আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভারত-মার্কিন পরমাণু চুক্তি

কি যে বুঝি তাও বুঝি না।

ভারত-মার্কিন পরমাণু চুক্তি ভারত প্রথম ১৯৭৪ সালে পারমাণবিক প্রযুক্তির পরীা চালায়। পরমাণু অস্ত্র পরীা করার পর যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান গুলোর উপর দেশটির সাথে পরমাণু প্রযুক্তি বাণিজ্যের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি কার হয়। কিন্তু এই বেসামরিক চুক্তির সূত্র ধরেই দুদেশের মধ্যে সম্পর্ক আরো গভীর হতে যাচ্ছে। যেখানে যুক্তরাষ্ট্র ইরান ও উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচী থামাতে আদাজল খেয়ে লেগেছে , আর ভারতের সাথে পরমাণু সহযোগিতা দিতে চুক্তিবদ্ধ হওয়া তাদের এ নীতির সরাসরি বিরুদ্ধাচারণ।

এই চুক্তির মাধ্যমে ইন্দো-মার্কিন সম্পর্ক আরো শক্তিশালী এবং ভারত মহাসাগর, এমনকি পশ্চিম প্রশাšত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক শক্তি বৃদ্ধিতে এ চুক্তি একটি কৌশলগত বিরাট সম্পদ হয়ে দাঁড়াবে। ইন্দো-মার্কিন পরমাণু চুক্তি এবং ভারতে অভ্যšতরীণ বিরোধ ঃ ২০০৫ সালের ১৮ জুলাই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ইন্দো-মার্কিন বেসামরিক পরমাণু চুক্তির বিষয়ে সমঝোতা হয়। আšতর্জাতিক অঙ্গনে এ সময়ে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ইন্দো-মার্কিন কৌশলগত সম্পর্ক। অসামরিক এই চুক্তিকে কেন্দ্র করে ভারতের রাজনীতি অঙ্গনে নাটকীয় পটপরিবর্তন হয়েছে। শুরু থেকেই বাম দলগুলো হুমকি দিয়ে আসছে, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সরকার এ চুক্তিতে গেলে সংযুক্ত প্রগতিশীল মোর্চা (ইউপিএ) থেকে সরে আসবে।

এ পরিস্থিতিতে সরকারের অ¯িতত্ব নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়। শেষ পর্যšত লোকসভার আইনপ্রণেতাদের মধ্যে আস্থা ভোটে বিষটি সমাধান হয়। ভারত-মার্কিন পরমাণু চুক্তি স্বার ঃ ৫ অক্টোবর ’০৮ নয়াদিল্লীর হায়দরাবাদ হাউজে ইন্দো-মার্কিন পরমাণু চুক্তিটি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বারিত হওয়ার কথা ছিল। কিšতু পরে এই চুক্তি স্বারের তারিখ এবং স্থান পরিবর্তন করে ১৩ অক্টোবর ’০৮ যুক্তরাষ্ট্রে এই চুক্তি স্বারিত হয়। মূলত যুক্তরাষ্ট্রের কারণেই এই চুক্তি কার্যকর হওয়ার আনুষ্ঠানিকতা পিছিয়ে যায়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট হোয়াইট হাউজের ইস্ট রুমে ‘‘এইচ আর ৭০৮১’’ বিলটিতে স্বার করার পরই আইনে পরিণত হয় । এই চুক্তি সারা বিশ্বের কাছে একটি বার্তা পাঠাচ্ছে তা হলো যেসব দেশ গণতন্ত্রের পথ অনুসরণ করে এবং দায়িত্বপূর্ণ আচরণ করে তারা যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধু হতে পারবে। মার্কিনীদের মতে, এই নতুন আইন বিশ্বজুড়ে পরমাণু বি¯তার রোধের প্রচেষ্টাকে আরো শক্তিশালী করবে। ভারত মার্কিন বেসামরিক পরমাণু চুক্তিটি কংগ্রেসের ঊভয় কে পাস হওয়ায় ভারতের বাজারে আমেরিকার বিলিয়ন ডলারের বাজার তৈরিতে সহায়তা করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বুশ এই বিলটিতে স্বারের পর সšেতাষ প্রকাশ করে বলেছেন- ‘‘এ বিল বিশ্বব্যাপী মার্কিনীদের পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ প্রচেষ্টাকে শক্তিশালী করবে, পরিবেশ রা করবে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং একটি দায়িত্বশীল দেশ হিসেবে ভারতকে তার জ্বালানি চাহিদা পূরণে সহায়তা করবে।

