আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

...বিরিশিরি ভ্রমণ...



Last weekend I visited Birisiri with some friends. It is about 170 km north of Dhaka, in Netrakona district. We left on Thursay morning and returned Saturday morning. The drive is approximately 4.5-5 hours each way, if there are no nasty jams. The last 30kms (1.5 hours) are difficult - a broken road full of potholes. Birisiri is a remote and tranquil place near the Shomeshwari river. গত ১৩ই আগষ্ট আমি আর আমার ৩ বন্ধু বিরিশিরি ভ্রমণ এ বের হলাম, আমরা সকাল ১০ টায় মহাখালি বাস ষ্ট্যান্ড এ আসলাম। ওখান থেকে ঢাকা টু বিরিশিরি বাস এ উটলাম। বাস ভাড়া ১৭০ টাকা করে নিলো। কিন্তু বৃষ্টিতে পানি জমার কারনে বাস সরাসরি বিরিশিরি যেতে পারল না। আমাদের ঝানজাইল বাজার স্টেসন এ নামতে হোলো।

ওখানে নামার পর গুরিগুরি বৃস্টি শুরু হোলো। আমরা বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে নৌকা ঘাটে গেলাম। ওখান থেকে আমরা নৌকা করে জারিয়া বাজার ঘাট এ নামলাম, নামার পর আমাদের কাছে কেউ ভাড়া চাইলো না, তখন আমাদের এক বন্ধু আমাদের কাছে আস্তে আস্তে বল্ল আমরা কি ফ্রি আসলাম? ঠিক তখনি একটু সামনে তাকায় দেখি ঘাট এ টাকা নিচ্ছে, আমরা একে ওপরের দিকেয় তাকায় হোহো করে হাসলাম। ঘাটের ভাড়া জন প্রতি ৫ টাকা দিলাম। বৃষ্টি তখনো গুরিগুরি পড়ছে।

আমরা একটু আগায় গেলাম তারপর একটা হোটেল এ দেখলাম গরম গরম পিয়াজু, দেখে আর লোভ সামলাতে পারলাম না আমরা; ইচ্ছামত খেলাম। খাওয়ার পর আমরা আমাদের গন্তবের (বিরিশিরি) উদ্দেশে রওনা হলাম মোটর সাইকেলে, এক মোটর সাইকেলে ড্রাইভার সহ ৩ জন উটলাম। এক মোটর সাইকেল ৬০ টাকা। আমরা ২ টা নিয়ে গেলাম। ওখানে YYyymxzbczxওয়াই.এম.সি.এ. এবং ওয়াই.ডাব্লিউ.সি.এ. এর ২ টা রেস্ট হাউজ আছে, আমরা ওয়াই.এম.সি.এ. তে উটলাম ১০৬ নং রুম এ।

রুম এ উঠে আমরা ফ্রেশ হয়ে নিলাম, সেদিন আর খুব বেশি সময় ছিল না আমাদের মূল স্থান দেখার কাজেই বের হলাম আশেপাশের এলাকা দেখতে। বের হয়ে আমরা ধীরে ধীরে হাটতে হাটতে আসলাম সোমেশ্মরী নদীর ব্রীজ এ, ব্রীজের উপর থেকে পানির বয়ে যাওয়া দেখতে খুব ভাল লাগছিল। ব্রীজ থেকে মেঘালয় এর পাহাড় চূড়া গুলাও দেখা যাচ্ছিলো, আমরা খুব আনন্দের সাহিত উপভোগ করলাম। তারপর আমরা দূ্গাপূড় বাজার এর দিকে গেলাম রিক্সা করে এবং ওখানকার রাজার বাড়ির ধংসাবশেষ দেখার উদ্দেশে গেলাম আর বয়স্কদের কাছ থেকে জানার চেস্টা করলাম রাজাদের সম্পর্কে। তারপর বাজার এর আশেপাশে আর একটু ঘোড়াঘুড়ি করে আমরা আমাদের রুমে ফিরে আসলাম।

