আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অবৈধ রক্ত বানিজ্য

লেখার কিছু পাই না, তাই আবোল তাবোল লিখি

দূষিত রক্ত রোগীদের দেহে ব্যবহার করার ফলে লিভার সিরোসিসের মতো মারাত্মক রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বেড়েছে। বাড়ছে এইচআইভি/এইডস-এ আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি। এক জরিপে দেখা গেছে, অশিক্ষিত লোকজন স্বেচ্ছায় রক্ত দিতে আগ্রহী হয় না। তারাই অবৈধ ব্লাড ব্যাংকের দূষিত রক্তের ওপর নির্ভরশীল। পেশাদার রক্তদাতাদের মধ্যে ৯৮ ভাগই নেশার উপকরণ গ্রহণ করে।

তারা ফেনসিডিল হেরোইন, গাঁজা ও প্যাথেডিন ইনজেকশন নিয়ে থাকে। অস্বাস্থ্যকর-নোংরা পরিবেশসহ অর্ধ হারে-অনাহারে থাকে এসব রক্তদাতা। তারা পেশাদার যৌনকর্মীদের সঙ্গেও মেলামেশা করে। তাই অসতর্কভাবে রক্ত গ্রহণের ফলে এইচআইভি/এইডস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা কমছে না। খ্যাতনামা লিভার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মবিন খান ও ভাইরোলজি বিশেষজ্ঞ ডা. নজরুল ইসলাম জানান, কয়েক বছর আগে তারা রক্তদাতাদের ওপর এক জরিপ চালিয়েছিলেন।

এতে দেখা গেছে, রক্তদাতাদের মধ্যে ২৯ ভাগ হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে এবং ছয় ভাগ হেপাটাইটিস সি ও ই ভাইরাসে আক্রান্ত। তাদের মধ্যে ৯০ ভাগ সিফিলিস ও গনোরিয়াসহ নানা সংক্রামক রোগে আক্রান্ত। বর্তমানে সংক্রামক রোগে আক্রান্ত পেশাদার রক্তদাতার সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা পেশাদার রক্তদাতার রক্ত ব্যবহার না করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। জানা যায়, ঢাকার বাইরেও জেলা শহরে রয়েছে বিপুলসংখ্যক লাইসেন্সবিহীন বেসরকারি ব্লাড ব্যাংক।

অবৈধভাবে এসব ব্লাড ব্যাংকে পেশাদার রক্তদাতারা উচ্চ মূল্যে রক্ত বিক্রি করছে। রাতের বেলা সকল অবৈধ ব্লাড ব্যাংক থেকে রক্ত বেসরকারি ক্লিনিকে রোগীদের কাছে উচ্চমূল্যে বিক্রি হয়। অভিযোগ আছে, সরকারি হাসপাতালেও এসব ব্লাড ব্যাংক থেকে রাতে রোগীদের দিয়ে রক্ত কেনানো হয়। একশ্রেণীর ডাক্তার ব্লাড ব্যাংক থেকে ৫০ ভাগ কমিশন পেয়ে থাকেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যে জানা যায়, রাজধানীতে লাইসেন্সপ্রাপ্ত নয়টি বড় বেসরকারি ব্লাড ব্যাংক রয়েছে।

এগুলো হচ্ছেÑ ল্যাবএইড হাসপাতাল, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন, কিডনি ফাউন্ডেশন, ইউনাইটেড হাসপাতাল, এ্যাপোলো হাসপাতাল, সিটি হাসপাতাল, গ্রিন ভিউ হাসপাতাল, স্কয়ার হাসপাতাল ও আদ-দ্বীন হাসপাতাল। এ ছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনিয়মের কারণে কিছু ভুঁইফোড় প্রতিষ্ঠানও রক্ত বাণিজ্য চালাচ্ছে। অনুসন্ধানে দেখা যায়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন চানখারপুল মোড়ে ডোনার লাইফ ও ১২ নম্বর বকশীবাজার লেনে ঢাকা নিউ প্যাথলজি সেন্টার নামে দুটি ব্লাড ব্যাংক আছে। সেখানেও দেদার রক্ত বেচাকেনা চলে আসছে। সম্প্রতি ডোনারে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালায়।

ভ্রাম্যমাণ আদালত গত ১৩ অক্টোবর চাঁনখারপুল এলাকার ডোনার ব্লাড ব্যাংক থেকে সাত ব্যাগ রক্তের প্লাজমাসহ ৭০ ব্যাগ রক্ত উদ্ধার করে। যেখানে রক্ত দেয়ার পর রক্তদাতার নাম-ঠিকানার রেকর্ড পর্যন্ত রাখা হয়নি। পাঁচজন রক্তদাতার নাম-ঠিকানা পাওয়া যায়, যারা সবাই ছিল মাদকসেবী। রক্তের প্লাজমা করার কোনো যন্ত্রও নেই ওই ব্যাংকে। এসব অভিযোগে ডোনার ব্লাড ব্যাংকের মালিক এম আর মোতালেবকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানাসহ এক বছরের জেল দেয়া হয়।

এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে র‌্যাব-১ ও ভ্রাম্যমাণ আদালত রাজধানীর মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছেই অভিযান চালিয়ে দূষিত রক্ত বেচাকেনার দুটি অবৈধ ব্লাড ব্যাংকের সন্ধান পায়। ভ্রাম্যমাণ আদালত মহাখালী আমতলার ২৪ নম্বর ভবনে দি ঢাকা ক্লিনিক এ্যান্ড প্যাথলজিতে এবং মহাখালীর নিউ এয়ারপোর্ট রোডের এইচ ১৮/১ নম্বর ভবনে সিটি ল্যাব এ্যান্ড ব্লাড ব্যাংকে অভিযান চালিয়ে সংগৃহীত দূষিত রক্তের বেশ কিছু ব্যাগ উদ্ধার করে। রক্তের প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই রক্তদাতাদের শরীর থেকে রক্ত সংগ্রহ করা হয়। ব্লাড ব্যাগের গায়ে ব্যবহার করার কোনো সময়সীমা উল্লেখ নেই। ব্লাড ব্যাংক দুটির বৈধ লাইসেন্স নেই।

ভেতরে নোংরা-অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। দুই ব্লাড ব্যাংকের কাছ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত ৫০ হাজার করে মোট এক লাখ টাকা জরিমানা আদায় করে। শেরে বাংলা নগর, মিরপুর, মহাখালী, মিটফোর্ড, ধানম-ি এলাকায় অনেক প্যাথলজি সেন্টারেও চলছে রক্ত বেচাকেনার ব্যবসা।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.