আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য : পুরুষরা উঁকি না দিলেও চলবে . . . ১

ব্লাডঃ এবি নেগেটিভ।
আমি এখানে বাটিক-বুটিকের যাবতীয় খুঁটি-নাটি প্রাথমিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে চেষ্টা করেছি। আমার বন্ধুদের মধ্যে অনেকেই এজন্য আমার উপর মহা বিরক্ত। তারা কেউ চায়নি আমি এই কথাগুলো বিনামূল্যে প্রকাশ করি। আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।

তারা আমার চোখ খুলে দিয়েছে, যে এই বিষয়টা হয়তো কাউরো কাউরো কাছে প্রয়োজনীয়। আমার ধারনা, আমার জানা বিষয় অন্যকে যত বেশী জানাতে পারবো আমার জানার পরিধি তত বাড়বে। বর্ণিত প্র্যাক্টিক্যাল কাজ গুলো নিজ দায়িত্বে করে নিবেন। আমাকে প্রয়োজন হলে বাসায় ছোলার ডাল, ভেড়ার গোস্ত আর পোলাও করে খবর দিবেন। আর কথা বাড়াইনা।

বাটিক ও বন্ধন পরিচিতি- বাটিক সাধারণত দুই প্রকারে করা হয়। একটা প্রাকৃতিক ভাবে। অন্যটা বাণিজ্যিক ভাবে। প্রাকৃকি ভাবে যেটা করা হয়- পর্যায়ক্রমে কয়েকবার রঙ করা ও ধোয়া। এতে কাপড় প্রকৃতিগত ভাবে আপনা আপনিই একটা রঙে রঙ্গীন হবে।

আর বাণিজ্যিক ভাবে যেটা করা হয়- মেশিনে বা হাতে পেস্টের সাহায্যে নকশায় বিভিন্ন রঙ ব্যবহার করে, মোমে ঢেকে তার পর একটা ডাইতে ডুবিয়ে দে’য়া হয়। বুটিক হাউজকারখানাগুলোতে বন্ধনীর বিষয়টাই টাই-ডাই নামে পরিচিত। বাকী রাখা ও রঙ করা। বন্ধনী করতে আমরা কাপড়টিকে বিভিন্ন ভাঁজ দিয়ে বেঁধে রঙে ডুবিয়ে রঙ্গীন করতে পারি। আবার এই বন্ধনীটিকেই বিভিন্ন নকশা উপযোগী করে নকশা কাপড়ে এঁকে সূতার সাহায্যে বেঁধে কাজ করা যায়।

এছাড়া কাপড় নাড়া ক্লীপ বা রাবার ব্যান্ডের সাহায্যে বন্ধনী করা যায়। সাবধানতা ও সরঞ্জাম- ১. যে কাপড়টিতে কাজ করবো, লক্ষ্য রাখতে হবে তা যেন সম্পূর্ণ মাড় মুক্ত হয়। ২. কাপড়ের উপর এমন কালি দিয়ে নকশা আঁকতে তবে যেন কালিটি মোছনীয় হয়। ৩. কাপড়ে মোম লাগাবার সময় যথেষ্ট সাবধানী হতে হবে, যেন যেখানে সেখানে মোম না লাগে এবং কাপড়ে আগুন না লাগে। ৪. মোম ও রজনের পরিমাণ যেন সঠিক হয় তা খেয়াল রাখতে হবে।

৫. বন্ধনীর বাঁধা যেন সঠিক হয়। ৬. রঙ ও কেমিক্যালস এর পরিমাণ যেন কাপড় অনুযায়ী সঠিক হয়। ৭. রঙ এ ডুবানোর পর কাপড়ের কোন অংশ যেন রঙ-পানির বাইরে না থাকে, অর্থাৎ পানিতে ভেসে না থাকে। ৮. রঙ রক্ষণাবেক্ষনের জন্য কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। যেমন- রঙ কাঁচের বা প্লাস্টিকের পাত্রে ভালোকরে মুখ বন্ধ করে রাখতে হবে।

এসমস্ত প্রায় সব রঙ -ই বাতাসের সংস্পর্শে আসলেই নষ্ট হয়ে যায়। ৯. যে ঘরটিতে বাটিকের কাজ করবো সেখানে যেন প্রচুর আলো বাতাসের ব্যবস্থা থাকে। ১০. মোম অপসারন করার সময় পানি যেন খুব বেশী গরম না হয়। এতে কাপড়ের রঙ নষ্ট হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে। ১১. বন্ধনীর সূতা খোলার সময় যেন কোন প্রকারেই ছুরি, কাঁচি, ব্লেড ইত্যাদি ব্যবহার না করা হয়।

১২. রঙ করার সময় বাচ্চাদেরকে নাগালের বাইরে রাখতে হবে। ১৩. কাপড় রঙ করার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যেন রঙ যেখানে সেখানে ছিটে না পড়ে। ১৪. এ্যসিড বা এ জাতীয় কেমিক্যালস নিয়ে কাজ করার সময় অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ১৫. এ্যসিড বা এ জাতীয় কেমিক্যালসে অন্য কেমিক্যালস মিশাতে খুব সাবধান থাকতে হবে। পারলে দূর থেকে করতে হবে।

