আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা এবং কিছু কথা



আমাদের বাংলাদেশের শিা ব্যবস্থা নিয়ে যারা চিন্তা ভাবনা করছেন এবং শিা নীতি নিয়ে একটি সুষ্ট সুন্দর এবং সুশৃংঙ্খল ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছেন তাদের সবাইকে জানাই আমার অন্তরের অন্তস্থল হতে মোবারকবাদ এবং শুভেচ্ছা। আমি মনে করি একটি যোগপযোগী শিা ব্যবস্থার অভাবেই বাংলাদেশের মানুষ দেশে বিদেশে নিজেকে অগ্রসর জাতি হিসাবে প্রমান করতে পারছেনা এবং সারা বিশ্বে বাংলাদেশকে সু-উচ্চ শিখরে উঠাতে না পারার এটাই একমাত্র কারন। আমাদের দেশের শিা ব্যবস্থার সর্বোচ্চ ডিগ্রী অর্জন করার পরও অত্যন্ত সাধারন অনেক বিষয়ে কোনরকম জ্ঞ্যান অর্জন করা আমাদের হয় না। তাহলে আমরা কোথা হতে এসব বিষয় শিখব ? সামাজিক ব্যক্তিগত , পারিবারিক ইত্যাদি সমস্যাগুলো এ জন্যই তৈরি হয় এবং প্রতিদিন মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা দেখি কিভাবে আমাদের দেশ সামাজিক মুর্খের দেশে পরিনত হচ্ছে। কিভাবে একটি সংসার, একটি সমাজ একটি গোিিষ্ট একটি ব্যক্তি অন্য আরেকটি সংসার, সমাজ, গোষ্টি ও ব্যাক্তিকে তির মাধ্যমে সর্বপুরী দেশের তি সাধন করছে।

মুল কথা আমাদের ভালবাসতে হবে দেশকে দেশের মানুষকে দেশের পরিবেশকে আর এজন্যই প্রয়োজন আমাদের শিা ব্যবস্থায় দেশকে ভালবেসে কিভাবে প্রতিটি েেত্র সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে বিশ্বের মানচিত্রে একটি সর্বশ্রেষ্ট জাতিতে পরিনত করা যায় তার সুস্পষ্ট উল্লেখ। শিশুঃ আজকের শিশুই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। যদি তা-ই হয় তাহলে এই ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য শিশুরাতো কোন ভুমিকা পালন করতে পারবে না কারন তার অবুঝ। প্রয়োজন বাবা/মায়ের যথাযথ ভুমিকা । দেশের প্রতিটি মা/বাবা তাদের সন্তানদের মঙ্গল চান কিন্তু আমাদের দেশের অনেক শিতি মাও জানেন না তার সন্তানদের কিভাবে পরিচর্চা করতে হবে।

কিভাবে একটা শিশুকে তার শারীরিক মানসিক বিকাশের প্রয়োজনীয়তা অনুসারে লালন পালন করতে হবে কি কি বিষয় একটি শিশুর জন্য তিকারক এবং কি কি বিষয় উপকারী । এ বিষয় গুলো শুধুমাত্র ডাক্তারদের জানলেই হবে না। জানতে হবে আমাদের দেশের প্রতিটি শিতি বাবা/ময়ের। কিন্তু আমাদের শিা ব্যবস্থায় এসব বিষয়ের উল্লেখ নেই। এ জন্য একজন মাকে দারস্ত হতে হয় অনেক অশিতি অভিজ্ঞ মা-দের ।

এতে করে শিশু বয়সেই শিশুদের মধ্যে তৈরি হয় বৈষম্য । আমার জানা মতে অনেক মা-ই শিশুকে ৩ বছর হতেই বিদ্যালয়ে/নার্সারীতে ভর্তি করিয়ে দেন তারা জানেন এটাই শিশুর জন্য মঙ্গল । আবার অনেক মা ৬ বছর পূর্ন হবার পূর্বে কিছুতেই স্কুলে দিতে আগ্রহী নন তারা জানেন এটাই শিশুর জন্য মঙ্গল। আমার কথা হচ্ছে এ বিষয় গুলো প্রতিটি শিতি বাবা মায়ের জানা উচিত , জানা উচিৎ কিভাবে শিশুর পরিচর্যা করতে হয়, জানা উচিৎ শিশুর খাওয়া দাওয়ার বিষয়ে অর্থাৎ শিশুদের সমস্ত বিষয়ে আমাদের দেশের শিা ব্যবস্থায় স্পষ্ট উল্লেখ থাকা প্রয়োজন যেন আমাদের বাবা/মায়েরা প্রকৃত শিতি হয়ে শিশুর পরিচর্যা করতে পারেন। বাবা - মা ঃ আমাদের সমাজে একটি সংসার হওয়ার পর সাধারনত এই সংসার নিয়েই প্রতিটি স্বামী স্ত্রী জীবন অতিবাহিত করে থাকে।

