাদান পরে ক্রিমিনালস হয়? ইহা শুইনা মন চাইলো গলায় দড়ি দেই.....জ্বী আমি রনি, আমি নাদান একটু বোকাসোকা টাইপের হতে পহতে পারি কিন্তু কোনো খারাপ কাজ বা অপরাধ আমি কখনো করি নাই। সারা জীবন ধ্যান ছিলো একটা ব্যাপারে বলতে পারেন টাইম মেশিন বানাবো..। এই অবসেশনটার কারনে জিপির মতো কোম্পানীর জব ছেড়ে এরকম দেশে ফ্রিতে পড়া লেখা করতে আসছি। জানি না ভবিষ্যতে টাকা কামিয়ে খুব ধনী হতে পারবো কি না জানি তবে এটা শিওর একদিন হয়তো কোনো একটা তত্বের সাথে আমার নামটি দেখতে পাবেন। থ্যান্কস ফর ইউর হসপটিটালিটি।

খোদা হাফেজ.....। এই বইলাই হাটা দিলাম..........

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।