’’ এই বিলটি মার্কিন সিনেটে বিগত দশকে গৃহীত কৌশলগত কুটনৈতিক উদ্যোগ গুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই চুক্তি অনুমোদনের পর যুক্তরাষ্ট্রর একটি দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছে যা মার্কিনীদের নয়া কুটনৈতিক সুযোগ এনে দিয়েছে এবং বিশ্বব্যাপী স্থিতিশীলতা অর্জনে সহায়তা হবে। ভারত-মার্কিন পরমাণু চুক্তি ও ভারতের উদ্দেশ্য ঃ ভারতের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং দেশের প্রতিরা বিভাগের প্রয়োজনে পরমাণু বোমা তৈরির পথে আর কোন বাঁধা থাকল না। ভারতের যেমন পরমাণু অস্ত্র তৈরি করার অধিকার আছে , ঠিক তেমনি ভাবে এর বিরোধিতাকারী দেশগুলোর বিরোধিতা করার অধিকার আছে। বিশ্বের প্রতিটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের সমান অধিকার রয়েছে।

ইন্দো-মার্কিন বেসামরিক পরমাণু চুক্তির অর্থ এই নয় যে, ভারতের স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি বিকিয়ে দেওয়া, আšতর্জাতিক পরিস্থিতির প্রোপটে জাতীয় স্বার্থকে স¤প্রসারিত করাই ভারতের পররাষ্ট্রনীতির ল্য। ভারত-মার্কিন বেসামরিক পরমাণু চুক্তি হলো পরমাণু বিজ্ঞানকে সঠিক ব্যবহার করা। ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী সরকারের পররাষ্ট্রনীতির মূল কথা হলো ‘‘প্রথমে আঘাত নয়’’ । বর্তমান সরকারও এই নীতি মেনে চলছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের প্রধান অংশীদার সিপিএম এর প্রবল বিরোধিতা উপো করে , এমনকি সরকার পতন ও আগাম নির্বাচনের ঝুঁকি নিয়ে আমেরিকার সাথে পারমাণবিক চুক্তি স্বারের পদপে গ্রহণ করে।

১. ভারতীয় অর্থনীতিতে যে হারে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হচ্ছে সে তুলনায় চাহিদা অনুযায়ী জ্বালানি মজুদ অপ্রতুল্য। বিশেষ করে ভারতের ভবিষ্যৎ জ্বালানির নিরাপত্তাকে বিবেচনা করে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির জন্য পারমাণবিক প্রকল্পের বিকল্প নেই। এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই ভারত আগামী ৫০ বছরের জ্বালানি চাহিদাকে সামনে রেখেই পারমাণবিক এই পদপে সবার উর্ধ্বে স্থান দিয়েছে। ২. অন্যদিকে শক্তিশালী ও উদীয়মান বিশ্বশক্তি হিসেবে আঞ্চলিক পর্যায়ে ভারত চীনের সমতা অর্জন ও পাকি¯তানের উপর প্রাধান্য বি¯তারের একটি অন্যতম কৌশল হিসেবে এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ৩. ভারত-মার্কিন পরমাণু চুক্তি কার্যকর হওয়ায় ভারত বেসামরিক পরমাণু জ্বালানি উৎপাদনে ভারতের প্রায় ৪’শ কোম্পানী জিই,ওয়েস্টিং হাউজ ও এরিভার মতো বিশ্বের বড় বড় পরমাণুর ফার্মগুলোর সহযোগিতা পাবে।

যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভারতের পরমাণু চুক্তি সত্ত্বেও তারা নিজেরদের পরমাণু পরীা চালাতে পারবে। ৪. এই চুক্তি স্বারের মধ্যে দিয়ে ভারতের উপর থেকে পারমাণবিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। ৫. এই চুক্তির ফলে ১১০ কোটি বেশি মানুষের দেশ ভারত তার ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা মেটাতে এখন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু জ্বালানি , চুল্লি ও প্রযুক্তি পাবে। ৬. এই চুক্তি স্বারের ফলে ভারত পশ্চিমা বিশ্ব থেকে পরমাণু প্রযুক্তি কিনতে পারবে। ৭. পরমাণু বিষয়ক আন্তর্জাতিক সেমিনারে ভারতীয় বিজ্ঞানীদের অংশ গ্রহণ করার অনুমতি ছিল না।