যেহেতু ভিন্ন দুটি পরিবার হতে ১টি ছেলে ১টি মেয়ে মিলে ১টি সংসার হয় সেহেতু এই সংসারে শিার গুরুত্ব প্রতিটি মানুষের জীবনে অনেক অনেক বেশী। কিন্তু এই সংসারকে সুচারুরূপে পরিচালনার জন্য আমাদের শিা ব্যবস্থায় কোথাও উল্লেখ নাই। একটি সংসারে স্বামীর কি ভুমিকা থাকা উচিৎ স্ত্রীর কি ভুমিকা থাকা উচিৎ, একান্নবর্তী সংসারকে কিভাবে শান্তিময় করা যায় এবং স্বামী স্ত্রী শশুর শাশুরী ননদ ভাসুর অর্থাৎ একটি সংসারের প্রতিটি সদস্যের কিকি আচরনের মাধ্যমে একটি সংসারে বিশৃংঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে এইসব বিশৃংঙ্খলা হতে কিভাবে উত্তরন হওয়া যায়। মনে রাখা দরকার সংসারে শান্তি না থাকলে সমাজে কখনো শান্তি আসবে না। তাই সংসার কিভাকে শান্তিময় রাখা যায় আমাদের পাঠ্য বইগুলোতে তার কিছু বাস্তব উদাহরন বিশদ উল্লেখ করা প্রয়োজন।

এতে করে এই শিা সাংসারিক জীবনে কাজে লাগিয়ে দেশ ও দশের উন্নয়ন করা যাবে। কিশোর, যুবক ও কর্মজীবী ঃ দেশ সমাজ সংসার ব্যাক্তি স্বার্থে আমাদের দেশের কিশোর ও যুবকদের কি ভুমিকা থাকা প্রয়োজন। দেশ ও সমাজ উন্নয়নে এই বয়সেই প্রয়োজন কর্মজীবনে কিভাবে চেইন অব কমান্ড অনুসরন করতে হয়। কিভাবে সবেেত্র ইর্ষামুক্ত হয়ে চলতে হয়। আমরা জানি অন্ন বস্ত্র বাসস্থান শিা চিকিৎসা এই পাচটি হচ্ছে প্রতিটি নাগরীকের মৌলিক অধিকার।

কিন্তু আমরা জানিনা ট্রাফিক আইন না মানলে কি শাস্তি পেতে হবে, খুন খারাবি করলে কি শাস্তি পেতে হবে, মেয়েদেরকে উত্যক্ত করলে কি শাস্তি পেতে হবে, যেীতুকের কি শাস্তি , ধর্ষনের ফলে কিভাবে কয়েকটি জীবন ধ্বংস হয়ে যেতে পারে, কর্মজীবনে অনগ্রসর নারীদেরকে নিরুৎসাহিত না করে উৎসাহিত করলে কিভাবে দেশের উন্নয়ন হয়, ঘোষ কিভাবে সমাজের তির কারন হয়ে দাড়ায়, কোন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ঘোষ আবদার করলে কিভাবে তা প্রতিহত করতে হয়। আইন শৃংখলা বাহিনীর কি ধরনের মানব বন্ধুসুলভ আচরন করা উচিৎ এবং রাষ্ট্রসেবায় বসে কেউ দুর্নীতি করলে তা প্রতিহত করার জন্য কোথায় নক করতে হবে। মোট কথা এসব বিষয়ে যারা অপরাধী তাদেরকে নিন্দনীয় ব্যক্তি হিসাবে পাঠ্য বইয়ের মাধ্যমে শিা দিতে হবে। বাস্তবে দেখা যায় দুর্নীতিবাজ এবং অন্যায়কারীরাই সমাজের উচ্চ শিষরে আহরন করতে পারে এর জন্য আমরাই দায়ী কারন তাদেরকে আমরাই স্বীকৃতি দেই। এটাই স্বাভাবিক কারন এ বিষয়ে যথাযথ জ্ঞ্যান অর্জনের আয়োজন আমাদের শিা ব্যবস্থায় নাই।

