সরসিজ আলীম_এর কবিতা
কানন
আম্রকাননের ছায়ারা গোল হয়ে বসে ছিলো
রোদ্দুর আর বাতাসের ওড়াউড়ির তলে,
কেউ কেউ চাপা ছোটাচ্ছিলো,
কেউ কেউ শুনছিলো তাহার খাজুরে আলাপ,
অনেক অনেক রাত একটানা নির্ঘুম কাটানোর পর
কেউ কেউ ঝিমাচ্ছিলো খেজুরে আলাপের ভেতর,
কেউ কেউ তালুতে গঞ্জিকা রেখে বুড়ো আঙুলে
মাড়ায় করছিলো, আর গঞ্জিকাগুলো উঠিয়ে
নিচ্ছিলো কেউ কেউ কল্কের ভেতর।
আর তখন একটি মাত্র সূর্য লাফ দিয়ে পড়লো
গঞ্জিকা ভরা কল্কের ভেতর।
এবার কল্কেতে একটানা ক’ষে দম দেয়া
শুরু করলো ছায়ারা, হাতে হাতে ঘুরছে কল্কেটি,
আর ছায়ারা ক’ষে দিচ্ছে দম, নাক দিয়ে কান দিয়ে
চোখ দিয়ে ধোঁয়া বের হইতেছিলো ছায়াদের।
ধোঁয়ার ভেতর দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে আগুন,
সূর্যের আগুন ছড়িয়ে পড়ছে ঝরাপাতায়
আর শুকনো পাতায় পাতায়, বৃক্ষের কাণ্ডে, শাখায়,
আগুন গড়িয়ে যাচ্ছে কানন জুড়ে,
দাবানল উড়ে উড়ে যাচ্ছে তামাম আম্রকাননে।
দেখতে দেখতে বাতাস, দেখতে দেখতে ধোঁয়া,
দেখতে দেখতে আগুন, দেখতে দেখতে স্তুপ স্তুপ ছাই।
দূর মহাসাগর থেকে উঠে আসে চার ডানাঅলা পাখি,
সূর্যটাকে কুড়িয়ে নেয় দুঠোঁটে, আর ফিরিয়ে দেয়
তাহার আপন কক্ষপথে,
জল আলো বাতাস ফিরিয়ে আনে বিরাণভূমিতে,
চার ডানাঅলা পাখিরা বীজ ছড়িয়ে যায় মাঠে মাঠে,
জল গড়ায় আলো গড়ায় বাতাস গড়ায়,
আবার দুলে ওঠে কানন আবার হেসে ওঠে কানন,
আবার ফিরে আসে দু’ডানার পাখিরা,
আবরো নৃত্য করে প্রজাপতি আর পাখি পুষ্পের পর।
কাননে এসে বসে পরিশ্রান্ত মানুষ ক্ষেতের মানুষ,
কাননে এসে বসে পরিশ্রান্ত মানুষ কারখানার মানুষ।
এখন আকাশের টিপ পরা চাঁদ আমাদের
প্রতিদিন ঘুমাতে যায় আমাদের পাহাড়ের গায়ে।
২৪.১২.২০০৯, ঢাকা।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।