আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কিলবিল কিলবিল GPA 5.0, ক্যাডেট ও ভিকারুন্নিসাদের হোলি, মুখস্থ আর ভর্তুকি নির্ভর গর্দভ শিক্ষাব্যবস্থার বাৎসরিক প্রসবোৎসব

নৌকা আর ধানের শীষে ভোট দিয়ে সোনার বাংলার খোয়াব দেখা আর মান্দার গাছ লাগিয়ে জলপাইর আশা করা একই! বিস্ময়ের ব্যাপার হল দিনের পর দিন আমরা তাই করছি!!
সেই একই ছবি। একই শব্দ। একই ঢোল। ক্যামেরাম্যানের কষ্ঠকর ভ্রমনের কোনই প্রয়োজনীয়তা দেখিনা। বরং স্টুডিওতে বসেই প্রচার করা যায়- ভিকারুন্নিসা, সিটি, নটরডেম, চট্টগ্রাম কলেজ, হলিক্রস, ক্যাডেট কলেজ সমুহের প্রায় সবাই জিপিএ ৫ পেয়েছে।

ছাত্র-ছাত্রী-শিক্ষকমন্ডলী মিলে ঝুলে দিনভর ব্যাপক নর্তন কুর্দন করছেন। দুপুর ২টার আগেই মিস্টির দোকানের ঝাপ নামানো হয়ে গিয়েছে। Congratulation! এক অদ্ভুৎ গ্রেড বন্যা চালু হয়েছে। কাটখোট্টা বা নিন্দুক যে সমালোচনাই কপালে জুটক, বিদ্যমান HSC (& SSC) Level এর মূল্যায়ন, ফলাফল ও জিপিএ ৫ পাওয়ার কারনে নাচানাচি বা না পাওয়ার কারনে ক্রন্দন কোনটাই হজম হচ্ছেনা! সত্যিকার অর্থে এটাকে কোন অর্জন বলতেই দ্বিধা হয়। অজপাড়াগাঁয়ে কিন্চিৎ ইজ্জত সম্মান পাওয়ার নিভু নিভু আশা থাকলেও ঢাবি, বুয়েট, মেডিক্যালগুলোর ক্যাম্পাসে কাউকে জিপিএ জিজ্ঞেস করাই নাকি এখন অপরাধ! কারন এটা সবারই সমান!! পাচঁ এর কম কারো থাকলেই বরং বৈচিত্র্যজনিত কদর!!! আর বাংলাদেশ মানেই নামকরা কটি কলেজ- অন্তত এধরনের ফলাফলের দিন।

ঢাকা আর ঢাকার বাইরে মূলত পুরনো জেলার প্রধান কলেজটি। এর বাইরে ৫৫০০০ বর্গমাইল সেই তিমিরে, যে তিমিরে বাদুড়রা উড়াউড়ি করে, প্যাচারাঁ ইঁদুর অভিযানে বেরুয়! আমার জেলায় সরকারী, এমপিও, ননএমপিও মিলে কমছে কম ৩০টি কলেজ আছে, আলিম মাদ্রাসার সংখ্যা অগনিত। না! নাম শুনিনি। বছর বছর পরীক্ষা ও ফল প্রকাশ দুটোই হচ্ছে। কালে ভদ্রে গোবরে পদ্মফুল গজিয়ে জাতীয় পত্রিকার স্থানীয় সংবাদও হচ্ছে বটে! কিন্তু অই অতটুকুই! মোটাদাগে হারিয়ে যাচ্ছে ফেল, ১.০, ২.০ বা বড়জোর ৩.০ নিয়ে।

বর্তমানে বাজারে এসব নিতান্তই থার্ড ক্লাস! ভালোছাত্র কৈশোরেই পাড়ি জমাচ্ছে বিভাগের প্রধান কলেজ বা নটরডেমে। ফলে ওখানকার কর্তৃপক্ষকে আর বেশী ধকল পোহাতে হয়না। মোটাদাগে চরম কেন্দ্রীভুত ও বাজে অবস্থায় শিক্ষাবিস্তার। উপজেলা স্তরের কলেজগুলো একধরনের গোচারনভুমি ও টাউটবাটপারদের আড্ডাখানা। English, Math, Accounting, Stat এসবের শিক্ষক নেই বললেই চলে।

