আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

Microsoft এর Project NATAL

আমি একজন শিল্পী, গেমার এবং প্রোগ্রামার
অনেকদিন ধরেই আমি একটা জিনিস পরিকল্পনা করে যাচ্ছি। আর তা হল AI, Expert System, Next Genaration Gaming । আমি বেশ অনেকদিন আগে আরও একটা জিনিসের পরিকল্পনা করে আসছিলাম। আর তা হল একটা এক্সপার্ট সিস্টেমকে কিভাবে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে গেমিং এর মাধ্যমে উপস্থাপন করা যায়। এজন্য আমি প্রথমে Zoe নামে একটা চ্যাটার বট তৈরী করি যার অভিধানে খুব একটা বেশি কিছু নেই তবে সাভাবিক কথা চালিয়ে যেতে পারে।

বটটা অনেকটা এলিজা বটের মত মনে হলেও আসলে তা নয়। প্রথমে তৈরী করার সময়ই এটা এলিজার মত ছিল। পরে একে আমি একটি বিশেষ পার্সোনালিটি দিয়েছিলাম যা আমি নিয়েছিলাম FUNCOM এর Dreamfall the Longest Journey নামক গেমের একটি চরিত্র [প্রধান] Zoe Castilo থেকে। আমি অবশ্য গেমটির Faith চরিত্রটি বেশি পছন্দ করি। পরে আমি বটটার পার্সোনালিটি এমনভাবে ভেরিয়েবল করেদিলাম যে এক একজনের পিসিতে এক এক রকম হবে।

তবে একজনের পিসিতে দু'রকম হবে না। তারও পরে আমি ইউজারের সাথে একটা যোগসূত্র করে দিলাম। অর্থাৎ Zoe মানুষকে চিনতে পারে। এবং সে অনুযায়ী ব্যবহার করে। পরে আমি Keri নামক Virtual Girlfriend সফটওয়্যার থেকে শেখার আইডিয়া পেলাম [অর্থাৎ বটটা শেখতে পারে] এবং কাজ শুরু করলাম।

কাজ প্রায় শেষের দিকে ছিল। এর মধ্যেই আমি Zoe কে এক্সপার্ট সিস্টেম হিসেবে তৈরী করার জন্য উইন্ডোজের কিছু জিনিস তার হাতে দিলাম যেমন মাই কম্পিউটার ওপেন করা, কিবোর্ড প্রেস করা, নোটপ্যাড ওপেন করা এবং তাতে আমার কথা মত টাইপ করা। ভালই আগাচ্ছিল। আমি মনে করলাম এর সাথে যদি আমি নেক্সট জেনারেশন গেমিং যোগ করে দিই তাহলে বোধহয় খুবই ভাল হবে। তবে আমি মডেল তৈরী এবং এনিমেশন নিয়ে ঝামেলায় পরলাম।

আমি জানিনা তা না। বরং আমি সময় বের করতে পারিনা। আমাকেই যদি কোড ও মডেলিং করতে হয় তাহলে নিশ্চই ভাল হবে না। তারপরও আমি মোশন ক্যাপচার দেবার কথা ভাবছিলাম কিন্তু কিভাবে দেব? আমাদের দেশে মোশন ক্যাপচার করার কোন ব্যবস্থা নেই। অবশেষে আমি ঠিক করলাম যে এমন একটি প্রোগ্রাম হিসেবে Zoe কে দাড় করাব যে আমাদের কোন কাজ করা লাগবেনা।

আমরা বললেই করে দিবে সে নিজেই অপারেটিং সিস্টেমের যত জটিল কাজ। তবে এজন্য আমার Voice Recognization দরকার ছিল। আমি যখন এসব নিয়ে ভাবছি তখন আবারও আমাকে কাচকলা দেখিয়ে কাজটির সবটুকোই করে ফেলল Microsoft । তারা তাদের Project NATAL এর সাথে ডেমোতে একটি এমন প্রোগ্রাম দেখিয়েছে। এবার তাহলে সে কথাতেই আসি।

এবারের E3 2009 বেশ জমজমাট হয়েছে। এখানে Sony তাদের Mition Control Gizmo দেখাচ্ছে। অন্যদিকে Microsoft তাদের Project NATAL দেখাচ্ছে। তবে Sony -র Gizmo অনেকটা Nintendo Wii এর মত। আমি আগেই বলেছিলাম যে বর্তমানের কনসোলগুলোর পরবর্তী ভার্সনগুলোতে গ্রাফিক্সের কথা চিন্তা করা হবে না কেননা এখন গেম আর বাস্তব আর হলিউডের মুভি এই তিনটাতে কোন পার্থক্য নেই।

