আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বৃষ্টির পানি সংরক্ষন ও জলাবদ্ধতা নিরসনে মহানগরীর ৪৩টি খাল উদ্ধার করতে হবে


ঢাকা শহরে পানি সংকট ও জলাবদ্ধতা একটি বিদ্যমান সমস্যা। পানি সংকট নিরসন ও জলাবদ্ধতা রোধে জলাশয়, খাল-বিল, নদী-নালার গুরুত্ব অপরিসীম। ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতার মূল কারণ অবৈধভাবে খাল দখল ও ভরাট। খালগুলো উদ্ধার করা গেলে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি সংরক্ষনের মাধ্যমে নগরীর পানি সংকট নিরসন করা সম্ভব হবে। স্বাধীনতার পূর্বে এই শহরে ৪৭টি খাল ছিল।

বেশিরভাগ খালের প্রস্থ ছিল ১৫০ ফুটের বেশি। এগুলো দিয়ে নগরীর পানি নিষ্কাশন হত। স্বাধীনতার পর মাত্র তিন যুগের ব্যবধানে রাজধানী ঢাকা মহানগরী এলাকার ২৫টি খাল বিলুপ্ত হয়েছে। ২২টি খালের অসত্দিত্ব থাকলেও তা ক্রমশ সংকুচিত হয়ে পড়ছে। বর্তমানে ওয়াসার হিসাব অনুযায়ী ৪৩টি খাল রয়েছে বাকী ৪টি খালের হিসাব পাওয়া যায় না।

বক্তারা খাল-বিল, নদী, পুকুর, জলাশয় ভরাট করে স্থাপনা নির্মানকারীদের দৃষ্টানত্দমূল শাসত্দির দাবী জানান। ঢাকা শহরের খালগুলো ধ্বংশের একটি বড় কারণ ঋণ প্রদানকারী গোষ্ঠী ও সংশ্লিষ্ঠ সংস্থাগুলোর পরিবেশ বিষয়ক উদাসীনতা। খাল ভরাট করে সরু বক্স কালভার্ট নির্মাণ, খালের উপর সড়ক নির্মাণ, খাল দখল করে ভবন নির্মাণসহ বিভিন্নভাবে বন্ধ করা হয়েছে খাল। আর এ সকল কার্যক্রমের সক্রিয় সহযোগিতা বা আর্থিক যোগান দিয়েছে ঋণপ্রদানকারী গোষ্ঠী। পরিকল্পিত ও অপরিকল্পিতভাবে খালগুলো ভরাট করে রাসত্দাঘাট, কালভাট, আবাসনসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের ফলে প্রতি বর্ষায় ঢাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে।

খাল দখল করে একের পর এক গড়ে উঠেছে নতুন নতুন আবাসিক এলাকা। এতে নগরীর পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টি হলেই নগরির পথ ঘাট ডুবে যায়। নগরবাসীকে পোহাতে হয় দূর্ভোগ ও ভোগান্তিতে। উন্নয়নের নামে খাল ভরাট করে ড্রেনে রুপান্তরের কার্যক্রম পরিবেশ আইন ১৯৯৫, পরিবেশ নীতিমালা, বেঙ্গল ক্যানেল এ্যাক্ট ১৮৬৪, মহানগরী, বিভাগীয় শহর ও জেলা শহরের পৌর এলাকাসহ দেশের সকল পৌর এলাকার খেলার মাঠ, উম্মুক্ত স্থান, উদ্যান এবং প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন ২০০০ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

ঢাকা শহরের খালগুলো রক্ষা না করতে পারলে আগামী দশ বছরে ঢাকা বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়বে। খাল ও জলাশয় উদ্ধার বা সংস্কার কেবল মহানগরীর পানি ও বর্জ্য চলাচলের জন্যই প্রয়োজন এমন নয়, জলাবদ্ধতা সমস্যা ছাড়াও জলাশয়বিহীন রাজধানী এই জনপদ ও জনজীবনের জন্যই বিপদের কারণ হয়ে ওঠবে। দেখা দিবে ভূমিকম্প, জীববৈচিত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ভূগর্ভস্থ পানি নিচে নেমে যাওয়া, তাপমাত্রাবৃদ্ধিসহ নানা পরিবেশ সংকটের আশঙ্কা করছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা। যা শুধু পরিবেশের উপরই নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে না, এটা অর্থনীতির জন্যও নেতিবাচক।


 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।