রুমের সামনে বারান্দায় বসে আমরা কিছুখ্খন আড্ডা দিলাম, হঠাৎ খুব বৃষ্টি শুরু হল আমরা বারান্দায় বসে বৃষ্টি উপভোগ করলাম। এই সময় আমাদের রুম এর পাসের রুম ১০৭ নং রুমের মেম্বারদের সাথে পরিচয় হয়ে গেলো, তারাও ৪ জন ছিল। তারপর তাদের সাথে আমাদের বেশ ভালই ভাব হয়ে গেল। পরের দিন আমরা ৮ জন আমাদের মুল স্থানের উদ্দেশে বের হলাম, দুইজন করে আমরা ৪ রিক্সায় করে সোমেশ্মরি নদির ঘাট এ গেলাম এবং অনেক দরাদরি করে আমরা একটা নৌকা ভাড়া করলাম দুর্গাপুর থেকে বিজয়পুর আবার বিজয়পুর থেকে দুর্গাপুর পর্যন্ত ৫০০ টাকা। বিজয়পুর এর উদ্দেশে আমাদের নৌকা চলছে, আকাশ তখন মেঘ এ ঢাকা ছিল আর নদির মাঝখান থেকে আকাশ টা দেখতে অন্য রকম সুন্দর লাগছিল, হালকা গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি, পানির বয়ে যাওয়া, মেঘ আর মেঘালয় এর পাহাড় গুলা ওখান থেকে দেখতে পাওয়া সব মিলিয়ে সে এক সুন্দর পরিবেশ, সবাই ফটো তোলা শুরু করলাম।

এই ভাবে চলতে চলতে আমরা এক সময় নদির পারে পৌছে গেলাম। একে একে নৌকে থেকে নেমে দারালাম সবাই পাড়ে, তারপর দেখলাম সামনে একটা সুন্দর পাকা রাস্তা পাহাড় এর উপর দিকে গেছে, আমরা রাস্তা দিয়ে উপরে যাওয়া শুরু করলাম আমাদের সাথে মাঝিও আসলো, আমাদের গাইড হিসাবে। উপরে যেয়ে দেখলাম এইটা একটা খ্রীষ্টান মিশনারিজ, আমরা সেটা ঘুরে দেখলাম আর সবাই ফটো তুল্লাম। ওখান থেকে আমরা দল বেধেঁ নেমে ডান পাসে সমতলে হাটা শুরু করলাম। হাটতে হাটতে আমরা এক বি.ডি.আর. ক্যাম্প এ চলে আসলাম।

ক্যাম্প থেকে নদিটা ওনেকদুর পর্যন্ত দেখা যাচ্ছিল, সেটা খুবি সুন্দর লাগসিল দেখটে। কিছুখ্খন আমরা এই সৌন্দর্য উপভোগ করে আমাদের গাইড(মাঝি) কে নৌকাটা এদিকে আনতে বল্লাম। তারপর সবাই আবার নৌকায় উঠে আমাদের প্রধান আকর্ষন চায়না ক্লে এর দিকে রওনা হলাম। এখন আমরা নদির অনুকুলে যাচ্ছিলাম কাজেই অনেকটা তারাতারি আমরা ওপার এ চলে আসলাম। নদি পার হয়ে কিছুদুর হাটার পর আমরা পথে পেলাম হাজং রিবিলিয়নস্‌ এর মনুমেন্ট( This area has history. There were several rebellions by the Hajong people against unjust taxes, first against the British then against the Pakistanis. Some were led by Mr. Moni Singh, a revered socialist leader, who hailed from here. He was actually the son of the richest land owner of the area. This is a monument of the Hajong rebellions.) এখানে আমরা কিচ্ছুখ্খন সময় ব্যয় করলাম ফটো তোলার জন্য।

আবার আমরা হাটা শুরু করলাম চায়না ক্লে এর উদ্দেশে, আমরা ওনেক দুর হাটার পর অবশেষে আমাদের গন্তবে পৌছালাম। খুবি ক্লান্ত আমরা তখন, তারপরও যখন আমরা চায়না ক্লে এর অসাধারণ লেক ভিউ করলাম, সব ক্লান্তি দুর হয়ে গেল। একটা ছিল নীল পানির লেক আর একটা ছিল সবুজ পানির লেক। আমরা দেখে মুগ্ধ। আমি আর অন্য গ্রুপের ২ জন আমরা লেকে নেমে গেলাম গোসল এর জন্য।

কিছুখ্খন সাতার কাটার পর আমরা উঠে পরলাম, আর বাকিরা সবাই আমাদের দেখছিল। আমরা খুব এনজয় করতেছিলাম। এরপর আমরা আরো কিছু্খ্খন পাহাড় দেখে আমাদের নৌকাতে ফিরে আসলাম । নৌকা আমাদের যাত্রা শুরু স্থানে আবার নিয়ে গেল। আমরা নৌকা থেকে নেমে আবার দুর্গাপুর বাজার গেলাম আর আমাদের পেটে কিছু দানাপানি দিলাম।

