আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশের ডাক সেবা!!!!!!!!!



তথ্য ও যোগাযোগ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর বাংলাদেশের যোগাযোগের ক্ষেত্রে ডাক বিভাগ অতিপ্রাচীন কাল থেকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। যার প্রমাণ আমাদের ফোক গানে ও পাওয়া যায়, "নাই টেলিফোন নাইরে পিয়নএনাইরে টেলিগ্রাম/ বন্ধুর কাছে মনের খবর ক্যামনে পৌছাইতাম। " পৃথীবি যখন যোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তির উন্নতির সাথে এগিয়ে চলেছে তখন বাংলাদেশ কোন পথে হাটছে! আমাদের দেশে এখন ও এমন গ্রাম আছে যেখানে ডাকঘরই যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। কিন্তু আমাদের ডাক সেবার মান এখানে উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিক হলে ও ব্লগারদের নিশ্চয় তা উদাহরণ হিসাবে জানাতে হবে না।

মোবাইল ফোন এর কল্যানে ডাকঘরে মানুষের ভিড় কমেছে ঠিকই কিন্তু এমন কিছু সেবা রয়েছে যার জন্য ডাকঘর ছাড়া উপায় নেই। আজ সবার ই জানা ডাকসেবার নিম্ন মানের জন্য দেশে কুরিয়ার সার্ভিস গুলি এত প্রসার লাভ করেছে। কিন্তু সরকারী অনেক দপ্তরে এখন ও কুরিয়ার সেবাকে গ্রহণ করা হয় না। বিশেষ করে হাজার ও বেকার যখন চাকুরীর আবেদনপত্র কোন সরকারী দপ্তরে পাঠাতে চায় বিপত্তিটা বাধে তখন। বিজ্ঞপ্তিতে পরিস্কার লেখা "শুধুমাত্র ডাকযোগে" আবেদন পত্র প্রেরন করতে হবে।

কিছুদিন আগে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ এর জন্য আবেদন পত্র চাওয়া হয় এবং সেখানে ও যথারীতি একই কথা লেখা এবং আবেদনকারীরা আজ ও নিশ্চিত নয় তাদের আবেদন যথাসময়ে যথাস্থানে পৌছেছে। গত ১৫ জুলাই ছিল বাংলাদেশের কম্পোট্রলার এন্ড অডিটর জেনারেলের দপ্তরে বিভিন্ন পদে আবেদনের শেষ দিন এবং বাংলাদেশ ব্যাংক এবার অনলাইনে আবেদন নিলেও ব্যাংক ড্রাফট পাঠাতে হয়েছে ডাকযোগে এবং ব্যাংক ড্রাফট পাঠানোর ও শেষ দিন ছিল ১৫ জুলাই। আর পাঠাতে হবে ডাকযোগে। ১৪ তারিখ আমার একটি বিশেষ কাজে পোষ্ট অফিসের সেবা নেয়ার প্রয়োজন পড়ল। যথারীতি পোষ্ট অফিসে গিয়ে দেখি সামনের রাস্তা পর্যন্ত লম্বা লাইন।

সেখান থেকেই চাকুরীর আবেদনের উপরোক্ত বিষয়গুলি জানতে পারি। সব মিলিয়ে প্রায় শ দুই লোক অপেক্ষা করছে লাইনে। অনেক ঠেলে ঠুলে ভিতরে ঢুকে দেখি এতবড় লাইন এর সেবাগ্রহীতাদের সেবা দিচ্ছেন একজন মাত্র মানুষ। কিন্তু গতি কচ্ছপ গতিকেও হার মানায়। এরই মাঝে কর্তভ্যরত ব্যক্তি ঘোষনা করলেন ১২:৩০ বেজে গেছে আর কোন জি.ই.পি. বুকিং নেয়া হবেনা, আর কোন জি.ই.পি. ফর্ম ও নেই ।

খোজ নয়ে জানলাম সকাল নয়টা থেকে সবাই লাইনে দাড়িয়ে আছে। মাত্র ১২ থেকে ১৫ টি আবেদন জি.ই.পি. করেছেন তিনি এই সাড়ে তিন ঘন্টায়। চাকুরী প্রার্থীদের তখন দূর্বিসহ অবস্থা। অনেকে রওনা হলো জি.পি.ও. এর উদ্দেশ্যে আর কেউ কেউ আবেদন করতে না পেরে মন খারাপ করে যার যার গন্তব্যে ফেরত যেতে শুরু করল আবার কেউ কেউ একটু প্রতিবাদী হয়ে উঠল এবং কিছু গালিগালাজ ও করল। যাই হোক, আমি আমার কাজ ানেক কষ্টে শেষ করে বের হতে যাচ্ছি এমন সময় পিয়ন গোছের একজন বলল ভাই কি জি.ই.পি. করবেন? - জি.ই.পি. এর সময় তো শেষ হয়ে গেছে।

- হ্যা সময় শেষ, কিন্তু আপনি করতে চাইলে করে দিতে পারব। - কিভাবে করবেন আপনাদের তো ফর্ম নেই? - এটা কোন বিষয় না, আপনি করতে চাইলে আসেন ব্যবস্থা করে দেই। আবেদনকারীদের ভিতর পরিচিত কয়েকজন ছিল ওদেরকে ডাকলাম, ওরা যেন গভীর সমুদ্রে কোন একটা দ্বীপের দেখা পেল। কিন্তু তখন ও বুঝতে পারিনি ঘটনাটা কি। যখন ওরা জি.ই.পি. করতে গেল ১৪ টাকার জি.ই.পি. তে ডাকমাশুল দিতে হলো ৫০ টাকা করে।

হায়রে ডিজিটাল বাংলাদেশ, হায়রে আমাদের ডাক সেবা!!!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.