আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

র্কনেল রশীদ সাক্ষাৎকারে বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে সংশ্লষ্টি সকলরে নাম প্রকাশ করেছেন-উপস্থাপক জিল্লুর রহমান

Why does life keep teaching me lessons, i have no desire to learn.

বঙ্গবন্ধুর খুনি কর্নেল আব্দুর রশীদের নেয়া সাক্ষাৎকার প্রসঙ্গে সাক্ষাৎকার গ্রহীতা এবং তৃতীয় মাত্রার উপস্থাপক জিল্লুর রহমান বলেছেন, সাক্ষাৎকারে কর্নেল রশীদ বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে এবং পুরো দায়দায়িত্ব মাথায় নিয়ে কথা বলেছেন। তবে আমাদের বিবেচনায় নিতে হবে যে, এধরনের ব্যক্তি সর্বাংশে সত্য কথা নাও বলতে পারেন। জিল্লুর বলেন, সাক্ষাৎকার সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমি দিতে চাই না। তবে আমি মনে করি এই সাক্ষাৎকার প্রচার হলে বাংলাদেশের রাজনীতি বিশেষ করে ’৭৫-পূর্ব ও পরের রাজনীতিতে ষড়যন্ত্রের অনেক অজানা অধ্যায় উšে§াচিত হবে। তিনি বলেন, আমরা যখন আমাদের ইতিহাসের অমীমাংসিত বিষয়গুলো মীমাংসা করতে চাই তখন ইতিহাসের সাক্ষী এই তথ্যগুলো জানা জরুরি।

যখন আমরা তথ্য অধিকারের কথা বলি, তথ্য অধিকার আইন করি, মানুষের অধিকারের কথা বলি তখন এগুলো প্রকাশ আরো জরুরি। তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে কোনো কিছুই গোপন রাখা সম্ভব নয়। সাক্ষাৎকারে কর্নেল রশীদের বক্তব্য প্রসঙ্গে জিল্লুর রহমান বলেন, রশীদ যেমন নিজের সম্পৃক্ততার কথা প্রকাশ করেছেন তেমনি আর কারা এই ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনার সঙ্গে য্ক্তু ছিলেন তাদের নামও প্রকাশ করেছেন। সেই সময় যেসব রাজনীতিক এই ঘটনার কথা জানতেন এবং সংশ্লিষ্ট ছিলেন, তৎকালীন ক্ষমতাসীনসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলেরÑ তাদের নামও প্রকাশ করেছেন। ৭৫ পরবর্তীতে এমন অনেক রাজনৈতিক নেতা রয়েছেন যাদের দিকে সন্দেহের তীর ছোঁড়া হয়েছে তাদের নামও প্রকাশ করেছেন।

সেনাবাহিনীর ভেতরে কারা যুক্ত ছিলেন, আন্তর্জাতিক সংশ্লিষ্টতা কী ছিল এই ঘটনার সঙ্গে সেই কথাও বলেছেন। শুধু ১৫ আগস্টের ঘটনাবলি নয়, ৩ নভেম্বর জাতীয় ৪ নেতা হত্যা ও ৭ নভেম্বরের ঘটনাবলির বিস্তারিত উল্লেখ করেছেন। সাক্ষাৎকার নেয়ার প্রস্তুতি প্রসঙ্গে জিল্লুর রহমান বলেন, কর্নেল রশীদের মতো একজন মৃতুদণ্ডপ্রাপ্ত আত্মস্বীকৃত খুনির সাক্ষাৎকার গ্রহণ সবসময় চরম ঝুঁকিপূর্ণ। সাক্ষাৎকার গ্রহণে যেটুকু সময় তার সঙ্গে থাকতে হয়েছেঃ চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে ছিলাম। এই ধরনের সাক্ষাৎকার গ্রহণের চেষ্টা আমি দীর্ঘদিন যাবৎ করছিলাম।