তারপর আমরা রিক্সা ভাড়া করে আবার গাড় পাহাড় এর দিকে ছুটলাম। রিক্সা আমাদের একটা নির্দিষ্ট স্তানে নামায় দিল, আমরা সবাই দল বেধেঁ হাটা শুরু করলাম, কিছুদুর যাওয়ার পর আমরা এক ১২/১৩ বছর বালক কে পেলাম গাইড হিসাবে, সে আমাদের তথ্য দিল বায়ে পাহাড় এর পাসে একটা ঝড়ণা আছে, তো আমরা ছুটলাম সবাই সেই বালকের পিছে, আমরা অনেক কাঁদা, পানি উপেখ্খা করে সেখানে গেলাম যেয়ে দেখি ওখানে পাহাড় এর পাদদেশ এ খুবি সরু আকারে পানি নিচে পরছে, যা দেখে আমরা সবাই হতাশ। সবাই বলাবলি করছি কি ঝড়ণা দেখতে আসলাম দুড়..ছাই.., তারপর সেই বালক আমাদের পাসের পাহাড় এর উপর নিয়ে গেল, আমরা ওনেক কষ্টে উঠলাম, তারপর আমরা পাহাড় এর উপর এক জাগায় দাড়ায়ে রেষ্ট নিচ্ছিলাম, হঠাৎ আমাদের বন্ধু সোহেল সেই অন্য ৪ জনের গ্রুপের এক বন্ধুর মাথায় দেখে একটা জোক্‌ , কি ভয়ংকর বেপার; আমরা সবাই সেই মুহুর্তে যার যার পায়ের দিকে তাকালাম, কারও পায়ে জোক নাই। তারপর সেই বন্ধু ভয়ে বসে পড়ছে আর সেই ১২/১৩ বছরের বালক তার মাথার জোকটা হাত দিয়ে ফেলে দিল কোন রকম ভয়ের বালাই ছাড়াই। আমরা সবাই খুব আতংকে আছি ঠিক সেই মুহুর্তে আর এক বন্ধু কবির চীৎকার করে উঠল আঃ আঃ আঃ তার পায়ে জোক্‌ , সবাই তো আমরা আরও ভয়ে শেষ সেই মুহুর্তে; সেই বালক আবার তার পায়ের জোক ফেলে দিল।

ঠিক তার কয়েক পলক পরই সেই বন্ধু কবির আবার চিৎকার আঃ আঃ আঃ আমরা তো আরো ভয়ে শেষ, আমাদের সাথে ছিল লবণ আমরা সবাই আমাদের হাতে পায়ে লাগালাম ভয়ে। তারপর আমরা আর এক মুহুর্ত ওখানে না থেকে সবাই লাফায় লাফায় কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আমরা পাহাড় ত্যাগ করলাম। সে এক ভয়ংকর মুহুর্ত। এই জোকের ভয় আমাদের মাঝে অনেক সময় বিরাজ করল। আমাদের শরীরে একটু পির পির করলেই আমরা আতংকিত হচ্ছিলাম, যে জোক মনে হয় বেয়ে বেয়ে উঠছে।

আমরা এরপর লোকালয় সড়ক এ এসে গাড়দের জীবন-জাপন দেখার জন্য আরও সামনের দিকে আগালাম। আমরা একদম বাংলাদেশের শেষ সীমানায় চলে আসলাম, ওখানে এক বয়স্ক লোকের সাথে আমাদের দেখা উনি একজন উপজাতি। আমাদের মধ্যে লাভলু ভাই বয়স্ক লোকটাকে জিঞ্গাসা করলেন, "আপনি এখানে কতদিন থেকে আছেন?" বয়স্ক লোক উত্তর দিলেন, "৮১ বছর", লাভলু ভাই: "আপনার নাম কি?" বয়স্ক লোক: "প্রতিম", লাভলু ভাই: "আপনার প্রধান জীবিকা কি?", প্রতিম: "এখান থেকে ১৬০কিঃমিঃ পর্যন্ত বনের ভিতর আমরা যেতে পারি, ওদিক যেয়ে আমরা চুরি করে গাছ কেটে এনে বাজারে বিক্রি করি, প্রতিদিন ৯০ টাকা-১০০টাকা", লাভলু ভাই:" এখনও আপনি এই কাজ করেন?" প্রতিম: "না আমার বুরি করে এখন", আমি: "আপনার কয়জন ছেলেমেয়ে?" প্রতিম: "এক চেংরা, আর দুই চেংরী, চেংরা সবার ছোট," আমি: "চেংরার বয়স কত?" প্রতিম: "২০ বছর", আমি: "চেংরা কি করে?" প্রতিম: "চেংরা কিছু করে না, চেংরা বাদাম" । আমরা খুব অবাক হলাম ৮১ বছর ধরে উনি এখানে আছেন। প্রথমে বুঝতে পারি নাই বাদাম কি, পরে বুঝলাম বাদাইম্মা, হাঃ, হাঃ করে হাসলাম আমরা।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।