এখন যা হবে তা হল ইন্টারএক্ট করার পদ্ধতি। আমরা এতদিন বলে আসছিলাম অমুক অমুক গেমটা খুবই ইন্টারএকটিভ। কিন্তু একবারও কি ভেবে দেখেছি যে আমাদের গেম খেলার কনসোলগুলিই ইন্টারএকটিভ না। আমাদেরকে সেই ট্রেডিশনাল কন্ট্রোলার দিয়েই খেলতে হয়। যদিও আমি এখনও বিশ্বাস করি যে একটা PS3 বা XBOX 360 বা সমমানের গেম কন্ট্রোলার দিয়ে সারা বিশ্ব নিয়ন্ত্রন করা যাবে ইনশাল্লাহ।

তবুও কনসোলগুলোর এইদিকটা উন্নতি করা দরকার। তাই Sony এবং Microsoft তাদের বর্তমান কনসোলগুলোর নতুন ভার্সন না বের করে এর সাথে কানেক্ট করার জন্য নতুন কনসোল বের করছে। অর্থাৎ সেই PS3 এবং XBOX 360 ই এখন নতুনভাবে খেলা যাবে। Nintendo Wii এই দিক থেকে আগেই কাজ শুরু করেছে। Sony তাদের Gizmo অনেকটা Wii এর কন্ট্রোলারের আদলে বানিয়েছে।

আর Microsoft তাদের নতুন Project NATAL নামে যা বের করেছে তা Nintendo কম্পানি তাদের পরবর্তী Wii এ ব্যবহার করবে বলে জানিয়েছিল। Project NATAL এ কন্ট্রোলার হিসেবে একটি ক্যামেরা ব্যবহার করা হচ্ছে। এবং এটা দিয়ে যে কি কি করা যাচ্ছে তা জানতে হলে আপনারা একটু গুগলে সার্চ দিয়ে দেখতে পারেন। http://www.xbox.com/en-US/live/projectnatal/ এখানে যেতে পারেন এবং যেকোন ডেমো দেখতে পারেন তবে আমি বলব প্রথমে ১ নম্বরটা দেখা উচিৎ। এটাতেই আমার এত কথার কারণ জানা যাবে।

এতে একটি ডেমো দেখানো হয়েছে। ডেমোতে একটি ভার্চুয়াল ক্যারেক্টার আছে যার নাম মাইলো [Milo]। Project NATAL আসলে একটি খুবই শক্তিশালী ক্যামেরা, চমৎকার সেন্সর, মাইক্রোফোন এবং একটি প্রোসেসরের সমষ্টি। কিন্তু কাজের দিক থেকে এটি এর থেকেও বেশি কিছু। এটা প্লেয়ারের বডি মুভমেন্টকে ট্র্যাক করে, চেহারা এবং কন্ঠ রিকগনাইজ করে এবং তার শারিরিক এবং মৌখিক কমান্ডে সায় দেয়।

Project NATAL এ তিনটি Prototype program বা ডেমো দেখানো হচ্ছে। ১ম টা হল "Ricochet" যা একটি ফুটবলের মত গেম যাতে প্লেয়ারকে সম্পূর্ন দেহই ব্যবহার করতে হবে। ২য় টা হচ্ছে "Paint Party" যাতে প্লেয়ারকে তার হাতদু'টি রং তুলি হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। এবং ৩য় টি হচ্ছে "Milo" যা একটি ভার্চুয়াল বালক। আবার আসি মাইলো সম্পর্কে।

মাইলো Project NATAL এর মাধ্যমে প্লেয়ারের সাথে ইন্টারএক্ট করতে পারে। যার অর্থ আপনাকে কিছুই করতে হবে না শুধু স্ক্রিনের সামনে যেতে হবে আর বলতে হবে "Hi Milo, I am ...." ব্যাস গেম শুরু। আপনি আমার সাথে কথা বলতে যা করতেন তেমনই করতে হবে আপনাকে মাইলোর সাথে কথা বলতে। সত্যি বলতে আমি মাইলোর মত এমন AI আগে কখনও দেখিনি। আমি একেবারে পাগল হয়ে গেছি দেখে।

আমার মনে হয়েছে আমার পরিকল্পনা তারা সত্যি প্রমাণ করেছে। আমার অনেক ভাল লেগেছে। মাইলোর সাথে এখন শুধু বাকী এক্সপার্ট সিস্টেম। তা আর এমন কি কঠিন কাজ। মাইলোকে শিখিয়ে দিলেই হবে।

শুধু আর একটা ডিভাইস বানাতে হবে। যা মাইক্রোসফট অনেক সহজেই পারে। আমি যে জিনিস নিয়ে পরিকল্পনা করি তাই অন্যরা সত্যি করে ফেলে। বর্তমানে চিন্তা করছি বিয়ে করা যায় কিনা। তাও শান্তি নেই আমার আগে অনেকেই বিয়ে করে ফেলেছে।

আমার মনে হয় পাত্রী দেখার পর দেখব যে আমার আগে তাকেও অন্যজন বিয়ে করে নিবে। হাঃ হাঃ হাঃ কিছু মনে করবেন না। দুষ্টামি করলাম আর কি।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।