ঈশ্বরের প্রতি
জুতোর ফিতের মতো এই বিরক্তিকর জীবনটা কেনো দিলে বলোতো ঈশ্বর ?
ভুল সময় আর হাড়-হারামজাদা লোকদের ভীড়ে-----
কেনো!---- একটা পরিপূর্ণ জীবন দিলে কি এমন ক্ষতি হতো তোমার
আমার পছন্দ মতো পরিপূর্ণ সুন্দর একটা জীবন!
তুমিতো কথা বলোনা, অন্যকে দিয়ে বলাও---
যারা বলবে সব কিছু আসলে মঙ্গল আর সব কিছুতে পড়তে হবে আলহামদুলিল্লাহ
তাদের আমি ধরবো টুঁটি চিপে
আমার এতো মঙ্গলের দরকার নেই
আমি যাতে সুখ পাই তেমন কিছুতেই রুচি আমার ------তাতেই সন্তষ্ট আমি
ভিন্ন কিছু ------বা না পাওয়ার যন্ত্রনা আমাকে দেয়া হলো কেনো?
কেনো আমাকে?-----কি কারণে!
ছোট বেলায় ঈদের দিনে শিলুদের বাড়ীতে সেমাই খেতে যেতে হতো কেনো?
বাড়ীতে মায়ের হাতে বানানো প্রায় মিস্টি বিহীন সেমাই ছেড়ে?
মিস্টি থাকতোনা কেনো বাড়ীতে?-
ঈশ্বর কি আমাদের জন্য এ ভালো কাজ করেছেন
ওটা আবার কিরকম ভালো?
ভালো সার্ট ছিলোনা বলে একবার কলেজে পারুলের মন যোগাতে গিয়ে
স্বপন ভাইয়ের শার্ট পরেছিলাম চুপিচুপি
তারপরে বাড়ীতে এসে খেতে হলো ঘুষি
নিতান্ত ভদ্র গোছের একটা শার্টও কেনো থাকতোনা আমার
ঈশ্বরের এর মধ্যে কি ভালোটা আছে!
এ রকম ভালো কেনো শুধু আমার জন্য বরাদ্দ?
তিন বছর জিন্নার বোনের সাথে পবিত্র প্রেম করার পর জানলাম
সে হারামজাদী প্রেম করে অন্ততঃ দশজনের সাথে
শেষ পর্যন্ত মাগী টাকার লোভে এক বুড়োকে করলো বিয়ে
কচি মনে কি কষ্টটাই না পেয়েছিলাম
এরকম খানকী জুটলো কেনো আমার কপালে
ঈশ্বরের রাজত্বে কি আমার জন্য এরচেয়ে ভালো কিছু ছিলোনা!
বহুকষ্টে চাকরি একটা পেলাম কেরানীর
আঠাশ বছর ধরে ঐ একই কেরানীর পদ---সারাদিন কলম পিষে
বিকেলে আবার প্রভূদের বাজারের ব্যাগ হাতে----
বিনীত কুকুরের মতো পিছু পিছু-----কখনো ঘাড় কাত হতে দেরী হলে দুরান্তে ট্রান্সফার
মসনার তেল নিয়ে ঠ্যাঙ ধরে টানাটানি---- এই কি বিচার!
এর মধ্যে আমার কি ভালো রেখেছেন হে ইশ্বর!
মাসের ১৫ তারিখ থেকে সংসারে টানাটানি
ধার দিতে অপারগ বন্ধুরা পালায়
বড়লোক আত্মীয় স্বজন বাড়ীতে থেকেও বলে নাই
বাড়ী ফিরে বউ ছেলে মেয়ের কাছে অপমানে মনে হয় আত্মহত্যা করি
অথচ অশিক্ষিত আনপাড় গাউয়াড় লোকেরা ঘোরে লক্ষ কোটি টাকা নিয়ে
ওরা কি মন্ত্র জপ করে তাও যদি শেখাতে ইশ্বর!
তারপর জাতির পিঠে উঠে বসে আছে জম্পেশ সিন্দাবাদের দুই বুড়ি
উদ্ভট দেশ --- কারো কোন মূল্য নেই ----দুই সতীনের লড়াই
বঙ্গবন্ধু আর জিয়া যেনো হাটের ফকিরনির দগদগে ঘা
প্রতিদিন উসকে দেয়া----কোনদিন শুকায়না ---কোনদিন না----
ভীষণ বিরক্ত আমি---- ভীষণ
মাঝে মাঝে দম আসে বন্ধ হয়ে------
এই দম বন্ধ পরিবেশ ! এই কি আমার জন্য----সবার জন্য ভালো?
এর মধ্যে ভালোটা কোথায় ঈশ্বর !
আমার পছন্দ মতো পরিপূর্ণ সুন্দর একটা জীবন !--------
একটা পরিপূর্ণ জীবন দিলে কি এমন ক্ষতি হতো তোমার ঈশ্বর
যে জীবনে আলতামিরার গুহায় নিবিষ্ট চিত্তে বসে ছবি আঁকা যায়
লাইসিয়ামে বসে শোনা যায় জ্ঞানবৃদ্ধ এ্যরিষ্টটলের বাণী!
হওয়া যায় বোদলেয়ারের সহযাত্রী ---কবিদের রাজা যখন
পাপ থেকে নিংড়ে বের করে আনছিলেন কবিতার সৌন্দর্য
বরিশালে জীবনানন্দের আটচালার ঘরটার আশেপাশে ঘুরঘুর করা যায়
শিশিরের টুপ টুপ শব্দকে সাথী করে যখন লিখছিলেন তিনি রুপসী বাংলার কবিতাগুলো।
হাবলিদার নজরুলের চা আর পান এনে দেয়া যায়
বেকার হোস্টেলের ৪০৫ নং ঘরে বসে পেন্সিলে লিখছিলেন যখন কবিতা ‘ বিদ্রোহী ’
অথবা হেমন্ত বাবু মানবেন্দ্র মান্নাদে শ্যামল ----
অজস্র গান গেয়ে ভরে তুলেছিলেন যখন বাংলা আর বাঙালীর প্রাণ
মন ভরে যেতো সত্যি ভরে যেতো নিঃসন্দেহে আমার এ মন
হে ঈশ্বর দিতে যদি আমার পছন্দ মতো পরিপূর্ণ সুন্দর জীবন!
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।