ভ্যাট বা টাই ডাই -এর সরঞ্জাম ও কার্যপ্রণালী- ক) মার্কিন কাপড় (নরমাল বা পাতলা) কেমিক্যালস- কাপড়ের ওজন ১০০ গ্রাম হলো- মনোপল সোপ ৪ গ্রাম সোডা এ্যাস ৮ গ্রাম কস্টিক সোডা ৪ গ্রাম কার্যপ্রণালী- প্রথমে একটি স্টীল বা মাটির পাত্রে কাপড় অনুযায়ী পরিমাণ মতো পানি নিয়ে চুলায় জ্বাল দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে মনোপল সোপ, সোডা এ্যাস, কস্টিক সোডা, রঙ পর্যায় ক্রমে পাত্রটিতে দিতে হবে। ভালো করে নেড়ে নির্বাচিত কাপড়টি এই পানিতে ডুবিয়ে ভালো করে নাড়তে হবে। সময় শেষ হলে পাত্র হতে কাপড়টি নামিয়ে ঠান্ডা পানিতে ভালো করে ধুয়ে রোদে শুকাতে হবে। সেদ্ধ করার সময় ২০-২৫ মিনিট।

খ) মার্কিন কাপড় ( মোটা ) কেমিক্যালস- কাপড়ের ওজন ১০০ গ্রাম হলো- মনোপল সোপ ৪ গ্রাম সোডা এ্যাস ৮ গ্রাম কস্টিক সোডা ৪ গ্রাম ব্লিচিং পাওডার ৪ গ্রাম কার্যপ্রণালী- প্রথমে একটি স্টীল বা মাটির পাত্রে কাপড় অনুযায়ী পরিমাণ মতো পানি নিয়ে চুলায় জ্বাল দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে মনোপল সোপ, সোডা এ্যাস, কস্টিক সোডা, রঙ পর্যায় ক্রমে পাত্রটিতে দিতে হবে। ভালো করে নেড়ে নির্বাচি কাপড়টি এই পানিতে ডুবিয়ে ভালো করে নাড়তে হবে। সময় শেষ হলে পাত্র হতে কাপড়টি নামিয়ে ঠান্ডা পানিতে ভালো করে ধুয়ে রোদে শুকাতে হবে। সেদ্ধ করার সময় ১ ঘন্টা।

গ) সাদা থান শাড়ী কাপড় (বয়েল) কেমিক্যালস- কাপড়ের ওজন ১০০ গ্রাম হলো- মনোপল সোপ ৪ গ্রাম সোডা এ্যাস ৮ গ্রাম কার্যপ্রণালী- প্রথমে একটি স্টীল বা মাটির পাত্রে কাপড় অনুযায়ী পরিমাণ মতো পানি নিয়ে চুলায় জ্বাল দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে মনোপল সোপ, সোডা এ্যাস, কস্টিক সোডা, রঙ পর্যায় ক্রমে পাত্রটিতে দিতে হবে। ভালো করে নেড়ে নির্বাচিত কাপড়টি এই পানিতে ডুবিয়ে ভালো করে নাড়তে হবে। সময় শেষ হলে পাত্র হতে কাপড়টি নামিয়ে ঠান্ডা পানিতে ভালো করে ধুয়ে রোদে শুকাতে হবে। সেদ্ধ করার সময় ৩০ মিনিট।

ঘ) রঙ্গীন শাড়ী/থান কাপড় কেমিক্যালস- কাপড়ের ওজন ১০০ গ্রাম হলো- মনোপল সোপ ৪ গ্রাম সোডা এ্যাস ৮ গ্রাম কস্টিক সোডা ৪ গ্রাম রঙ্গীন থান/শাড়ী হলে শুধু কুসুম গরম পানিতে মনোপল সোপ মেখে তাতে কাপড়টি ১ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর একটি স্টীল বা মাটির পাত্রে কাপড় অনুযায়ী পরিমাণ মতো পানি নিয়ে চুলায় জ্বাল দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে মনোপল সোপ, সোডা এ্যাস, কস্টিক সোডা, রঙ পর্যায় ক্রমে পাত্রটিতে দিতে হবে। ভালোকরে নেড়ে নির্বাচিত কাপড়টি এই পানিতে ডুবিয়ে ভালো করে নাড়তে হবে। সময় শেষ হলে পাত্র হতে কাপড়টি নামিয়ে ঠান্ডা পানিতে ভালো করে ধুয়ে ছায়ায়/ঠাণ্ডায় শুকাতে হবে।

সেদ্ধ করার সময় ১০/১৫ মিনিট। ঙ) লংক্লথ কাপড় ক- দ্রষ্টব্য চ) চাইনীজ পপলীন কেমিক্যালস- কাপড়ের ওজন ১০০ গ্রাম হলো- মনোপল সোপ ৪ গ্রাম সোডা এ্যাস ৮ গ্রাম কার্যপ্রণালী- প্রথমে একটি স্টীল বা মাটির পাত্রে কাপড় অনুযায়ী পরিমাণ মতো পানি নিয়ে চুলায় জ্বাল দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে মনোপল সোপ, সোডা এ্যাস, কস্টিক সোডা, রঙ পর্যায় ক্রমে পাত্রটিতে দিতে হবে। ভালো করে নেড়ে নির্বাচি কাপড়টি এই পানিতে ডুবিয়ে ভালো করে নাড়তে হবে। সময় শেষ হলে পাত্র হতে কাপড়টি নামিয়ে ঠান্ডা পানিতে ভালো করে ধুয়ে রোদে শুকাতে হবে।

সেদ্ধ করার সময় ২০ মিনিট। (রীতিমতো চলবে) (আগের লেখা)
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.