কেননা আমার পরিকল্পনা রয়েছে ’৭৫-এর ঘটনাবলির উপর গবেষণাধর্মী কাজ করা। তারই অংশ হিসেবে এই চেষ্টা। এই সাক্ষাৎকার গ্রহণের বিষয়টি যখন চূড়ান্ত করি তখন জ্ঞাত ও অজ্ঞাত নানাধরনের ব্যক্তির সঙ্গে আমাকে কথা বলতে হয়েছে। পুরো বিষয়টি যখন স্থির হয় তখন পর্যন্ত আমার পরিবার এবং সহকর্মিদের কেউই বিষয়টি জানতেন না। সাক্ষাতকার গ্রহণের উদ্দেশ্যে যখন কাজে নামবো তখন আমার সংশ্লিষ্ট দুই একজন সহকর্মী এবং আমার স্ত্রী ও বাবা-মাকে জানাই, তাও বিস্তারিত নয়।

সঙ্গত কারণেই বাবা-মা ভাইবোনসহ আত্মীয়-স্বজনরা ঐ সাক্ষাৎকার গ্রহণ প্রচার এবং পরবর্তী পর্যায়ে যথেষ্ট উৎকণ্ঠায় কাটিয়েছেন। আমি যখন সাক্ষাৎকার গ্রহণের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হই তখন আমার যাত্রা ছিল সম্পূর্ণ অজানা গন্তব্যে। আমি নিজেও জানতাম না এই কাজটি সম্পন্নে সফল হবো কি না। সাক্ষাৎকার গ্রহণের জন্য একের পর এক একাধিক অজানা গন্তব্যে ছুটতে হয়েছে। জিল্লুর জানান, সাক্ষাৎকার গ্রহণ শেষ হলে কর্নেল রশীদ সবগুলো ক্যাসেট নিয়ে নেন।

তখন এই নিয়ে তার সঙ্গে কোনো বাদানুবাদ বা তর্ক-বিতর্ক করার মতো সুযোগ বা পরিস্থিতি ছিল না। কর্নেল রশীদ জানিয়েছিলেন, আমাকে যেহেতু দেশি-বিদেশি নানা গোয়েন্দা সংস্থার নজর থেকে দূরে থাকতে হয় সেহেতু ক্যাসেটগুলো আপাতত নিয়ে যাচ্ছি। পরে ক্যাসেট ফিরিয়ে দেয়া হবে। জিল্লুর জানান, এর কয়েক ঘণ্টা পর বিদায় পর্বের সময় তিনি আমাকে ক্যাসেটগুলো দিয়ে দেন। মাঝখানের এই সময়টাতে তার সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ ছিল না।

তখন ক্যাসেট ফিরে পাওয়ার বিষয়ে বেশ শঙ্কার মধ্যে ছিলাম। সাক্ষাৎকারের বাইরে তার সঙ্গে অন্য কোনো বিষয়ে আমার কোনো কথা হয়নি। সেসময় অন্য আলোচনার কোনো সুযোগও ছিল না। তবে সাক্ষাৎকার গ্রহণকালে তাকে আমার অত্যন্ত ঠাণ্ডা মাথার একজন মানুষ মনে হয়েছে। আজকে যখন কোথায় এই ইন্টারভিউ করা হয়েছে এই প্রশ্ন তোলেন কেউ কেউ তখন স্বাভাবিকভাবে বুঝে নেয়া যায় কর্নেল রশীদের অবস্থান জানার জন্য এই প্রশ্ন বা প্রচেষ্টা কিংবা কৌতূহল।

এ প্রশ্ন আমার কাছে হাস্যকর বলেও মনে হয়। আমি বিশ্বাস করি, বঙ্গবন্ধুর দণ্ডপ্রাপ্ত হত্যাকারী পৃথিবীর কোথায় আছে তা জানা দূরূহ নয়। বোধ করি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গও তা জানেন। কেননা তাদের পরিবারের সদস্য যারা বাংলাদেশে রয়েছেন, আমি পত্রপত্রিকায় দেখেছি তাদের সঙ্গে ঐ পলাতক ব্যক্তিবর্গের যোগাযোগ রয়েছে। তাদের টেলিফোনের কথোপকথনের সূত্র ধরেই ঐ ব্যক্তিরা কে কোথায় আছেন তা বের করা সম্ভব।

আমদের সময় : Click This Link

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।