আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

***ইহুদী চক্রান্ত, হে মুসলিম ভাইয়েরা সাবধান!***

"সকল বস্তু তার বিপরীত বস্তুর মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে উঠে"

ইহুদী চক্রান্ত, হে মুসলিম ভাইয়েরা সাবধান! ইহুদী সম্প্রদায় সেই আদিকাল থেকে সত্যের বিরোধিতা করে আসছে। এই সম্প্রদায়টি এতই কুটিল যে তাদের চক্রান্ত বুঝা যায় না। মানুষকে সত্য পথ থেকে বিভ্রান্ত করতে এরা উস্তাদ। মুসলমানরা ইহুদীদের এক নাম্বার শত্র“, তারা মুসলমানদেরকে বিভ্রান্ত করার জন্য অনেক সূক্ষ্মচাল চালে যা অনেক মুসলমানকে বিভ্রান্ত করে দেয়। বাংলাদেশ যেহেতু মুসলিম দেশ তাই আমাদের জন্মভূমিও ইহুদীদের চক্রান্তের বাইরে নয়।

একটু পিছন দিকে ফিরে তাকালেই আপনাদের মনে পড়বে, কয়েক বছর আগে জিয়া বিমানবন্দরে মুসলমান নামধারী একজন "মোসাদ" এজেন্ট ধরা পড়েছিল। তখন এই নিয়ে পত্রিকায় অনেক লেখালেখিও হয়েছিল কিন্তু কালের পরিক্রমায় তা আমরা ভুলে গেছি। আজ আপনাদের ইহুদীদের একটা চক্রান্ত সম্পর্কে অবহিত করবো, ইনশাল্লাহ আপনারা অনেক বিষয় বুঝতে পারবেন। মুসলমানদের লক্ষ্য উদ্দেশ্য একটাই আর তাহলো এক আল্লাহ তাআলার ইবাদত করা। “আমি জ্বীন ও মানুষ জাতি আমার ইবাদত ছাড়া অন্য কোন উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করিনি” (সূরা আয যারিয়াতঃ ৫৬) একত্ববাদ হচ্ছে ইসলামের প্রধানতম বিষয়।

এক আল্লাহ তাআলার ইবাদত ও তাঁর দাসত্ব মেনে নেওয়ার কথা পৃথিবীতে যত নবী-রাসূল এসেছেন তারা সবাই প্রচার করেছেন। “ বল (হে মুসলমানগণ): আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর প্রতি, আমাদের জন্য যে জীবন ব্যবস্থা নাযিল হয়েছে তার প্রতি এবং যা ইবরাহীম, ইসমাইল, ইয়াকুব ও ইয়াকুবের বংশধরদের প্রতি নাযিল হয়েছে আর যা মূসা, ঈসা ও অন্যান্য সকল নবীকে তাদের রবের তরফ হতে দেওয়া হয়েছিল, তার প্রতি। আমরা তাদের মধ্যে কোন পার্থক্য করি না এবং আমরা আল্লাহরই নিকটে আত্মসমর্পণকারী”। (সূলা বাকারাঃ ১৩৬)। একাত্ববাদের উপর ভিত্তি করে মুসলমান ঐক্যবদ্ধ থাকবে তাই মুসলমানদের এই ঐক্যবদ্ধ অবস্থা যাতে করে ভাঙ্গা যায় সেজন্য ইহুদীরা সুগভীর চক্রান্ত করে চলেছে।

তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, মুসলমানদের নিজেদের মধ্যেই যদি বিরোধ লাগিয়ে দেওয়া যায় বা এমনকিছু করা যায় যা তাদের নিজেদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করবে তাহলে তাদের উদ্দেশ্য অনেকটা সফল হয়ে যায়। তাদের এই চক্রান্ত নতুন কিছু নয়, সেই মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সময় থেকে হয়ে আসছে, তখন যেহেতু তারা ঐক্যবদ্ধ থেকেছিল তাই তাদের চক্রান্ত তাদের উপর এতটা কার্যকর হয় নি। কিন্তু বর্তমান যামানাতে অধিকাংশ মুসলিমরা কুরআন ও সহীহ সুন্নাহ থেকে যোজন যোজন দূরে তাই তাদের মাঝে বিরোধ সৃষ্টি করে দেওয়া ইহুদীদের জন্য অনেক সহজ বলা যায় অনেকটা ডাল-ভাতের মতো। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এর সুন্নাহবে ধ্বংস করার জন্য তারা সুগভীর চক্রান্ত শুরু করে। আর এজন্য তারা এমন কিছু লোককে তৈরী করে যাদের বাইরে থেকে খোলা চোখে দেখলে মনে হয় তারা অনেক বড় আলেম কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য থাকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এর সুন্নাহকে ধ্বংস করা।

