আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পাঠ প্রতিক্রিয়া

_________________সেলাই গাছের কারখানা _______________________________________

কবিতার কথকতা জীবনের খণ্ড খণ্ড ছায়াগুলো যেভাবে ছায়াছবিতে ফুটে ওঠে, তেমনি জীবনের বর্ণিল কথকতাগুলোকে ছিঁড়ে-খুঁড়ে ফ্রেমে বেঁধে রাখা আত্মহনন-আত্মলব্ধির জাল খুঁটে খুঁটে কল্পকথাগুলোকে ছেনে-সেঁনে দেখার একটি নিরন্তর চেষ্টা থেকেই কি জন্মে এক-একটি কবিতা? তবে এটাই সত্য যে- সব লেখা বা বলার পদ্ধতি এক নয়; হওয়াও কখনো সম্ভব নয়। পাঠানুভব পাঠক ভেদে ভিন্ন হয়। আর আমি জীবনের ভেতর লুকোচুরি খেলতে খেলতে কবিতায় নিজেকে খুঁজি জীবনানন্দ যখন বলেন- কবিতা আর জীবন একই জিনিষের দুই রকমউৎসরণ; ফজলুররহমান বাবুল যখন লিখেন- কিন্তু কবিতা কি? কেন কবিতার গহন-যাত্রা জীবনে-জীবনে ? জয়গোস্বামী নিজেকে উপলব্দি করে যখন বলেন- জীবন নিয়ে এক লাইনও লিখা অসম্ভব... বুদ্ধদেব বসুর ‘শীত রাতের প্রার্থনা’র’ শেষ স্তবক থেকে যদি বলি- শূন্যতার অজ্ঞাত গহব্বর থেকে নবজন্মেও জন্য প্রার্থনা করো, প্রতীক্ষা করো, প্রস্তুত হও। ... ‘কবিতা সময়ের পাঠ নাকি সময়কে পাঠ করা?' কবিতা দ্বিধার আড়াল থেকে প্রাণের ভেতর একরৈখিকতায় ঘুরে ফেরে ঘোর সময়কে আবদ্ধ করে, বৃত্তের ফাঁকে সীমাবদ্ধ করে রাখে তাও বলা যাবে না; হতে পারে না-বলা কথা ও কল্পনা। যদি বলি-একটাই তো জীবন তাকে আর কতটুকু ভেঙে ভেঙে দেখলে নিজেকে হবে জানা, বিপরীত হতে পারে, না-হলে বিরহকাত দিনটিও কেটে যাবে একেলা, মোহ ধরে বেঁচে থাকার বাতুলতা।

আসলে কবিতা কী? শুধুই নিজেকে ভেঙেচুরে দেখা কিংবা প্রাণের অতলে ডুবে নিজেকে উপলব্দি করার প্রাণান্তর চেষ্টা... তারচে’ বেশি জানি না। কবিতাহীন জীবন মনে হয় স্পর্শহীন নিঃসঙ্গী; যেন অকাতরে ঠেলে যাচ্ছি জীবন, কিছুই জানে না মনভোলা সময়, শোকপাখি। কবিতা কাকে টানে? কবিতা কাকে খুঁজে? কবিতা কাকে গ্রেফতার করে? কেনো করে? কবিকে না পাঠককে? সে প্রশ্ন কাকে করবো? আমার আসা-যাওয়া, আমার পথ চলা আমার আহার-তন্দ্রা, কে আমাকে বেশি ভালোবাসে, কে আমাকে কাছে টেনে হিমের ভেতর ঘুম পাড়িয়ে রাখে, যদি বলো উত্তর পাবেন কবিতা!!! কবিতা মনের ঘরে হাসে, কাঁদে, কথা বলে, ঘুমোঘোরে আমাকে জাগিয়ে রাখে। কবিতা কখনও জ্বালায়, কখনও পোড়ায়, কখনও-বা নিঃসঙ্গ করে রাখে!!! কবিতা মাথা ব্যথার কারণও হয়! কবিতা রোগমুক্তির কারণও হয়, আবার কবিতা আমাকে শান্তি দেয়, তৃপ্তি দেয়, দীর্ঘশ্বাসের ভেতর আত্নকথা লুকিয়ে রাখি, সে আমার ভেতর হাসে-কাঁদে আমাকে ঘুমের বড়ি পাঠায়। কবিতার ভেতর কি এমন মায়া আছে যা পাঠককে কাছে টানে, কবিরা মনের কথা গেঁথে সাজিয়ে রাখে কবিতার পরতে পরতে…।

আমি কি জানি কবিতা কিভাবে পাঠককে টেনে রাখে? জানিনা। কবিতা মনের না বলা কথা তাও বলা যাবে না। কবিতার তুমি-টা কে? সে রহস্য আজো অজানা। কবিতার গতি আছে, প্রকৃতি আছে। কবিতা রূপসী হয়, কবিতা জানালায় উঁকি দ্যায়, কবিতা কখনো জ্বলে, কখনো নিভে, কখনো দ্যোতনা ছড়ায়।

কবিতা আমাকে পথে নামায়, বে-পথেও ছড়ায়! কবিতা শ্রেষ্ট সময়ের অভিব্যক্তি, শ্রেষ্ট সময়ের ধারণা। রাত্রি গভীর হলে নিঃসঙ্গতা জানালার শিক বেয়ে ওঠে, আহ্লাদ তার নিকট যাবার তীব্রকাঙ্কা চাখে প্রেসারকুকারে; ইচ্ছেকথা একারে থাকে না হরনিয়া চোখে; তখনই প্রতিযোগিতা শুরু… আলো-অন্ধকার যদি জলতেলহীন ফ্রাই হত তবে বলতাম ধরো দেওয়াল নাও,খোলো গোপন টান; রসাবেগ সুনসান হলে আমাকে বলো নিঃসঙ্গকাহন। কার ইচ্ছে আমাকে দাঁড়িয়ে রাখে? কতদূর এগুলে ব্যথা নাক সিঁটকে ওঠে মনবাগানে। কার ইশারা নিজের ভেতর সম্পর্কশূন্যতা বাড়ায়… টানা অন্ধকারে তারাগুলো নাই ফুটুক আমি ঢেকে ফেলবো শেষরাত্রিকে দেহের বল্কলে। চেতনা আমাকে অন্ততঃ টেনে নিয়ে যাক দংশনের দিকে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।