আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

Its not a case of pregnancy..

কত আজানারে জানাইলে তুমি, কত ঘরে দিলে ঠাঁই দূরকে করিলে নিকট,বন্ধু, পরকে করিলে ভাই।

আমার কলোনীতো ভাবী (যেহেতু আমি কলোনীতে থাকি) দৈর্ঘ্যের চেয়ে প্রস্থে আনুপাতিক হারে কিছুটা বেশী হলেও দৃষ্টি কটু নন। তবে তার বেশ সুন্দর পরিপাটি একটি ভূরি আছে । যা দেখলে মাঝে মাঝে আমার নিজেরই ভয় লাগে এবং আতংকিত আমি নিজের ভূরি কমাবার উদ্দ্যেশে একটু হাঁটাহাঁটির চেস্টা করি (যদিও আমার নিজেরও দৈর্ঘ্য প্রস্থের আনুপাতে গরমিল আছে আর ব্লগে বসার কারনে ভূরি ঊর্ধ্বাকাশের পানে তাকাবার পায়তারা করছে)। ভাবীর মাথায় বুদ্ধির উদয় হল তিনি ভূরি কমাবার উদ্দ্যেশে AB KING কিনে আনলেন।

AB KING এর উপর চড়ে বসলে বেশ আয়োজন করে, ডিভিডি প্লেয়ার এ গান ছেড়ে দিয়ে, হাতে কাছে টাওয়েল পানির গ্লাস সব গোছগাছ করে নিয়ে খুবই সুন্দর ভাবে ব্যায়াম করা শুরু করলেন। প্রথমে AB KING এর উপর চিত হয়ে শুয়ে পড়লেন, কিন্তু এবার যে উঠতে হবে । আর তো উঠা যাচ্ছে না। বেশ কিছুক্ষন চেষ্টা করার পর তিনি সেখান থেকে গড়িয়ে নামলেন। পুর্ন উদ্দ্যামে তিনি আবার শুরু করলেন।

এবারও সেই একই সমস্যা তবে হ্যা- এবার তিনি উঠে বসতে পেরেছেন। মনে মনে বাহবা দিলেন নিজেকে। একটু কষ্ট করেই তো পাড়লেন। হাল ছাড়া যাবে না । লেগে থাকলেই ভূরি কোথায় চলে যাবে।

কল্পনায় নিজেকে কারিনার মত জিরো ফিগারের একজন বানিয়ে ফেললেন। কিন্তু কল্পনা আর বাস্তবে অনেক দূরত্ব। তিনি তিনবারের বেশী উঠ-বস করতে পারলেন না। ভাবলেন আজ প্রথম দিন থাক এই পর্যন্তই কাল একটু বেশি করবেন। সন্ধ্যার দিকে তিনি খেয়াল করলেন তার হাত,পা,ঘাড়, কোমর ব্যথা ব্যথা করছে।

মনে মনে খুব খুশী হলেন, ব্যায়ামে কাজ দিচ্ছে। চর্বি গলছে!! পরদিন সাকালে আর বিছানা থেকে উঠতে পারেন না -তার সর্বাঙ্গে ব্যথা । শুরু করলেন উহ্‌হ্‌ ? আহ্‌হ্‌। এই ভাবেই সারাদিন গেল। এই ব্যথা নিয়ে আজ ব্যায়াম করা -- অসম্ভব !! রাতে এক জায়গায় দাওয়াত ছিল।

যত কষ্টই হোক দাওয়াতে যেতে হবে । গেলেন দাওয়াত খেতে এবং সুস্বাদু খাদ্য সামগ্রী যতটুকু যে ভাবে গলঃধীকরণ করা যায় করলেন। কি বিশেষ কারনে যে তার বদ হজম হল কেউ বুঝতে পারলাম না। সারা রাত টয়লেট বিছানা করেই কাটিয়ে দিলেন। গায়ের ব্যথা ও পেটের ব্যথা একত্রিত হয়ে তিনি একে বারেই কাবু হয়ে গেলেন।

সকালে এম্বুলেন্স এল। তাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে হাসপাতেলে। আমাদের এখানে একটা খ্রিষ্টান মিশনারী হাসপাতাল আছে। যার বেশীর ভাগ ডাক্তার,নার্স ও ব্রাদার বিদেশী। অত্যাধুনিক ঝকঝকে তকতকে একটি হাসপাতাল।

হাসপাতালের সকল বিদেশী স্টাফ এই দেশে এসে প্রথমেই দিনাজপুরের আঞ্চলিক ভাষাটা শিখে নেয় রুগীর সমস্যা বোঝার জন্য। তারা চমৎকার বাংলা বলে। এই হাসপাতালের ভিতরে ঢুকলেই মনে হয় আমরা হঠাৎ করে আমাদের দেশের বাইরে চলে এসেছি। এম্বুলেন্স হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে পোর্চের নিচে এসে দাঁড়াল। করিৎকর্মা ওয়ার্ডবয় হুইল চেয়ার নিয়ে হাজির।

ভাবী উহহ্‌ আহ্‌ করতে করতে এম্বুলেন্স থেকে নামলেন। ওয়ার্ডবয় একজন নার্সকে আসতে ইশারা করলেন। নার্স ছুটে এল । ভাবী কোঁকাতে কোঁকাতে হুইল চেয়ারে যেয়ে বসলেন। ওয়ার্ডবয় ক্ষিপ্র দ্রুততার সাথে রুগী নিয়ে ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটলেন।

সামনে লেবার রুমের স্লাইডিং ডোর খুলে গেল, হুইলচেয়ার এবার নার্সের হাতে। অন্যান্য নার্স, আয়া ছুটে এলেন। ডাক্তার অত্যান্ত মলায়েম কন্ঠে বললেন-- মা একটু কষ্ট করে এই বেডে উঠুন। এইবার ভাবীর পালা। তিনি অবাক বিস্ময়ে বলে উঠলেন -----আমি কেন ওখানে উঠব? আমার তো ডাইরীয়া হয়েছে।

নার্স এবং ডাক্তার এবার পুরোপুরি বাংলা ভুলে যেয়ে নিজেদের মাতৃভাষায় বলে উঠলেন Nurse---Are u a patient of diarrhoea?? Doctor----- What!! its not a case of pregnancy.. বলা বাহুল্য তার ভূরি দেখেই সবাই ভেবে নিয়েছেন তিনি প্রসব বেদনায় কাতর । তাই তাকে সরাসরি নিয়ে যাওয়া হয়েছে লেবাররুমে।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।