মোতাযিলা সম্প্রদায়ের কথা হয়তো আপনারা অনেকেই শুনে থাকবেন। এই মোতাযিলা মতবাদটির জন্ম আব্বাসীয় খলিফাদের আমলে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহকে দ্বীনের কাঠামো থেকে বাদ দিয়ে কুরআনের নির্দেশবাণীকে যুক্তির মানদন্ডে যাচাই করে গ্রহণ করার মতবাদটিই হচ্ছে মোতাযিলা মতবাদ। আর এই মতবাদ ইহুদী কর্তৃক রচিত। এনসাইক্লোপেডিয়া বৃটানিকার প্রবন্ধকার Sicil Rath (সিসিল রাথ) 'Jew' (ইহুদী) শব্দের টীকা প্রসঙ্গে লিখেছেনঃ “মধ্য যুগে দুনিয়ায় অতি অল্প সংখ্যক ইহুদী ছিল।

তাই এদের পক্ষে বিজ্ঞান, চিকিৎসা শাস্ত্র ও দর্শন ছাড়া পারিপার্শ্বিক সংস্কৃতিতে অন্য কোন ধরনের প্রভাব বিস্তার করা সম্ভব ছিল না। তবু এরা নিজেদের সংখ্যার তুলনায় অনেক বেশী কাজ করেছে...। আরব জাহানে এরাই ইউনানী চিন্তাধারার প্রসার ও মোতাযিলা মতবাদের সূচনা করে”। (ইহুদী চক্রান্ত, বিশ্বাব্যাপী ষড়যন্ত্রে ঐতিহাসি দলীল, পৃষ্ঠা:৫২) এছাড়া ইহুদীদের চক্রান্তের ফসল কাদিয়ানী, শিয়া ও অন্যান্য কিছু সম্প্রদায় বলে থাকে “শুধু কুরআনকে ধরে রাখ, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহকে মেনো না, কারণ এটা বিশ্বাসযোগ্য না”। তাদের অন্যান্য আচরন প্রায় মুসলিমদের মতো আর তাদের নামও মুসলিম তাই অনেকেই বিভ্রান্ত হয়।

তেমনি একজন হচ্ছেন, ডঃ রাশাদ খলিফা। ইহুদীদের কতৃক পরিচালিত সংস্থায় সে কাজ করতো আর তার উদ্দেশ্য ছিল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এর সুন্নাহকে ধ্বংস করা। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো এই রাশাদ খলিফা মুসলমানই ছিল না। সে ছিল জন্মগত আরবিক খ্রিস্টান যাকে কপ্টিক খ্রিস্টান বলা হয়। তার জন্ম ছিল মিশরে আর মিশর ও আমেরিকাতে তার রেজিস্টার্ড নাম ছিল “রিচার্ড কালিফ”, সে তার জীবনে কখনই মুসলমান হয় নি।

ইহুদীদের অর্থায়নে সে Tucson, Arizona তে তার কার্যক্রম শুরু করে। সে প্রচার করতে শুরু করে যারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহ তথা হাদীস মেনে চলে তারা False Muslim । সে তার বই Quran: The Final Scripture এ লিখেছে যারা সুন্নাহ মানবে তারা False Muslim এবং কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে যেখানে হাদীস-সুন্নাহ শব্দটি এসেছে তার বিকৃত অনুবাদ করে। সে আরো লিখে, সত্যিকার মুসলমান তারাই যার শুধু কুরআন মানবে। পাকিস্তানে “কুরানিক মুভমেন্ট” নামে তার অনুসারীদের একটা সংস্থা রয়েছে।