ওনারা থাকতে চাননা। প্রাইভেটের রেট ও মুরগীসংখ্যা দুটোই কম। বলদ মার্কা এ শিক্ষার হাস্যকর আরেক হাল শহরের মেধাবীদের আখড়ায়ও। সেটা প্রাইভেটের মিছিল। চট্টগ্রাম কলেজের কথাই বলি।

বুঝে না বুঝে ভেড়ার পালের মত সকাল বিকেল অমুক আলী, তমুক আলম স্যারদের বাসায় রীতিমত স্ট্যান্ড করা বন্ধুরা ৩০/৪০ জনের ব্যাচে দৌড়ায়। পদার্থ, রসায়ন, গনিত, ইংরেজী কার কাছে পড়ছিস? কারো কাছেই না জবাবে চোখ তুলে কপালে ঠেকাত পোলাপান। ইতরবিশেষ কিছু বাংলা, বায়োলজিকেও মাফ করেনি। আরে হালায় ইসহাক নুরুন্নবীর মোটা বইটা বা সিরাজুর রহমান (বা ইসলাম) এর পদার্থ, রসায়ন মূল বইটা Thoroughly পড়লে কি অমন বাকী থাকে? বোটানীর মেইন বই দু দফা ঝালাই করলে কি রহস্য বকেয়া থাকে স্যারদের বাসায় দৌড়ানোর জন্য? প্র্যাকটিক্যাল নম্বর? ওটাতো খরছা করলেই হত!! তবে সবমুর্খতাই ছাড়িয়ে যায় ইংরেজীর কাহিল অবস্থা দেখলে। এ একটা বিষয়ে ভারত, পাকিস্তান বা শ্রীলংকার মত সম-বাস্তবতার রাস্ট্র থেকে আমরা যোজন যোজন দুরে।

এর খেসারতও নগদ। সেটা আমেরিকার কর্পোরেট মার্কেটে, মিডলইস্টের Blue Collar Job বা অন্যান্য বাণিজ্যে। Medical Transcription, IT এসবেও গোত্তা খাওয়ার এটা বড় এক কারন। Call Center এও খাবে ইনশাআল্লাহ্‌!!! ১২ বছর বা আরো বেশী সময় ধরে নিছক একটা Language Course এ পাঠ নেয়ার পরও এটা পড়তে পারেনা, প্রশ্ন বা ইনস্ট্রাকশান বুঝেনা এমন গ্রাজুয়েট কোটি কোটি, একপাতা লিখতে দিলেতো প্রাণটাই ফুরুৎ করে উড়াল দেয় কিনা! আর স্পিকিং? থাক্‌! কারন একটাই পিটিয়ে Paragraph, Essay, Letter, Application মুখস্ত করানো হয়েছে। ফলে আজব এক কথা শুনা যেত Essay Common পড়েনি!!! শৈশব থেকে বানিয়ে বানিয়ে উত্তর লিখার অভ্যাস ছিল বলে হাইস্কুলে এ লেখক কম পিটুনীর শিকার হয়নি- মোটামাথার শিক্ষককূল দ্বারা! তবে যাই হোক প্রসব প্রক্রিয়া চলছে।

একটি গর্ধভ শিক্ষাব্যব্স্থার প্রসুতি ওয়ার্ডে কি আর প্রসব হবে? ভুলে ভালে দু'চারটা বেজম্মা অন্যান্য প্রাণি! আর মিছিলের পর মিছিল......! ছোট ভ্রাত, ভগিনী, ভাস্তেদেরকে এন্তার অভিনন্দন! আমার কথায় কান দিয়ে লাভ নেই। নিজের মত এগিয়ে যাও।
 

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।