জ্বালানী উপদেষ্টা ড.তৈাফিক-ই এলাহী ও প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে ৩৫ কোটি টাকার ঘুষ গ্রহনের ঘটনা এক জাতীয় দৈনিকে প্রচার হওয়ার বিগত কয়েকদিন সর্ব মহলে আলোচনার জড় উডেছে। অবশ্য আওয়ামীলীগ বিষয়টি রাজনৈতিক বিচনায় নিয়ে মোকাবেলা করার চেষ্টা করছে। আবার আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ দিয়ে ঘুষ গ্রহনের বিষয়টি অস্বীকার করেছে। এদিকে বিএনপি এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া না জানালেও আওয়ামীলীগের দূর্বল দিক পেয়ে ব্যাপক খুশি। কিন্তু আমরা সাধারণ মানুষ এ নিয়ে কি ভাবছি,তা স্পষ্ট করা প্রয়োজন মনে করছি।
জ্বালানি উপদেষ্টা ড. এলাহী ও প্রধানমন্ত্রীর ছেলে জয়ের ৩৫ কোটি টাকার সমপরিমাণ ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি পত্রিকায় পাতায় পড়ে যে কেউ বিশ্বাস অবিশ্বাস করতে পারে। বাংলাদেশের রাজনৈক ট্রেডিশন অনুযায়ী বিএনপির কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে যে কোন নেগেটিভ প্রচার আওয়ামীলীগ বিশ্বাস করে এবং তাকে রাজনৈতিক প্রপাকান্ডা হিসেবে ব্যাবহার করে। একইভাবে বিএনপিও তাই করার চেষ্টা করে। অবশ্যই রাজনৈতিক প্রপাকান্ডার দিকে আওয়ামীলীগ এগিয়ে থাকে। যেমন বিএনপি নেতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের পুত্র তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে দূর্নীতির উত্থাপিত অভিযোগ ভালোই কাজে লাগিয়েছে।
তবে আমাদের চোখে এখন পর্যন্ত তিনি দূর্নীতিবাজ নই। কারণ ১/১১ এর সরকার তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের একটিও প্রমাণ করতে পারেনি। কয়েকটি মামলা আদালতে বিচারাধীন আছে। এ সব মামলার রায় হওয়া পর্যন্ত তারেক জিয়াকে আওয়মীলীগের সাথে কন্ঠে মিলিয়ে আমরা তারেক রহমানকে দূর্নীতিবাজ বলতে পারবো না। তবে তার নাম ব্যাবহার করে বিএনপির কতিপয় নেতা দূর্নীতি করে নাই,তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নই।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর ছেলে জয়ের ঘুষ গ্রহনের বিষয়টি কোন সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ছাড়া আমরা কেন বিশ্বাস করবো? বিশ্বাস না করলেও প্রকাশিত রির্পোটের ভিত্তিতে মনে কয়েকটি প্রশ্নের উদয় হয়েছে। এ প্রশ্নগুলোর যথাযথ উত্তর পাবো কিনা জানিনা।
বর্তমানে এ ক¤েপ্রসার স্থাপনের প্রয়োজন আছে কিনা? এ বিষয়ে নিরপে বিশেজ্ঞ দিয়ে তদন্ত করে সাধারণ জনগনকে জানানো হোক। থাকলে কেন কোন প্রকার টেন্ডার না দিয়ে বহুজাতিক মার্কিন কোম্পানি শেভরনকে ৫২ দশমিক ৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে মুচাইতে ক¤েপ্রসার স্টেশন স্থাপনের কাজ দেয়া হয়েছে কেন?
জাতীয় স্বার্থ সম্পৃক্ত কাজ গ্যাসের চাপ বাড়াতে ক¤েপ্রসার বসানোর কাজ বিনা দরপত্রে একক প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিতে পারেন কিনা?
অথচ বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা বহুল আলোচিত নাইকো দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘদিন কারাবরণ করেন তৌফিক-ই এলাহী চৌধুরী। নাইকো মামলায়ও প্রধান অভিযোগ ছিল বিনা টেন্ডারে নাইকোকে গ্যাসত্রে বরাদ্দ দেয়ার মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিপুল তিসাধন হয়েছে।
আওয়ামী লীগের বিগত সরকারের আমলেও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। সে সময় বিদ্যুত্ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্ব পালন করেছিলেন বর্তমান জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই এলাহী চৌধুরী। এরপরও দুর্নীতিবাজ ড.এলাহীকে কেন জ্বালানি উপদেষ্টা ড. এলাহীকে এ পদে রাখা হলো? এ পদের জন্য কি বাংলাদেশে আর কোন যোগ্য লোক নেই?
পেট্রোবাংলার পে অভিযোগপত্র দায়ের করা ব্যক্তি আবু সিদ্দিকীর অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উডিয়েছে আওয়ামীলীগ ও পেট্রোবাংলা। মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মোঃ মিজানুর রহমান স্বারিত পত্রের (নং জ্বাখসবি/উঃ-৩/বিঃ কোঃ/ক¤েপ্রসার স্থাপন-৩৩/২০০৯/৯০২ এবং পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোঃ হোসেন মনসুর স্বারিত (নং-২১,৩৭,৫১/৬৬১) পত্রের বিষয়টি সম্পর্কে তারা কোন ব্যাখ্যা দেননি। তাহলে প্রাথমিকভাবে তদন্তের বিষয়টির অস্বিকার করার সুযোগ নেই।
প্রধানমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রণাধীন বিদ্যুত্, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি বিভাগে ব্যাপক দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে,এখন প্রধানমন্ত্রী নিজেই নির্দোষ প্রমাণ করবেন। যেমন বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেই প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রীরা পদত্যাগ করেন বা নিজেকে নিদোর্ষ প্রমাণ করেন। আশা করছি সরকার বিষয়টিকে রাজনৈতিকভাবে না নিয়ে নৈতিকভাবে নিবেন। আর প্রধানমন্ত্রীর ছেলে জয় ও তোফিক-ই এলাহীসহ এঘটনায় অভিযোক্ত সকল ব্যক্তির সম্পদের উৎস ও বিদেশী ব্যাংক ব্যালেন্স খতিয়ে দেখা হোক। এসব বিষয় জনগনের কাছে স্পষ্ট না করলে জ্বালানী উপদেষ্টা ড.তৈাফিক-ই এলাহী ও প্রধানমন্ত্রীর কলিজার টুকরা ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে ৩৫ কোটি টাকার ঘুষ গ্রহনের ঘটনা বিশ্বাস না করার সুযোগ থাকবে না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।