তাই প্রয়োজন আমাদের ভোটাধিকার কোথায় প্রয়োগ করব। ভোটাধিকার প্রয়োগে ভুল করলে কিভাবে আমরাই এই ভুলের মাসুল দিব সে বিষয়ে যথাযথ জ্ঞ্যান অর্জনের ব্যবস্থা পাঠ্য বইয়েই উল্লেখ করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। ইরেজী ভাষাজ্ঞ্যান ঃ আমাদের দেশের শিা ব্যবস্থা যে অবস্থায় গিয়েছে তার উন্নয়ন অতি সহজেই হয়ে যাবে এমনটি আশা করা ঠিক নয়। তবে এখনই উদ্যোগ না নিলে বাংলাদেশের মানুষ সারা বিশ্বের কৃতদাস হয়েই থাকবে। বাংলা ভাষার পাশাপাশি আমাদের দেশের প্রতিটি নাগরিক যেন অষ্টম শ্রেনীর পূর্বেই ইংরেজীতে কথোপকথন করতে পারে সে বিষয়ে যথাযথ উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।

নট্রামস এর মত সরকারী ভাবে রাজধানীতে একটি ইংলিশ ভাষা শিা কোর্স চালু করা একান্ত প্রয়োজন এবং দেশের শিকদের ইংরেজী ভাষা শিায় পর্যায়ক্রমে একটি পুর্নাঙ্গ কোর্স সম্পন্ন করার ব্যবস্থা করলে দেশের শিার্থীরা উপকৃত হবে। বিশেষ করে বাংলাদেশের শিক নিয়োগে ভাবতে হবে ইংরেজী ভাষার দতা এছাড়া ইংরেজী ভাষা শিা বিষয়ে আমাদেরকে জাতীয় ভাবে এক হতে হবে। দেশ ও জাতির উন্নয়নে অবশ্যই ইংরেজী ভাষায় দেশের প্রতিটি নাগরিককে সচেতন হতে হবে। দেশপ্রেম ঃ দেশ আমাদের । ১৫ কোটি মানুষের কেন্দ্রীয় আশ্রয়স্থল ।

এই দেশের কোন এক পাড়াগায়ে যদি ১টি বৃ রোপন হয় তাহলে সার্বিক ভাবে এটা দেশেরই উন্নয়ন। আর যদি কোন এক পাড়াগায়ে একটি বৃ নষ্ট হয় তাহলে আমাদের দেশেরই তি। তাই ্ আমাদের থাকতে হবে দেশপ্রেম। আর এজন্যই আমাদের পাঠ্য বইয়ের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে হবে দেশপ্রেম। কিভাবে আমরা নিজেরাই আমাদের দেশের তি করি এবং কিভাবে আমরা নিজেরাই আমাদের দেশের উন্নয়ন করতে পারি এ বিষয়গুলো যেন অন্তরের অন্তস্থলে দেশের প্রতিটি নাগরিক উপলব্দি করে ।

আমরা যদি কিছুটা সচেতন না হই আমাদের দেশেরই সার্বিক তি। আমাদের দেশের মানুষ অনেক সময় খেতে পায় না পড়তে পারে না । অথচ এদেশেরই মানুষ ১ কোটি বা আরও অধিক মূল্যের গাড়ি মেনেটেন করে তা করতেই পারে কারন প্রত্যেকের ব্যক্তি সাধিনতা রয়েছে। কিন্তু উনাদের নিজেদের মধ্যে যদি আরও সচেতনতা তৈরী করা যায় দেখা যাবে উনারা সামর্থ থাকলেও ১ কোটি টাকার গাড়ি ব্যবহার না করে ১০ লাখ টাকার গাড়ি ব্যবহার করবে যার সামর্থ আছে দশ লাখ টাকার গাড়ি ব্যবহারের সে ব্যবহার করবে ৩ লাখ টাকার গাড়ি। আর বাকি টাকা দেশের দরিদ্র শ্রেনীকে উন্নয়নের জন্য দেশের মধ্যেই নিয়োজিত রাখবে এতে নিজের ও দেশের উন্নতি হবে।

