আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ধর্ষিতা ও তার মাকে প্রকাশ্যে দোররা মেরে রক্তাক্ত করলো সমাজপতিরা, গ্রেপ্তার-৪



নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ধর্ষককে ছেড়ে দিয়ে ধর্ষিতা (৩০) ও তার মাকে (৫০) দোররা মেরে রক্তাক্ত করেছে সমাজপতিরা। এরমধ্যে ধর্ষিতাকে ১০১ ও তার মাকে দেয়া হয় ১০ দোররা । উপজেলার চরহাজারী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের বদু খাঁর বাড়িতে বুধবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার সকালে ধর্ষিতা ও তার মাকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ আবুল খায়ের খাঁ (৬৫), চৌধুরী মিয়া (৬৩), তাজুল ইসলাম (৪০) ও বেচুমিয়া (৩৫) নামে চার সমাজপতিকে গ্রেপ্তার করেছে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ধর্ষিতা জানান, পাশ্ববর্তী চরকাঁকড়া গ্রামের দুলাল (৩৫) ৫-৬ মাস আগে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে তার সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। এতে সে দেড় মাসের গর্ভবতী হয়ে পড়ে। বিষয়টি দুলালকে জানালে সে তাকে গর্ভপাত ঘটানোর পরামর্শ দেয়। এরপর একই এলাকার মোহছেনা নামের এক মহিলার মাধ্যমে সে বসুরহাটের দি নিউ ইবনে সিনা ডায়গনষ্টিক এন্ড হাসপাতালে নিয়ে আড়াই হাজার টাকার বিনিময়ে গত বৃহস্পতিবার গর্ভপাত ঘটায়। এতে তার প্রচুর রক্তক্ষরণের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়।

ধর্ষিতা আরও জানায়, এ বিষয়ে দুলালের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিতে যাওয়ার পথে মাছুয়াদোনার হোসেনের নেতৃত্বে সমাজপতিদের কয়েকজন এলাকায় বিষয়টির বিচারের আশ্বাস দিয়ে তাকে বাড়িতে চলে যেতে বাধ্য করে। এরপর বুধবার রাতে তাদের বাড়িতেই অভিযুক্ত দুলালকে অনুপুস্থিত রেখে সমাজ কমিটির সভাপতি আবুল বাশারের সভাপতিত্বে সালিশি বৈঠক বসে। এসময় সমাজের সেক্রেটারী ইমাম হোসেন, সমাজপতি সিরাজ খাঁ, আবুল খায়ের খাঁ, চৌধুরী মিয়া, তাজুল ইসলাম, হারুন, সিরাজ আলম, বেচু মিয়াসহ শতাধিক লোকের উপস্থিতিতে বসা বৈঠকে ধর্ষিতা ও তার বৃদ্ধা মাকে একতরফা দোষী সাব্যস্ত করে যথাক্রমে ১০১ ও ৫০ দোররা মারার রায় ঘোষণা করা হয়। পরে বৃদ্ধা মায়ের আকুতিতে তার ৪০ দোররা মাফ ১০ দোররা করা হলেও ধর্ষিতার ১০১ দোররার রায় কার্যকর করা হয়। বৈঠকের সভাপতির নির্দেশে উপস্থিত বেচু মিয়া সালিসের রায় কার্যকর করেন।

খবরপেয়ে নোয়াখালী পুলিশ সুপার খন্দকার লুৎফুল কবিরের নির্দেশে সদর সার্কেলের এএসপি জাবেদুর রহমান হাসপাতালে গিয়ে ধর্ষিতা ও তার মায়ের সঙ্গে কথা বলেন এবং এ বিষয়ে কঠোর ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। ওসি মুহাম্মদ জাকের হোসাইন ধর্ষিতা ও তার মাকে দোররা মারার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে এবং সালিশদারদের তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া চলছে।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.