আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চিত্রনায়ক ফাহিমের ছাতা হারাইয়াছে

যা তুমি আগামিকাল করতে পার, তা কখনো আজ করতে গিয়ে ভজঘট পাকাবে না...

অফিসে বেশ কিছুদিন বিটলামি না করলে কেমন জানি আউলা আউলা লাগে। বেশ কিছু দিন অফিসে কোনো ঘটনা ঘটছে না। বিরাট সমস্যা। কাজে মন দিতে পারছি না। আমাদের অফিসে একজন গ্রাফিকস অপারেটার আছেন, তার নাম ফাহিম।

বয়স ২৮। যথেষ্ট সৌন্দর্য-সচেতন। আমাদের সাবেক নিউজ এডিটর তাকে বলতেন চিত্র নায়ক ফাহিম। তার ওপর আবার তার নাকি বিয়ের কথাবার্তা চলছে। কয়েকদিন আগে লাজুক লাজুক চেহারা নিয়ে আমাকে অনুরোধ করায় বেশ কয়েকটি ছবিও তুলে দিতে হয়েছে।

কয়েক দিন পর সে এসে আরো লাজুক চেহারা নিয়ে এসে আমাকে বলে বিপুল ভাই, ছবি ভালো হয়েছে, মেয়ে পক্ষ বলছে ছেলের চেহারা নাকি নায়ক উজ্জ্বলের মতো। সেই ফাহিম ছাতা ছাড়া চলাফেরা করে না। রাস্তা থেকে অফিসের রিসেপশনে ঢোকার সময় তার ছাতাটিও মালিকের বগলতলায় ভাজ হয়ে ঢোকে। আজ দেখি ফাহিম বিকেলের শিফটে অফিসে এসে অফিসের সামনে মাসুদের চায়ের দোকানে ঢুকলো। আর ছাতাটা রাখলো ওই টং দোকানের চালার ওপর।

আমি দোকানের সামনে বেঞ্চিতে বসে চা খাচ্ছি, পাশে আমার কলিগ ও ব্লগার শরিফ রনি। আমি রনিকে বললাম, চামে গিয়া ছত্তিটা নিয়া আসো। রনি চালাক ও সবধান ছেলে। সে কিছুক্ষণ ছাতার দিকে কিছুক্ষণ ফাহিমের দিকে তাকালো। তারপর বলে, বিপুল ভাই, ফাহিম প্রতি তিন সেকেন্ড পরপর ছাতির দিকে তাকায়, ওইটা আনা সম্ভব না।

কিছুক্ষণ পর দেখি ফাহিমের চা খাওয়া শেষ, এখন সিগারেট ধরাবে। রনিকে বললাম, এই চান্স, বিড়ি ধরানোর সময় কোনো বিড়িখোর অন্য দিকে মনোযোগ দেয় না। রনি চামে গিয়া ছাতাটা নিয়া আসলো, সেটি সোজা চালান হয়ে গেল আমার ক্যামেরার ব্যগপ্যাকে। বিড়ি ধরানো শেষ, একটা সুখটান দিয়েই ফাহিম স্ট্যাচু অফ লিবার্টির মতো স্থির হয়ে গেল। তার চোখ সোজা মাসুদের টং দোকানের চালার দিকে।

সেখানে ছাতাটা নেই। সেই অপার শুণ্যতা ফহিম ফ্যালফ্যাল করে দেখছে। তার পর মুহুর্তেই সে মাসুদের দিকে এগিয়ে গিয়ে বলে, মাসুদ, এইখানে কাউরে হাত দিতে দেখছো? এরপর দেখি ফাহিম খুব তীক্ষ্ণ চোখে বেঞ্চিতে বসা সবার দিকে তাকাচ্ছে। প্রত্যেকের হোরার ওপর তার চোখ ঘুরে ঘুরে এলো আমার ওপর। আমি আর রনি তখন অফিস পলিটিক্স নিয়ে কথা বলছি।

তখন বেলা সাড়ে তিনটা। অফিসে ফাহিমের ডিউটি শুরু চারটার সময়। আমার মনে হয় না সে চারটার আগে মাসুদের টং দোকান থেকে সরবে। প্রতিটা ইঞ্চি সে তন্ন তন্ন করে খুজবে। চায়ের বিল দিয়ে আসার সময় দেখলাম ব্যবসা বাদ দিয়ে মাসুদকে সে চালার ওপর ওঠাচ্ছে ছাতা খোজার জন্য।

আমি অফিসে এসে ফাহিমের ডিপার্টমেন্টে ছাতাটা জমা দিয়ে পুরো গল্পটা বললাম। দেখা যাক পরবর্তী ঘটনা কোথায় গড়ায়।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।