এই চুক্তি স্বারের ফলে আন্তর্জাতিক সেমিনারে অংম গ্রহণ নিশ্চিত হলো। ৮. ভারত-মার্কিন বেসামরিক চুক্তি স্বারের ফলে ‘১২৩ চুক্তি’ বা¯তবায়নের পথে আর কোন বাঁধা রইল না। ৯. এই চুক্তির ফলে ভারত-মার্কিন সস্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে। ভারত-মার্কিন পরমাণু চুক্তি ও আমেরিকার উদ্দেশ্য ঃ ১. বিশ্বের সবচেয়ে বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের সাথে পারমাণবিক চুক্তি করে আমেরিকার কৌশলগত একটি বড় অর্জন। ২. এই চুক্তির মাধ্যমে ভারতে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বিলিয়ন ডলারের বেসামরিক পরমাণু বাজার উন্মুক্ত হবে।

৩. কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাষ্ট্রি’র সূত্রে জানা গেছে, এই চুক্তির ফলে আগামী ১৫ বছর যুক্তরাষ্ট্র ভারতে ১৮ থেকে ২০টি পরমাণু স্থাপনায় ২৭ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। আরো ধারণা করা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ফ্রান্স, রাশিয়া, এবং অন্যান্য দেশের প্রতিষ্ঠান গুলো ভারতের এই বেসামরিক পরশাণু বাজারে অংশ নিতে পারে। ৪. বিশেষজ্ঞরা মনে করেন এ চুক্তির মাধ্যমে ভারতের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রেই বেশি লাভবান হবে। ভারতের লোকসংখ্যা এখন প্রায় একশত কোটির উপরে। এর মধ্যে বিশাল অংশ দখল করে আছে মধ্যবিত্ত শ্রেণী।

কাজেই সেখানকার বাজার ধরতে পারলে বড় রকমের লাভবান হবে যুক্তরাষ্ট্র। এটাই যুক্তরাষ্ট্রের মূল উদ্দেশ্য। বর্তমানে ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ৯ শতাংশ। পারমানবিক চুক্তি কার্যকর হওয়ায় আমেরিকার বড় বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ভারতে ব্যবসা করতে পারবে। জ্বালানি সমস্যা পীড়িত ভারতে এ খাতে ১৭ হাজার ৫০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে ।

২৫ বছর একটানা চলবে এই ব্যবসা। ৫. ইন্দো-মার্কিন বেসরকারি পরমাণু চুক্তি স্বার হওয়ার ফলে জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক দল ভারতের কিছু পরমাণু স্থাপনায় প্রবেশ করতে পারবে। ৬. মার্কিন অর্থনীতিবিদ এলবার্ট কিডেল স¤প্রতি এক বিশ্লেষণধর্মী গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন যে, কী করে চীনের শুধু অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আšতর্জাতিক সম্পর্ক ও অবস্থানের প্রতিটি ত্রেকেই প্রভাবিত করবে। চীনের সম্ভাব্য প্রভাব বলয়কে দমিয়ে রাখার একটি প্রাথমিক উদ্যোগ হিসেবে ভারতের সাথে আমেরিকার পারমাণবিক চুক্তি সম্পাদিত হলো। ৭. যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা সহযোগী দেশগুলো জর্জিয়া ও ইউক্রেনকে ন্যাটোভুক্ত করে পূর্ব ইউরোপে বিশেষ করে পোল্যান্ড ও চেকপ্রজাতন্ত্রে পারমানবিক বর্ম সৃষ্টির প্রচেষ্টায়রত।

ভারতের সাথে হলো পারমানবিক সহযোগিতাচুক্তি যদিও একে প্রাথমিকভাবে গবেষণা ও শাšিতপূর্ণ সহযোগিতামূলকভাবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তবে এটা সহজে বোধগম্য যে, এ সবকিছুই হচ্ছে রাশিয়া ও চীনকে চাপে রাখার জন্যে। ভারত-মার্কিন পরমাণু চুক্তি ও চীনের অবস্থান ঃ ভারত-মার্কিন পারমানবিক চুক্তিকে চীন অবশ্যই সহজভাবে নিবেনা। অতীতের ইতিহাস ও ভবিষ্যতের দিকে তাকালে চীন-ভারতের পারস্পারিক দ্বৈরথ কোন বিষয় নয়। ভারত মহাসাগরে প্রভাব বি¯তারে চীন একদিকে হাইনান দ্বীপের কাছে সমুদ্র তলে পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সম সাবমেরিন ঘাঁটি এবং অন্যদিকে কুইংঘাই প্রদেশে দুই হাজার বর্গ কিলোমিটারের অঞ্চল জুড়ে নির্মাণ করেছে ৫০ টি নোস্ত্র উৎপেন কেন্দ্র।