কিভাবে বিদেশী পন্য কম ব্যবহার করে দেশী ভাল পন্য ব্যবহার করলে দেশের উন্নতি হবে তারও উল্লেখ থাকা প্রয়োজন পাঠ্য বইয়ে। মুক্তবাজার অর্থনীতির ফলে হয়ত অন্য দেশের পন্যের এন্ট্রেন্স আমাদের দেশে থাকবে কিন্তু দেশের ভোক্তাদের অবশ্যই এই স্বাধীনতা রয়েছে যথাসম্ভব বিদেশী পণ্য বর্জন করা। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশে আমরা দেখি এ বিষয়ে জনগনকে কিভাবে উদ্ভুদ্দ করা হচ্ছে। শিশু হতে বৃদ্ধ পর্যন্ত প্রতিটি মগজেই এ বিষয়টি সুস্পষ্ট। বর্তমানে আমাদের দেশের নাগরিকদের দেশপ্রেম নেই বিধায়ই খাদ্যে ভেজাল দ্রব্য মিশানো হয় ।

কিন্তু আমরাতো এমন ছিলাম না। আমরা বারবার প্রমান করেছি যে দেশের স্বার্থে আমরা সবাই এক। সঠিক নের্তৃত্ত বজায় থাকলে একাত্তরের সেই দেশপ্রেম আমাদের মাঝে আবারও জেঁগে উঠবে। এছাড়া ভেজাল দ্রব্য মিশিয়ে দেশের নাগরিকদের যারা মৃত্যুর মুখোমুখি নিয়ে যাচ্ছে তাদের সকলকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। মিডিয়াতে যারা বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকেন তাদের অবশ্যই কোন মিথ্যা বিজ্ঞাপন প্রচার হতে বিরত থাকতে বাধ্য করতে হবে।

দেশী বিদেশী কোন মানুষকে যেন কোথাও হয়রানী করা না হয় মানুষের বিপদে আচরন যেন সৎমানুষের মত হয় তাও উল্লেখ থাকা প্রয়োজন। কারন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিাই জীবনের ভিত গড়ে তুলতে পারে। আমাদের দেশেরই অনেক মানুষ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে রয়েছে উনাদেরকে স্পেশালভাবে সম্মান করার জন্য জনগনকে শিা দিতে হবে। কারন উনারা প্রিয় দেশ ছেড়ে অনেক দুরে অবস্থান করে দেশেরই উন্নয়নে অংশীদার হিসাবে কাজ করে যাচ্ছেন। উনাদের মাধ্যমে দেশে অনেক বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে তাই কোন ক্রমেই উনাদেরকে হয়রানী করা যাবে না।

প্র্যাকটিক্যাল, লজিক্যাল, টেকনিক্যাল ও সাইনটিফিক ঃ আমাদের দেশে মুখস্ত বিদ্যার অনেক দাম। কিন্তু টেকনিক্যাল ও লজিক্যাল বিদ্যার কোন দাম নেই। কারন পাঠ্যসুচীকে এমন ভাবে গঠন করা হয়েছে গদবাধা মুখস্ত না করলে কোন ভাবেই ভাল ফলাফল করা সম্ভব নয়। মজার ব্যাপার হচ্ছে বিশ্ব এখন আর এই পথে নেই। বিশ্ব এগিয়ে আছে সাইন্টিফিক এবং যৌক্তিক দিক দিয়ে।

সারা বিশ্বে আজ এসব বিষয়ে ব্রেইন যাদের শার্প তাদেরই জয়জয়কার। যেমন সফটওয়্যার খাতে লজিক্যাল সেন্স ছাড়া কোন ভাবেই উন্নয়ন সম্ভব নয়। আমাদের দেশে প্র্যাকটিক্যাল, লজিক্যাল , টেকনিক্যাল ও সাইনটিফিক বিকাশের উল্লেখ যোগ্য কোন সুযোগ নাই। শুধু আছে মুখস্ত বিদ্যার বিকাশের সুযোগ । সেজন্য অকালেই ঝড়ে পরছে দেশের মেধাবী ছাত্ররা।

তাই প্রয়োজন পাঠসুচিকে প্র্যাকটিক্যাল , লজিক্যাল , টেকনিক্যাল ও সাইনটিফিক বিষয়ে অধিকতর জোরদার করা।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.