আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কুমল্লিায় বাড়ছে শশিু শ্রমকিরে সংখ্যা



‘শিশু সুরক্ষার অধিকার, দিন বদলের অঙ্গীকার’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও গত ৫ অক্টোবর পালিত হয়েছে বিশ্ব শিশু দিবস। একই সঙ্গে পালিত হচ্ছে বিশ্ব শিশু অধিকার সপ্তহ। সারা দেশের ন্যায় কুমিল্লায়ও নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে শিশু অধিকার সপ্তাহ উদযাপিত হচ্ছে। এর মধ্যে গত ৬ অক্টোবর মঙ্গলবার শিশু অধিকার সপ্তাহের দ্বিতীয় দিন কন্যা শিশুদের নিয়ে বর্ণাঢ্য র‌্যালী, সংগীতানুষ্ঠান, নৃত্য প্রতিযোগীতা সহ বর্ণাঢ্য আয়োজন করা হয়। এতে ২১ পদক প্রাপ্ত স্বনামধন্য নারী নেত্রী ডাঃ জোবায়দা হান্নান সহ জেলার বিশিষ্ট জনরা উপস্থিত ছিলেন।

শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার নিয়ে প্রতি বছর জাকজমক পূর্ণভাবে শিশু দিবস উদযাপন করা হলেও এখনো সারা দেশের ন্যায় কুমিল্লায় শিশু অধিকার প্রাতিষ্ঠানকি রূপ পায়নি। নানাভাবে বঞ্চিত আমাদের কুমিল্লা শিশুরা। কুমিল্লায়ও শিশুদের বিরাট একটা অংশ শিশু শ্রমে জড়িত। ক্রমেই কুমিল্লায় প্রসারি হচ্ছে শিশু শ্রমের বাজার। আর এই শিশু শ্রমিকদের বিরাট অংশটি চায়ের স্টল, মটর গ্যারেজ, গ্রীলের ওয়ার্কশপ সহ বিভিন্ন ঝুকিপূর্ণ শ্রমে নিয়োজিত রয়েছে।

তাছাড়া সীমান্ত এলাকায় চোরাচালানের কাজে শিশু শ্রমিক ব্যবহার দিনদিন বাড়ছে। শিশু শ্রমিক কুদ্দুস। বয়স বড়জোর আট। গত এক বছর ধরে কাজ করছে সদর উপজেলার কালির বাজারের একটি চায়ের স্টলে। নিজ বাড়ি দেবিদ্বার উপজেলার বইশকোট গ্রামে।

দিন মজুর পিতার ন্তান কুদ্দুছ মাত্র তিনশত টাকা বেতনে চাকুরি করছে এই চায়ের স্টলে। প্রথম তিন মাস ছিল শিক্ষানবিশ কাল, অবৈতনিক। এখন তিনশত টাকা বেতন পেলেও চাকুরি ছেড়ে যেন যেতে না পারে মালিক তাই দুই মাসের বেতন হাতে রেখে দিয়েছে। কুদ্দুছের কর্মকাল সকাল ৫টা থেকে রাত ১২ টা। রোগা জীর্ণ শরীরের শিশু কুদ্দুছের বিনোদন রাত ১২টার পর দোকান বন্ধ করে পাশের দোকানের সিডিতে হিন্দি গানের নৃত্য দেখা।

কুদ্দুছ কোন দিন স্কুলে যায়নি। স্কুলে যাওয়ার ইচ্ছা নেই। তার স্বপ্ন বড় হয়ে যদি নিজে একটা চায়ের স্টলের মালিক হতে পারে। শিশু শ্রমিক জুয়েল ময়নামতি নিশ্চিন্তপুর একটি হোন্ডার গ্যারজে কাজ করে। তার ২ বছরের বড় ভাই সোহেলও কাজ করে পাশের আরেকটি মাইক্রোবাস ওয়ার্কশপে।

দেবিদ্বার উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের বাসের হেলপার আলমগীর মিয়ার পুত্র জুয়েল ও সোহেল। অভাবের তাড়নায় কাজ নিয়েছে গ্যারেজে। শিশু শ্রমিক জুয়েল জানায়, ১ বছর পূর্বে সে একটি সি.এন.জি গ্যারেজে কাজ নেয়ার মাধ্যমে সে শ্রম বাজারে পা রাখে। বর্তমানে সে কিছুটা শিখেছে, সার্ভিসিংয়ের কাজ করতে পারে। গত দুইমাস ধরে তার বেতন ধরা হয়েচে মাসিক দুইশত টাকা।

পুরোপুরি কাজ শিখলে বেতন বাড়বে। শিশু শ্রমিক জুয়েলের কর্মকাল সকাল ৯টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত। মাসিক ছুটি মাত্র ১ দিন। শুধু বিকেল বেলা পর্যন্ত। কুদ্দুছ ও জুয়েলের মতো অসংখ্য শিশু শ্রমিক ছড়িয়ে আছে কুমিল্লার শহর থেকে শুরু করে গ্রামে গ্রামে।

চায়ের স্টল, মটর গ্যারেজ, গ্রীল কারখানায় নিয়োজিত শিশু শ্রমিকের সংখ্যা বেশী। আর এসব স্থানে নিয়োজিত শিশু শ্রমিকদের শিশু শ্রম না বলে মিশু নির্যাতন বললেও ভুল হবে না। তাদের জীবন কাটছে মানবেতরে। পর্যবেক্ষক মহলের মতে, দিন দিন কুশিল্লায় শিশু শ্রমিকের সংখ্যা বেড়েই চলছে। শিশু অধিকার ফোরামের জরিপ অনুসারে দেশে যখন শিশু দিবস পালিত হচ্ছে ঠিক তখনই দেশের প্রায় ৬০ লাখ শিশু মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত।

আর দেশের বর্তমান শিশু শ্রমিকের সংখ্যা ৩১ লাখ ৮০ হাজার। এর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে নিয়োজিত আছে ১২ লাখ ৭০ হাজার শিশু।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.