আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রুম্মাকে দেয়া আমার অমূল্য সাজেশনসমূহ ~ ব্লগিংয়ের মাধ্যমে ইন্টারনেটে আয়ের কৌশল

আমার সাথে যোগাযোগ করতে http://bn.jinnatulhasan.com/blog এ ভিজিট করুন।

পোস্টটির সূত্র: রুম্মাকে দেয়া আমার অমূল্য সাজেশনসমূহ আমার বিরুদ্ধে রুম্মা প্রথমে অভিযোগ এনেছিলেন যে আমি মেয়ে ব্লগারদের প্রশ্নের উত্তর দেই না। অথচ আমি জানতামই না যে কোনো মেয়ে আমার ব্লগ পড়ছেন, মন্তব্য করা তো দূরে থাক। যাহোক, দ্বিতীয় আড্ডাতে অন্যদের ব্লগের সাথে সাথে তার ব্লগেরও সমালোচনা এবং কিভাবে এ থেকে আয়ের পথ খুঁজে বের করা যেতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। আর আসার আগের দিন ফোনেও সেই কথাগুলোই পুনরায় তার কানে আউড়ে ছিলাম।

আর ওই কথাগুলোই তার ভাষায় অমূল্য সাজেশন হয়ে গিয়েছে। তাই ভাবলাম অন্যদেরকেও সেই অমূল্য সাজেশনগুলো জানিয়ে দেই প্রথমে জেনে রাখুন, রুম্মা একজন শিল্পী মানুষ। অবসরে তিনি ছবি আকেঁন আর মৃৎশিল্পেও তার বেশ হাত রয়েছে। যারা সামহোয়ারইনে ব্লগিং করেন, তারা নিশ্চয়ই তার আঁকা ছবি দেখেছেন। উনি শখের বশেই ব্লগার(ডট)কমে ব্লগ খুলেছেন।

এখন এই ব্লগ থেকে বিকল্প আয়ের পথ খুঁজছেন। তার ওয়েবসাইট ঘুরে ফিরে দেখবার পরে আমার অভিমতগুলো নিম্নরুপ: এক যেহেতু তিনি শখের বশেই ব্লগ বানিয়েছেন, তাই তাকে আপাতত ডোমেইন বা হোস্টিংয়ের পেছনে পয়সা খরচ করা থেকে বিরত থাকতে বলব। তার জন্য আপাতত blogger.com এ ফ্রি ব্লগই যথেষ্ট। তবে যারা পুরোপুরি আয়ের উৎস হিসেবে ব্লগকে ব্যবহার করতে চান, তাদের উচিৎ কিছু পয়সা খরচ করে ডোমেইন এবং হোস্টিং কিনে পুরোদমে ব্লগিংয়ে মনোনিবেশ করা। দুই তার ব্লগে রয়েছে ব্লগারের সেই পুরোনো টেমপ্লেট যেগুলো দেখতে দেখতে চোখে ছানি পড়ে যাবার উপক্রম।

প্রথমেই তার উচিত ব্লগারের টেমপ্লেটটি পরিবর্তন করা। গুগলে সার্চ করলেই ব্লগারের জন্য হাজারো টেমপ্লেট পাওয়া যায়। তবে সবগুলো টেমপ্লেটের মধ্যে ম্যাগাজিন টেমপ্লেটগুলো আমার খুব পছন্দ। যেকোনো টেমপ্লেট ব্যবহার করেই ব্লগারের বোরিং ব্লগকে অসাধারন করে তোলা সম্ভব। বিশ্বাস হয় না, উদাহরন স্বরুপ নিচে আমার ব্লগারের একটি পুরোনো ব্লগের আগের এবং এখনকার তুলনামূলক ছবি দিলাম – আপনারাই বিচার করুন।

ব্লগের ডিজাইন পরিবর্তন করতে সময় লেগেছে ৩ মিনিট। পূর্বের অবস্থা বর্তমান চেহারা তিন অত:পর লেখার দিকে নজর দিতে হবে। যদিও তিনি শখের বসে ব্লগ লিখছেন, তবুও যখন বিশ্বের দরবারে নিজেকে এবং নিজের প্রতিভাকে তুলে ধরতে হবে তখন অবশ্যই লেখার মানও উন্নত হতে হবে। তাই পোষ্টের অর্থর্পূণ টাইটেল, লেখায় প্যারা করে লেখার অভ্যাস, প্রয়োজনে নম্বর দিয়ে লেখা, ছবি এবং অনুচ্ছেদের টাইটেল দিতে হবে। আর বানানের দিকেও অবশ্যই নজর দেয়া আবশ্যক – তার পোষ্টগুলোতে প্রচুর বানান ভুল দেখা গেছে।

চার তার গুগলের বিজ্ঞাপন কেবলমাত্র বিকট রঙয়ে সাইটবারে দেখা যায়। এগুলোকে ওয়েবসাইটের অন্য লেখার সাথে মিলিয়ে বসাতে হবে এবং যতদূর সম্ভব ব্লগ পোষ্টগুলোর মধ্যে বসানোর কৌশল শিখতে হবে। পাঁচ এই ব্লগ থেকেই আয়ের বিভিন্ন কৌশল রপ্ত করতে হবে। এডসেন্স কেবল অনেকগুলো কৌশলের একটি কৌশল হতে পারে – কখনই একমাত্র কৌশল নয়। ১. তার ছবিগুলোকে সুন্দর ফ্রেমে বন্দি করে ebay তে বিক্রির জন্য নিলামে তুলে দেয়া যেতে পারে।