সে নিজেকে ১৯ সংখ্যা তত্ত্বের মাধ্যমে নিজেকে নবী প্রমাণ করতে চেয়েছিল। এই রিচার্ড কালিফ তথা রাশাদ খলিফার ১৯ সংখ্যা তত্ত্ব আমাদের দেশে বহুল পরিচিত। ইহুদীদের চক্রান্ত যে কত গভীর তার একটু অনুভব করুন। ইহুদীরে অর্থায়নে কতিপয় ডঃ(PhD.) ডিগ্রীধারী কতিপয় কুরআন গবেষক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহকে ধ্বংস করার জন্য তারা কুরআনের ভুল ব্যাখ্যা করা শুরু করেছে। আর যেহেতু তারা কুরআনের আয়াত ব্যবহার করে তাই মুসলমানদের একটু দূর্বলতা থেকে যায়, তারা দ্বিধান্বিত হয়ে যায় আর এই সুযোগটাকেই তারা কাজে লাগায়।

একটা বিষয় বিশেষ লক্ষ্যনীয়, তারা প্রকাশ্যে আসে না, ভিতরে থেকে বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়াতে তাদের লেখা প্রচার করে আর বর্তমান ইন্টারনেট যুগে তাদের কাজ অনেক সহজ হয়ে গেছে। তারা বিষয়গুলোকে এমনভাবে উপস্থাপন করে যে সেগুলোকে সত্য বলে মনে হয়। সহজ-সরল ভাষা ব্যবহার, সুচতুর যুক্তি ব্যবহার তাদের লেখাতে রয়েছে। বিভিন্ন ওয়েব সাইট, ব্লগে তারা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। একটা গ্রুপ তৈরী করা সৃষ্টি করছে, যখন একটা বড় সংখ্যায় তারা প্রকাশিত হবে তখন মুসলমানদের নিজেদের মধ্যেই বিরোধ সৃষ্টি হয়ে যাবে।

ইহুদীদের এই চক্রান্ত সম্পর্কে আমাদের সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। একটা বিষয় আমাদের সবার মনে রাখা প্রয়োজনঃ “আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীন পরিপূর্ণ করে দিলাম, আর তোমাদের উপর আমার (প্রতিশ্রুত) নেয়ামতও আমি পূর্ণ করে দিলাম, তোমাদের জন্য জীবন বিধান হিসেবে আমি ইসলামকেই মনোনীনত করলাম” (সূরা আল মায়িদা:০৩) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এর সময়ই দ্বীন ইসলামকে পরিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে, কাজেই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের যেভাবে শিখিয়েছেন সেভাবেই আল্লাহ তাআলার ইবাদত করতে হবে, এরপর সে যেই হোক না কেন, যত আকর্ষনীয় মতবাদ, যুক্তিই পেশ করুক না কেন তা গ্রহণযোগ্য নয়। কেউ যদি ইবাদত করার ক্ষেত্রে নিজস্ব পন্থা অনুসরণ করে তাহেল তা গ্রহণযোগ্য হবে না। “হে ঈমানদার লোকেরা! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রাসূলের অনুসরণ কর আর নিজেদের আমল নষ্ট করো না। ” (সূরা মুহাম্মদ-৩৩) কুরআন একটা বই আকারে একেবারে নাযিল করা হয়নি, দীর্ঘ ২৩ বছরে নাযিল হয়েছে আর যখন যে টুকু নাযিল হতো তা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দিতেন।

তাই কেউ যদি বলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহ মানা যাবে না সে যে ইসলামের শত্রু তাতে কোন সন্দেহ নেই। আমাদের উচিত কুরআন ও সহীহ সুন্নাহর চর্চা করা এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আল্লাহ তাআলার মনোনীত দ্বীনকে আকড়ে ধরা। ইহুদীরা আমাদের উপর নাযিলকৃত কুরআন দিয়ে ভুল ব্যাখ্যা করে আমাদেরকেই বিভ্রান্ত করছে, এ দুঃখ, লজ্জা কোথায় রাখব! কাজেই আসুন, কুরাআন ও সহীহ হাদীসের চর্চা শুরু করে দিই। নিজের ধর্মকে শুদ্ধরুপে জানি এবং মানি। মহান আল্লাহ আমাদেরকে শয়তান ও শয়তানের অনুসারীদের, বিদআতীদের, এবং শিরকপূর্ণ কথা, কাজ ও চিন্তা থেকে হিফাজত করুন এবং দ্বীন ইসলামকে সহীহভাবে আকড়ে ধরার তৌফিক দান করুন।

আমীন। রাশাদ খলিফা সম্পর্কে আরো জানতে: এখানে ক্লিক করুন


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.