অপর দিকে ভারতও বসে নেই, চীনকে চাপে রাখার জন্যে ২০০৭ সালে বঙ্গোপসাগরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র , অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের সাথে ভারত ত্রিদেশীয় নৌ মহড়ার অংশ গ্রহণ করে এবং ভারত নজর রেখেছে মালাক্কার প্রণালীর উপর। লাদাখে তৈরি হয়েছে বায়ুসেনা ঘাঁটি। ভারত-মার্কিন পরমাণু চুক্তি এবং পাকি¯তানের প্রতিক্রিয়া ঃ ভারত-মার্কিন পারমানবিক চুক্তি স্বারিত হওয়ার পর পাকি¯তানের প্রধানমন্ত্রী তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন-‘ভারত-মার্কিন চুক্তির মতো একই রকম বেসামরিক পরমাণু চুক্তি করতে তার দেশ। এই চুক্তি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই বরং ভারতের সাথে যুক্তরাষ্ট্র এ চুক্তির কারণে পাকি¯তানের সাথেও এরকম চুক্তি করার ত্রে তৈরি হলো। এই চুক্তি স্বারের পর পাকি¯তান বেসামরিক পারমানবিক চুল্লির জন্য চেষ্টা চালাবে।

ভারতের মতো পাকি¯তানও পরমাণু বি¯তার রোধ চুক্তিতে স্বার করেনি। ভারত পারমাণবিক পরীা চালানোর পরপরই ১৯৯৮ সালে পাকি¯তান পারমাণবিক পরীা চালায়। অপর দিকে ভারতের মšতব্য হলো-যুক্তরাষ্ট্র যদি পাকি¯তানের সাথে বেসামরিক পরমাণু চুক্তি স্বার করে তাহলে ভারতের কোন আপত্তি থাকবেনা। বিশ্বের প্রতিটি রাষ্ট্রই শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরমাণু শক্তি ব্যবহার করার অধিকার রাখে। পরমাণু অস্ত্র সমৃদ্ধ এই দৃুট দেশ এ পর্যšত তিনবাযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে সমালোচকরা মনে করেন- ভারতের সাথে যুক্তরাষ্ট্রর এই পারমানবিক চুক্তি স্বারের ফলে বিশ্বে পরমাণু অস্ত্র প্রতিযোগিতা ঠেকানো এবং পরমাণু অস্ত্র বি¯তার রোধ চুক্তি বা এনপিটি কার্যকর করাটা আরো কঠিন হয়ে গেল। আšতর্জাতিক মহলের প্রতিক্রিয়া ঃ ইন্দো-মার্কিন বেসামরিক পরমাণু চুক্তি যখন রূপায়নের পথে ঠিক সেই মুহুর্তে ২৪টি দেশের ১৫০ জন বিশেষজ্ঞ পরমাণু জ্বালানি সরবরাহকারী গোষ্ঠি (এনএসজি)’র ৪৫ সদস্য দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের কাছে চিঠি প্রেরণ করেন। এনপিটিতে স্বার না করা ভারতের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করা । কারণ আমেরিকা তথা বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে পাওয়া পরমাণু জ্বালানি নিয়ে ভারত আরো পারমানবিক অস্ত্র তৈরি করবে। অপর দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য ‘কেন ভারতের উপর থেকে পরমাণু নিষিধাজ্ঞা তুলে নেওয়া উচিত , এই বিষয়ের উপর একটি খসড়া প্র¯তাব এনএসজি গোষ্টিভূক্ত দেশের কাছে পাটিয়ে দেওয়া হয়।