২. ebay তে বিক্রি করা সম্ভব না হলে, পুরো ওয়েবসাইটটিকেই নিজের একটি Portfolio রূপে ব্যবহার করা যেতে পারে এবং বাংলাদেশি অভিজাত শ্রেনীর ক্রেতাদের নিকট সুন্দরভাবে নিজেকে উপস্থাপন করা যেতে পারে। অনেক দেশি/বিদেশি প্রতিস্ঠানই প্রচুর অর্থ ব্যয় করে অফিস সাজানোর ক্ষেত্রে – ওয়েবসাইটটি সুন্দর করে সাজিয়ে তাদের কাছে ইমেইল করে ওয়েবসাইটে ঘুরে দেখতে অনুরোধ করা যেতে পারে। বলা যায় না, ছবি সরবরাহের জন্য অর্ডার পেয়েও যেতে পারেন। ৩. আপনি যেহেতু আকঁতে জানেন, তাই আঁকার জন্য কোন সব উপকরণ ভাল আর কোনো উপকরণগুলো নিজে ব্যবহার করছেন সেগুলো নিয়ে আলোচনা করতে পারেন এবং সেগুলো কেনার লিংক হিসেবে Amazon Associates এর রেফারাল লিংক ব্যবহার করতে পারেন। কমিশন হিসেবে প্রতিটি উপকরণ বিক্রি মূল্যের ৫% থেকে ১১% পর্যন্ত পেতে পারেন।

৪. মৃৎশিল্পেও ক্ষেত্রেও একই অভিমত প্রযোজ্য। আপনাদের মনে হতে পারে সামান্য একটি ক্ষুদ্র মগ বিক্রি করে কিই বা লাভ হতে পারে? আমি একটি কথা বারবারই বলি আমরা কোনো বস্তু কেনার আগে হাজারবার ভাবি বস্তুটি কি আমার প্রয়োজন কিনা অথচ বিদেশিরা ঘোরের বশে যেকোন পন্যই কিনে ফেলে তারপর চিন্তা করে বস্তুটি তার কি কাজে লাগতে পারে। এজন্য আপনি যদি সুন্দর করে মগটি বৈশিষ্ট্য তুলে ধরতে পারেন, তাহলে মগটি প্রস্তুতের খরচ এবং বিদেশে পাঠানোর খরচ বাদ দিয়েও আপনার হাতে লাভ থেকে যাবে। ৫. আর্ট শেখার জন্য নির্দেশনা নিয়ে ধারাবাহিক ব্লগ পোষ্ট করতে পারেন। পরে ওই ব্লগগুলোকে pdf আকারে ebook বানাতে পারেন এবং নামমাত্র মূল্যে সেগুলো বিক্রি করতে পারেন।

ছয় ব্লগার(ডট)কমে থাকা ছবি আঁকা বিষয়ক ব্লগগুলোকে কিভাবে সাজানো যেতে পারে কিংবা কিভাবে এগুলোকে আয়ের উৎস হিসেবে গড়ে তোলা যেতে পারে তার ধারনা পেতে গুগলে drawing blog blogspot সার্চ করুন। হাজার হাজার ওয়েবসাইট খুঁজে পাবেন আর প্রতিটি ওয়েবসাইট থেকে শিখতে পারবেন নতুন নতুন আয়ের এবং নিজের ওয়েবসাইটের প্রচারণার কৌশল। সাত বৃটিশ বিউটিশিয়ান Lauren Luke অনেকটা শখের বশেই YouTube এ নিজের নামে চ্যানেল খুলে সৌন্দর্য বিষয়ক টিপসগুলো ভিডিও আকারে আপলোড করতে শুরু করেন। সহজ, সরল উপস্থাপনার ভিডিওগুলো এতটাই জনপ্রিয় হয়েছে যে তিনি YouTube এ Most Subscribed (All Time), Most Subscribed (All Time) – Gurus এবং Most Subscribed (All Time) – Partners ক্যাটাগরিতে ১ নম্বরে আছেন। তাকে নিয়ে গার্ডিয়ান, এবিসি নিউজ, বিবিসি নিউজে প্রতিবেদন প্রচারিত হয়েছে।

এখন তিনি নিজ নামে প্রসাধনী পন্য বিক্রয় করা শুরু করেছেন। আপনি যে কাজই করুন না কেন, যে বিষয়েই আপনার অভিজ্ঞতা কিংবা শখ থাকুক না কেন, আপনি তা থেকেই ইন্টারনেটে আয়ের মুখ দেখতে পারবেন। শুধু আপনাকে আপনার পছন্দসই বিষয়টিকে উপস্থাপনের কৌশল জানতে হবে। সবার জন্য রইল শুভ কামনা ভাল থাকুন।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।