আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অল্প আয়রে মানুষরে কি হবে?

আমি মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করতে ভালবাসি ।

ব্যবসার নামে দেশে রীতিমত লুটপাট চলছে। পণ্যের বাজারের ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। ভোক্তা সাধারণ ব্যবসায়ীদের হাতে পণবন্দি। নালিশ করার কোন জায়গা নেই তাদের।

এক এক সময় এক এক ইস্যু তুলে বাজারে লুটপাট চলে। যেমন জমি থেকে কেনা ৪০ টাকার কাঁচা মরিচ রাজধানীর বাজারে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে সম্প্রতি বিক্রি হয়েছে। ৩০/৩৫ টাকা দরের শসা ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, হচ্ছেও। আমদানিকৃত র' চিনি হোয়াইট (সাদা চিনি) করা পর্যন্ত খরচ পড়ছে (ট্যাক্সসহ) ৩৮/৩৯ টাকা। পাইকারী বিক্রি ৪৫/৫০ টাকা।

কেজি গড়ে (পাইকারী) লাভ ১০ টাকা। গত রমযান মাসে হয়েছে ৩০/৩২ টাকা। আবার খুচরা বিক্রেতারা লাভ করছে ৮/১০ টাকা। আলু কেজি ১৭ টাকায় কেনা। বিক্রি পাইকারী ২৮/২৯ টাকা।

কেজিতে পাইকারী লাভ ১০/১২ টাকা। এক হালি ডিমের উৎপাদন খরচ ২২ টাক, বিক্রি পাইকারী ২৬ টাকা। প্রতি কেজি পেয়াজ আমদানিতে (ট্যাক্সসহ) ২৩/২৪ টাকা। পাইকারী বিক্রি ২৮ থেকে ৩৩ টাকা। প্রতিটি পণ্যেই চলছে এ ধরনের অস্বাভাবিক মুনাফা।

পণ্যের বাজারে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। অথচ সব দেশেই রয়েছে পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা। প্রতিবেশি ভারত, পাকিস্তানেও একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থা পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। পণ্যের মজুদ, সরবরাহ এবং মূল্য নিয়ন্ত্রণে সার্বক্ষণিক কাজ করছে। ভোক্তার সেবায় সরকার এটিই হচ্ছে তাদের নীতি।

আর বাংলাদেশে চলছে উল্টানীতি। বাজার অস্থিতিশীল হলেই সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা বলেন, মুক্তবাজার অর্থনীতিতে সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করে না। আর ব্যবসায়ীরা বলেন আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে গেছে। খুচরা বিক্রেতারা বলেন, পাইকারী দাম বেশি। অর্থাৎ কেউ দায় নিতে রাজি নন।

এদিকে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষের মাথায় হাত। তাদের আয়-ব্যয়ের মধ্যে বৈষম্যে বাড়ছেই। অধিকাংশ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের ভোক্তা সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। বর্তমান সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার দিল দ্রব্যমূল্য কমিয়ে এনে ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা। কিন্তু বাস্তব অবস্থা বিপরীতমুখী।

প্রতিনিয়ত বাড়ছে নিত্য-প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। সরকারি বাণিজ্যিক সংস্থা টিসিবি'র মনিটরিং রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত এক মাসে চালের দাম ৪.৪৮ থেকে ৫.৭৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আটা-ময়দার দাম ১.৭৫ থেকে ২.৩৮ শতাংশ বেড়েছে। পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৪৮ শতাংশ আর রসুনের দাম ২৩ শতাংশ বেড়েছে। এমনিভাবে সকল ভোগ্য পণ্যের দামই বৃদ্ধি পাচ্ছে।

পণ্যের বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে সরকার নানা উদ্যোগের কথা বললেও বাস্তবে কোন কিছুই নেই। তবে যা আছে কাগজপত্রে। আর কাগজপত্রে আছে বাজার মনিটরিং করা। আর পরিস্থিতি বেসামাল হলে শুল্ক প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। এতে লাভবান হয় ব্যবসায়ীরা, লোকসান সরকার ও জনগণের।

ব্যবসায়ীদের চাপের মুখে আমদানি শুল্ক কমিয়েও শেষ রক্ষা হচ্ছে না। সম্প্রতি চিনির ক্ষেত্রে এমনটিই হয়েছে। ব্যবসায়ীদের চাপে চিনির আমদানি শুল্ক কমানোর ফলে কয়েক শত কোটি টাকা সরকারকে গচ্ছা দিতে হয়েছে। এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ব বাণিজ্য সংস্থা টিসিবিকে কার্যকর করার কথা বলা হলেও বাস্তবে তেমন কিছুই করা হচ্ছে না। টিসিবিকে স্বায়ত্ব শাসিত প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করার উদ্যোগ থেমে গেছে।

এখানেও চলছে নাটকীয়তা। সিদ্ধান্ত নেয়া হয় কিন্তু কার্যকর করা হয় না। ভোক্তা অধিকার রক্ষা আইন কবে কার্যকর হবে, তাও জনগণ জানে না।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।