২৪টি দেশের ১৫০ জন অ¯ গ) পাপুয়া নিউ গিনি¿ বিশেষজ্ঞ একযোগে ভারত-মার্কিন বেসরকারী পরমাণু চুক্তির বিরুদ্ধে বিরোধিতা করেন এবং তারা মনে করেন-‘পরমাণু অস্ত্র বিরোধীতার প্রশ্নে একটি বিপর্যয় ছাড়া আর কিছুই নয়’’। সমালোচনা- ২০০৫ সালে জুলাই মাসে ভারত-আমেরিকার মধ্যে বেসামরিক পরমাণূ চুক্তি করার ব্যাপারে একমত হন। কিন্তুু তাদের এই সিদ্ধাšত সমালোচনার মুখে পড়ে। বিশেষজ্ঞ এডওয়ার্ড মার্ক মনে করেন, ‘‘ এটি একটি ভয়ঙ্কর বিল, যা বিশ্ব পারমাণবিক অস্ত্র বি¯তাররোধ চুক্তির প্রতি হুমকি সৃষ্টি করবে’’। মার্কিন সিনেটে এই চুক্তি অনুমোদনের বিশ্বের অস্ত্র বিশেষজ্ঞরা বিষয়টি তাদের দৃষ্টিতে দেখার জন্য প্র¯তুত থাকেন।

যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধীতার কারণেই মূলথ অন্যান্য দেশের পরমাণু বিষয়ক সহযোগিতা থেকে তিন দশকের বেশি সময় ধরে বঞ্চিত ছিল ভারত। সেপ্টেম্বর’০৮ বিশ্বের ৪৫টি পরমাণু উপকরণ ও জ্বালানি সরবরাহকারী দেশ ভারতের উপর থেকে এ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার একটি প্র¯তাব অনুমোদন করে। যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের পরমাণু চুক্তিকে এগিয়ে নিতে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে অনুমোদিত হয়। ইন্দো-মার্কিন পরমাণু চুক্তি নিয়ে আšতর্জাতিক অস্ত্র বিশেষজ্ঞারা খুবই শঙ্কিত। ওয়াশিংটনভিত্তিক আর্মস কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশন নির্বাহী পরিচালক ডেরিল কিম্বল বলেন, ‘‘এ চুক্তি পরমাণু অস্ত্রের বি¯তার নিয়ন্ত্রনরে পে একটি বড় ধরণের বিপর্যয়।

এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় পাকি¯তানের ভারতের পরমাণু অস্ত্রের পতিযোগিতা বাড়বে। ’’ ডেমোক্রেটিক সিনেটর বায়রন ডরগান মšতব্য করেন- যে পরমাণু অস্ত্র বি¯তার নিয়ন্ত্রন চুক্তি বহু বছর ধরে আমাদের উপকার করছে, ভারতের সাথে এ চুক্তির মাধ্যমে ঐ চুক্তির মূল কাঠামো থেকে সরে যাচ্ছি। সমালোচকেরা বলেন-এই চুক্তির ফলে পরমাণু অস্ত্র বি¯তার রোধে বিশ্বজুড়ে যে প্রচেষ্টা চলছে তা ব্যাহত হবে। বি এক সময়কার জোট নিরপে ভারত এখন জোটবদ্ধ রাষ্ট্র। বর্তমানে ভারত, আমেরিকা ও ইসরাইল গলায় গলায় বন্ধু।

কিšতু ভারত ভূলে গেছে আমেরিকা তার অশ্বেতাঙ্গ বন্ধুদের সাথে অতীতে কী ধরণের আচরণ করেছে। আমরা জানি ইসরাইল হলো মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার ঘাঁটি এবং সব দিক থেকে মার্কিন সাহায্যপুষ্ট রাষ্ট্র। সুতরাং আমেরিকা ও ইসরায়েল ধারণাগতভাবে দুটি রাষ্ট্র হলেও আলাদা দুটি রাষ্ট্র নয়। ইসরাইল ও আমেরিকার মুসলিম বিদ্বেষের সাথে ভারতের শাসক মহলের মুসলিম বিদ্বেষ কিভাবে একাকার হয়ে যাচ্ছে। ভারত-মার্কিন পরমাণু চুক্তি স্বারিত হওয়ায় আšতর্জাতিক কুটনৈতিক মঞ্চে আরো একটি ঘটনা ঘটবে।

কারণ ভারত এখনও পরমাণু অস্ত্র বি¯তার রোধ চুক্তি (এনপিটি)-তে স্বার করেনি। তা না করেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পরমাণু চুক্তি স্বারিত হয়েছে। তা হলো ফ্রান্সের সাথে পরমাণু চুক্তি সম্পাদনের আগেই হয়েছে। এনপিটিতে স্বার না করে পরমাণু চুক্তি স্বার করা ঘটনায় কার্যত এনপিটি যুগের অবসান ঘটবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।