বাঙলা কবিতা
ফিনকি-ছোটা তাজা রক্তের চেয়েও টকটকে লাল এই রাত্রি। মহাজাগতিক বা আরোপিত আর কোনও রঙেরই মিশ্রণ নেই। গরমে টগবগ করে ফুটছে মানুষের স্বপ্ন আর আয়ূ। চার হাজার চার শ চল্লিশতম জন্মদিন আজ বাতাসের। চারপাশে আমার বন্ধুরা ___ বাৎসল্য আর ভালোবাসায় চক্রব্যুহ হয়ে আছে।
ভালো হতো, আরও কয়েক টুকরো বরফ যোগ হলে পানপাত্রে।
কারও সাথেই আজ ভাবনা শেয়ার করা সম্ভব নয় আমার পক্ষে। এই রাত্রির কসম ___ বিতরণমুলক প্রকাশও আমি সমর্থন করছি না। মানুষমাত্রই বণিক আর ঝুঁকে পড়ছে ধাতব ব্যবসার দিকে। ধাতবে আস্থা হারিয়েছি আমি আরও বেশ আগেই।
বিশেষ প্রকৃতির এক শিলাখণ্ড খুঁজতে খুঁজতেই তো কেটে গেল আমার এতোগুলো বছর! প্রাচীনতম সভ্যতা থেকে মানুষের কুড়িয়ে আনা সবগুলো পাথরই আমি পরখ করে দেখেছি। আমার পছন্দ-তালিকার কোনওটিরই আত্মীয়ও নয়
এরা।
কী ভয়ানক এক অস্বস্তি-তাড়িত আমি সারাটা জীবন! শুধু একটুকরো পাথরের খোঁজে___ এমনকী, আটলান্টিকের তলদেশ ভ্রমনেও আপত্তি ছিলো না আমার।
বন্ধুরা সব কবিতা-মশগুল আর নিরর্থক উল্লাসেই ঠোকাঠুকি করছে পরস্পরের পানপাত্র। কী বিশ্রী আর বিশৃঙ্খল সেই আওয়াজ ___ ছন্দোহীন___ বরং এই রাত্রিকে প্রতারিত করবার পক্ষেই তা উপযোগী ও মোক্ষম।
বল্কল, প্যাপিরাস, কাগজ আর মুদ্রণের দুনিয়া ফুরিয়ে আসছে দ্রুত। দ্বিতীয় মহাজাগতিকে টিকে থাকবে___ এমন এক টুকরো সিলিকনিক শিলাখণ্ড আমার চাই-ই চাই। আর এই রাত্রির চেয়ে উপযুক্ত উপলখণ্ড কী-ই বা হতে পারে !
প্রিজমের মতো বহুকৌণিক আমার স্বপ্ন আর ভাবনাগুলো এখন ক্রমাগত তীরবিদ্ধ করছে আমাকেই। অবারিত বিলের ঢেউ থেকে তুলে এনে যে ভাবনাগুলোকে একদা আমি ছেড়ে দিয়েছিলাম লেকের রুগ্ন জলে; আজ রাত্রে তারা বিদ্রোহে ফেটে পড়ছে পেরুর গেরিলাদের মতো।
তারা সব সম্মিলিত আত্মাহুতিতে যাবার আগেই, এক্ষুণি, ভাবনাগুলোকে উৎকীর্ণ করে যেতে চাই আমি ___ রক্তাক্ত, লাল রঙের, শিলাময়, অবিনাশী এই রাত্রিরই লোভনীয় আঁচলের সংগুপ্ততায় ...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।